স্কোর: ভারত ২২৪ ও ৩৯৬; ইংল্যান্ড ২৪৭ ও ৩৬৭। ফল: ভারেত ৬ রানে জয়ী
শেষ উইকেট নেয়ার পর সিরাজকে নিয়ে ভারতের জয়োল্লাস
টেস্ট ক্রিকেটের রূপ-রস-গন্ধ ঠিক কোথায় লুকিয়ে থাকে, তা যেন পরতে পরতে পাওয়া গেল ওভাল টেস্টে। পাঁচ দিন ধরে দুলতে থাকা এক রোমাঞ্চকর টেস্টে শেষ পর্যন্ত মাত্র ৬ রানে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজ ২-২ এ সমতায় শেষ করল ভারত।
রোববার হ্যারি ব্রুক আর জো রুট যখন ব্যাটিং করছিলেন তখন মনে হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত অনায়াসেই জয় মিলবে ইংল্যান্ডের। কিন্তু এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। মোহাম্মদ সিরাজের দুর্দান্ত বোলিংয়ে উল্টো ম্যাচ জিতে নেয় সফরকারীরা।
ক্যানিংটন ওভালে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টের শেষ দিনে ৬ রানের নাটকীয় জয় পায় শুবমান গিলের দল। তাদের দেয়া ৩৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৩৬৭ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে ২৪৭ রানে অলআউট হয়েছিল ইংল্যান্ড। ভারত তাদের দুই ইনিংসে করে যথাক্রমে ২২৪ ও ৩৯৬ রান।
সোমবার,(৪ আগস্ট ২০২৫) জয় থেকে যখন ১৭ রান বাকি তখন ইংল্যান্ডের ৯ উইকেট পড়ে । শেষ ব্যাটার হিসেবে এক হাত স্লিংয়ে ঝুলিয়ে মাঠে নামেন ক্রিস ওকস। প্রথম দিনে ফিল্ডিং করতে গিয়ে কাঁধে চোট পেয়েছিলেন তিনি। তবে তার চেষ্টা ফল দেয়নি। যদিও সিরাজের বলে একটি ছক্কা হাঁকিয়ে আশা দেখিয়েছিলেন গাস অ্যাটকিনসন।
প্রসিধ কৃষ্ণার পরের ওভারের প্রথম বলে দুই রানে আশাটা জোরালো হয়েছিল ইংল্যান্ডের। কিন্তু সে ওভারে আর ব্যাটে বলেই করতে পারেননি অ্যাটকিনসন। শেষ বলে সিঙ্গেল নেন। তবে সিরাজের করা পরের ওভারের প্রথম বলে হাঁকাতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান এই ব্যাটার। জয় মিলে ভারতের। ২৯ বলে ১৭ রান আসে অ্যাটকিনসনের ব্যাটে।
সকালে আগের দিনের ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে ইংল্যান্ড। দিনের শুরুতেই প্রসিধ কৃষ্ণার করা প্রথম দুই বলে দুটি বাউন্ডারি আদায় করে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেয় স্বাগতিকরা। তবে পরের ওভারেই ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। সিরাজের করা তৃতীয় বলে খোঁচা মারতে গিয়ে উইকেটরক্ষক ধ্রুব জুরেলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন জেমি স্মিথ। সামনের দিকে ঝুঁকে নিচু হওয়া ক্যাচ লুফে নেন এই উইকেটরক্ষক। ২০ বলে ২ রান করে থামেন স্মিথ।
পরের ওভারে ফিরে জেমি ওভারটনকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সিরাজ। তার ফুলার লেন্থের বলে শাফল করতে গেলে লাইন মিস করেন ওভারটন। কিছুটা সময় নিয়ে আঙুল তোলেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েছিলেন ওভারটন। তবে লাভ হয়নি। আম্পায়ার্স কলে ফিরতে হয় তাকে। ১৭ বলে ৯ রান করেন এই ব্যাটার। দুই ওভার পর যশ টংকে কৃষ্ণা বোল্ড করলে জমে যায় ম্যাচ।
১৪৮ বছরের ইতিহাসে
প্রথম নজির
টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অনন্য রেকর্ড হয়েছে ইংল্যান্ড-ভারত পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে।
টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৮ বছরের ইতিহাসে একই সিরিজে দুই দলের মিলিয়ে ৯ জন ব্যাটার ৪০০ বা তার বেশি রান করেছেন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবার এমন ঘটনা ঘটল।
তালিকায় ভারতের পাঁচজন এবং ইংল্যান্ডের চার জন ক্রিকেটার রয়েছেন। ভারতীয়দের মধ্যে শুবমান গিল, কেএল রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋষভ পান্ত এবং যশস্বী জয়সওয়াল রয়েছেন। স্বাগতিক ইংলিশদের মধ্যে বেন ডাকেট, জো রুট, জেমি স্মিথ এবং হ্যারি ব্রুক রয়েছেন।
১৮৭৭ সালে মাঠে গড়িয়েছিল প্রথম টেস্ট ম্যাচ। ১৮৮৪ সালে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ হয়েছিল। সেই হিসেবে ১৪১ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা দেখা যায়নি যেখানে আট জনের বেশি ব্যাটার ৪০০-র বেশি রান করেন। ১৯৭৫-৭৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম অস্ট্রেলিয়ার সিরিজে আট জনের রান ছিল ৪০০-র ওপর। ১৯৯৩ অ্যাশেজেও আট জন ৪০০-র ওপর রান করেছিলেন।
সবার ওপরে গিল
এই সিরিজে রানের তালিকায় সবার ওপরে আছেন শুবমান গিল। ৫ টেস্টে ৭৫৪ রান করেছেন ভারতীয় অধিনায়ক। চারটি শতরান রয়েছে তার। দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন জো রুট। তার রান ৫৩৭। কেএল রাহুল করেছেন ৫৩২ রান। চারে থাকা জাদেজা ৫১৬ রান করেছেন। পাঁচে ঋষভ পান্ত। তিনি ৪৭৯ করেছেন। এছাড়া চারশ’র বেশি রান রয়েছে ডাকেট, ব্রুক, স্মিথ এবং যশস্বী জয়সওয়ালের।
স্কোর: ভারত ২২৪ ও ৩৯৬; ইংল্যান্ড ২৪৭ ও ৩৬৭। ফল: ভারেত ৬ রানে জয়ী
শেষ উইকেট নেয়ার পর সিরাজকে নিয়ে ভারতের জয়োল্লাস
সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫
টেস্ট ক্রিকেটের রূপ-রস-গন্ধ ঠিক কোথায় লুকিয়ে থাকে, তা যেন পরতে পরতে পাওয়া গেল ওভাল টেস্টে। পাঁচ দিন ধরে দুলতে থাকা এক রোমাঞ্চকর টেস্টে শেষ পর্যন্ত মাত্র ৬ রানে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজ ২-২ এ সমতায় শেষ করল ভারত।
রোববার হ্যারি ব্রুক আর জো রুট যখন ব্যাটিং করছিলেন তখন মনে হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত অনায়াসেই জয় মিলবে ইংল্যান্ডের। কিন্তু এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। মোহাম্মদ সিরাজের দুর্দান্ত বোলিংয়ে উল্টো ম্যাচ জিতে নেয় সফরকারীরা।
ক্যানিংটন ওভালে সিরিজের পঞ্চম ও শেষ টেস্টের শেষ দিনে ৬ রানের নাটকীয় জয় পায় শুবমান গিলের দল। তাদের দেয়া ৩৭৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় নেমে ৩৬৭ রানে গুটিয়ে যায় স্বাগতিকরা। প্রথম ইনিংসে ২৪৭ রানে অলআউট হয়েছিল ইংল্যান্ড। ভারত তাদের দুই ইনিংসে করে যথাক্রমে ২২৪ ও ৩৯৬ রান।
সোমবার,(৪ আগস্ট ২০২৫) জয় থেকে যখন ১৭ রান বাকি তখন ইংল্যান্ডের ৯ উইকেট পড়ে । শেষ ব্যাটার হিসেবে এক হাত স্লিংয়ে ঝুলিয়ে মাঠে নামেন ক্রিস ওকস। প্রথম দিনে ফিল্ডিং করতে গিয়ে কাঁধে চোট পেয়েছিলেন তিনি। তবে তার চেষ্টা ফল দেয়নি। যদিও সিরাজের বলে একটি ছক্কা হাঁকিয়ে আশা দেখিয়েছিলেন গাস অ্যাটকিনসন।
প্রসিধ কৃষ্ণার পরের ওভারের প্রথম বলে দুই রানে আশাটা জোরালো হয়েছিল ইংল্যান্ডের। কিন্তু সে ওভারে আর ব্যাটে বলেই করতে পারেননি অ্যাটকিনসন। শেষ বলে সিঙ্গেল নেন। তবে সিরাজের করা পরের ওভারের প্রথম বলে হাঁকাতে গিয়ে লাইন মিস করে বোল্ড হয়ে যান এই ব্যাটার। জয় মিলে ভারতের। ২৯ বলে ১৭ রান আসে অ্যাটকিনসনের ব্যাটে।
সকালে আগের দিনের ৬ উইকেটে ৩৩৯ রান নিয়ে ব্যাটিংয়ে নামে ইংল্যান্ড। দিনের শুরুতেই প্রসিধ কৃষ্ণার করা প্রথম দুই বলে দুটি বাউন্ডারি আদায় করে ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেয় স্বাগতিকরা। তবে পরের ওভারেই ঘুরে দাঁড়ায় ভারত। সিরাজের করা তৃতীয় বলে খোঁচা মারতে গিয়ে উইকেটরক্ষক ধ্রুব জুরেলের হাতে ক্যাচ তুলে দেন জেমি স্মিথ। সামনের দিকে ঝুঁকে নিচু হওয়া ক্যাচ লুফে নেন এই উইকেটরক্ষক। ২০ বলে ২ রান করে থামেন স্মিথ।
পরের ওভারে ফিরে জেমি ওভারটনকে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে ফেলেন সিরাজ। তার ফুলার লেন্থের বলে শাফল করতে গেলে লাইন মিস করেন ওভারটন। কিছুটা সময় নিয়ে আঙুল তোলেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়েছিলেন ওভারটন। তবে লাভ হয়নি। আম্পায়ার্স কলে ফিরতে হয় তাকে। ১৭ বলে ৯ রান করেন এই ব্যাটার। দুই ওভার পর যশ টংকে কৃষ্ণা বোল্ড করলে জমে যায় ম্যাচ।
১৪৮ বছরের ইতিহাসে
প্রথম নজির
টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অনন্য রেকর্ড হয়েছে ইংল্যান্ড-ভারত পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজে।
টেস্ট ক্রিকেটের ১৪৮ বছরের ইতিহাসে একই সিরিজে দুই দলের মিলিয়ে ৯ জন ব্যাটার ৪০০ বা তার বেশি রান করেছেন। টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে প্রথমবার এমন ঘটনা ঘটল।
তালিকায় ভারতের পাঁচজন এবং ইংল্যান্ডের চার জন ক্রিকেটার রয়েছেন। ভারতীয়দের মধ্যে শুবমান গিল, কেএল রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋষভ পান্ত এবং যশস্বী জয়সওয়াল রয়েছেন। স্বাগতিক ইংলিশদের মধ্যে বেন ডাকেট, জো রুট, জেমি স্মিথ এবং হ্যারি ব্রুক রয়েছেন।
১৮৭৭ সালে মাঠে গড়িয়েছিল প্রথম টেস্ট ম্যাচ। ১৮৮৪ সালে প্রথমবার টেস্ট সিরিজ হয়েছিল। সেই হিসেবে ১৪১ বছরের ইতিহাসে এমন ঘটনা দেখা যায়নি যেখানে আট জনের বেশি ব্যাটার ৪০০-র বেশি রান করেন। ১৯৭৫-৭৬ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম অস্ট্রেলিয়ার সিরিজে আট জনের রান ছিল ৪০০-র ওপর। ১৯৯৩ অ্যাশেজেও আট জন ৪০০-র ওপর রান করেছিলেন।
সবার ওপরে গিল
এই সিরিজে রানের তালিকায় সবার ওপরে আছেন শুবমান গিল। ৫ টেস্টে ৭৫৪ রান করেছেন ভারতীয় অধিনায়ক। চারটি শতরান রয়েছে তার। দ্বিতীয় অবস্থানে আছেন জো রুট। তার রান ৫৩৭। কেএল রাহুল করেছেন ৫৩২ রান। চারে থাকা জাদেজা ৫১৬ রান করেছেন। পাঁচে ঋষভ পান্ত। তিনি ৪৭৯ করেছেন। এছাড়া চারশ’র বেশি রান রয়েছে ডাকেট, ব্রুক, স্মিথ এবং যশস্বী জয়সওয়ালের।