alt

গাজীপুর : ৫০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি, শান্তিপূর্ণ ভোট

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩

গাজীপুর : ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক -সংবাদ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস পূর্বে বহুল প্রতীক্ষিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। ভোটার ও জনমনের সব সংশয়-শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তৃতীয়বারের এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় সবার মধ্যে স্বস্তির ভাব পরিলক্ষিত হয়। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ও ইভিএমজনিত ত্রুটি ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াটা স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন ভোটারা। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই প্রথমবারের মতো বিরতিহীন ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হয়। সকাল থেকে শুরু করে ভোট গ্রহণ শেষ পর্যন্ত নগরীর বেশ কিছু কেন্দ্র পরিদর্শন করে দেখা যায় কোন কোন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল লক্ষ করার মতো। তবে কোন কোন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল তুলনামূলকভাবে কম। পুরুষদের চেয়ে মহিলা ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশি। কোন কোন কেন্দ্রে মহিলা ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ভোটার তালিকার সঙ্গে ইভিএমের মিল না থাকায় অনেক কেন্দ্রেই ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন।

এদিকে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, যেভাবে ভোট হয়েছে তাতে তারা খুবই সন্তুষ্ট।

আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন সব প্রার্থীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, কত ভোট পড়েছে সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোন তথ্য এখনও তারা পাননি। তবে তাদের অনুমান যে ভোটার ৫০ শতাংশের কম হবে না।

ইভিএমে ভোট গ্রহণে ধীর গতির কারণে বিভিন্ন কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ভোট নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে ইভিএম ধীরগতির হতে পারে।

ভোটকেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের পোলিং এজেন্ট না থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোন খবর তারা পাননি।

সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু করার কথা থাকলেও বেশ কিছু কেন্দ্রে ইভিএম জটিলতায় ভোট গ্রহণে বিলম্ব ঘটে। নগরীর ৩৬ নং ওয়ার্ডের ২৬৫ গাছা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের শুরুতেই বিপত্তি দেখা দেয়। সাতটি বুথের নয়টি ইভিএমে ত্রুটি দেখা দেয়ায় প্রায় দেড় ঘণ্টা বিলম্বে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এ সময় লাইনে দাঁড়ানো অনেক নারী ভোটার ভোট না দিয়ে ফিরে যান। ৩ নং ওয়াডের্র ২০ হাতিমারা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইভিএমে ধীর গতির কারণে ভোট গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মানসুরা বেগম ও সীমা বেগম ভোট না দিয়ে কেন্দ্র থেকে চলে চান। ওই কেন্দ্রে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নুসরাত জাহান বলেন, ২ নং বুথে সোয়া পাঁচ ঘণ্টায় ৩৩২ ভোটের মধ্যে ৯৮টি ভোট গ্রহণ করা হয়। একজন ভোটারের ভোট দিতে ৫ থেকে ৭ মিনিট সময় লেগে যায়।

নগরীর সালনা এলাকায় নাগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রের প্রবেশমুখে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় একজনকে আহত রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়। তবে ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিল।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগপন্থি দুই কাউন্সিলর লাটিম প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম এবং করাত প্রতীকের প্রার্থী শাহীন আলমের সমর্থকদের মধ্যে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ইভিএমের বোতাম চাপ দেয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ধাওয়ার সময় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আহত হন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সময় ওই ব্যক্তি পড়ে গিয়ে সামান্য আঘাত পান।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খান ৫৭ নং ওয়ার্ডের টঙ্গী বাজারস্থ দারুস সালাম মাদ্রাসা কেন্দ্রে সকাল ৯টার দিকে ভোট দেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বলেন আমি বিশ^াস করি এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। ভোটাররা আমাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন এ আশা আমাদের সবার।

নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা বেগম ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নিয়ে নিজ এলাকায় কানাইয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ১০টার দিকে ভোট দিতে আসেন। জায়েদা বেগম নারী বুথে প্রথমে ভোট দেয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম পুরুষ বুথে ভোট দেন।

ভোট দেয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভবে ভোট গ্রহণ করা হবে এটা আমাদের দাবি। কেউ যেন কোথাও টেম্পারিং করতে না পারে। ভোটের মালিক জনগণ, কোন পেশিশক্তি যাতে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করে ভোট পাল্টে না দেয় তা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। আমাদের ভোটার ও সমর্থকদের বাধা দেয়া হচ্ছে, আমাদের এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দিচ্ছে এমন খবরও আমরা পাচ্ছি। জনগণ যদি সঠিক রায় দিতে পারে সঠিক ভোট দিতে পারলে তবে আমরা বিজয়ী হব। জায়েদা খাতুন বলেন, আমার কর্মী-সমর্থক ও এজেন্ডদের নিরাপত্তা দাবি করি। কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়। আমি নির্বাচিত হলে আমার ছেলের সহায়তা নিয়ে নাগরিকদের সেবায় আমি আত্মনিয়োগ করব।

একই কেন্দ্রে কানাইয়া দক্ষিণ পাড়ার চিত্তরঞ্জন শীল এক কিলোমিটার দূর থেকে অচল দু’পায়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ভোট দিতে আসেন। তিনি জানান, ইভিএমে ভোট দেয়া আমার কাছে খুব সহজ মনে হয়েছে। আমি আমার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছি। একই কেন্দ্রে ৮০ বছরের লোকমান ফকির ভোট দিয়ে এসে জানান, সহজে ভোট দিতে পেরে আমি সন্তুষ্ট। জাহাঙ্গীর আমাদের এলাকার সোনার টুকরা ছেলে। আমরা তাকে মেয়র পদে চাই। ভোটার সায়রা শারমিন নিপা প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত। সে ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানান।

সকাল ১১টার দিকে শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের প্রচন্ড ভিড়। সবাই ইভিএমে ভোট দিতে উদগ্রীব। এ কেন্দ্রে সংরক্ষিত মহিল কাউন্সিলর প্রার্থী খন্দকার নুরুন্নাহার জানান, খুব ধীর গতিতে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। সাড়ে তিন ঘণ্টায় মাত্র ৮৫টি ভোট নেয়া হয়েছে। এরপর যোগীতলা বদরে আলম এবতেদিয়া মাদ্রাসা ও পাশর্^বর্তী মোগরখাল প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে প্রচুর ভোটার লক্ষ করা যায় যাদের মধ্যে মহিলা ভোটারই বেশি। তবে মোগরখাল কেন্দ্রে সকাল পৌনে ১২টা পর্যন্ত ৩ হাজার ২৪৬ ভোটারের মধ্যে ৮৫৬ জনের ভোট নেয়া হয়েছে বলে প্রিজাইডিং অফিসার ডা. আলী আকবর জানান।

এরপর বাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আন্ন রানী সাহা নামে এক বিধবা মহিলা (৬০) হুইল চেয়ারে বসে ভোট দিতে এসেছেন। তিনি প্রথমবার ইভিএমে ভোট দিয়ে বেশ খুশি।

একই কেন্দ্রে ৩ নং বুথে শহীদ সরকার বলে এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন তিনি ইভিএমে মেয়র প্রার্থীকে ভোট দিতে পারলেও দুজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে ইভিএমের স্কিন সাদা হয়ে যাওয়ায় ভোট দিতে পারেননি। শিউলি বেগম (৩০) নামে একজন ভোটার বলেন এত সহজে সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারব এটা আমি ভাবতেই পারিনি।

স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হাতি প্রতীকের রনির অভিযোগ

হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সরকার শাহিনুর ইসলাম রনির প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মো. মাহবুবুর রহমান শাহীন রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে তিনি বলেন, সকালে তাদের পোলিং এজেন্টগণ স্ব স্ব কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে গেলে কেন্দ্রের বাইরে নৌকা প্রতীকের ব্যাজ ধারণকারী সরকার দলীয় লোকজন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আমাদের এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি বিভিন্ন কেন্দ্রের ভেতর দায়িত্বরত অবস্থায়ও আমাদের হাতি প্রতীকের পোলিং এজেন্টদেরকে মারধর করার অভিযোগ করেন। নির্বাচনের কয়েক দিন আগে থেকে পুলিশ দিয়ে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি ও গণগ্রেপ্তারের ঘটনা এবং পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করার হুমকি দেয়া হয়।

শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণে নিয়োজিত ১৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন বিভাগের ১৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত ছিলেন।

এ নির্বাচনে গাজীপুরসহ বিভিন্ন বিভাগের ৫ হাজার পুলিশ সদস্য, প্রতি কেন্দ্রে ২ জন করে মোট ৯৬০ জন আনসার ব্যাটালিয়ান, প্রতি কেন্দ্রে ১০ জন করে মোট ৪ হাজার ৮০০ জন গ্রাম পুলিশ, ৫৭টি ওয়ার্ডে ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে ১৭১ জন আনসার বাহিনীর সদস্য কাজ করেছেন।

এছাড়া, ৫৭ ওয়ার্ডে ৫৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৯ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত ছিলেন। ২০ প্লাটুন বিজিবি এবং র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ৩০টি টিম কাজ করেছ। গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কাশিমপুর থানায় ৪৭, কোনাবাড়ি থানায় ৪৩, বাসন থানায় ৪২, সদর থানায় ৯৬, গাছা থানায় ৫৭, পূবাইল থানায় ৩২, টঙ্গী পূর্ব থানায় ১১১ ও টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৫২টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এসব ভোটকেন্দ্রে ৩৫১টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ১২৯টি সাধারণ কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রে মালামাল পৌঁছানোর জন্য ৫টি জোনে ভাগ করা হয়েছিল।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিস সূত্রে জানা যায়, ৩৩০ বর্গকিলোমিটার গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য ৪৮০টি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। মোট ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে ৪৮০টি। এসব কেন্দ্রে মোট ভোট কক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি, এর মধ্যে ৪৯১টি অস্থায়ী ভোটকক্ষ থাকবে। এ নির্বাচনে সর্বশেষ হালনাগাদকৃত ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন, মহিলা ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন এবং হিজড়া ভোটার সংখ্যা ১৮ জন। এ নির্বাচনে ৪৮০ জন প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার থাকবে ৩ হাজার ৪৯৭ জন, পোলিং অফিসার ৬ হাজার ৯৮৪ জনসহ মোট ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা থাকবে প্রায় ১২ হাজার।

ছবি

৯ রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা , জাতীয় সনদ ও গণভোটে দূরত্ব ঘোচানোর উদ্যোগ

ছবি

৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার প্রস্তুতিতে এনসিপি, জোট না হলে সরাসরি লড়াই

ছবি

পদ ছেড়ে ‘ভোট করবেন’ অ্যাটর্নি জেনারেল, বিএনপির মনোনয়ন নিয়ে ‘আশাবাদী’

ছবি

বিএনপিতে যোগ দিলেন শহীদ মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ

মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতাকর্মীদের বিক্ষোভ

ছবি

জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সক্রিয় ভূমিকা ও পৃথক দিনে গণভোট চায় জামায়াতে ইসলামী

নীলফামারী ১ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা না করায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া

ছবি

বরিশাল বিভাগে একমাত্র নারী প্রার্থী ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো

ছবি

শেষ নির্বাচন ঘোষণা দিয়ে আবেগঘন বার্তা দিলেন বিএনপি মহাসচিব

ছবি

প্রার্থী ঘোষণা: সিলেট বিএনপিতে অস্থিরতা

ছবি

চাঁদপুরে জাতীয় পার্টি ও জাতীয় জাসদ থেকে শতাধিক নেতাকর্মীর এনসিপিতে যোগদান

ছবি

বিএনপির মনোনয়ন ঘোষণার পর কোথাও আনন্দ, কোথাও বিক্ষোভ

ছবি

জামায়াত ‘যথাসময়ে’ চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা দেবে: শফিকুর রহমান

ছবি

জাতিসংঘকে নির্বাচনি সহায়তা স্থগিতের আহ্বান জানিয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ

ছবি

মাদারীপুর-১ আসনে কামাল জামান মোল্লার মনোনয়ন স্থগিত করেছে বিএনপি

ছবি

দিনাজপুর-৬ আসনে বিএনপির প্রার্থী ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন

ছবি

বরগুনার দু’টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন নজরুল ও মনি

ছবি

কুড়িগ্রামে ৪টি আসনের বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস

ছবি

কুড়িগ্রামে ৪টি আসনের বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, নেতাকর্মীদের মাঝে উচ্ছ্বাস

ছবি

নাসিরনগর বিএনপি প্রার্থী এমএ হান্নান

ছবি

সিরাজগঞ্জে বিএনপি ও জামায়াতের দলীয় মনোনায়ন পেয়ে প্রচারণায় নেমেছে

ছবি

কুড়িগ্রাম-৪ আসনে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থী আপন দুই ভাইকে নিয়ে আলোচনার ঝড়

ছবি

রাজবাড়ী-১ আসনে বিএনপির প্রার্থী আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম

ছবি

নরসিংদীর ৪টি আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

ছবি

শেরপুর থেকে বিএনপির মনোনয়ন পেলেন যারা

ছবি

জয়পুরহাটে বিএনপির দুই প্রার্থী মাসুদ রানা ও আব্দুল বারী

ছবি

সিলেট বিএনপির প্রার্থী লুনা

ছবি

কিশোরগঞ্জের ৪টি আসনের বিএনপির প্রার্থীতা ঘোষণা

ছবি

কবিরহাটে ট্রাকের চাপায় অটোরিকশার চালকসহ ছয়জন নিহত

ছবি

মেহেরপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও সড়ক অবরোধ

ছবি

এই নির্বাচন হয়তো আমার জীবনের শেষ” : মির্জা ফখরুল

ছবি

২৩৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণা, তিন আসনে খালেদা জিয়া, একটিতে তারেক

ছবি

তিন দলকে নিবন্ধন দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন

ছবি

গণভোট নিয়ে সংলাপ চায় জামায়াতসহ ৮ দল, ইউনূসকে রেফারি হওয়ার প্রস্তাব বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি

ছবি

সীতাকুণ্ডে মনোনয়নবঞ্চিত বিএনপি নেতার সমর্থকদের মহাসড়ক অবরোধ

ছবি

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন: ৫ শতাংশ আসনে নারী প্রার্থী দিচ্ছে বিএনপি

tab

গাজীপুর : ৫০ শতাংশ ভোটার উপস্থিতি, শান্তিপূর্ণ ভোট

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

গাজীপুর : ভোটকেন্দ্রে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল সন্তোষজনক -সংবাদ

বৃহস্পতিবার, ২৫ মে ২০২৩

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস পূর্বে বহুল প্রতীক্ষিত গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। ভোটার ও জনমনের সব সংশয়-শঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে বৃহস্পতিবার (২৫ মে) গাজীপুর সিটি করপোরেশনের তৃতীয়বারের এ নির্বাচন সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ায় সবার মধ্যে স্বস্তির ভাব পরিলক্ষিত হয়। কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ও ইভিএমজনিত ত্রুটি ছাড়া শান্তিপূর্ণভাবে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়াটা স্বস্তিদায়ক বলে মনে করছেন ভোটারা। সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এই প্রথমবারের মতো বিরতিহীন ইভিএমের মাধ্যমে ভোট গ্রহণ করা হয়। সকাল থেকে শুরু করে ভোট গ্রহণ শেষ পর্যন্ত নগরীর বেশ কিছু কেন্দ্র পরিদর্শন করে দেখা যায় কোন কোন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল লক্ষ করার মতো। তবে কোন কোন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল তুলনামূলকভাবে কম। পুরুষদের চেয়ে মহিলা ভোটারদের উপস্থিতি ছিল বেশি। কোন কোন কেন্দ্রে মহিলা ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে। কোন কোন ক্ষেত্রে ভোটার তালিকার সঙ্গে ইভিএমের মিল না থাকায় অনেক কেন্দ্রেই ভোটাররা ভোট দিতে পারেননি বলে অভিযোগ করেছেন।

এদিকে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে সন্তুষ্ট নির্বাচন কমিশন। বৃহস্পতিবার বিকেলে ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেন, যেভাবে ভোট হয়েছে তাতে তারা খুবই সন্তুষ্ট।

আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে কার্যালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন সব প্রার্থীর কাছে গ্রহণযোগ্য হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে আলমগীর বলেন, কত ভোট পড়েছে সে ব্যাপারে আনুষ্ঠানিক কোন তথ্য এখনও তারা পাননি। তবে তাদের অনুমান যে ভোটার ৫০ শতাংশের কম হবে না।

ইভিএমে ভোট গ্রহণে ধীর গতির কারণে বিভিন্ন কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ের দেড় ঘণ্টা পর বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত ভোট নেয়ার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছু ক্ষেত্রে ইভিএম ধীরগতির হতে পারে।

ভোটকেন্দ্রে স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুনের পোলিং এজেন্ট না থাকার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের কোন খবর তারা পাননি।

সকাল ৮টা থেকে ভোট গ্রহণ শুরু করার কথা থাকলেও বেশ কিছু কেন্দ্রে ইভিএম জটিলতায় ভোট গ্রহণে বিলম্ব ঘটে। নগরীর ৩৬ নং ওয়ার্ডের ২৬৫ গাছা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট গ্রহণের শুরুতেই বিপত্তি দেখা দেয়। সাতটি বুথের নয়টি ইভিএমে ত্রুটি দেখা দেয়ায় প্রায় দেড় ঘণ্টা বিলম্বে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। এ সময় লাইনে দাঁড়ানো অনেক নারী ভোটার ভোট না দিয়ে ফিরে যান। ৩ নং ওয়াডের্র ২০ হাতিমারা উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে ইভিএমে ধীর গতির কারণে ভোট গ্রহণ বাধাগ্রস্ত হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে মানসুরা বেগম ও সীমা বেগম ভোট না দিয়ে কেন্দ্র থেকে চলে চান। ওই কেন্দ্রে সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নুসরাত জাহান বলেন, ২ নং বুথে সোয়া পাঁচ ঘণ্টায় ৩৩২ ভোটের মধ্যে ৯৮টি ভোট গ্রহণ করা হয়। একজন ভোটারের ভোট দিতে ৫ থেকে ৭ মিনিট সময় লেগে যায়।

নগরীর সালনা এলাকায় নাগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুপুর সাড়ে ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত ওই কেন্দ্রের প্রবেশমুখে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় একজনকে আহত রক্তাক্ত অবস্থায় দেখা যায়। তবে ওই কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ ছিল স্বাভাবিক। কিন্তু থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিল।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও স্থানীয়রা জানান, আওয়ামী লীগপন্থি দুই কাউন্সিলর লাটিম প্রতীকের প্রার্থী সাইফুল ইসলাম এবং করাত প্রতীকের প্রার্থী শাহীন আলমের সমর্থকদের মধ্যে এ ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। ইভিএমের বোতাম চাপ দেয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। ধাওয়ার সময় অজ্ঞাত এক ব্যক্তি আহত হন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সময় ওই ব্যক্তি পড়ে গিয়ে সামান্য আঘাত পান।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী আজমত উল্লা খান ৫৭ নং ওয়ার্ডের টঙ্গী বাজারস্থ দারুস সালাম মাদ্রাসা কেন্দ্রে সকাল ৯টার দিকে ভোট দেন। এরপর তিনি সাংবাদিকদের বলেন আমি বিশ^াস করি এ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হবে। ভোটাররা আমাকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিয়ে বিপুল ভোটে বিজয়ী করবেন এ আশা আমাদের সবার।

নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা বেগম ছেলে জাহাঙ্গীর আলমকে সঙ্গে নিয়ে নিজ এলাকায় কানাইয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল ১০টার দিকে ভোট দিতে আসেন। জায়েদা বেগম নারী বুথে প্রথমে ভোট দেয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম পুরুষ বুথে ভোট দেন।

ভোট দেয়ার পর জাহাঙ্গীর আলম সাংবাদিকদের বলেন, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণভবে ভোট গ্রহণ করা হবে এটা আমাদের দাবি। কেউ যেন কোথাও টেম্পারিং করতে না পারে। ভোটের মালিক জনগণ, কোন পেশিশক্তি যাতে ভোটের পরিবেশ নষ্ট করে ভোট পাল্টে না দেয় তা দেখার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। আমাদের ভোটার ও সমর্থকদের বাধা দেয়া হচ্ছে, আমাদের এজেন্টদের বুথ থেকে বের করে দিচ্ছে এমন খবরও আমরা পাচ্ছি। জনগণ যদি সঠিক রায় দিতে পারে সঠিক ভোট দিতে পারলে তবে আমরা বিজয়ী হব। জায়েদা খাতুন বলেন, আমার কর্মী-সমর্থক ও এজেন্ডদের নিরাপত্তা দাবি করি। কেউ যাতে হয়রানির শিকার না হয়। আমি নির্বাচিত হলে আমার ছেলের সহায়তা নিয়ে নাগরিকদের সেবায় আমি আত্মনিয়োগ করব।

একই কেন্দ্রে কানাইয়া দক্ষিণ পাড়ার চিত্তরঞ্জন শীল এক কিলোমিটার দূর থেকে অচল দু’পায়ে খোঁড়াতে খোঁড়াতে ভোট দিতে আসেন। তিনি জানান, ইভিএমে ভোট দেয়া আমার কাছে খুব সহজ মনে হয়েছে। আমি আমার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পেরেছি। একই কেন্দ্রে ৮০ বছরের লোকমান ফকির ভোট দিয়ে এসে জানান, সহজে ভোট দিতে পেরে আমি সন্তুষ্ট। জাহাঙ্গীর আমাদের এলাকার সোনার টুকরা ছেলে। আমরা তাকে মেয়র পদে চাই। ভোটার সায়রা শারমিন নিপা প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত। সে ভোট অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ হয়েছে বলে জানান।

সকাল ১১টার দিকে শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় ভোটারদের প্রচন্ড ভিড়। সবাই ইভিএমে ভোট দিতে উদগ্রীব। এ কেন্দ্রে সংরক্ষিত মহিল কাউন্সিলর প্রার্থী খন্দকার নুরুন্নাহার জানান, খুব ধীর গতিতে ইভিএমে ভোট গ্রহণ করা হচ্ছে। সাড়ে তিন ঘণ্টায় মাত্র ৮৫টি ভোট নেয়া হয়েছে। এরপর যোগীতলা বদরে আলম এবতেদিয়া মাদ্রাসা ও পাশর্^বর্তী মোগরখাল প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে প্রচুর ভোটার লক্ষ করা যায় যাদের মধ্যে মহিলা ভোটারই বেশি। তবে মোগরখাল কেন্দ্রে সকাল পৌনে ১২টা পর্যন্ত ৩ হাজার ২৪৬ ভোটারের মধ্যে ৮৫৬ জনের ভোট নেয়া হয়েছে বলে প্রিজাইডিং অফিসার ডা. আলী আকবর জানান।

এরপর বাসন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, আন্ন রানী সাহা নামে এক বিধবা মহিলা (৬০) হুইল চেয়ারে বসে ভোট দিতে এসেছেন। তিনি প্রথমবার ইভিএমে ভোট দিয়ে বেশ খুশি।

একই কেন্দ্রে ৩ নং বুথে শহীদ সরকার বলে এক ব্যবসায়ী অভিযোগ করেন তিনি ইভিএমে মেয়র প্রার্থীকে ভোট দিতে পারলেও দুজন কাউন্সিলর প্রার্থীকে ইভিএমের স্কিন সাদা হয়ে যাওয়ায় ভোট দিতে পারেননি। শিউলি বেগম (৩০) নামে একজন ভোটার বলেন এত সহজে সুন্দরভাবে ভোট দিতে পারব এটা আমি ভাবতেই পারিনি।

স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী হাতি প্রতীকের রনির অভিযোগ

হাতি প্রতীকের স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সরকার শাহিনুর ইসলাম রনির প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট মো. মাহবুবুর রহমান শাহীন রিটার্নিং অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগে তিনি বলেন, সকালে তাদের পোলিং এজেন্টগণ স্ব স্ব কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করতে গেলে কেন্দ্রের বাইরে নৌকা প্রতীকের ব্যাজ ধারণকারী সরকার দলীয় লোকজন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে আমাদের এজেন্টদেরকে কেন্দ্র থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এমনকি বিভিন্ন কেন্দ্রের ভেতর দায়িত্বরত অবস্থায়ও আমাদের হাতি প্রতীকের পোলিং এজেন্টদেরকে মারধর করার অভিযোগ করেন। নির্বাচনের কয়েক দিন আগে থেকে পুলিশ দিয়ে আমাদের কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে বাড়িতে তল্লাশি ও গণগ্রেপ্তারের ঘটনা এবং পোলিং এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করার হুমকি দেয়া হয়।

শান্তিপূর্ণ ভোট গ্রহণে নিয়োজিত ১৩ হাজার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন বিভাগের ১৩ হাজার সদস্য নিয়োজিত ছিলেন।

এ নির্বাচনে গাজীপুরসহ বিভিন্ন বিভাগের ৫ হাজার পুলিশ সদস্য, প্রতি কেন্দ্রে ২ জন করে মোট ৯৬০ জন আনসার ব্যাটালিয়ান, প্রতি কেন্দ্রে ১০ জন করে মোট ৪ হাজার ৮০০ জন গ্রাম পুলিশ, ৫৭টি ওয়ার্ডে ম্যাজিস্ট্রেটদের সঙ্গে ১৭১ জন আনসার বাহিনীর সদস্য কাজ করেছেন।

এছাড়া, ৫৭ ওয়ার্ডে ৫৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট ও ১৯ জন জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত ছিলেন। ২০ প্লাটুন বিজিবি এবং র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের ৩০টি টিম কাজ করেছ। গাজীপুর মেট্রোপলিটনের কাশিমপুর থানায় ৪৭, কোনাবাড়ি থানায় ৪৩, বাসন থানায় ৪২, সদর থানায় ৯৬, গাছা থানায় ৫৭, পূবাইল থানায় ৩২, টঙ্গী পূর্ব থানায় ১১১ ও টঙ্গী পশ্চিম থানায় ৫২টি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করা হয়। এসব ভোটকেন্দ্রে ৩৫১টি গুরুত্বপূর্ণ এবং ১২৯টি সাধারণ কেন্দ্র হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। ৪৮০টি ভোটকেন্দ্রে মালামাল পৌঁছানোর জন্য ৫টি জোনে ভাগ করা হয়েছিল।

গাজীপুর সিটি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিস সূত্রে জানা যায়, ৩৩০ বর্গকিলোমিটার গাজীপুর সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ড এবং ১৯টি সংরক্ষিত মহিলা আসনের জন্য ৪৮০টি ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। মোট ভোটকেন্দ্র করা হয়েছে ৪৮০টি। এসব কেন্দ্রে মোট ভোট কক্ষ ৩ হাজার ৪৯৭টি, এর মধ্যে ৪৯১টি অস্থায়ী ভোটকক্ষ থাকবে। এ নির্বাচনে সর্বশেষ হালনাগাদকৃত ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৪৭৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৯২ হাজার ৭৬২ জন, মহিলা ভোটার ৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৯৬ জন এবং হিজড়া ভোটার সংখ্যা ১৮ জন। এ নির্বাচনে ৪৮০ জন প্রিজাইডিং অফিসার, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার থাকবে ৩ হাজার ৪৯৭ জন, পোলিং অফিসার ৬ হাজার ৯৮৪ জনসহ মোট ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা থাকবে প্রায় ১২ হাজার।

back to top