বিএনপিকে ‘সংস্কারবিরোধী’ বলে একটি মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিএনপি নয় বছর আগে থেকেই সংস্কারের কথা বলে আসছে। গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে দেড় দশকের আন্দোলনে বিএনপি যে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছে, সেই দলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলাকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, “মিডিয়ার কিছু অংশ ও কিছু ব্যক্তি বিএনপির সংস্কার নিয়ে নানা কথা বলছেন, যা সঠিক নয়। বিএনপির সংস্কার নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকার কথা নয়। ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়ার ভিশন-২০৩০-এ সংস্কারের কথা বলা হয়েছিল। এরপর ২০২২ সালে ২৭ দফা এবং ২০২৩ সালে অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করে ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি আমরা দিয়েছি।
“৩১ দফা নিয়ে আমরা সারা দেশে অসংখ্য কর্মসূচি করেছি, জনগণের কাছে গিয়েছি, সুধী সমাজ ও সুশীল সমাজের কাছে গিয়েছি। আজকে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলে প্রচার করছে।”
গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে বিএনপির শক্ত অবস্থানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদের কত কর্মসূচি, কত সমাবেশ, কত লাঠিপেটা আপনারা দেখেছেন। এখন বিএনপিকে নিয়ে এই প্রশ্ন কেন? এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছাড়া আর কী?”
তিনি বলেন, “বিএনপিকে ভুলভাবে চিত্রিত করতে একটি গোষ্ঠী মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা ভাবছে জনগণ সাড়া দিচ্ছে, কিন্তু জনগণ মানে শুধু শহুরে কয়েকজন নয়, জনগণ মানে সারা বাংলাদেশ।”
বিএনপির নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বহুদলীয় গণতন্ত্রের সংস্কার করেছেন জিয়াউর রহমান। বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা, সংসদীয় গণতন্ত্র, এমনকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মেনে তিনটি নির্বাচনও হয়েছে বিএনপির মাধ্যমে। সবই সংস্কারের মাধ্যমে করা।”
বিএনপির অবদান নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি করে কোনো লাভ হবে না বলেও সতর্ক করেন তিনি।
‘যারা নির্বাচন বিলম্বিত চায় তারা গণতন্ত্রের শক্তি নয়’
মির্জা ফখরুল বলেন, “নির্বাচন বিলম্বিত করতে চাওয়া কোনো গণতান্ত্রিক শক্তি নয়। তারা জুলাই-অগাস্ট বিপ্লবের পক্ষের শক্তিও নয়।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বিএনপির যেসব বিষয়ে একমত হয়েছে, তার একটি পরিসংখ্যানও দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রথম প্রস্তাব নিয়ে আমরা বহু আগেই মতামত দিয়েছি। সরকার বলেছে তারা দায়িত্ব নেবে। এখনো কিছু আসেনি। আমরা সবসময় আলোচনায় ছিলাম, এখনো আছি।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “জুলাই সনদ নিয়ে আমাদের মতামত বহু আগেই দেয়া। সরকার তা করছে না, এটা তাদের দায়। বিএনপির নয়।”
‘প্রত্যাশা নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে’
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা স্পষ্ট করেছি যে জনগণ নির্বাচন চায়। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের মধ্যে আলোচনা হয়েছে যে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে এগোতে চাই।”
তিনি বলেন, “বিএনপি জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চায়। কোনো বিপ্লব বা অন্য কোনো পথে নয়, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য।”
‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) প্রসঙ্গে’
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা বলেছি দেশে যেন আর কোনো স্বৈরাচার জন্ম না নেয়। প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিত থাকবে এবং ১০ বছরের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রীর আসনে থাকবেন না। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কর্মকাণ্ড ব্যাহত করে এমন কোনো অর্গান বা বডি গঠন করা যাবে না। তাই আমরা এনসিসি ধারণার সঙ্গে একমত হইনি।”
তবে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব বলে আশাবাদও প্রকাশ করেন তিনি।
‘সংখ্যানুপাতিক ভোট (পিআর) প্রসঙ্গে’
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “যারা পিআর ব্যবস্থা চাচ্ছেন, তারা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে সে বিষয়ে কিছু বলেননি। পিআর কনসেপ্ট থাকলেও দেশে দেশে পদ্ধতি ভিন্ন। জনগণ, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। এটা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে।”
তিনি বলেন, “ইভিএম চালুর সময়ও প্রচুর প্রচারণা ও প্রশিক্ষণ হয়েছিল, কিন্তু কার্যকর হয়নি। পিআরও গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বদলে দেয়। এ নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। আমরা আলোচনায় রাজি, কিন্তু এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সম্ভব নয়।”
নজরুল বলেন, “আমরাই সবচেয়ে বেশি সংস্কার করেছি। যুগান্তকারী যেসব সংস্কার হয়েছে, তা বিএনপিই করেছে। তখন অনেকেই সংস্কারের কথা বলেননি, অথচ আমরা পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব দিয়েছি। সেই বিএনপিকে অভিযুক্ত করা অন্যায়।”
রোববার, ০৬ জুলাই ২০২৫
বিএনপিকে ‘সংস্কারবিরোধী’ বলে একটি মহল অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার সকালে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিএনপি নয় বছর আগে থেকেই সংস্কারের কথা বলে আসছে। গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে দেড় দশকের আন্দোলনে বিএনপি যে জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়েছে, সেই দলের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তোলাকে ‘উদ্দেশ্যপ্রণোদিত’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
মির্জা ফখরুল বলেন, “মিডিয়ার কিছু অংশ ও কিছু ব্যক্তি বিএনপির সংস্কার নিয়ে নানা কথা বলছেন, যা সঠিক নয়। বিএনপির সংস্কার নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকার কথা নয়। ২০১৬ সালে বেগম খালেদা জিয়ার ভিশন-২০৩০-এ সংস্কারের কথা বলা হয়েছিল। এরপর ২০২২ সালে ২৭ দফা এবং ২০২৩ সালে অন্যান্য দলের সঙ্গে আলোচনা করে ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচি আমরা দিয়েছি।
“৩১ দফা নিয়ে আমরা সারা দেশে অসংখ্য কর্মসূচি করেছি, জনগণের কাছে গিয়েছি, সুধী সমাজ ও সুশীল সমাজের কাছে গিয়েছি। আজকে একটি মহল পরিকল্পিতভাবে বিএনপিকে সংস্কারবিরোধী বলে প্রচার করছে।”
গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে বিএনপির শক্ত অবস্থানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “আমাদের কত কর্মসূচি, কত সমাবেশ, কত লাঠিপেটা আপনারা দেখেছেন। এখন বিএনপিকে নিয়ে এই প্রশ্ন কেন? এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছাড়া আর কী?”
তিনি বলেন, “বিএনপিকে ভুলভাবে চিত্রিত করতে একটি গোষ্ঠী মিথ্যা প্রচারণা চালাচ্ছে। তারা ভাবছে জনগণ সাড়া দিচ্ছে, কিন্তু জনগণ মানে শুধু শহুরে কয়েকজন নয়, জনগণ মানে সারা বাংলাদেশ।”
বিএনপির নীতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বহুদলীয় গণতন্ত্রের সংস্কার করেছেন জিয়াউর রহমান। বাকস্বাধীনতা, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা, সংসদীয় গণতন্ত্র, এমনকি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মেনে তিনটি নির্বাচনও হয়েছে বিএনপির মাধ্যমে। সবই সংস্কারের মাধ্যমে করা।”
বিএনপির অবদান নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে বিরূপ মনোভাব সৃষ্টি করে কোনো লাভ হবে না বলেও সতর্ক করেন তিনি।
‘যারা নির্বাচন বিলম্বিত চায় তারা গণতন্ত্রের শক্তি নয়’
মির্জা ফখরুল বলেন, “নির্বাচন বিলম্বিত করতে চাওয়া কোনো গণতান্ত্রিক শক্তি নয়। তারা জুলাই-অগাস্ট বিপ্লবের পক্ষের শক্তিও নয়।”
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, সংস্কার কমিশনের সঙ্গে বিএনপির যেসব বিষয়ে একমত হয়েছে, তার একটি পরিসংখ্যানও দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, “জুলাই ঘোষণাপত্রের প্রথম প্রস্তাব নিয়ে আমরা বহু আগেই মতামত দিয়েছি। সরকার বলেছে তারা দায়িত্ব নেবে। এখনো কিছু আসেনি। আমরা সবসময় আলোচনায় ছিলাম, এখনো আছি।”
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “জুলাই সনদ নিয়ে আমাদের মতামত বহু আগেই দেয়া। সরকার তা করছে না, এটা তাদের দায়। বিএনপির নয়।”
‘প্রত্যাশা নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে’
ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা আছে কিনা জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, “আমরা স্পষ্ট করেছি যে জনগণ নির্বাচন চায়। আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনুসের মধ্যে আলোচনা হয়েছে যে ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন হবে। আমরা সেই লক্ষ্যে এগোতে চাই।”
তিনি বলেন, “বিএনপি জনগণের ভোটে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব নিতে চায়। কোনো বিপ্লব বা অন্য কোনো পথে নয়, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনাই আমাদের লক্ষ্য।”
‘জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) প্রসঙ্গে’
স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “আমরা বলেছি দেশে যেন আর কোনো স্বৈরাচার জন্ম না নেয়। প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সীমিত থাকবে এবং ১০ বছরের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রীর আসনে থাকবেন না। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর কর্মকাণ্ড ব্যাহত করে এমন কোনো অর্গান বা বডি গঠন করা যাবে না। তাই আমরা এনসিসি ধারণার সঙ্গে একমত হইনি।”
তবে ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব বলে আশাবাদও প্রকাশ করেন তিনি।
‘সংখ্যানুপাতিক ভোট (পিআর) প্রসঙ্গে’
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, “যারা পিআর ব্যবস্থা চাচ্ছেন, তারা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে সে বিষয়ে কিছু বলেননি। পিআর কনসেপ্ট থাকলেও দেশে দেশে পদ্ধতি ভিন্ন। জনগণ, সুশীল সমাজ ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা হয়নি। এটা এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে।”
তিনি বলেন, “ইভিএম চালুর সময়ও প্রচুর প্রচারণা ও প্রশিক্ষণ হয়েছিল, কিন্তু কার্যকর হয়নি। পিআরও গোটা নির্বাচনী ব্যবস্থাকে বদলে দেয়। এ নিয়ে আমাদের সঙ্গে আলোচনা হয়নি। আমরা আলোচনায় রাজি, কিন্তু এখনই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সম্ভব নয়।”
নজরুল বলেন, “আমরাই সবচেয়ে বেশি সংস্কার করেছি। যুগান্তকারী যেসব সংস্কার হয়েছে, তা বিএনপিই করেছে। তখন অনেকেই সংস্কারের কথা বলেননি, অথচ আমরা পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব দিয়েছি। সেই বিএনপিকে অভিযুক্ত করা অন্যায়।”