ব্রিটিশদের নীলনকশা থেকে মুক্তি ও উন্নয়নের অধিকার প্রতিষ্ঠার তাগিদ
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কুরমা চা–বাগানে অনুষ্ঠিত এক শ্রমিক সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম চা–শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ব্রিটিশরা চক্রান্ত করে চা–শ্রমিকদের মনোযোগ ভিন্ন দিকে সরিয়ে দিয়েছিল। তাদের রেখে যাওয়া মদের পাট্টা এখনো শ্রমিকদের উন্নয়নের পথে বাধা।
রোববার চা–শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “চা–বাগানের ভাইদের কাছে অনুরোধ, কলিজাটা বড় করে বাগানের মদের পাট্টাগুলো ভেঙে ফেলুন। মাথা যদি ঠিক থাকে, কেউ মাথা কিনতে পারবে না। ব্রিটিশরা চলে গেছে, কিন্তু আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে গেছে। এই বিভেদের বেড়াজাল ভাঙতে হবে।”
সারজিস আলম আরও বলেন, “চা–শ্রমিকদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা ছিল। কিন্তু ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া ষড়যন্ত্র আজও আমাদের পিছু ছাড়েনি। শ্রমিকদের রেশন ও মজুরি পর্যাপ্ত নয়। এত কষ্ট করেও চা–শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানে কোনো উন্নতি হয়নি। শেখ হাসিনার উন্নয়নের গল্প চা–বাগানের শ্রমিকদের কাছে আজও অধরা।”
চা–শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা সন্তানদের পড়াশোনায় গুরুত্ব দিন। তারা যেন আপনাদের মতো কষ্ট না করে। কোনো শিক্ষার্থী টাকার অভাবে পড়াশোনা বন্ধ করলে, আমরা তাদের খরচ বহন করব। এটা এক হাজার শিক্ষার্থী হলেও আমরা করব। জানুয়ারিতে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। সেখান থেকে চা–শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
সমাবেশে নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য আপনাদের প্রতিনিধি পার্লামেন্টে পাঠানোর প্রস্তুতি নিন। নতুন বাংলাদেশে কেউ যেন আপনাদের অধিকার এড়িয়ে যেতে না পারে।”
তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রের কাছে আমাদের সকল অধিকার দাবি করতে হবে। যারা চাঁদাবাজি, মামলা–বাণিজ্য, কিংবা চোরাচালানে লিপ্ত, তারা সাবধান হয়ে যান। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান, জনগণের বিরুদ্ধে কাজ না করে তাদের পাশে দাঁড়ান। অন্যথায় জনগণ আপনাদের বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়াবে।”
বাংলাদেশ চা–শ্রমিক ইউনিয়নের মনু ধলাই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন চা–শ্রমিক নারীনেত্রী গীতা কানু, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক প্রীতম দাশ এবং আরও অনেকে।
বক্তারা চা–শ্রমিকদের রেশন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, এবং ন্যায্য মজুরির মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। উন্নয়নের গল্পের আড়ালে শ্রমিকদের বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরে তারা শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনকে আরও গতিশীল করার তাগিদ দেন।
সমাবেশ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, চা–শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নীতি নির্ধারণে তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
ব্রিটিশদের নীলনকশা থেকে মুক্তি ও উন্নয়নের অধিকার প্রতিষ্ঠার তাগিদ
রোববার, ১২ জানুয়ারী ২০২৫
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের কুরমা চা–বাগানে অনুষ্ঠিত এক শ্রমিক সমাবেশে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম চা–শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ব্রিটিশরা চক্রান্ত করে চা–শ্রমিকদের মনোযোগ ভিন্ন দিকে সরিয়ে দিয়েছিল। তাদের রেখে যাওয়া মদের পাট্টা এখনো শ্রমিকদের উন্নয়নের পথে বাধা।
রোববার চা–শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, “চা–বাগানের ভাইদের কাছে অনুরোধ, কলিজাটা বড় করে বাগানের মদের পাট্টাগুলো ভেঙে ফেলুন। মাথা যদি ঠিক থাকে, কেউ মাথা কিনতে পারবে না। ব্রিটিশরা চলে গেছে, কিন্তু আমাদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করে গেছে। এই বিভেদের বেড়াজাল ভাঙতে হবে।”
সারজিস আলম আরও বলেন, “চা–শ্রমিকদের বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার কথা ছিল। কিন্তু ব্রিটিশদের রেখে যাওয়া ষড়যন্ত্র আজও আমাদের পিছু ছাড়েনি। শ্রমিকদের রেশন ও মজুরি পর্যাপ্ত নয়। এত কষ্ট করেও চা–শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানে কোনো উন্নতি হয়নি। শেখ হাসিনার উন্নয়নের গল্প চা–বাগানের শ্রমিকদের কাছে আজও অধরা।”
চা–শ্রমিকদের সন্তানদের শিক্ষার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, “আপনারা সন্তানদের পড়াশোনায় গুরুত্ব দিন। তারা যেন আপনাদের মতো কষ্ট না করে। কোনো শিক্ষার্থী টাকার অভাবে পড়াশোনা বন্ধ করলে, আমরা তাদের খরচ বহন করব। এটা এক হাজার শিক্ষার্থী হলেও আমরা করব। জানুয়ারিতে জাতীয় নাগরিক কমিটি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হবে। সেখান থেকে চা–শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।”
সমাবেশে নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, “আগামী নির্বাচন হবে গণপরিষদ নির্বাচন। নতুন সংবিধান প্রণয়নের জন্য আপনাদের প্রতিনিধি পার্লামেন্টে পাঠানোর প্রস্তুতি নিন। নতুন বাংলাদেশে কেউ যেন আপনাদের অধিকার এড়িয়ে যেতে না পারে।”
তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রের কাছে আমাদের সকল অধিকার দাবি করতে হবে। যারা চাঁদাবাজি, মামলা–বাণিজ্য, কিংবা চোরাচালানে লিপ্ত, তারা সাবধান হয়ে যান। প্রশাসনের প্রতি আহ্বান, জনগণের বিরুদ্ধে কাজ না করে তাদের পাশে দাঁড়ান। অন্যথায় জনগণ আপনাদের বিরুদ্ধেই রুখে দাঁড়াবে।”
বাংলাদেশ চা–শ্রমিক ইউনিয়নের মনু ধলাই ভ্যালির সভাপতি ধনা বাউরি সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন। অন্যান্য বক্তাদের মধ্যে ছিলেন চা–শ্রমিক নারীনেত্রী গীতা কানু, জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় সংগঠক প্রীতম দাশ এবং আরও অনেকে।
বক্তারা চা–শ্রমিকদের রেশন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, এবং ন্যায্য মজুরির মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করেন। উন্নয়নের গল্পের আড়ালে শ্রমিকদের বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরে তারা শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলনকে আরও গতিশীল করার তাগিদ দেন।
সমাবেশ থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, চা–শ্রমিকদের উন্নয়নের জন্য স্থানীয় ও জাতীয় পর্যায়ে নীতি নির্ধারণে তাদের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার পাশাপাশি নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।