কয়েকটি সংগঠনের দাবি-দাওয়ার আন্দোলনে দিনব্যাপী সরগরম ছিল রাজধানী। চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে প্রায় সাত ঘণ্টা শাহবাগে অবস্থানের পর ‘আশ^স্ত’ হয়ে কর্মসূচি স্থগিত করেছেন ‘আউটসোর্সিং’ কর্মীরা। দাবি আদায়ে তারা সরকারকে ১৫দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন।
একই দিনে দাবি জানাতে এসে জাতীয় প্রেসক্লাসের সামনে মারধরের শিকার হয়েছেন দুটি সংগঠনের কর্মীরা। এর মধ্যে একটি সংগঠন ৭ মার্চ ও ১৫ আগস্ট জাতীয় দিবস বাতিলের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালনের সময় মারধরের শিকার হয়েছে।
একই সময়ে প্রাথমিকের শিক্ষকরা দশম গ্রেডে বেতন কাঠামো নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন পালনের সময় মারধরের শিকার হয়েছেন।
দাবি পূরণে ১৫ দিন সময় দিয়ে শাহবাগ ত্যাগ ‘আউটসোর্সিং’ কর্মীদের চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ‘আউটসোর্সিং’ কর্মীরা। এর পর দাবি আদায়ে তারা সরকারকে ১৫ দিন সময় বেঁধে দিয়ে সাত ঘণ্টা পর শাহবাগ ছেড়ে যান।
কর্মসূচি প্রত্যাহারের আগে তারা প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে আশ্বস্ত হয়ে কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন ‘আউটসোর্সিং’ কর্মচারী সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান আনিস।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব তাদের দাবি আদায়ে কাজ করবেন। সংস্কার কমিটির মাধ্যমে এটি করা হবে। ভবিষ্যতে আউটসোর্সিং কর্মচারীদের সঙ্গে বৈষম্য হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। দাবি না মানলে ‘বড় পরিসরে’ রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দেন মাহবুবুর রহমান।
আউটসোর্সিং নীতিমালা বাতিল এবং আউটসোর্সিং, দৈনিক ভিত্তিক ও প্রকল্পে কর্মরতদের বহাল রেখে বয়স শিথিল করে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্র্মীরা।
শাহবাগ ও আশপাশের সড়কে যানজট
বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ’ আউটসোর্সিং কর্মী শাহবাগ ও আশপাশের সড়ক অবরোধ করলে সেখানে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের।
শনিবার তারা শাহবাগে জড়ো হলে সেখানে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য। অবরোধের কারণে শাহবাগ থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি সড়ক, মৎস্য ভবন ও বাংলামোটরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যানজটের কারণে অনেক যাত্রীকে বাস থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়।
পরে বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলনকারীদের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পর বিকেল ৫টার দিকে তারা সড়ক ছেড়ে চলে যান বলে সাংবাদিকদের জানান শাহবাগ থানার পরিদর্শক আসাদুজ্জামান।
মারধরের শিকার দিবস বাতিলের প্রতিবাদকারীরা
৭ মার্চ ও ১৫ আগস্ট শোক দিবস বাতিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন ক্রিয়েটিভ রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংগঠনের কর্মীরা। তারা শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দিবস বাতিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এরপর প্রতিবাদকারীদের ধাওয়া দিয়ে পেটায় বেশ কয়েকজন যুবক, যাদের পরিচয় জানা যাইনি।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে ক্রিয়েটিভ রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাকর্মীরা। এ সময় একদল যুবক এসে লাঠি দিয়ে মারধর শুররু করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
আহতদের মধ্যে আয়োজক সংগঠনের মুখপাত্র কুতুব হিলালীসহ চারজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সংগঠনের এক কর্মী বলেন, তাদের কয়েকশ নেতাকর্মী মিছিল করতে থাকলে তাদের ওপর আক্রমণ করে। এতে সংগঠনের অন্তত ২০-২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
ক্রিয়েটিভ রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মী হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের ‘ক্যাডাররা’ তাদের ওপর হামলা চানিয়েছে। এতে অনেকে আহত হয়েছেন; যার মধ্যে চারজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার আটটি জাতীয় দিবস বাতিলের সিন্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস এবং ১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছিল।
এ ছাড়া শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস ও ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস বাতিলের সিন্ধান্ত হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষককে বেদম পিটুনি
দিবস বাতিলের প্রতিবাদকারীদের কর্মসূচির পাশেই প্রাথমিক শিক্ষকদের একটি সংগঠনের কর্মসূচি চলছিল। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা বর্তমানে ত্রয়োদশতম গ্রেডে বেতন পান, যা তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীর সমমর্যাদার। এই শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরেই দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদা ও দশম গ্রেডে বেতনের দাবি জানিয়ে আসছে। তারা ‘শিক্ষক সমাজের’ ব্যানারে আন্দোলন করে আসছেন।
শিক্ষকরা জানান, শনিবার ক্রিয়েটিভ রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিক্ষোভ সমাবেশে শুরু হওয়ার পর প্রেসক্লাবের উল্টোপাশ থেকে ৩০ থেকে ৩৫ জন যুবক বাঁশ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে দৌড়ে আসে। তারা মিছিলকারীদের পিটিয়ে তাড়িয়ে দেয়। এ সময় শিক্ষকদেরও পেটানো হয়।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, একজনকে লাঠি হাতে ধাওয়া করা হচ্ছে। এরপর তাকে প্রেসক্লাবের সীমানা প্রাচীরে ঠেসে ধরে পেটানো হয়।
সেই ব্যক্তি নিজেকে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আহমেদ আলী পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আমাকে চাঁদাবাজ-চাঁদাবাজ বলে আমাকে লাঠিপেটা করা হয়েছে। আমার মোবাইলটা নিয়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই ভাই, আমি এর বিচার চাই।’
আহমেদ আলী বলেন, ‘আমাকে কেন মারছি জানি না, আমি বারবার বলছি, আমি টিচার, আমি টিচার। তাও আমার ওপর নির্যাতন করেছে।’
কারা মেরেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে অন্য কোনো গ্রুপ ছিল।’
‘শিক্ষক সমাজের’ সভাপতি আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, তাদের কর্মসূচি শেষ করে বাড়ি ফেরার সময় কিছু লোক আক্রমণ করে। এতে তাদের একজন শিক্ষক আহত হন।
এর আগে এমপিওভুক্তির দাবিতে টানা তিনদিনের কর্মসূচির মাথায় গত বৃস্পতিবার পুলিশের পিটুনি খেয়ে রাজধানীর আবদুল গণি রোডে অবস্থিত শিক্ষা ভবন ছেড়ে যান বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা।
এমপিওভুক্তির দাবিতে গত বৃস্পতিবার রাজধানীর শিক্ষা ভবনে অবস্থিত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষকরা। তারা সারাদেশের ৩১৫টি কলেজের সাড়ে তিন হাজারের বেশি শিক্ষককে এমপিওভুক্তির দাবি জানান।
বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি নেকবর হোসেন বলেন, তারা ৩২ বছর ধরে বিভিন্ন সরকারের আমলে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা ছিল-এবার এমপিওভুক্ত হতে পারবেন, কিন্তু এবার জুটেছে ‘পুলিশি নির্যাতন’।
রোববার, ২০ অক্টোবর ২০২৪
কয়েকটি সংগঠনের দাবি-দাওয়ার আন্দোলনে দিনব্যাপী সরগরম ছিল রাজধানী। চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে প্রায় সাত ঘণ্টা শাহবাগে অবস্থানের পর ‘আশ^স্ত’ হয়ে কর্মসূচি স্থগিত করেছেন ‘আউটসোর্সিং’ কর্মীরা। দাবি আদায়ে তারা সরকারকে ১৫দিন সময় বেঁধে দিয়েছেন।
একই দিনে দাবি জানাতে এসে জাতীয় প্রেসক্লাসের সামনে মারধরের শিকার হয়েছেন দুটি সংগঠনের কর্মীরা। এর মধ্যে একটি সংগঠন ৭ মার্চ ও ১৫ আগস্ট জাতীয় দিবস বাতিলের প্রতিবাদে কর্মসূচি পালনের সময় মারধরের শিকার হয়েছে।
একই সময়ে প্রাথমিকের শিক্ষকরা দশম গ্রেডে বেতন কাঠামো নির্ধারণের দাবিতে মানববন্ধন পালনের সময় মারধরের শিকার হয়েছেন।
দাবি পূরণে ১৫ দিন সময় দিয়ে শাহবাগ ত্যাগ ‘আউটসোর্সিং’ কর্মীদের চাকরি জাতীয়করণের দাবিতে শনিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১০টা থেকে শাহবাগ মোড় অবরোধ করেন বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের ‘আউটসোর্সিং’ কর্মীরা। এর পর দাবি আদায়ে তারা সরকারকে ১৫ দিন সময় বেঁধে দিয়ে সাত ঘণ্টা পর শাহবাগ ছেড়ে যান।
কর্মসূচি প্রত্যাহারের আগে তারা প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলমের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে আশ্বস্ত হয়ে কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেন ‘আউটসোর্সিং’ কর্মচারী সমিতির সভাপতি মাহবুবুর রহমান আনিস।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানিয়েছেন, যত দ্রুত সম্ভব তাদের দাবি আদায়ে কাজ করবেন। সংস্কার কমিটির মাধ্যমে এটি করা হবে। ভবিষ্যতে আউটসোর্সিং কর্মচারীদের সঙ্গে বৈষম্য হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। দাবি না মানলে ‘বড় পরিসরে’ রাজপথে নামার হুঁশিয়ারি দেন মাহবুবুর রহমান।
আউটসোর্সিং নীতিমালা বাতিল এবং আউটসোর্সিং, দৈনিক ভিত্তিক ও প্রকল্পে কর্মরতদের বহাল রেখে বয়স শিথিল করে চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্র্মীরা।
শাহবাগ ও আশপাশের সড়কে যানজট
বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের কয়েকশ’ আউটসোর্সিং কর্মী শাহবাগ ও আশপাশের সড়ক অবরোধ করলে সেখানে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের।
শনিবার তারা শাহবাগে জড়ো হলে সেখানে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিপুল সংখ্যক সদস্য। অবরোধের কারণে শাহবাগ থেকে সায়েন্স ল্যাবরেটরি সড়ক, মৎস্য ভবন ও বাংলামোটরমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যানজটের কারণে অনেক যাত্রীকে বাস থেকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা যায়।
পরে বিকেল ৩টার দিকে আন্দোলনকারীদের সাত সদস্যের প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিবের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর পর বিকেল ৫টার দিকে তারা সড়ক ছেড়ে চলে যান বলে সাংবাদিকদের জানান শাহবাগ থানার পরিদর্শক আসাদুজ্জামান।
মারধরের শিকার দিবস বাতিলের প্রতিবাদকারীরা
৭ মার্চ ও ১৫ আগস্ট শোক দিবস বাতিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন ক্রিয়েটিভ রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশন নামে একটি সংগঠনের কর্মীরা। তারা শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে দিবস বাতিলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করতে থাকেন। এরপর প্রতিবাদকারীদের ধাওয়া দিয়ে পেটায় বেশ কয়েকজন যুবক, যাদের পরিচয় জানা যাইনি।
বেলা সাড়ে ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ব্যানার নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে ক্রিয়েটিভ রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের নেতাকর্মীরা। এ সময় একদল যুবক এসে লাঠি দিয়ে মারধর শুররু করে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হয়।
আহতদের মধ্যে আয়োজক সংগঠনের মুখপাত্র কুতুব হিলালীসহ চারজন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
সংগঠনের এক কর্মী বলেন, তাদের কয়েকশ নেতাকর্মী মিছিল করতে থাকলে তাদের ওপর আক্রমণ করে। এতে সংগঠনের অন্তত ২০-২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছে।
ক্রিয়েটিভ রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের কর্মী হুমায়ুন কবির সাংবাদিকদের বলেন, বিএনপি ও জামায়াতের ‘ক্যাডাররা’ তাদের ওপর হামলা চানিয়েছে। এতে অনেকে আহত হয়েছেন; যার মধ্যে চারজন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সম্প্রতি অন্তর্বর্তী সরকার আটটি জাতীয় দিবস বাতিলের সিন্ধান্ত নিয়েছে। এর মধ্যে ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস এবং ১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস হিসেবে পালন হয়ে আসছিল।
এ ছাড়া শেখ মুজিবুর রহমানের ভাষণের স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহাসিক ৭ মার্চ, ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস ও ১২ ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস বাতিলের সিন্ধান্ত হয়েছে।
প্রাথমিক শিক্ষককে বেদম পিটুনি
দিবস বাতিলের প্রতিবাদকারীদের কর্মসূচির পাশেই প্রাথমিক শিক্ষকদের একটি সংগঠনের কর্মসূচি চলছিল। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা বর্তমানে ত্রয়োদশতম গ্রেডে বেতন পান, যা তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারীর সমমর্যাদার। এই শিক্ষকরা দীর্ঘদিন ধরেই দ্বিতীয় শ্রেণীর মর্যাদা ও দশম গ্রেডে বেতনের দাবি জানিয়ে আসছে। তারা ‘শিক্ষক সমাজের’ ব্যানারে আন্দোলন করে আসছেন।
শিক্ষকরা জানান, শনিবার ক্রিয়েটিভ রাইটার্স অ্যাসোসিয়েশনের বিক্ষোভ সমাবেশে শুরু হওয়ার পর প্রেসক্লাবের উল্টোপাশ থেকে ৩০ থেকে ৩৫ জন যুবক বাঁশ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে দৌড়ে আসে। তারা মিছিলকারীদের পিটিয়ে তাড়িয়ে দেয়। এ সময় শিক্ষকদেরও পেটানো হয়।
সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, একজনকে লাঠি হাতে ধাওয়া করা হচ্ছে। এরপর তাকে প্রেসক্লাবের সীমানা প্রাচীরে ঠেসে ধরে পেটানো হয়।
সেই ব্যক্তি নিজেকে মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের তেঘরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক আহমেদ আলী পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদেরকে বলেন, ‘আমাকে চাঁদাবাজ-চাঁদাবাজ বলে আমাকে লাঠিপেটা করা হয়েছে। আমার মোবাইলটা নিয়ে গেছে। আমি এর বিচার চাই ভাই, আমি এর বিচার চাই।’
আহমেদ আলী বলেন, ‘আমাকে কেন মারছি জানি না, আমি বারবার বলছি, আমি টিচার, আমি টিচার। তাও আমার ওপর নির্যাতন করেছে।’
কারা মেরেছে- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে অন্য কোনো গ্রুপ ছিল।’
‘শিক্ষক সমাজের’ সভাপতি আনিসুর রহমান জানিয়েছেন, তাদের কর্মসূচি শেষ করে বাড়ি ফেরার সময় কিছু লোক আক্রমণ করে। এতে তাদের একজন শিক্ষক আহত হন।
এর আগে এমপিওভুক্তির দাবিতে টানা তিনদিনের কর্মসূচির মাথায় গত বৃস্পতিবার পুলিশের পিটুনি খেয়ে রাজধানীর আবদুল গণি রোডে অবস্থিত শিক্ষা ভবন ছেড়ে যান বেসরকারি কলেজের অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা।
এমপিওভুক্তির দাবিতে গত বৃস্পতিবার রাজধানীর শিক্ষা ভবনে অবস্থিত মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষকরা। তারা সারাদেশের ৩১৫টি কলেজের সাড়ে তিন হাজারের বেশি শিক্ষককে এমপিওভুক্তির দাবি জানান।
বেসরকারি কলেজ অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি নেকবর হোসেন বলেন, তারা ৩২ বছর ধরে বিভিন্ন সরকারের আমলে বঞ্চনার শিকার হয়েছেন।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে প্রত্যাশা ছিল-এবার এমপিওভুক্ত হতে পারবেন, কিন্তু এবার জুটেছে ‘পুলিশি নির্যাতন’।