alt

রাজনীতি

বিভাগীয় শহরে হাই কোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়ে একমত রাজনৈতিক দলগুলো

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের বিধান সংশোধন করে ভুক্তভোগী পরিবারের মতামত নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রাখার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। একইসঙ্গে সব বিভাগীয় শহরে হাই কোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়েও ঐক্যমত হয়েছে তারা।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো এই দুটি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়। বেলা সাড়ে ১১টায় ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শুরু হয় এবং বিকাল সাড়ে ৪টায় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে আসেন কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ৭ জুলাই পুনরায় আলোচনার দিন ধার্য করা হয়েছে।

আলী রীয়াজ বলেন, “ঢাকার পাশাপাশি প্রতিটি বিভাগীয় শহরে হাই কোর্টের এক বা একাধিক স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বর্তমান বিধান সংশোধনের বিষয়েও রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমত হয়েছে। নতুন বিধানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মতামতের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি অপরাধীকে ক্ষমা করার সুযোগ থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রপতি ক্ষমার বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতার ব্যাপক অপব্যবহার হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো অনুধাবন করেছে যে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ সংশোধন প্রয়োজন। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশও রয়েছে। নতুন বিধান অনুসারে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের আগে ভুক্তভোগী পরিবারের মতামত নিতে হবে।”

বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকবে, তবে রাজধানীর বাইরে প্রতিটি বিভাগে প্রধান বিচারপতির পরামর্শে এক বা একাধিক বেঞ্চ থাকবে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা বিগত সময় দেখেছি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার যথেষ্ট অপব্যবহার হয়েছে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তসহ বড় অপরাধীদের ক্ষমা প্রদর্শনের মাধ্যমে হত্যাযজ্ঞে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। তাই রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতা আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে।”

বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা চাই বিচারিক সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাক। তাই হাই কোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থাপন হোক। তবে প্রধান বিচারপতির সাথে আলোচনা করে এটি করা উচিত।”

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, “অতীতে রাষ্ট্রপতির একক সিদ্ধান্তে অপরাধীদের ক্ষমা করা হয়েছে, যা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। এবার প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, একটি সুপারিশ কমিটি রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমার বিষয়ে পরামর্শ দেবে। যদি কোনো ব্যক্তিগত অপরাধে দণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে ভুক্তভোগী পরিবারের সম্মতি ছাড়া রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করতে পারবেন না।”

তিনি আরও বলেন, “২০ কোটি মানুষের দেশে সবাই ঢাকায় এসে বিচার পায় না। তাই বিভাগীয় শহরে হাই কোর্ট বেঞ্চ স্থাপন সময়ের দাবি। মেধাবী বিচারপতি ও আইনজীবীর ঘাটতি প্রশিক্ষণ ও বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব।”

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “রাষ্ট্রপতির ক্ষমা যেন আর নিরঙ্কুশ না থাকে, বরং একটি বোর্ডের সুপারিশের ভিত্তিতে তা প্রদর্শিত হয়—এ বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। অতীতে রাজনৈতিক বিবেচনায় শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরও ক্ষমা করা হয়েছে, এতে ন্যায়বিচার ক্ষুণ্ন হয়েছে।”

তিনি বলেন, “২০ কোটি মানুষের দেশে হাই কোর্ট ও আপিল বিভাগ মিলিয়ে কয়েক লাখ মামলা বিচারাধীন। মাত্র ১০০ জন বিচারপতি দিয়ে এসব মামলা নিষ্পত্তি সম্ভব নয়। অষ্টম সংশোধনীর সময় ছয়টি জায়গায় হাই কোর্ট বেঞ্চ গঠনের উদ্যোগে বাধা এসেছিল। এবার এমনভাবে আইন করতে হবে যাতে সাংবিধানিক বাধা এড়িয়ে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।”

দ্বিতীয় দফার নবম দিনের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আলী রীয়াজ। সেখানে কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

গত অক্টোবরে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারিতে জমা পড়ে। এসব প্রতিবেদনের সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত চাওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৩৩টি দল মতামত জানায়। এরপর ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত তাদের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনের মাধ্যমে প্রথম পর্বের সংলাপ সম্পন্ন হয়।

ছবি

চাঁদাবাজির অভিযোগে দুই বিএনপি কর্মীকে কারাদণ্ড, প্রতিবাদে থানা ভাঙচুর

ছবি

‘তড়িঘড়ি’ টেলিকম নীতিমালা ঘোষণার সিদ্ধান্তে বিএনপির উদ্বেগ

ছবি

জুলাই পদযাত্রার ভ্যানে ‘হাতবোমা’ বিস্ফোরণের অভিযোগ, এনসিপির বিক্ষোভ

ছবি

দেশের প্রয়োজনে বেগম খালেদা জিয়া যখন ডাক দিবেন মানুষ রাজপথ প্রকম্পিত করে ছুটে আসবে : মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন

ছবি

সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন: বিভক্তি ও অস্থিরতার আশঙ্কায় তারেক রহমান

ছবি

গুম-খুনের তালিকা তৈরির তাগিদ, আন্দোলনে নিহতদের পুনর্বাসনের ওপর গুরুত্ব খালেদা জিয়ার

ছবি

নির্বাচনের তারিখ বা সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা হয়নি: সিইসি

ছবি

জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি: বিএনপির আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি থাকবেন খালেদা-তারেক

ছবি

জুলাই সনদ আদায় করেই ছাড়ব: নাহিদ ইসলাম

ছবি

আবু সাঈদের কবর জিয়ারতের মধ্য দিয়ে এনসিপির জুলাই পদযাত্রা শুরু

ছবি

রংপুরের পথে এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’ শুরু

আনুপাতিক ভোটের পক্ষে একমত হওয়ার আহ্বান ‘৬০ নাগরিকের

ছবি

‘ভোটকেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা ২০২৫’ প্রকাশ, বাদ ডিসি-এসপি, ইভিএম সংশ্লিষ্ট ধারা

ছবি

নির্বাচিত সরকার এলে সম্পর্ক আরও গভীর হবে—চীন সফর শেষে বললেন মির্জা ফখরুল

ছবি

‘জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্রেই ঐতিহাসিক দায়িত্ব পূরণ সম্ভব’: এনসিপি আহ্বায়ক

ছবি

একজন উপদেষ্টা মুরাদনগরে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন: মির্জা ফখরুল

ছবি

“নারীর নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ সরকার” — জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যানের প্রশ্ন

ছবি

মুরাদনগরে হিন্দু নারী নির্যাতনের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানাল বিএনপি

ছবি

নিয়োগ কমিটি গঠনের প্রস্তাবে এখনো একমত নয় সব রাজনৈতিক দল

ছবি

নির্বাচনের সময় বিলম্বে জাতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে: মির্জা আব্বাস

ছবি

আনুপাতিক নির্বাচন দেশের উপযোগী নয়: সালাহউদ্দিন

ছবি

‘রাষ্ট্র সংস্কার চলমান প্রক্রিয়া, চিরস্থায়ী নয়’— বললেন বিএনপি নেতা

ছবি

সংসদের পিআর পদ্ধতি ও আল্লাহর ওপর আস্থার দাবি তুলে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

ছবি

আলোচনা, দোয়া, গণমিছিলসহ ৮ আগস্ট পর্যন্ত কর্মসূচি পালন করবে জামায়াত

ছবি

সংস্কার ও পিআর পদ্ধতির দাবিতে সোহরাওয়ার্দীতে ইসলামী আন্দোলনের মহাসমাবেশ

ছবি

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সরে দাঁড়ালেন উমামা ফাতেমা

ছবি

ছাত্র-জনতার গণপ্রতিরোধকে ‘মব’ বলা ফ্যাসিস্ট ষড়যন্ত্র: হেফাজত

ছবি

হাসনাতের ভিডিও পোস্ট ঘিরে অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত, দুদকের পাল্টা সতর্কতা

ছবি

বটবাহিনীর সহযোগিতায় মুনাফেকি রাজনীতি করছে জামায়াত-শিবির: ছাত্রদল সভাপতি

ছবি

হাসনাতের ফেসবুক পোস্ট নিয়ে তদন্তে দুদক

ছবি

স্বৈরাচার ঠেকাতে দরকার স্বাধীন নির্বাচন কমিশন: বিএনপি নেতা

ছবি

অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও কর্মী সভায় মারধর: এনসিপির মাদারীপুর জেলা ও সদর কমিটি স্থগিত

ছবি

‘চা-নাস্তার জন্য এক লাখ টাকা’ দাবি: মাহমুদা মিতুর অভিযোগে দুদকের প্রতিবাদ

ছবি

কে এম নূরুল হুদা হেনস্তা মামলায় জামিন পেলেন মোজাম্মেল, হানিফ ও কাইয়ুম

ছবি

“রাষ্ট্রপতি-প্রধান বিচারপতি বাদ, নিয়োগ কমিটিতে থাকছেন স্পিকার ও রাজনৈতিক নেতারা”

ছবি

ইশরাকের সমর্থকদের বিরুদ্ধে মারধর, হুমকি ও সাংবাদিক হয়রানির অভিযোগ

tab

রাজনীতি

বিভাগীয় শহরে হাই কোর্ট বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়ে একমত রাজনৈতিক দলগুলো

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫

রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের বিধান সংশোধন করে ভুক্তভোগী পরিবারের মতামত নেওয়ার বাধ্যবাধকতা রাখার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে। একইসঙ্গে সব বিভাগীয় শহরে হাই কোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়েও ঐক্যমত হয়েছে তারা।

বৃহস্পতিবার ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সংলাপে রাজনৈতিক দলগুলো এই দুটি বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছায়। বেলা সাড়ে ১১টায় ৩০টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক শুরু হয় এবং বিকাল সাড়ে ৪টায় বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সামনে আসেন কমিশনের সহ-সভাপতি আলী রীয়াজ।

কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আগামী ৭ জুলাই পুনরায় আলোচনার দিন ধার্য করা হয়েছে।

আলী রীয়াজ বলেন, “ঢাকার পাশাপাশি প্রতিটি বিভাগীয় শহরে হাই কোর্টের এক বা একাধিক স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপনের বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে। রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বর্তমান বিধান সংশোধনের বিষয়েও রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যমত হয়েছে। নতুন বিধানে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মতামতের ভিত্তিতে রাষ্ট্রপতি অপরাধীকে ক্ষমা করার সুযোগ থাকবে।”

তিনি আরও বলেন, “রাষ্ট্রপতি ক্ষমার বিষয়টি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতার ব্যাপক অপব্যবহার হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো অনুধাবন করেছে যে সংবিধানের ৪৯ অনুচ্ছেদ সংশোধন প্রয়োজন। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের কিছু সুপারিশও রয়েছে। নতুন বিধান অনুসারে, ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের আগে ভুক্তভোগী পরিবারের মতামত নিতে হবে।”

বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণে রাজনৈতিক দলগুলোর ঐক্যমত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, “সংবিধানের ১০০ অনুচ্ছেদ সংশোধনের বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে। বলা হয়েছে, রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকবে, তবে রাজধানীর বাইরে প্রতিটি বিভাগে প্রধান বিচারপতির পরামর্শে এক বা একাধিক বেঞ্চ থাকবে।”

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, “আমরা বিগত সময় দেখেছি রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার যথেষ্ট অপব্যবহার হয়েছে। ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তসহ বড় অপরাধীদের ক্ষমা প্রদর্শনের মাধ্যমে হত্যাযজ্ঞে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে। তাই রাষ্ট্রপতির এই ক্ষমতা আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত হবে।”

বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণের বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা চাই বিচারিক সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাক। তাই হাই কোর্টের বেঞ্চ বিভাগীয় শহরে স্থাপন হোক। তবে প্রধান বিচারপতির সাথে আলোচনা করে এটি করা উচিত।”

জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, “অতীতে রাষ্ট্রপতির একক সিদ্ধান্তে অপরাধীদের ক্ষমা করা হয়েছে, যা ন্যায়বিচারের পরিপন্থী। এবার প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, একটি সুপারিশ কমিটি রাষ্ট্রপতিকে ক্ষমার বিষয়ে পরামর্শ দেবে। যদি কোনো ব্যক্তিগত অপরাধে দণ্ড দেওয়া হয়, তাহলে ভুক্তভোগী পরিবারের সম্মতি ছাড়া রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করতে পারবেন না।”

তিনি আরও বলেন, “২০ কোটি মানুষের দেশে সবাই ঢাকায় এসে বিচার পায় না। তাই বিভাগীয় শহরে হাই কোর্ট বেঞ্চ স্থাপন সময়ের দাবি। মেধাবী বিচারপতি ও আইনজীবীর ঘাটতি প্রশিক্ষণ ও বাজেট বরাদ্দের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব।”

এনসিপির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, “রাষ্ট্রপতির ক্ষমা যেন আর নিরঙ্কুশ না থাকে, বরং একটি বোর্ডের সুপারিশের ভিত্তিতে তা প্রদর্শিত হয়—এ বিষয়ে আমরা একমত হয়েছি। অতীতে রাজনৈতিক বিবেচনায় শীর্ষ সন্ত্রাসীদেরও ক্ষমা করা হয়েছে, এতে ন্যায়বিচার ক্ষুণ্ন হয়েছে।”

তিনি বলেন, “২০ কোটি মানুষের দেশে হাই কোর্ট ও আপিল বিভাগ মিলিয়ে কয়েক লাখ মামলা বিচারাধীন। মাত্র ১০০ জন বিচারপতি দিয়ে এসব মামলা নিষ্পত্তি সম্ভব নয়। অষ্টম সংশোধনীর সময় ছয়টি জায়গায় হাই কোর্ট বেঞ্চ গঠনের উদ্যোগে বাধা এসেছিল। এবার এমনভাবে আইন করতে হবে যাতে সাংবিধানিক বাধা এড়িয়ে বাস্তবায়ন সম্ভব হয়।”

দ্বিতীয় দফার নবম দিনের বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন আলী রীয়াজ। সেখানে কমিশনের সদস্য বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, সফর রাজ হোসেন, বদিউল আলম মজুমদার, মো. আইয়ুব মিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন।

গত অক্টোবরে গঠিত ছয়টি সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন ফেব্রুয়ারিতে জমা পড়ে। এসব প্রতিবেদনের সুপারিশের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৫ ফেব্রুয়ারি যাত্রা করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগ, দুর্নীতি দমন ও জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৬৬টি সুপারিশের বিষয়ে ৩৮টি রাজনৈতিক দল ও জোটের মতামত চাওয়া হয়। তাদের মধ্যে ৩৩টি দল মতামত জানায়। এরপর ২০ মার্চ থেকে ১৯ মে পর্যন্ত তাদের সঙ্গে ৪৫টি অধিবেশনের মাধ্যমে প্রথম পর্বের সংলাপ সম্পন্ন হয়।

back to top