১৫ হাজার রান ও অসংখ্য মাইলফলকের পথচলায় ইতি টানলেন দেশের সফলতম ওপেনার
তামিম ইকবালের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলো। বাংলাদেশের জার্সিতে তাকে আর কখনও দেখা যাবে না। শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদায়ের এই ঘোষণা দেন দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ওপেনার।
দীর্ঘ সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে থাকা তামিমের ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে সামনে রেখে তাকে দলে ফেরানোর জন্য জাতীয় নির্বাচক কমিটি ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বেশ কয়েক দফা আলোচনা চালান। তবে অবশেষে নিজের মনের কথা শুনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন তামিম।
বিদায়ী বার্তায় তামিম জানান, “অনেক দিন ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে আছি। সেই দূরত্ব আর ঘুচবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার অধ্যায় শেষ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় আসরের আগে আমি চাই না আমাকে ঘিরে অযথা আলোচনা হোক এবং দলের মনোযোগ বিঘ্নিত হোক।”
তিন সংস্করণ মিলিয়ে তামিম খেলেছেন ৩৮৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। করেছেন ১৫,৪২৯ রান। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে সফল। তার ধারাবাহিক পারফরম্যান্স বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে অনেক স্মরণীয় মুহূর্তের জন্ম দিয়েছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে জাতীয় দলের হয়ে শেষবার মাঠে নেমেছিলেন তিনি। এরপর বিশ্বকাপের দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ পর্বের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তামিম।
টেস্ট ক্রিকেটে তামিম শেষ খেলেছেন ২০২৩ সালের এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। আর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিয়েছিলেন ২০২২ সালের জুলাইয়ে। সবশেষ তিনি শুধু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও বিপিএলে খেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন।
বিদায়ের ঘোষণায় তামিম উল্লেখ করেন, “অনেক আগেই নিজেকে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছি। কিন্তু অযথা আমাকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যাওয়া বা অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত একজন ক্রিকেটারের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। আমি নিজেকে যথেষ্ট সময় দিয়েছি এবং এখন মনে হচ্ছে, সরে যাওয়ার উপযুক্ত সময় এসে গেছে।”
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও নির্বাচক কমিটির সঙ্গে তার সাম্প্রতিক আলোচনার কথাও বিদায়ী বার্তায় তুলে ধরেন তামিম। তিনি বলেন, “শান্ত আন্তরিকভাবে আমাকে ফেরার জন্য অনুরোধ করেছে। নির্বাচক কমিটিও আমাকে এখনও দলের জন্য উপযুক্ত মনে করে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তবে আমি নিজের মনের কথা শুনেছি।”
বিশ্বকাপের আগের অভিজ্ঞতা তাকে মানসিকভাবে বেশ প্রভাবিত করেছে বলে জানান তামিম। তার মতে, দলের বাইরে যাওয়ার কারণ ক্রিকেটীয় নয়, বরং অন্য বিষয়। তারপরও ভক্তদের ভালোবাসা ও নিজের ছেলের ইচ্ছার কথা ভেবে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত নিজের সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন।
“২০২৩ বিশ্বকাপের আগে যা হয়েছে, তা আমার জন্য বড় ধাক্কা ছিল। এরপরও ভক্তদের ভালোবাসা পেয়েছি। আমার ছেলেও বারবার মাকে বলেছে, বাবাকে আবার দেশের জার্সিতে খেলতে দেখতে চায়। তবে সবকিছু ভেবে আমি মনে করেছি, এই সিদ্ধান্তই সঠিক। ভক্তদের হতাশ করার জন্য দুঃখিত। আমার ছেলেকে বলেছি, ‘তুমি যেদিন বড় হবে, সেদিন বাবাকে বুঝতে পারবে।’”
১৫ হাজারের বেশি রান, অসংখ্য রেকর্ড ও গৌরবময় মুহূর্ত নিয়ে তামিম ইকবালের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অধ্যায় শেষ হলো। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে তার নাম চিরকাল উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।
১৫ হাজার রান ও অসংখ্য মাইলফলকের পথচলায় ইতি টানলেন দেশের সফলতম ওপেনার
শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫
তামিম ইকবালের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অধ্যায় আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলো। বাংলাদেশের জার্সিতে তাকে আর কখনও দেখা যাবে না। শুক্রবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদায়ের এই ঘোষণা দেন দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা এই ওপেনার।
দীর্ঘ সময় ধরে জাতীয় দলের বাইরে থাকা তামিমের ফেরার সম্ভাবনা নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা হয়েছে। সম্প্রতি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিকে সামনে রেখে তাকে দলে ফেরানোর জন্য জাতীয় নির্বাচক কমিটি ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বেশ কয়েক দফা আলোচনা চালান। তবে অবশেষে নিজের মনের কথা শুনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেন তামিম।
বিদায়ী বার্তায় তামিম জানান, “অনেক দিন ধরেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে দূরে আছি। সেই দূরত্ব আর ঘুচবে না। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আমার অধ্যায় শেষ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির মতো বড় আসরের আগে আমি চাই না আমাকে ঘিরে অযথা আলোচনা হোক এবং দলের মনোযোগ বিঘ্নিত হোক।”
তিন সংস্করণ মিলিয়ে তামিম খেলেছেন ৩৮৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ। করেছেন ১৫,৪২৯ রান। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে তিনিই সবচেয়ে সফল। তার ধারাবাহিক পারফরম্যান্স বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে অনেক স্মরণীয় মুহূর্তের জন্ম দিয়েছে। ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে জাতীয় দলের হয়ে শেষবার মাঠে নেমেছিলেন তিনি। এরপর বিশ্বকাপের দল থেকে নিজেকে সরিয়ে নেওয়ার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ পর্বের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তামিম।
টেস্ট ক্রিকেটে তামিম শেষ খেলেছেন ২০২৩ সালের এপ্রিলে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। আর আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি থেকে বিদায় নিয়েছিলেন ২০২২ সালের জুলাইয়ে। সবশেষ তিনি শুধু ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ ও বিপিএলে খেলার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিলেন।
বিদায়ের ঘোষণায় তামিম উল্লেখ করেন, “অনেক আগেই নিজেকে বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে সরিয়ে নিয়েছি। কিন্তু অযথা আমাকে নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলা চালিয়ে যাওয়া বা অবসর নেওয়ার সিদ্ধান্ত একজন ক্রিকেটারের একান্ত ব্যক্তিগত বিষয়। আমি নিজেকে যথেষ্ট সময় দিয়েছি এবং এখন মনে হচ্ছে, সরে যাওয়ার উপযুক্ত সময় এসে গেছে।”
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও নির্বাচক কমিটির সঙ্গে তার সাম্প্রতিক আলোচনার কথাও বিদায়ী বার্তায় তুলে ধরেন তামিম। তিনি বলেন, “শান্ত আন্তরিকভাবে আমাকে ফেরার জন্য অনুরোধ করেছে। নির্বাচক কমিটিও আমাকে এখনও দলের জন্য উপযুক্ত মনে করে। তাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। তবে আমি নিজের মনের কথা শুনেছি।”
বিশ্বকাপের আগের অভিজ্ঞতা তাকে মানসিকভাবে বেশ প্রভাবিত করেছে বলে জানান তামিম। তার মতে, দলের বাইরে যাওয়ার কারণ ক্রিকেটীয় নয়, বরং অন্য বিষয়। তারপরও ভক্তদের ভালোবাসা ও নিজের ছেলের ইচ্ছার কথা ভেবে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করেছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত নিজের সিদ্ধান্তেই অটল থাকেন।
“২০২৩ বিশ্বকাপের আগে যা হয়েছে, তা আমার জন্য বড় ধাক্কা ছিল। এরপরও ভক্তদের ভালোবাসা পেয়েছি। আমার ছেলেও বারবার মাকে বলেছে, বাবাকে আবার দেশের জার্সিতে খেলতে দেখতে চায়। তবে সবকিছু ভেবে আমি মনে করেছি, এই সিদ্ধান্তই সঠিক। ভক্তদের হতাশ করার জন্য দুঃখিত। আমার ছেলেকে বলেছি, ‘তুমি যেদিন বড় হবে, সেদিন বাবাকে বুঝতে পারবে।’”
১৫ হাজারের বেশি রান, অসংখ্য রেকর্ড ও গৌরবময় মুহূর্ত নিয়ে তামিম ইকবালের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট অধ্যায় শেষ হলো। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে তার নাম চিরকাল উজ্জ্বল হয়ে থাকবে।