জনগণ রোজ কেয়ামত পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘সমর্থন দেবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল খুলনার সার্কিট হাউস মাঠে তারুণ্যের সমাবেশে বক্তব্যকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি। দলটির তিন অঙ্গ সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদল এই সমাবেশের আয়োজন করে। এর আগের দিন দলটির ওই তিন অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে যৌথ সেমিনারও অনুষ্ঠিত হয়।
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য যমুনা ঘেরাও হবে জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। আপনি কি চান আমরা যমুনার উদ্দেশ্যে লংমার্চ করি? ড. ইউনূসকে হুশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই আপনি দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করুন। আমরা চাই না নির্বাচনের জন্য আবারও রাজপথে আন্দোলন হোক। জনগণ চায় প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই ছাত্র প্রতিনিধির পদত্যাগের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূসের সরকারকে অনেকে এনসিপির সরকার বলছেন। কারণ আপনার সরকারে দুইজন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধি রয়েছেন। আপনি যদি নিরপেক্ষ থাকতে চান তাহলে তাদের পদত্যাগ করতে বলুন। যদি পদত্যাগ না করে তাহলে তাদের বিদায় করুন।’
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বিদেশি নাগরিক কীভাবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পেলেন। আপনি (প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস) একজন বিদেশি নাগরিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বানিয়েছেন। আমাদের দেশের সেনাবাহিনী কীভাবে একজন বিদেশি নাগরিকের কাছে তাদের রিপোর্ট পেশ করবে। তিনি তো বাংলাদেশের জন্য নয়, তার দেশের জন্য কাজ করবেন।’
বিদেশি চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বিদেশি নাগরিক হওয়ায় দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিদেশে কি কি চুক্তি করেছেন, তা জাতি চানতে চায়। আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) নদী বন্দর, করিডোর সব বিদেশিদের দেবেন, এই ম্যান্ডেট আপনাকে কে দিয়েছে? আপনার একমাত্র কাজ হলো একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। আপনি সেটি করে সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিন।’
মানবিক করিডোরের নামে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার পায়তারা করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) কার সঙ্গে পরামর্শ করে এই সিদ্ধান্ত নিলেন। ড. ইউনূসকে বলবো জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বিদায় করুন। তিনি বাংলাদেশকে অস্থির করার পরিকল্পনা করছেন, কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।’
জনগণ তাদের হারানো ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায় উল্লেখ করে সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘গত কয়েকটি নির্বাচনে আপনারা কেউ-ই ভোট দিতে পারোনি। ৪ কোটি তরুণ এখনো গণতন্ত্রের স্বাদ পায়নি। আমরা অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থান দেখেছি, শহীদের রক্তে সিক্ত স্বপ্ন পূরণ করতেই হবে। এমন এক বাংলাদেশ গড়তে হবে, যেখানে গণতন্ত্রের, ভোটের বা ন্যায়বিচারের জন্য আর কারও রক্ত ঝরবে না, কোনো বৈষম্যও থাকবে না।’
সরকারকে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার শেষ করে ডিসেম্বরে মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। অনেক উপদেষ্টা আজীবন ক্ষমতায় থাকার বাসনা দেখছেন। আপনারা অসীম ক্ষমতাধর নন।’ সংস্কার ও বিচার চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সংস্কার ও বিচার চলমান প্রক্রিয়া। এগুলো চলমান থাকবে। আপনি বাংলাদেরশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করবেন না। আপনার উপদেষ্টা পরিষদের ফ্যাসিবাদের দোসর, বিদেশি রাষ্ট্রের এজেন্ট রয়েছে- তাদের দ্রুত অপসারণ করুন। তা না হলে আপনি সম্মানের সাথে বিদায় নিয়ে পারবেন না।’
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপির এই শীর্ষ পর্যায়ের নেতা বলেন, ‘আমাদের ইতিহাসকে জানতে হবে। অতীত ও বর্তমান দুটোকেই ধারণ করতে হবে। এ দেশে একসময় হত্যা-রাজনীতির সৃষ্টি হয়েছিল। বিশ্বখ্যাত স্বৈরাচার আমাদের ওপর নির্মম নিপীড়ন চালিয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে। কিন্তু তারা গণহত্যার জন্য ক্ষমা চায়নি। আজও তারা দিল্লিতে বসে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের মৃত্যু হয়েছে ঢাকার মাটিতে কিন্তু তাদের দাফন হয়েছে দিল্লিতে।’
বেলা তিনটার দিকে জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় তারুণ্যের সমাবেশ। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিরের সভাপতিত্বে এবং স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি এস. এম. জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়নসহ জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
শনিবার, ১৭ মে ২০২৫
জনগণ রোজ কেয়ামত পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘সমর্থন দেবে না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ। গতকাল খুলনার সার্কিট হাউস মাঠে তারুণ্যের সমাবেশে বক্তব্যকালে এমন মন্তব্য করেন তিনি। দলটির তিন অঙ্গ সংগঠন যুবদল, স্বেচ্ছাসেবকদল ও ছাত্রদল এই সমাবেশের আয়োজন করে। এর আগের দিন দলটির ওই তিন অঙ্গ সংগঠনের উদ্যোগে যৌথ সেমিনারও অনুষ্ঠিত হয়।
ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দেয়ার আহ্বান জানিয়ে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নির্বাচনের জন্য যমুনা ঘেরাও হবে জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। আপনি কি চান আমরা যমুনার উদ্দেশ্যে লংমার্চ করি? ড. ইউনূসকে হুশিয়ারি দিয়ে বলতে চাই আপনি দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করুন। আমরা চাই না নির্বাচনের জন্য আবারও রাজপথে আন্দোলন হোক। জনগণ চায় প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে দ্রুত নির্বাচন।’
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দুই ছাত্র প্রতিনিধির পদত্যাগের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ড. ইউনূসের সরকারকে অনেকে এনসিপির সরকার বলছেন। কারণ আপনার সরকারে দুইজন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) প্রতিনিধি রয়েছেন। আপনি যদি নিরপেক্ষ থাকতে চান তাহলে তাদের পদত্যাগ করতে বলুন। যদি পদত্যাগ না করে তাহলে তাদের বিদায় করুন।’
জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেন সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বিদেশি নাগরিক কীভাবে বাংলাদেশের নিরাপত্তা উপদেষ্টা পদে নিয়োগ পেলেন। আপনি (প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস) একজন বিদেশি নাগরিকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বানিয়েছেন। আমাদের দেশের সেনাবাহিনী কীভাবে একজন বিদেশি নাগরিকের কাছে তাদের রিপোর্ট পেশ করবে। তিনি তো বাংলাদেশের জন্য নয়, তার দেশের জন্য কাজ করবেন।’
বিদেশি চুক্তির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা বিদেশি নাগরিক হওয়ায় দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিদেশে কি কি চুক্তি করেছেন, তা জাতি চানতে চায়। আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) নদী বন্দর, করিডোর সব বিদেশিদের দেবেন, এই ম্যান্ডেট আপনাকে কে দিয়েছে? আপনার একমাত্র কাজ হলো একটি সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন করা। আপনি সেটি করে সম্মানের সঙ্গে বিদায় নিন।’
মানবিক করিডোরের নামে বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করার পায়তারা করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি আরও বলেন, ‘আপনি (প্রধান উপদেষ্টা) কার সঙ্গে পরামর্শ করে এই সিদ্ধান্ত নিলেন। ড. ইউনূসকে বলবো জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বিদায় করুন। তিনি বাংলাদেশকে অস্থির করার পরিকল্পনা করছেন, কিন্তু আমরা তা হতে দেব না।’
জনগণ তাদের হারানো ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায় উল্লেখ করে সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, ‘গত কয়েকটি নির্বাচনে আপনারা কেউ-ই ভোট দিতে পারোনি। ৪ কোটি তরুণ এখনো গণতন্ত্রের স্বাদ পায়নি। আমরা অভূতপূর্ব গণ-অভ্যুত্থান দেখেছি, শহীদের রক্তে সিক্ত স্বপ্ন পূরণ করতেই হবে। এমন এক বাংলাদেশ গড়তে হবে, যেখানে গণতন্ত্রের, ভোটের বা ন্যায়বিচারের জন্য আর কারও রক্ত ঝরবে না, কোনো বৈষম্যও থাকবে না।’
সরকারকে দ্রুত নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সংক্রান্ত সংস্কার শেষ করে ডিসেম্বরে মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করতে হবে। অনেক উপদেষ্টা আজীবন ক্ষমতায় থাকার বাসনা দেখছেন। আপনারা অসীম ক্ষমতাধর নন।’ সংস্কার ও বিচার চলমান প্রক্রিয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সংস্কার ও বিচার চলমান প্রক্রিয়া। এগুলো চলমান থাকবে। আপনি বাংলাদেরশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করবেন না। আপনার উপদেষ্টা পরিষদের ফ্যাসিবাদের দোসর, বিদেশি রাষ্ট্রের এজেন্ট রয়েছে- তাদের দ্রুত অপসারণ করুন। তা না হলে আপনি সম্মানের সাথে বিদায় নিয়ে পারবেন না।’
আওয়ামী লীগের সমালোচনা করে বিএনপির এই শীর্ষ পর্যায়ের নেতা বলেন, ‘আমাদের ইতিহাসকে জানতে হবে। অতীত ও বর্তমান দুটোকেই ধারণ করতে হবে। এ দেশে একসময় হত্যা-রাজনীতির সৃষ্টি হয়েছিল। বিশ্বখ্যাত স্বৈরাচার আমাদের ওপর নির্মম নিপীড়ন চালিয়েছে। হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে মানুষ হত্যা করেছে। কিন্তু তারা গণহত্যার জন্য ক্ষমা চায়নি। আজও তারা দিল্লিতে বসে আমাদের হুমকি দিচ্ছে। আওয়ামী লীগের মৃত্যু হয়েছে ঢাকার মাটিতে কিন্তু তাদের দাফন হয়েছে দিল্লিতে।’
বেলা তিনটার দিকে জাতীয় সঙ্গীত ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে শুরু হয় তারুণ্যের সমাবেশ। ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিরের সভাপতিত্বে এবং স্বেচ্ছাসেবকদলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছিরের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন যুবদলের সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবকদলের সভাপতি এস. এম. জিলানী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়নসহ জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।