সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল শান্ত
সিরিজটি শুরুর আগে দেশে টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার আশায় প্রথম ম্যাচ থেকেই নতুন কিছু দেখানোর কথা বলেছিলেন অধিনায়ক শান্ত। কিন্তু মাঠে তার কথার বাস্তবায়ন দেখা যায়নি।
হতশ্রী পারফরম্যান্সে ম্যাচ হারের পর তাই হতাশ তিনি। তবে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বাংলাদেশ অধিনায়ক জানিয়ে দেন, সেই হতাশায় বাড়তি কোনো উপকরণ নেই। ‘(পরাজয়) অবশ্যই হতাশাজনক। পুরো ম্যাচ যদি বিশ্লেষণ করি, আমরা খুব একটা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। যে কারণেই এই হার। অতিরিক্ত আপসেট, এটা আসলে বলব না। কারণ এটাও একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল। ভালো করিনি, এই কারণে আপসেট।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষ প্রায় সাত বছর পর হারল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে সিলেটের অভিষেক টেস্টে স্বাগতিকদের ১৫১ রানে হারিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ওই ম্যাচেও একাদশে ছিলেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শান্ত। ‘(কষ্ট) বেশি বলব না। যে কোনো ম্যাচ হারলে খারাপ লাগে। অবশ্যই আমরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি, এটা আমি বিশ্বাস করি। আমরা এর চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলার মতো দল। এজন্যই হতাশ।’
‘এই ম্যাচ হেরে অনেক বেশি খারাপ লাগছে, জিনিসটা এরকম নয়। নরম্যালি ম্যাচ হারলে যেমন খারাপ লাগে, আজকেও অমনই লাগছে।’
ম্যাচ হারার পর শান্ত বলেন, দিনের শুরুতেই সর্বনাশ হয়ে গেছে তাদের। সেখানে নিয়ামক তিনি নিজেই।
‘আমার কাছে তাই মনে হয় (দিনের প্রথম পাঁচ ওভারেই সব শেষ)। আমার আউটটা পুরো খেলাটা, আমাদের ব্যাটিংটা নষ্ট করে দিয়েছে। আমার মনে হয় ওই মোমেন্টাম ওরা পাওয়াতে আমরা খেলাটা হেরে গেছি।’
এমনিতে পুল শট খারাপ খেলেন না শান্ত। তবে দিনের শুরুতে মাঠের আলোর সঙ্গে চোখ সয়ে যাওয়া, উইকেটের গতি ও বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার ব্যাপার থাকে। পুল-হুকের মতো শটের ক্ষেত্রে তাই একটু সতর্ক থাকতে হয়। সময় নিয়ে থিতু হওয়ার আগে ওসব শট খেললে ঝুঁকির সুযোগ থাকে বেশি।
ভুল করার পর শান্তর উপলব্ধি, দিনের শুরুতেই ওই শট খেলা তার উচিত হয়নি।
‘আমার সব সময় রানের জন্য চিন্তা থাকে। স্কোরিংয়ের সুযোগ পেলে ওটাই পরিকল্পনা থাকে। যেটায় আউট হয়েছি, আমার মনে হয়েছে যে, হ্যাঁ, সময় নিতে পারতাম। আরেকটু সময় নিতে পারতাম। দিনের দ্বিতীয় বল ছিল, আরেকটু সময় নিলে আরও ভালো হতো।’
‘তবে এই শট (পুল) আমি খেলি। পাশাপাশি এটাও বলতে হবে, দলের যা পরিস্থিতি ছিল, আমার মনে হয়, (শটটি) না খেললেও পারতাম।’
শান্তর ধারণা, দিনের শুরুতে জাকের আলির সঙ্গে তিনি যদি অর্ধশত রানের একটি জুটি গড়তে পারতেন, তাহলেই ম্যাচের চিত্র অন্যরকম হতো।
‘আজকের ম্যাচ নিয়ে যদি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞেস করুন, পুরো ম্যাচ আমি একা হারিয়ে দিয়েছি, সত্যি কথা। কারণ, সকালের ওই আউটে আমার মনে হয় পুরো খেলা নষ্ট হয়ে গেছে। ওখানে যদি ৫০-৬০ রানের একটা জুটি যদি হতো, ২২০-২৩০ রান হলেই আমরা ভালো একটা অবস্থানে থাকতাম।’
‘আমার মনে হয়, এই পুরো ম্যাচে সবার দিকে আমি যেতে চাই না। পুরো দায়ভার আমি নিতে চাই, কারণ খুব বাজে সময়ে আমি আউট হয়েছি।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৯১
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৭৩
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস:
(আগের দিন ১৯৪/৪) ৭৯.২ ওভারে ২৫৫ (শান্ত ৬০, জকের ৫৮, মিরাজ ১১, তাইজুল ১, হাসান ১২, খালেদ ০, নাহিদ ০*; নিয়াউচি ১৮-৪-৪২-১, মুজারাবানি ২০.২-৫-৭২-৬, এনগারাভা ১৯-০-৭৪-১, মাধভেরে ৮-১-৩২-০, মাসাকাদজা ১৪-৪-২০-২)
জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস:
(লক্ষ্য ১৭৪) ৫০.১ ওভারে ১৭৪/৭ (কারান ৪৪, বেনেট ৫৪, ওয়েলচ ১০, উইলিয়ামস ৯, আরভাইন ১০, মাধেভেরে ১৯*, মায়াভো ১, মাসাকাদজা ১২, এনগারাভা ৪*; নাহিদ ৫-০-২৪-০, হাসান ৪-১-১৩-০, মিরাজ ২২.১-৮-৫০-৫, খালেদ ৩-১-৬-০, তাইজুল ১৬-০-৭০-২)
ম্যাচসেরা: ব্লেসিং মুজারাবানি
২য় টেস্ট শুরু ২৮এপ্রিল, চট্টগামে।
সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল শান্ত
বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
সিরিজটি শুরুর আগে দেশে টেস্ট সংস্কৃতি গড়ে তোলার আশায় প্রথম ম্যাচ থেকেই নতুন কিছু দেখানোর কথা বলেছিলেন অধিনায়ক শান্ত। কিন্তু মাঠে তার কথার বাস্তবায়ন দেখা যায়নি।
হতশ্রী পারফরম্যান্সে ম্যাচ হারের পর তাই হতাশ তিনি। তবে সংবাদ সম্মেলনের শুরুতেই বাংলাদেশ অধিনায়ক জানিয়ে দেন, সেই হতাশায় বাড়তি কোনো উপকরণ নেই। ‘(পরাজয়) অবশ্যই হতাশাজনক। পুরো ম্যাচ যদি বিশ্লেষণ করি, আমরা খুব একটা ভালো ক্রিকেট খেলিনি। যে কারণেই এই হার। অতিরিক্ত আপসেট, এটা আসলে বলব না। কারণ এটাও একটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ ছিল। ভালো করিনি, এই কারণে আপসেট।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষ প্রায় সাত বছর পর হারল বাংলাদেশ। ২০১৮ সালে সিলেটের অভিষেক টেস্টে স্বাগতিকদের ১৫১ রানে হারিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ওই ম্যাচেও একাদশে ছিলেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান শান্ত। ‘(কষ্ট) বেশি বলব না। যে কোনো ম্যাচ হারলে খারাপ লাগে। অবশ্যই আমরা নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী খেলতে পারিনি, এটা আমি বিশ্বাস করি। আমরা এর চেয়ে ভালো ক্রিকেট খেলার মতো দল। এজন্যই হতাশ।’
‘এই ম্যাচ হেরে অনেক বেশি খারাপ লাগছে, জিনিসটা এরকম নয়। নরম্যালি ম্যাচ হারলে যেমন খারাপ লাগে, আজকেও অমনই লাগছে।’
ম্যাচ হারার পর শান্ত বলেন, দিনের শুরুতেই সর্বনাশ হয়ে গেছে তাদের। সেখানে নিয়ামক তিনি নিজেই।
‘আমার কাছে তাই মনে হয় (দিনের প্রথম পাঁচ ওভারেই সব শেষ)। আমার আউটটা পুরো খেলাটা, আমাদের ব্যাটিংটা নষ্ট করে দিয়েছে। আমার মনে হয় ওই মোমেন্টাম ওরা পাওয়াতে আমরা খেলাটা হেরে গেছি।’
এমনিতে পুল শট খারাপ খেলেন না শান্ত। তবে দিনের শুরুতে মাঠের আলোর সঙ্গে চোখ সয়ে যাওয়া, উইকেটের গতি ও বাউন্সের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার ব্যাপার থাকে। পুল-হুকের মতো শটের ক্ষেত্রে তাই একটু সতর্ক থাকতে হয়। সময় নিয়ে থিতু হওয়ার আগে ওসব শট খেললে ঝুঁকির সুযোগ থাকে বেশি।
ভুল করার পর শান্তর উপলব্ধি, দিনের শুরুতেই ওই শট খেলা তার উচিত হয়নি।
‘আমার সব সময় রানের জন্য চিন্তা থাকে। স্কোরিংয়ের সুযোগ পেলে ওটাই পরিকল্পনা থাকে। যেটায় আউট হয়েছি, আমার মনে হয়েছে যে, হ্যাঁ, সময় নিতে পারতাম। আরেকটু সময় নিতে পারতাম। দিনের দ্বিতীয় বল ছিল, আরেকটু সময় নিলে আরও ভালো হতো।’
‘তবে এই শট (পুল) আমি খেলি। পাশাপাশি এটাও বলতে হবে, দলের যা পরিস্থিতি ছিল, আমার মনে হয়, (শটটি) না খেললেও পারতাম।’
শান্তর ধারণা, দিনের শুরুতে জাকের আলির সঙ্গে তিনি যদি অর্ধশত রানের একটি জুটি গড়তে পারতেন, তাহলেই ম্যাচের চিত্র অন্যরকম হতো।
‘আজকের ম্যাচ নিয়ে যদি আমাকে ব্যক্তিগতভাবে জিজ্ঞেস করুন, পুরো ম্যাচ আমি একা হারিয়ে দিয়েছি, সত্যি কথা। কারণ, সকালের ওই আউটে আমার মনে হয় পুরো খেলা নষ্ট হয়ে গেছে। ওখানে যদি ৫০-৬০ রানের একটা জুটি যদি হতো, ২২০-২৩০ রান হলেই আমরা ভালো একটা অবস্থানে থাকতাম।’
‘আমার মনে হয়, এই পুরো ম্যাচে সবার দিকে আমি যেতে চাই না। পুরো দায়ভার আমি নিতে চাই, কারণ খুব বাজে সময়ে আমি আউট হয়েছি।’
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৯১
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস: ২৭৩
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস:
(আগের দিন ১৯৪/৪) ৭৯.২ ওভারে ২৫৫ (শান্ত ৬০, জকের ৫৮, মিরাজ ১১, তাইজুল ১, হাসান ১২, খালেদ ০, নাহিদ ০*; নিয়াউচি ১৮-৪-৪২-১, মুজারাবানি ২০.২-৫-৭২-৬, এনগারাভা ১৯-০-৭৪-১, মাধভেরে ৮-১-৩২-০, মাসাকাদজা ১৪-৪-২০-২)
জিম্বাবুয়ে ২য় ইনিংস:
(লক্ষ্য ১৭৪) ৫০.১ ওভারে ১৭৪/৭ (কারান ৪৪, বেনেট ৫৪, ওয়েলচ ১০, উইলিয়ামস ৯, আরভাইন ১০, মাধেভেরে ১৯*, মায়াভো ১, মাসাকাদজা ১২, এনগারাভা ৪*; নাহিদ ৫-০-২৪-০, হাসান ৪-১-১৩-০, মিরাজ ২২.১-৮-৫০-৫, খালেদ ৩-১-৬-০, তাইজুল ১৬-০-৭০-২)
ম্যাচসেরা: ব্লেসিং মুজারাবানি
২য় টেস্ট শুরু ২৮এপ্রিল, চট্টগামে।