alt

সম্পাদকীয়

গণপিটুনির দুঃসহ চিত্র

: বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫

গত বছর দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক রূপে বিরাজ করেছে। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের প্রতিবেদনে যেসব বিষয় তুলে ধরেছে, তা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলে দেয়। বিশেষত, ‘মব জাস্টিস’ বা জনতার হাতে বিচারের নামে অমানবিক হত্যাকা-ের ঘটনা জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ১২৮ জন, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। মব জাস্টিসের মতো ঘটনা দেশে আইনের শাসনের অভাব এবং নাগরিকদের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি করছে।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের ঘটনাও ঘটতে দেখা গেছে। ২০২৪ সালে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ, এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। হিসাব অনুযায়ী, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর ১৪৭টি হামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৪০৮টি বাড়িঘর এবং ৩৬টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে। এ ধরনের সহিংসতা দেশের সামাজিক শান্তির জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মনে রাখা প্রয়োজন, মানবাধিকার শুধু একটিমাত্র সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর অধিকার নয়। এটি সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার। দেশে মানবাধিকার রক্ষার জন্য জাতীয়ভাবে স্বীকৃত অনেক পন্থা রয়েছে, তবুও এগুলোর কার্যকর প্রয়োগে অনেক সময়েই ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে গোষ্ঠীস্বার্থ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনেক ক্ষেত্রেই সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জবাবদিহিতা এবং সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি।

যদি সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো মানবাধিকার রক্ষায় সদিচ্ছা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে না পারে, তবে আগামীতে এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। নাগরিকদের নিরাপত্তা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, এবং সামাজিক শান্তির জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো গ্রহণ করা না হলে, দেশের ভবিষ্যৎ সংকটময় হয়ে উঠবে।

মানবাধিকার রক্ষার জন্য দেশের সংবিধান এবং আইনের প্রতি সংশ্লিষ্টদের প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে হবে। তাহলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

হাসপাতালের লোকবল সংকট দূর করুন

প্রাথমিক শিক্ষা : উন্নত জাতি গঠনে অপরিহার্য ভিত্তি

খেলার মাঠে কারখানা : পরিবেশ দূষণ ও জনস্বাস্থ্যের বিপদ

শীতের তীব্রতা : বিপন্ন মানুষ এবং সরকারের কর্তব্য

বনে কেন করাতকল

কর্মক্ষেত্রে শ্রমিক নিরাপত্তা

নববর্ষে মানবিক ও সমতার বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার

পরিযায়ী পাখি রক্ষায় ব্যবস্থা নিন

প্রবাসী কর্মীদের স্বাস্থ্য সমস্যা : সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে

অবৈধ ইটভাটার কারণে পরিবেশ ও কৃষির বিপর্যয়

পরিবেশ রক্ষায় প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন জরুরি

নরসিংদী-মদনগঞ্জ সড়কে ময়লার ভাগাড়

ভরা মৌসুমে বেড়েছে চালের দাম : বাজারে অস্থিরতা, গ্রাহকরা বিপাকে

ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতিতে আগুন : দুর্ঘটনা নাকি নাশকতা?

সচিবালয়ে আগুন : সুষ্ঠু তদন্ত হোক

অভয়াশ্রম রক্ষায় কার্যকর উদ্যোগ প্রয়োজন

ফসলি জমির সুরক্ষা নিশ্চিত করুন

প্লাস্টিক বোতলের ব্যবহার : স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য বাড়তে থাকা ঝুঁকি

উখিয়ার আশ্রয়শিবিরে অগ্নিকাণ্ড

নির্বিচারে কাটা হচ্ছে সড়কের গাছ, প্রশাসন কী করছে

শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে ‘নীরব এলাকা’ ঘোষণার কার্যকারিতা ও চ্যালেঞ্জ

অবৈধ ইটভাটা বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ জরুরি

সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন : নাগরিকদের ভোগান্তি

অপরিকল্পিত খাল খনন : ঝুঁকিতে হরিণাকু-ুর কৃষি ও জনজীবন

সড়ক ব্যবস্থার দুর্বলতা দূর হবে কবে?

নিপাহ ভাইরাস মোকাবিলায় সতর্ক হতে হবে

চাল-তেলে অস্থিরতা, ক্রেতার স্বস্তি কোথায়?

আমন-বীজ নিয়ে প্রতারণা

অগ্নিকা-ের ঝুঁকি কমাতে চাই উন্নত নগর ব্যবস্থাপনা

খেজুর গাছ গবেষণা ক্ষেত্রের বিপর্যয় : রক্ষার পথে পদক্ষেপ জরুরি

ইজতেমা ময়দানে সংঘাত : কেন ব্যর্থ হলো সমঝোতা প্রচেষ্টা?

ফেরি চালু করে জনদুর্ভোগ দূর করুন

শীতের তীব্রতা বাড়ছে, বাড়ছে রোগের প্রকোপ

ময়ূর নদ রক্ষায় পরিকল্পিত পদক্ষেপ নিন

কেঁচো সার : কৃষকের ভাগ্য বদলানোর শক্তিশালী উপকরণ

ফসলি জমিতে কেন চালকল

tab

সম্পাদকীয়

গণপিটুনির দুঃসহ চিত্র

বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারী ২০২৫

গত বছর দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি অত্যন্ত উদ্বেগজনক রূপে বিরাজ করেছে। মানবাধিকার সংস্থা আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) তাদের প্রতিবেদনে যেসব বিষয় তুলে ধরেছে, তা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং সামাজিক শান্তি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রশ্ন তুলে দেয়। বিশেষত, ‘মব জাস্টিস’ বা জনতার হাতে বিচারের নামে অমানবিক হত্যাকা-ের ঘটনা জনমনে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন ১২৮ জন, যা গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। মব জাস্টিসের মতো ঘটনা দেশে আইনের শাসনের অভাব এবং নাগরিকদের মধ্যে অবিশ্বাস সৃষ্টি করছে।

বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের ঘটনাও ঘটতে দেখা গেছে। ২০২৪ সালে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে। এসব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না গেলে আইনের শাসন প্রশ্নবিদ্ধ হবে।

দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আক্রমণ, এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। হিসাব অনুযায়ী, হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর ১৪৭টি হামলা হয়েছে, যার মধ্যে ৪০৮টি বাড়িঘর এবং ৩৬টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে। এ ধরনের সহিংসতা দেশের সামাজিক শান্তির জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

মনে রাখা প্রয়োজন, মানবাধিকার শুধু একটিমাত্র সম্প্রদায় বা গোষ্ঠীর অধিকার নয়। এটি সব নাগরিকের মৌলিক অধিকার। দেশে মানবাধিকার রক্ষার জন্য জাতীয়ভাবে স্বীকৃত অনেক পন্থা রয়েছে, তবুও এগুলোর কার্যকর প্রয়োগে অনেক সময়েই ব্যর্থতা পরিলক্ষিত হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর মাঝে গোষ্ঠীস্বার্থ মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনেক ক্ষেত্রেই সহায়ক ভূমিকা পালন করে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জবাবদিহিতা এবং সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি।

যদি সরকার এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো মানবাধিকার রক্ষায় সদিচ্ছা ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে না পারে, তবে আগামীতে এই পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। নাগরিকদের নিরাপত্তা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা, এবং সামাজিক শান্তির জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারগুলো গ্রহণ করা না হলে, দেশের ভবিষ্যৎ সংকটময় হয়ে উঠবে।

মানবাধিকার রক্ষার জন্য দেশের সংবিধান এবং আইনের প্রতি সংশ্লিষ্টদের প্রতিশ্রুতি মেনে চলতে হবে। তাহলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হতে পারে এবং জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে।

back to top