ক্লাব বিশ্বকাপ
ম্যাচ শেষে হতাশ মেসিকে সান্ত¡না দিচ্ছেন পিএসজির গোলরক্ষক
ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে বায়ার্ন মিউনিখ। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের ফ্ল্যামেঙ্গোকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে তারা। জোড়া গোল করেছেন হ্যারি কেন।গতকাল রোববার ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর আরেক ম্যাচে ইন্টার মায়ামিকে ৪-০ গোলে হারিয়ে শেষ আটে পৌঁছে যায় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি।
বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে লড়াই করেও হারতে হল ফ্ল্যামেঙ্গোকে। ব্রাজিলের ক্লাবকে হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিল জার্মানির ক্লাব। বায়ার্নের হয়ে জোড়া গোল করেন হ্যারি কেন। কোয়ার্টার ফাইনালে কঠিন চ্যালেঞ্জ বায়ার্নের সামনে। তাদের মুখোমুখি পিএসজি। লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামিকে উড়িয়ে শেষ আটে উঠেছে প্যারিসের ক্লাব পিএসজি।
খেলার শুরুতেই এগিয়ে যায় বায়ার্ন। ৬ মিনিটের মাথায় জোশুয়া কিমিচের শট হেড করে বার করতে গিয়ে নিজের জালেই জড়িয়ে দেন ফ্ল্যামেঙ্গোর এরিক পুলগার। তিন মিনিট পরেই ব্যবধান বাড়ান কেন। ১০ মিনিটের মধ্যে ০-২ গোলে পিছিয়ে পড়লেও লড়াই ছাড়েনি ফ্ল্যামেঙ্গো। ৩২ মিনিটের মাথায় ম্যানুয়েল ন্যুয়েরকে পরাস্ত করে ব্যবধান কমান গার্সন।
প্রথমার্ধে ৪১ মিনিটের মাথায় বায়ার্নের হয়ে তৃতীয় গোল করেন লিয়ন গোরেৎজকা। ফলে দু’গোলের ব্যবধানে আবার এগিয়ে যায় জার্মানির ক্লাব। প্রথমার্ধের শেষ দিকে নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে দেন ন্যুয়ের। ফলে দুই গোলের ব্যবধানেই বিরতিতে যায় বায়ার্ন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে গোল করার মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে ফ্ল্যামেঙ্গো। ৫৫ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে তাদের দ্বিতীয় গোল করেন জর্জিনহো। কিন্তু তাদের সব আশায় জল ঢেলে দেন কেন। ৭৩ মিনিটে কিমিচের ক্রস থেকে নিজের দ্বিতীয় ও দলের চার নম্বর গোল করেন তিনি। ক্লাব বিশ্বকাপে এটা তার তৃতীয় গোল। আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি ফ্ল্যামেঙ্গো। মায়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে ৬৫ হাজার দর্শকের সামনে ৪-২ গোলে জিতে মাঠ ছাড়ে বায়ার্ন।
কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি বায়ার্ন ও পিএসজি। শেষ বার এই দুই দল খেলেছিল ২০২০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে, সে বার বায়ার্নের কাছে ১-০ হারতে হয়েছিল পিএসজিকে। এ বার চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিতেছে তারা। ফলে লুই এনরিকের দলের সামনে সুযোগ বায়ার্নকে হারিয়ে পাঁচ বছর আগের হারের বদলা
মায়ামিকে ৪ গোলে
হারালো পিএসজি
প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে গেল তার ক্লাব ইন্টার মায়ামি। পিএসজি জিতল ৪-০ গোলে। জোড়া গোল করলেন জোয়াও নেভেস। একটি গোল আশরফ হাকিমির। মায়ামির আভিলেস একটি আত্মঘাতী গোল করেন। চার গোলের মধ্যে তিনটি হয়েছে ছ’মিনিটের মধ্যে। গোটা ম্যাচেই মায়ামির রক্ষণ ফালাফালা করে দিয়েছেন ভিটিনহা, ডেজিরে ডুয়ে, নুনো মেন্দেসরা।
ছ’মিনিটেই এগিয়ে যায় পিএসজি। বক্সের বাঁ দিকে ফ্রিকিক পেয়েছিল তারা। ভিটিনহা দ্বিতীয় পোস্টে ক্রস করেন। নিখুঁত দৌড়ে নেভেস হেড করে বল জালে জড়িয়ে দেন। শুরুতেই গোল পেয়ে দাপটের সঙ্গে খেলতে থাকে ফ্রান্সের ক্লাব। একতরফা আক্রমণ করে যাচ্ছিল তারাই। মায়ামিকে নিজেদের অর্ধ থেকে বেরোতেই দিচ্ছিল না।
তা সত্ত্বেও গোল আসছিল না। বক্সের সামনে ভিড় বাড়িয়ে ফেলছিল মায়ামি। গোলের রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিলেন না পিএসজি-র ফুটবলারেরা। মায়ামির ফুটবলারেরা প্রচুর মিস্ পাসও করছিলেন। প্রথমার্ধে মেসিকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। দু’-তিন বারের বেশি বল ধরতে পারেননি। সেটাও বেশি ক্ষণ নিজের দখলে রাখতে পারেননি তিনি। পিএসজির কোচ লুই এনরিকের অধীনে দীর্ঘ দিন বার্সেলোনায় খেলেছেন মেসি। তাই এনরিকে ভালই জানতেন কীভাবে মেসিকে আটকানো সম্ভব।
৩৯ মিনিটে দলগত প্রচেষ্টায় দ্বিতীয় গোল করে পিএসজি। সের্জিয়ো বুস্কেৎসের পা থেকে বল কেড়ে নেন ব্র্যাডলি বার্কোলা। তিনি পাস দেন ফ্যাবিয়ান রুইজকে। নিজে শট না নিয়ে নিঃস্বার্থ ভাবে সেই বল নেভেসের দিকে বাড়িয়ে দেন রুইজ। নিজের এবং দলের দ্বিতীয় গোল করেন নেভেস।
পাঁচ মিনিট পরে তৃতীয় গোল। ডান দিক থেকে ডুয়ের ভাসানো বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের গোলেই ঢুকিয়ে দেন মায়ামির আভিলেস। প্রথমার্ধের সংযুক্তি সময়ে আরও একটি গোল করে পিএসজি। এ বার ভিটিনহা দূরপাল্লার পাস দেন বার্কোলাকে। তার থেকে বল পেয়ে হাকিমির শট বারে লাগে। ফিরতি বল জালে জড়িয়ে দেন হাকিমি।
প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধে আত্মসমর্পণ করেনি মায়ামি। শুরু থেকে বল নিজেদের দখলে রাখার চেষ্টা করছিল তারা। বেশ কয়েক বার আক্রমণেও ওঠে। মেসিকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায়। এক বার গোলে শটও মারেন তিনি।
দুই দলের পার্থক্যটা
স্বীকার করলেন মেসি
সাবেক ক্লাবের কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পর কোনো অজুহাত দাঁড় করাতে চান না মেসি। স্বীকার করে নিয়েছেন দুই দলের মধ্যে পার্থক্যটা। নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আজ আমাদের জন্য ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ শেষ হলো চ্যাম্পিয়ন্স লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলের কাছে পরাজয়ের মাধ্যমে একটি দলে এমন কিছু মানুষ আছেন যাদের আমি শ্রদ্ধা করি এবং যাদের আবার দেখা পেয়ে আমি খুশি হয়েছি।’
টুর্নামেন্ট শেষে এখন মায়ামিতে নিজের বাড়িতে কিছুদিন বিশ্রামে থাকবেন মেসি। এরপর আবার দলে ফিরবেন এবং নতুন মৌসুমের জন্য প্রস্তুতি নেবেন।
মেসি বলেন, ‘আমরা গর্বিত যে আমাদের লক্ষ্য পূরণ করেছি টুর্নামেন্টের সেরা ১৬ দলের মধ্যে জায়গা করে নেওয়া। এখন সময় এসেছে এমএলএস এবং সামনের যেসব চ্যালেঞ্জ আসছে, সেগুলোর দিকে মনোযোগ দেয়ার।’
ইতিহাসের হাতছানিতে
রোমাঞ্চিত এনরিকে
‘পারফেক্ট’ মৌসুম থেকে আর স্রেফ তিনটি জয় দূরে পিএসজি। ফরাসি লিগ, ফরাসি কাপ ও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে জিতে এবার ট্রেবল জয় করা দলটি এখন দারুণ গতিতে ছুটে চলেছে ক্লাব বিশ্বকাপে। লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামিকে হারিয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে কোচ লুইস এনরিকে বলছেন, এই টুর্নামেন্টেও ইতিহাস গড়তে চান তারা।
তাদের প্রত্যাশার সীমানায় যে আছে শিরোপা জয়। ম্যাচের পর সেই প্রত্যয় শোনা গেল কোচের কণ্ঠে।
‘আমাদের ক্লাবের জন্য স্পষ্টতই এটি ঐতিহাসিক এক মৌসুম এবং এই টুর্নামেন্টেও আমরা ইতিহাস গড়তে চাই।’
৩২ দল নিয়ে বড় আকারে ক্লাব বিশ্বকাপ হচ্ছে এবারই প্রথম। এই আসরের শিরোপাজয়ীদের নাম তাই ইতিহাসে খোদাই হয়ে থাকবে। আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা দেখেন না পিএসজি কোচ।
‘মনোযোগ ধরে রাখতে হবে আমাদের। এই মুহূর্তে ছুটি বা পরের মৌসুমের ভাবনা ধরনের কোনো কিছুতে আমার আগ্রহ নেই। পরের ম্যাচের জন্য তরতাজা হয়ে ওঠা ও সম্ভাব্য সেরা প্রস্তুতির কথা ভাবতে হবে আমাদের।’ বায়ার্নের বিপক্ষে পিএসজির লড়াই আগামী শনিবার।
মায়ামি কোচের প্রতিক্রিয়া
ডিএজেডএনকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় মায়ামি কোচ মাসচেরানো বলেছেন, ‘আমার মনে হয় লিও তার সীমিত সুযোগের মধ্যেও দারুণ খেলেছে। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা অনেক বেশি প্রতি আক্রমণে খেলেছি। আমার মনে হয় এখন ৩৮ বছর বয়সী এই মেসিকে কোচিং করানো গর্বের বিষয়। কিন্তু এই মানের পিএসজিকে সামলানো, এমনকি মেসির জন্যও সেটা কঠিন ব্যাপার।’
এই এনরিকের অধীনেই বার্সেলোনায় খেলেছেন মাসচেরানো। পিএসজির বর্তমান কোচ সম্পর্কে মায়ামি কোচ বলেন, ‘পিএসজি দারুণ একটি দল। দেখা যাক তারা কতদূর যেতে পারে। তবে আজ অসাধারণ কোচের অধীনে ওরা দারুণ খেলেছে।’
ইউরোপের সেরা দলের বিপক্ষে হেরে গেলেও মাসচেরানো তার দলের পারফরম্যান্স নিয়ে গর্বিত, ‘আমরা দুটি দলের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্টভাবে দেখতে পেরেছি। কিন্তু আমি ছেলেদের নিয়ে খুব গর্বিত। ওরা কঠোর পরিশ্রম করেছে, খেলার চেষ্টা করেছে, তবে পার্থক্যটা ছিল এমনই।’
ক্লাব বিশ্বকাপ
ম্যাচ শেষে হতাশ মেসিকে সান্ত¡না দিচ্ছেন পিএসজির গোলরক্ষক
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫
ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে বায়ার্ন মিউনিখ। প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিলের ফ্ল্যামেঙ্গোকে ৪-২ গোলে হারিয়েছে তারা। জোড়া গোল করেছেন হ্যারি কেন।গতকাল রোববার ক্লাব বিশ্বকাপের শেষ ষোলোর আরেক ম্যাচে ইন্টার মায়ামিকে ৪-০ গোলে হারিয়ে শেষ আটে পৌঁছে যায় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন পিএসজি।
বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে লড়াই করেও হারতে হল ফ্ল্যামেঙ্গোকে। ব্রাজিলের ক্লাবকে হারিয়ে ক্লাব বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিল জার্মানির ক্লাব। বায়ার্নের হয়ে জোড়া গোল করেন হ্যারি কেন। কোয়ার্টার ফাইনালে কঠিন চ্যালেঞ্জ বায়ার্নের সামনে। তাদের মুখোমুখি পিএসজি। লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামিকে উড়িয়ে শেষ আটে উঠেছে প্যারিসের ক্লাব পিএসজি।
খেলার শুরুতেই এগিয়ে যায় বায়ার্ন। ৬ মিনিটের মাথায় জোশুয়া কিমিচের শট হেড করে বার করতে গিয়ে নিজের জালেই জড়িয়ে দেন ফ্ল্যামেঙ্গোর এরিক পুলগার। তিন মিনিট পরেই ব্যবধান বাড়ান কেন। ১০ মিনিটের মধ্যে ০-২ গোলে পিছিয়ে পড়লেও লড়াই ছাড়েনি ফ্ল্যামেঙ্গো। ৩২ মিনিটের মাথায় ম্যানুয়েল ন্যুয়েরকে পরাস্ত করে ব্যবধান কমান গার্সন।
প্রথমার্ধে ৪১ মিনিটের মাথায় বায়ার্নের হয়ে তৃতীয় গোল করেন লিয়ন গোরেৎজকা। ফলে দু’গোলের ব্যবধানে আবার এগিয়ে যায় জার্মানির ক্লাব। প্রথমার্ধের শেষ দিকে নিশ্চিত গোল বাঁচিয়ে দেন ন্যুয়ের। ফলে দুই গোলের ব্যবধানেই বিরতিতে যায় বায়ার্ন।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে গোল করার মরিয়া চেষ্টা করতে থাকে ফ্ল্যামেঙ্গো। ৫৫ মিনিটের মাথায় পেনাল্টি থেকে তাদের দ্বিতীয় গোল করেন জর্জিনহো। কিন্তু তাদের সব আশায় জল ঢেলে দেন কেন। ৭৩ মিনিটে কিমিচের ক্রস থেকে নিজের দ্বিতীয় ও দলের চার নম্বর গোল করেন তিনি। ক্লাব বিশ্বকাপে এটা তার তৃতীয় গোল। আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি ফ্ল্যামেঙ্গো। মায়ামির হার্ডরক স্টেডিয়ামে ৬৫ হাজার দর্শকের সামনে ৪-২ গোলে জিতে মাঠ ছাড়ে বায়ার্ন।
কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি বায়ার্ন ও পিএসজি। শেষ বার এই দুই দল খেলেছিল ২০২০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে, সে বার বায়ার্নের কাছে ১-০ হারতে হয়েছিল পিএসজিকে। এ বার চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জিতেছে তারা। ফলে লুই এনরিকের দলের সামনে সুযোগ বায়ার্নকে হারিয়ে পাঁচ বছর আগের হারের বদলা
মায়ামিকে ৪ গোলে
হারালো পিএসজি
প্রি-কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে গেল তার ক্লাব ইন্টার মায়ামি। পিএসজি জিতল ৪-০ গোলে। জোড়া গোল করলেন জোয়াও নেভেস। একটি গোল আশরফ হাকিমির। মায়ামির আভিলেস একটি আত্মঘাতী গোল করেন। চার গোলের মধ্যে তিনটি হয়েছে ছ’মিনিটের মধ্যে। গোটা ম্যাচেই মায়ামির রক্ষণ ফালাফালা করে দিয়েছেন ভিটিনহা, ডেজিরে ডুয়ে, নুনো মেন্দেসরা।
ছ’মিনিটেই এগিয়ে যায় পিএসজি। বক্সের বাঁ দিকে ফ্রিকিক পেয়েছিল তারা। ভিটিনহা দ্বিতীয় পোস্টে ক্রস করেন। নিখুঁত দৌড়ে নেভেস হেড করে বল জালে জড়িয়ে দেন। শুরুতেই গোল পেয়ে দাপটের সঙ্গে খেলতে থাকে ফ্রান্সের ক্লাব। একতরফা আক্রমণ করে যাচ্ছিল তারাই। মায়ামিকে নিজেদের অর্ধ থেকে বেরোতেই দিচ্ছিল না।
তা সত্ত্বেও গোল আসছিল না। বক্সের সামনে ভিড় বাড়িয়ে ফেলছিল মায়ামি। গোলের রাস্তা খুঁজে পাচ্ছিলেন না পিএসজি-র ফুটবলারেরা। মায়ামির ফুটবলারেরা প্রচুর মিস্ পাসও করছিলেন। প্রথমার্ধে মেসিকে খুঁজেই পাওয়া যায়নি। দু’-তিন বারের বেশি বল ধরতে পারেননি। সেটাও বেশি ক্ষণ নিজের দখলে রাখতে পারেননি তিনি। পিএসজির কোচ লুই এনরিকের অধীনে দীর্ঘ দিন বার্সেলোনায় খেলেছেন মেসি। তাই এনরিকে ভালই জানতেন কীভাবে মেসিকে আটকানো সম্ভব।
৩৯ মিনিটে দলগত প্রচেষ্টায় দ্বিতীয় গোল করে পিএসজি। সের্জিয়ো বুস্কেৎসের পা থেকে বল কেড়ে নেন ব্র্যাডলি বার্কোলা। তিনি পাস দেন ফ্যাবিয়ান রুইজকে। নিজে শট না নিয়ে নিঃস্বার্থ ভাবে সেই বল নেভেসের দিকে বাড়িয়ে দেন রুইজ। নিজের এবং দলের দ্বিতীয় গোল করেন নেভেস।
পাঁচ মিনিট পরে তৃতীয় গোল। ডান দিক থেকে ডুয়ের ভাসানো বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে নিজের গোলেই ঢুকিয়ে দেন মায়ামির আভিলেস। প্রথমার্ধের সংযুক্তি সময়ে আরও একটি গোল করে পিএসজি। এ বার ভিটিনহা দূরপাল্লার পাস দেন বার্কোলাকে। তার থেকে বল পেয়ে হাকিমির শট বারে লাগে। ফিরতি বল জালে জড়িয়ে দেন হাকিমি।
প্রথমার্ধের মতো দ্বিতীয়ার্ধে আত্মসমর্পণ করেনি মায়ামি। শুরু থেকে বল নিজেদের দখলে রাখার চেষ্টা করছিল তারা। বেশ কয়েক বার আক্রমণেও ওঠে। মেসিকে সক্রিয় ভূমিকা নিতে দেখা যায়। এক বার গোলে শটও মারেন তিনি।
দুই দলের পার্থক্যটা
স্বীকার করলেন মেসি
সাবেক ক্লাবের কাছে বিধ্বস্ত হওয়ার পর কোনো অজুহাত দাঁড় করাতে চান না মেসি। স্বীকার করে নিয়েছেন দুই দলের মধ্যে পার্থক্যটা। নিজের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘আজ আমাদের জন্য ক্লাব ওয়ার্ল্ড কাপ শেষ হলো চ্যাম্পিয়ন্স লীগের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দলের কাছে পরাজয়ের মাধ্যমে একটি দলে এমন কিছু মানুষ আছেন যাদের আমি শ্রদ্ধা করি এবং যাদের আবার দেখা পেয়ে আমি খুশি হয়েছি।’
টুর্নামেন্ট শেষে এখন মায়ামিতে নিজের বাড়িতে কিছুদিন বিশ্রামে থাকবেন মেসি। এরপর আবার দলে ফিরবেন এবং নতুন মৌসুমের জন্য প্রস্তুতি নেবেন।
মেসি বলেন, ‘আমরা গর্বিত যে আমাদের লক্ষ্য পূরণ করেছি টুর্নামেন্টের সেরা ১৬ দলের মধ্যে জায়গা করে নেওয়া। এখন সময় এসেছে এমএলএস এবং সামনের যেসব চ্যালেঞ্জ আসছে, সেগুলোর দিকে মনোযোগ দেয়ার।’
ইতিহাসের হাতছানিতে
রোমাঞ্চিত এনরিকে
‘পারফেক্ট’ মৌসুম থেকে আর স্রেফ তিনটি জয় দূরে পিএসজি। ফরাসি লিগ, ফরাসি কাপ ও উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগে জিতে এবার ট্রেবল জয় করা দলটি এখন দারুণ গতিতে ছুটে চলেছে ক্লাব বিশ্বকাপে। লিওনেল মেসির ইন্টার মায়ামিকে হারিয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালে উঠে কোচ লুইস এনরিকে বলছেন, এই টুর্নামেন্টেও ইতিহাস গড়তে চান তারা।
তাদের প্রত্যাশার সীমানায় যে আছে শিরোপা জয়। ম্যাচের পর সেই প্রত্যয় শোনা গেল কোচের কণ্ঠে।
‘আমাদের ক্লাবের জন্য স্পষ্টতই এটি ঐতিহাসিক এক মৌসুম এবং এই টুর্নামেন্টেও আমরা ইতিহাস গড়তে চাই।’
৩২ দল নিয়ে বড় আকারে ক্লাব বিশ্বকাপ হচ্ছে এবারই প্রথম। এই আসরের শিরোপাজয়ীদের নাম তাই ইতিহাসে খোদাই হয়ে থাকবে। আত্মতুষ্টির কোনও জায়গা দেখেন না পিএসজি কোচ।
‘মনোযোগ ধরে রাখতে হবে আমাদের। এই মুহূর্তে ছুটি বা পরের মৌসুমের ভাবনা ধরনের কোনো কিছুতে আমার আগ্রহ নেই। পরের ম্যাচের জন্য তরতাজা হয়ে ওঠা ও সম্ভাব্য সেরা প্রস্তুতির কথা ভাবতে হবে আমাদের।’ বায়ার্নের বিপক্ষে পিএসজির লড়াই আগামী শনিবার।
মায়ামি কোচের প্রতিক্রিয়া
ডিএজেডএনকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় মায়ামি কোচ মাসচেরানো বলেছেন, ‘আমার মনে হয় লিও তার সীমিত সুযোগের মধ্যেও দারুণ খেলেছে। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা অনেক বেশি প্রতি আক্রমণে খেলেছি। আমার মনে হয় এখন ৩৮ বছর বয়সী এই মেসিকে কোচিং করানো গর্বের বিষয়। কিন্তু এই মানের পিএসজিকে সামলানো, এমনকি মেসির জন্যও সেটা কঠিন ব্যাপার।’
এই এনরিকের অধীনেই বার্সেলোনায় খেলেছেন মাসচেরানো। পিএসজির বর্তমান কোচ সম্পর্কে মায়ামি কোচ বলেন, ‘পিএসজি দারুণ একটি দল। দেখা যাক তারা কতদূর যেতে পারে। তবে আজ অসাধারণ কোচের অধীনে ওরা দারুণ খেলেছে।’
ইউরোপের সেরা দলের বিপক্ষে হেরে গেলেও মাসচেরানো তার দলের পারফরম্যান্স নিয়ে গর্বিত, ‘আমরা দুটি দলের মধ্যে পার্থক্য স্পষ্টভাবে দেখতে পেরেছি। কিন্তু আমি ছেলেদের নিয়ে খুব গর্বিত। ওরা কঠোর পরিশ্রম করেছে, খেলার চেষ্টা করেছে, তবে পার্থক্যটা ছিল এমনই।’