রিয়াল মাদ্রিদ ১-০ গোলে লিভারপুলকে পরাজিত করে চ্যাম্পিন্স লিগ ফুটবলের শিরোপা জয় করেছে। শনিবার স্ট্যাড ডি ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত ফাইনালে তারা ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের করা একমাত্র গোলে ইংলিশ জায়ান্টদের পরাজিত করে। এ নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ১৪বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয় করলো। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তাদের ধারে কাছে কোন দলই নেই। ইটালির এসি মিলান সাতবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে।
লিভারপুলকে পরাজিত করে ২০১৮ সালে ১৩তম শিরোপা জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। লিভারপুলের সামনে ছিল সে পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়ার মিশন। তারা প্রকাশ্যে সে কথা বলেছে ফাইনালের আগে। বিশেষ করে মোহামেদ সালাহ আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন এবার প্রতিশোধ নিবেন। কিন্তু তার সে আশা পূরণ হয়নি। আরো একবার পরাজিত হয়ে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে হলো লিভারপুলকে।
সাম্প্রতিক সময়ের ফর্মের কারণে বেশীরভাগ ফুটবল বিশেষজ্ঞই জানিয়েছিলেন ফাইনালে লিভারপুলই ফেবারিট। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে বলে রিয়ালকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মানেই যেন রিয়ালের জয়। আরো একবার সেটাই প্রমাণ করলো কার্লো অ্যানচেলোত্তির শীষ্যরা। এ ম্যাচে দারুন খেলেছেন রিয়ালের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা। বিশেষ করে গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া ছিলেন অজেয়। তিনি বেশ কয়েকবার দলকে নিশ্চিত গোল খাওয়া থেকে বাঁচিয়ে দেন।
সুযোগ সৃষ্টি করার দিক থেকে এগিয়ে ছিল লিভারপুলই। কিন্তু গোল করার ক্ষেত্রে তারা ছিল পিছিয়ে। রিয়ালের কোচ অ্যানচেলোত্তি সবচেয়ে বেশী চারবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার কৃতিত্ব অর্জণ করেন। তিনি এসি মিলান এবং রিয়ালকে দুইবার করে শিরোপা এনে দেন। রিয়ালের সাবেক কোচ জিনেদিন জিদান টানা তিনবার শিরোপা জিতে আছেন দ্বিতীয় স্থানে।
উচ্ছসিত অ্যানচেলোত্তি বলেন, ‘আমি রেকর্ড গড়া লোক। আমি যখন রিয়ালের দায়িত্ব নেই তখন থেকেই ভাগ্য আমাকে সহায়তা করে আসছে। রিয়াল অসাধারণ একটি ক্লাব। খেলোয়াড়রা দারুন। তাদের মানসিক দৃঢ়তা অকল্পনীয়।’
রিয়াল এ নিয়ে শেষ আটবার ফাইনালে খেলে প্রতিবারই জয়ী হলো। কিছু দিন আগে তারা লা লিগার শিরোপাও জয় করেছে। লিভারপুল সর্বাত্মক চেষ্টা করেও তাদের সপ্তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে পারেনি। রিয়ালের গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া অবিশ^াস্য দৃঢ়তায় লিভারপুলের সব আক্রমণ রুখে দেন। এ পরাজয় মেনে নেয়া খেলোয়াড়দের জন্য ছিল খুবই কষ্টের। কোচ ইয়োর্গেন ক্লপ তা স্বীকারও করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মৌসুমটা যে দারুন কেটেছে তা এখন ড্রেসিং রুমে কেউই মনে করে না। আমরা ভাল খেলেছি, কিন্তু নিখুত খেলতে পারিনি। প্রতিপক্ষ যে কৌশলে খেলেছে তাতে আমাদের পক্ষে নিখুত খেলার সুযোগও ছিল না। আমরা পোস্ট লক্ষ্য করে অনেক শট নিয়েছি। তার মধ্যে থিবো নিশ্চিত দুটি গোল বাচিয়ে দিয়েছে।’
ফাইনাল ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল রাশিয়ায়। কিন্তু ইউক্রেনের সাথে তারা যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ায় সেটি সরিয়ে নেয়া হয় প্যারিসে। মাঠে প্রবেশ করা নিয়ে দর্শকরা ঝামেলা সৃষ্টি করলে ফাইনাল শুরু হয় অন্তত ৩৫ মিনিট দেরিতে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়ে মাঠের বাইরের সমর্থকদের নিয়ন্ত্রন করে।
লিভারপুল ম্যাচের শুরুটা করেছিল বেশ দাপটের সাথেই। ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আর্নল্ডের পাস থেকে সালাহর নেয়া শট বাচিয়ে দেন কর্তোয়া। ২১ মিনিটে সাদিও মানে চমৎকার একটি শট মেরেছিলেন। কিন্তু ঝাপিয়ে পড়ে সেটি রক্ষা করেন কর্তোয়া। ক্যাসেমিরো এবং এডার মিলিটাওকে বোকা বানিয়ে শটটি মেরেছিলেন মানে। বিরতির ঠিক আগে লিভারপুলের জালে বল পাঠিয়েছিলেন করিম বেনজেমা। লিভারপুলের রক্ষণভাগের ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ তিনি গোলটি করেছিলেন। কিন্তু ভিএআর দেখে রেফারি সেটি বাতিল করেন বেনজেমা অফসাইড পজিশনে থাকায়। যদিও বেনজেমার কাছে বলটি গিয়েছিল লিভারপুলের খেলোয়াড় ফ্যাবিনিয়োর পায়ে লেগে। রেফারির এ বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয় রিয়াল মাদ্রিদ।
বিরতির পরও লিভারপুল চাপ অব্যাহত রাখে। কিন্তু ৫৯ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল করে রিয়াল মাদ্রিদ। অ্যান্ডি রবার্টসনের কাছ থেকে লুকা মড্রিচ বল কেড়ে নিয়ে দেন ভালভার্দেকে। ভালভার্দে সেটি এগিয়ে দেন ভিনিসিয়ুসকে। ব্রাজিলের এ তরুন নিজ দেশের গোলরক্ষক অ্যালিসনকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি। মৌসুমের শুরু থেকে দারুন খেলা ভিনিসিয়ুস ফাইনালে গোল করে সফল ভাবে শেষ করেন মৌসুমটি।
শেষ দিকে কর্তোয়া বাচিয়ে দেন মোহামেদ সালাহর আরেকটি শট। ফলে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয় লিভারপুলের এবং শেষ বাশি বাজার সাথে সাথে উল্লাসে মেতে ওঠে রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড় ও সমর্থকরা।
রোববার, ২৯ মে ২০২২
রিয়াল মাদ্রিদ ১-০ গোলে লিভারপুলকে পরাজিত করে চ্যাম্পিন্স লিগ ফুটবলের শিরোপা জয় করেছে। শনিবার স্ট্যাড ডি ফ্রান্সে অনুষ্ঠিত ফাইনালে তারা ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের করা একমাত্র গোলে ইংলিশ জায়ান্টদের পরাজিত করে। এ নিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ ১৪বার চ্যাম্পিয়ন্স লিগের শিরোপা জয় করলো। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে তাদের ধারে কাছে কোন দলই নেই। ইটালির এসি মিলান সাতবার চ্যাম্পিয়ন হয়ে আছে দ্বিতীয় স্থানে।
লিভারপুলকে পরাজিত করে ২০১৮ সালে ১৩তম শিরোপা জিতেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। লিভারপুলের সামনে ছিল সে পরাজয়ের প্রতিশোধ নেয়ার মিশন। তারা প্রকাশ্যে সে কথা বলেছে ফাইনালের আগে। বিশেষ করে মোহামেদ সালাহ আগেই ঘোষণা দিয়ে রেখেছিলেন এবার প্রতিশোধ নিবেন। কিন্তু তার সে আশা পূরণ হয়নি। আরো একবার পরাজিত হয়ে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়তে হলো লিভারপুলকে।
সাম্প্রতিক সময়ের ফর্মের কারণে বেশীরভাগ ফুটবল বিশেষজ্ঞই জানিয়েছিলেন ফাইনালে লিভারপুলই ফেবারিট। তবে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে বলে রিয়ালকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে মানেই যেন রিয়ালের জয়। আরো একবার সেটাই প্রমাণ করলো কার্লো অ্যানচেলোত্তির শীষ্যরা। এ ম্যাচে দারুন খেলেছেন রিয়ালের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা। বিশেষ করে গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া ছিলেন অজেয়। তিনি বেশ কয়েকবার দলকে নিশ্চিত গোল খাওয়া থেকে বাঁচিয়ে দেন।
সুযোগ সৃষ্টি করার দিক থেকে এগিয়ে ছিল লিভারপুলই। কিন্তু গোল করার ক্ষেত্রে তারা ছিল পিছিয়ে। রিয়ালের কোচ অ্যানচেলোত্তি সবচেয়ে বেশী চারবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতার কৃতিত্ব অর্জণ করেন। তিনি এসি মিলান এবং রিয়ালকে দুইবার করে শিরোপা এনে দেন। রিয়ালের সাবেক কোচ জিনেদিন জিদান টানা তিনবার শিরোপা জিতে আছেন দ্বিতীয় স্থানে।
উচ্ছসিত অ্যানচেলোত্তি বলেন, ‘আমি রেকর্ড গড়া লোক। আমি যখন রিয়ালের দায়িত্ব নেই তখন থেকেই ভাগ্য আমাকে সহায়তা করে আসছে। রিয়াল অসাধারণ একটি ক্লাব। খেলোয়াড়রা দারুন। তাদের মানসিক দৃঢ়তা অকল্পনীয়।’
রিয়াল এ নিয়ে শেষ আটবার ফাইনালে খেলে প্রতিবারই জয়ী হলো। কিছু দিন আগে তারা লা লিগার শিরোপাও জয় করেছে। লিভারপুল সর্বাত্মক চেষ্টা করেও তাদের সপ্তম চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে পারেনি। রিয়ালের গোলরক্ষক থিবো কর্তোয়া অবিশ^াস্য দৃঢ়তায় লিভারপুলের সব আক্রমণ রুখে দেন। এ পরাজয় মেনে নেয়া খেলোয়াড়দের জন্য ছিল খুবই কষ্টের। কোচ ইয়োর্গেন ক্লপ তা স্বীকারও করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের মৌসুমটা যে দারুন কেটেছে তা এখন ড্রেসিং রুমে কেউই মনে করে না। আমরা ভাল খেলেছি, কিন্তু নিখুত খেলতে পারিনি। প্রতিপক্ষ যে কৌশলে খেলেছে তাতে আমাদের পক্ষে নিখুত খেলার সুযোগও ছিল না। আমরা পোস্ট লক্ষ্য করে অনেক শট নিয়েছি। তার মধ্যে থিবো নিশ্চিত দুটি গোল বাচিয়ে দিয়েছে।’
ফাইনাল ম্যাচটি হওয়ার কথা ছিল রাশিয়ায়। কিন্তু ইউক্রেনের সাথে তারা যুদ্ধে লিপ্ত হওয়ায় সেটি সরিয়ে নেয়া হয় প্যারিসে। মাঠে প্রবেশ করা নিয়ে দর্শকরা ঝামেলা সৃষ্টি করলে ফাইনাল শুরু হয় অন্তত ৩৫ মিনিট দেরিতে। পুলিশ টিয়ার গ্যাস ছুড়ে মাঠের বাইরের সমর্থকদের নিয়ন্ত্রন করে।
লিভারপুল ম্যাচের শুরুটা করেছিল বেশ দাপটের সাথেই। ট্রেন্ট আলেকজান্ডার আর্নল্ডের পাস থেকে সালাহর নেয়া শট বাচিয়ে দেন কর্তোয়া। ২১ মিনিটে সাদিও মানে চমৎকার একটি শট মেরেছিলেন। কিন্তু ঝাপিয়ে পড়ে সেটি রক্ষা করেন কর্তোয়া। ক্যাসেমিরো এবং এডার মিলিটাওকে বোকা বানিয়ে শটটি মেরেছিলেন মানে। বিরতির ঠিক আগে লিভারপুলের জালে বল পাঠিয়েছিলেন করিম বেনজেমা। লিভারপুলের রক্ষণভাগের ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ তিনি গোলটি করেছিলেন। কিন্তু ভিএআর দেখে রেফারি সেটি বাতিল করেন বেনজেমা অফসাইড পজিশনে থাকায়। যদিও বেনজেমার কাছে বলটি গিয়েছিল লিভারপুলের খেলোয়াড় ফ্যাবিনিয়োর পায়ে লেগে। রেফারির এ বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয় রিয়াল মাদ্রিদ।
বিরতির পরও লিভারপুল চাপ অব্যাহত রাখে। কিন্তু ৫৯ মিনিটে কাউন্টার অ্যাটাক থেকে গোল করে রিয়াল মাদ্রিদ। অ্যান্ডি রবার্টসনের কাছ থেকে লুকা মড্রিচ বল কেড়ে নিয়ে দেন ভালভার্দেকে। ভালভার্দে সেটি এগিয়ে দেন ভিনিসিয়ুসকে। ব্রাজিলের এ তরুন নিজ দেশের গোলরক্ষক অ্যালিসনকে পরাস্ত করতে ভুল করেননি। মৌসুমের শুরু থেকে দারুন খেলা ভিনিসিয়ুস ফাইনালে গোল করে সফল ভাবে শেষ করেন মৌসুমটি।
শেষ দিকে কর্তোয়া বাচিয়ে দেন মোহামেদ সালাহর আরেকটি শট। ফলে সব চেষ্টা ব্যর্থ হয় লিভারপুলের এবং শেষ বাশি বাজার সাথে সাথে উল্লাসে মেতে ওঠে রিয়াল মাদ্রিদের খেলোয়াড় ও সমর্থকরা।