বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ২৫ বছর হচ্ছে কদিন পরই। নানা সময়ে বিচ্ছিন্নভাবে নানা সিরিজে দারুণ কিছু সাফল্য পেয়েছে তারা। কিন্তু কখনও ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলে কাক্সিক্ষত উচ্চতায় পৌঁছতে পারেনি। এত দীর্ঘ সময়েও সেভাবে গড়ে ওঠেনি কাক্সিক্ষত টেস্ট সংস্কৃতি।
টি-২০ উত্থানের বর্তমান সময়েও বিশ্বের শক্তিধর দলগুলো বাড়তি গুরুত্ব দেয় টেস্ট ক্রিকেটে। প্রায় সব দেশেই সাদা পোশাকের ক্রিকেটের জন্য রয়েছে আলাদা কাঠামো। টেস্ট ক্রিকেটারদের জন্যও থাকে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা।
ধীরে ধীরে এখন সেই পথে হাঁটা শুরু করেছে বাংলাদেশ দলও। এই সংস্করণকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে বাড়ানো হয়েছে টেস্ট বিশেষজ্ঞদের পারিশ্রমিক। এছাড়া ঘরের মাঠে স্পিন নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে শোনা যাচ্ছে স্পোর্টিং উইকেটে খেলার বার্তা।
টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার অভিযানে নতুন করে যাত্রা শুরুর জন্য সবচেয়ে কাক্সিক্ষত ও আদর্শ প্রতিপক্ষই পেয়েছে বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ শুরু হবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ।
ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে টেস্ট সংস্কৃতি না থাকায় হতাশা প্রকাশ করে সামনের সময়ের জন্য আশার কথা শোনান শান্ত।
‘(টেস্ট সংস্কৃতি) খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, এত বছর টেস্ট খেলার পরে যখন টেস্ট সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের কথা বলতে হয়, এটা অবশ্যই দুঃখজনক। তবে আমার মনে হয়, যদি গত বছর থেকে শুরু করি, আমরা ৪ ম্যাচ জিতলাম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ১২ টেস্টের মধ্যে। ৪টা ম্যাচই বড় দলের বিপক্ষে।’
এই সিরিজ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে কাজ শুরু করবেন ফিল সিমন্স। কোচের নির্দিষ্ট পরিকল্পনার সঙ্গে নিজেদের চিন্তাভাবনা মিলিয়ে চলতি বছর টেস্ট ক্রিকেটে নতুন কিছু করার আশা বাংলাদেশ অধিনায়কের।
‘কীভাবে টেস্ট দল একটা সংস্কৃতি তৈরি করতে পারি, কীভাবে খেলতে চাই, এই বিষয়ে গত বছর থেকেই কথাবার্তা হচ্ছিল। পাশাপাশি কোচের একটা পরিকল্পনা আছে। সে কীভাবে দলকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে চায়, এর মধ্যে ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আমরা যারা খেলছি তাদেরও ইনপুট তো ছিলই। আশা করব যে, এ বছর যেই পাঁচ-ছয়টা টেস্ট ম্যাচ আছে, নতুন কিছু দেখতে পাবেন ইনশাল্লাহ।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজ দিয়েই নতুন কিছু করার যাত্রা শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন শান্ত। সেই লক্ষ্য পূরণে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে ফেলার কথাও বলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
‘অধিনায়ক হিসেবে যেটা চিন্তা করি, আমরা প্রত্যেকটা ম্যাচ যেন জেতার জন্য খেলি। এখানে কোনো স্বার্থপর ক্রিকেট আসলে খেলার ইচ্ছা কারও নেই। আমি যেটা একটু আগেও বললাম যে, নতুন কিছু আসলে আমরা চেষ্টা করব এবং এটা শুরু হবে আগামীকাল থেকে।’
‘ওটার জন্য যে ধরনের মন-মানসিকতা, প্রস্তুতি থাকা দরকার, ক্রিকেটাররা তা নিচ্ছে। আশা করব, যারা ম্যানেজমেন্টে আছেন বা ক্রিকেট বোর্ডে আছেন তারাও আমাদের এই বিষয়গুলোতে সহযোগিতা করবেন।’
টেস্ট ক্রিকেটে ১৫০টি ম্যাচ খেলে ফেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এর ছয় ভাগের এক ভাগ ম্যাচও জিততে পারেনি। সব মিলিয়ে তাদের জয় মাত্র ২২টি। ঘরের মাঠে ৭৯ ম্যাচে তারা জিতেছে ১৩টি। আর দেশের বাইরে ৭১ ম্যাচে জয় ৯টি।
এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা একদম ভালো নয়। তবু গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাঠে হোয়াইটওয়াশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে টেস্ট জিতে ভালো কিছুর আভাস দিয়েছে শান্তর দল।
বিগত বছরগুলোর ব্যর্থতা পেছনে ফেলে সামনের সময়ে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার ব্যাপারে আশাবাদী ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
‘আমি বিশ্বাস করি যে, যেহেতু আমাদের গত ২০-২২ বছরে টেস্ট ক্রিকেট একই রকম ছিল, খুব বেশি উন্নতি হয়নি। তাই এই জায়গাটাতে নিশ্চয়ই আমাদের কিছু পরিবর্তনের দরকার আছে। ওই পরিবর্তনটা করার চিন্তা করছি। আশা করব, এই পরিবর্তনটা আমাদের টেস্ট ক্রিকেটে কাজে লাগবে।’
টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য পরিবর্তন আনার জন্য বিসিবির কাছ থেকে যথাযথ সুযোগ-সুবিধার দাবিও জানিয়ে রাখলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
‘আমার মনে হয়, সুবিধাদিগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আমরা যখন বাইরে খেলি তখন উইকেট ভিন্ন থাকে। তাই উইকেট একটা বড় বিষয়। আমরা যেন ভালো উইকেটে অনুশীলন করতে পারি বা যে ধরনের উইকেটে আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলব, ওই ধরনের উইকেট যেন ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম শ্রেণীর ম্যাচেও হয়।’
‘অবশ্যই কখনও কখনও কিছু ক্রিকেটার ব্যর্থ হবে। তারপরে যেন ওই ক্রিকেটারকে সমর্থন করা হয়। এই বিষয়গুলো নিয়ে ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে টুকটাক আলাপ-আলোচনা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি যে বোর্ড ওই ক্রিকেটারদের পাশে থাকবেন। কোনো কিছু পরিবর্তন হলে শুরুতেই ফল পাওয়াটা কঠিন। তাই কোনো সময় যদি কোনো ক্রিকেটার পারফর্ম না করে, তবু আমি বিশ্বাস করি যে ওই ক্রিকেটারকে যেন সবাই মিলে সাহস দেই।’
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫
বাংলাদেশের টেস্ট মর্যাদা পাওয়ার ২৫ বছর হচ্ছে কদিন পরই। নানা সময়ে বিচ্ছিন্নভাবে নানা সিরিজে দারুণ কিছু সাফল্য পেয়েছে তারা। কিন্তু কখনও ধারাবাহিক ক্রিকেট খেলে কাক্সিক্ষত উচ্চতায় পৌঁছতে পারেনি। এত দীর্ঘ সময়েও সেভাবে গড়ে ওঠেনি কাক্সিক্ষত টেস্ট সংস্কৃতি।
টি-২০ উত্থানের বর্তমান সময়েও বিশ্বের শক্তিধর দলগুলো বাড়তি গুরুত্ব দেয় টেস্ট ক্রিকেটে। প্রায় সব দেশেই সাদা পোশাকের ক্রিকেটের জন্য রয়েছে আলাদা কাঠামো। টেস্ট ক্রিকেটারদের জন্যও থাকে বাড়তি সুযোগ-সুবিধা।
ধীরে ধীরে এখন সেই পথে হাঁটা শুরু করেছে বাংলাদেশ দলও। এই সংস্করণকে বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে বাড়ানো হয়েছে টেস্ট বিশেষজ্ঞদের পারিশ্রমিক। এছাড়া ঘরের মাঠে স্পিন নির্ভরতা থেকে বেরিয়ে শোনা যাচ্ছে স্পোর্টিং উইকেটে খেলার বার্তা।
টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার অভিযানে নতুন করে যাত্রা শুরুর জন্য সবচেয়ে কাক্সিক্ষত ও আদর্শ প্রতিপক্ষই পেয়েছে বাংলাদেশ। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ শুরু হবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ।
ম্যাচের আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে টেস্ট সংস্কৃতি না থাকায় হতাশা প্রকাশ করে সামনের সময়ের জন্য আশার কথা শোনান শান্ত।
‘(টেস্ট সংস্কৃতি) খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমার মনে হয়, এত বছর টেস্ট খেলার পরে যখন টেস্ট সংস্কৃতি নিয়ে আমাদের কথা বলতে হয়, এটা অবশ্যই দুঃখজনক। তবে আমার মনে হয়, যদি গত বছর থেকে শুরু করি, আমরা ৪ ম্যাচ জিতলাম টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ১২ টেস্টের মধ্যে। ৪টা ম্যাচই বড় দলের বিপক্ষে।’
এই সিরিজ দিয়ে পূর্ণাঙ্গ মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধান কোচ হিসেবে কাজ শুরু করবেন ফিল সিমন্স। কোচের নির্দিষ্ট পরিকল্পনার সঙ্গে নিজেদের চিন্তাভাবনা মিলিয়ে চলতি বছর টেস্ট ক্রিকেটে নতুন কিছু করার আশা বাংলাদেশ অধিনায়কের।
‘কীভাবে টেস্ট দল একটা সংস্কৃতি তৈরি করতে পারি, কীভাবে খেলতে চাই, এই বিষয়ে গত বছর থেকেই কথাবার্তা হচ্ছিল। পাশাপাশি কোচের একটা পরিকল্পনা আছে। সে কীভাবে দলকে সামনের দিকে নিয়ে যেতে চায়, এর মধ্যে ক্রিকেটারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। আমরা যারা খেলছি তাদেরও ইনপুট তো ছিলই। আশা করব যে, এ বছর যেই পাঁচ-ছয়টা টেস্ট ম্যাচ আছে, নতুন কিছু দেখতে পাবেন ইনশাল্লাহ।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এই সিরিজ দিয়েই নতুন কিছু করার যাত্রা শুরুর ঘোষণা দিয়েছেন শান্ত। সেই লক্ষ্য পূরণে যথাযথ প্রস্তুতি নিয়ে ফেলার কথাও বলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
‘অধিনায়ক হিসেবে যেটা চিন্তা করি, আমরা প্রত্যেকটা ম্যাচ যেন জেতার জন্য খেলি। এখানে কোনো স্বার্থপর ক্রিকেট আসলে খেলার ইচ্ছা কারও নেই। আমি যেটা একটু আগেও বললাম যে, নতুন কিছু আসলে আমরা চেষ্টা করব এবং এটা শুরু হবে আগামীকাল থেকে।’
‘ওটার জন্য যে ধরনের মন-মানসিকতা, প্রস্তুতি থাকা দরকার, ক্রিকেটাররা তা নিচ্ছে। আশা করব, যারা ম্যানেজমেন্টে আছেন বা ক্রিকেট বোর্ডে আছেন তারাও আমাদের এই বিষয়গুলোতে সহযোগিতা করবেন।’
টেস্ট ক্রিকেটে ১৫০টি ম্যাচ খেলে ফেলেছে বাংলাদেশ। কিন্তু এর ছয় ভাগের এক ভাগ ম্যাচও জিততে পারেনি। সব মিলিয়ে তাদের জয় মাত্র ২২টি। ঘরের মাঠে ৭৯ ম্যাচে তারা জিতেছে ১৩টি। আর দেশের বাইরে ৭১ ম্যাচে জয় ৯টি।
এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বাংলাদেশের সার্বিক অবস্থা একদম ভালো নয়। তবু গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাঠে হোয়াইটওয়াশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়িয়ে টেস্ট জিতে ভালো কিছুর আভাস দিয়েছে শান্তর দল।
বিগত বছরগুলোর ব্যর্থতা পেছনে ফেলে সামনের সময়ে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার ব্যাপারে আশাবাদী ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান।
‘আমি বিশ্বাস করি যে, যেহেতু আমাদের গত ২০-২২ বছরে টেস্ট ক্রিকেট একই রকম ছিল, খুব বেশি উন্নতি হয়নি। তাই এই জায়গাটাতে নিশ্চয়ই আমাদের কিছু পরিবর্তনের দরকার আছে। ওই পরিবর্তনটা করার চিন্তা করছি। আশা করব, এই পরিবর্তনটা আমাদের টেস্ট ক্রিকেটে কাজে লাগবে।’
টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার জন্য পরিবর্তন আনার জন্য বিসিবির কাছ থেকে যথাযথ সুযোগ-সুবিধার দাবিও জানিয়ে রাখলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
‘আমার মনে হয়, সুবিধাদিগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে আমরা যখন বাইরে খেলি তখন উইকেট ভিন্ন থাকে। তাই উইকেট একটা বড় বিষয়। আমরা যেন ভালো উইকেটে অনুশীলন করতে পারি বা যে ধরনের উইকেটে আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলব, ওই ধরনের উইকেট যেন ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রথম শ্রেণীর ম্যাচেও হয়।’
‘অবশ্যই কখনও কখনও কিছু ক্রিকেটার ব্যর্থ হবে। তারপরে যেন ওই ক্রিকেটারকে সমর্থন করা হয়। এই বিষয়গুলো নিয়ে ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে টুকটাক আলাপ-আলোচনা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি যে বোর্ড ওই ক্রিকেটারদের পাশে থাকবেন। কোনো কিছু পরিবর্তন হলে শুরুতেই ফল পাওয়াটা কঠিন। তাই কোনো সময় যদি কোনো ক্রিকেটার পারফর্ম না করে, তবু আমি বিশ্বাস করি যে ওই ক্রিকেটারকে যেন সবাই মিলে সাহস দেই।’