alt

উপ-সম্পাদকীয়

বৈষম্যমুক্ত নিরাপদ সমাজ গঠন কেন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি

ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ

: বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বহুত্ববাদী সমাজ বিনির্মাণে সর্বাগ্রে প্রয়োজন সহননশীল সমাজ। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের যেমন প্রয়োজনীয়তা আছে তেমনি কৃষক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, চামার ঝারুদার, দর্জি ও কুটির শিল্পীর ও প্রয়োজনীয়তা আছে। প্রত্যেকেই আমরা প্রত্যেকের ওপর নির্ভরশীল। এজন্য জাতিগত কুসংস্কার থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। জাত, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ইণ্যাদি ভুলে গিয়ে মানুষকে মানুষ হিসেবে ভাবতে হবে। সব শ্রেণীর ও পেশার মানুষকে মূল্যায়ন করতে হবে, সম্মান ও শ্রদ্ধা করতে হবে, মর্যাদা দিতে হবে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে দুর্বল ভাবলে চলবে না। কারণ রাষ্ট্রের সংবিধান সবাই নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ ও সমঅধিকার দিয়েছে। সমাজে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিতে হবে। এজন্য শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ সংগঠন তথা রাষ্ট্রের প্রয়োজন। আধুনিক জীবনযাপনের জন্য সব ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকবে। পরিবেশের উন্নয়ন হবে। মানুষের জীবনে শান্তি থাকবে। নরডিক দেশগুলোতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু আত্মহত্যার হার বেশি। তার মানে- মানুষের মধ্যে হতাশা বেশি। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও ভারসাম্যপূর্ণ হওয়া উচিত। এখানে কুসংস্কার থাকবে না। তাই যে কোন সরকারকেই উদারপন্থি গণতান্ত্রিক হতে হবে।

স্বাধীনতা লাভের পর ৫২ বছর অতিক্রম হতে চলছে, কিন্তু গণতন্ত্র আমাদের দেশে অসুস্থতায় ভুগছে। বাংলাদেশে ব্যক্তি বা দলীয় নেতৃত্বের ভূমিকায় মিশ্র সাফল্য লক্ষণীয়। রাজনৈতিক দলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেখানে বড় মাপের সংস্কারের প্রয়োজন আছে। কিন্তু তার প্রতি তেমন কোনো উৎসাহ লক্ষ্য করা যায় না। সিভিল সমাজের ভূমিকাও প্রশ্নবোধক। তারা মূলত আন্তর্জাতিক পুঁজির প্রবক্তা এবং দলীয়করণের দোষে দুষ্ট। সব মিলিয়ে গণতন্ত্রের ভাগ্য বাংলাদেশে এখনো তেমন সুপ্রসন্ন নয়। গণতন্ত্রের সাফল্যের অন্তর্নিহিত বীজ উদারনীতির বিকাশমান ধারাতে বিদ্যমান থাকে। গুরুত্বের বিচারে উদারনীতির ভূমিকাকে লঘু ভাবা যায় না। একে অপরের প্রতি উদার না হলে নাগরিক সমাজে নানা মতের প্রসার ঘটে না। ব্যক্তি-স্বাধীনতা এবং ভিন্নমত মেনে নেয়ার সংস্কৃতি গড়ে না উঠলে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়। উদারবাদী মানসিকতা সমাজে এমনিতেই জন্ম নেয় না। তার বিকাশে সর্বজনীন শিক্ষার বিকাশ, মুক্ত মনের প্রসার, জ্ঞান-বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন হয়। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকেও উপেক্ষা করা যায় না। রাষ্ট্রের পক্ষে নানা আইন প্রবর্তন করে উদারনীতির প্রসার ঘটানো সম্ভব হলেও সেসব উদ্যোগ আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থায় বর্তমানে হয় অনুপস্থিতি নতুবা পুরোমাত্রায় নেই। উদারনীতি বিকাশের ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা প্রায় বলা হয়। মধ্যবিত্ত বলতে বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, পেশাজীবী গোষ্ঠী, সাংস্কৃতিক কর্মীদের বোঝানো হলেও বাংলাদেশে তাদের অবদান প্রশ্নসাপেক্ষ। সিভিল সমাজ নামে যারা রাষ্ট্র বা রাজনীতির ঊর্ধ্বে দাঁড়িয়ে জনগণের পক্ষে কথা বলেন এবং গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে যারা পরিচিত তাদের ভূমিকাও আজ প্রশ্নসাপেক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংকীর্ণ রাজনৈতিক অবস্থান পরিহার করে তারা নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে পরিস্থিতি বিচার করতে অভ্যস্ত নন। সিভিল সমাজের মধ্যে অনেকে নব্য উদারনৈতিক পুঁজিবাদী কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত। স্থানীয় পর্যায়ে ওই কেন্দ্রের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে তারা গণতন্ত্রের কথা বলেন। কিন্তু তাদের বক্তব্য বা নীতিগত অবস্থাানের প্রতি মানুষের তেমন কোনো আস্থা নেই। সে কারণে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নিয়ন্ত্রিত বা আধিপত্যবাদী রাষ্ট্রে জঙ্গিবাদের জন্ম হবেই যা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এমনকি নিয়ন্ত্রিত বা আধিপত্যবাদী রাষ্ট্রে যাদের জঙ্গি দমনে নিয়োজিত করা হয় একদিন সময়ের প্রবাহে তারাই রাষ্ট্র্রের জন্য হুমকি হয়ে যায়, যার বহু প্রমাণ বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। এ পর্যন্ত বিবৃতি লেখার পরিপ্রক্ষিতে পাঠক সাধারণের মধ্যে কতিপয় জিজ্ঞাসা উদ্ভব হবে, সেগুলো যেমন- বৈষম্যমুক্ত ও নিরাপদ সমাজ প্রতিষ্ঠা কিভাবে সম্ভব? বৈষম্যমুক্ত নিরাপদ সমাজ গঠনে রাজনৈতিক সহিংসতা কি বড় চ্যালেঞ্জ? দেশ ও জনগণ কি অসাধু আমলা ও রাজনীতির দুষ্টচক্রের কাছে জিম্মি? বৈষম্যমুক্ত নিরাপদ বাংলাদেশ জনগণের কামনা হওয়া কি অযৌক্তিক? বৈষম্যমুক্ত ও নিরাপদ সমাজ গঠনে সরকারের ভূমিকা কি হওয়া উচিত? উপরিউক্ত জিজ্ঞাসার সদুত্তর জনগণ অন্ততপক্ষে বর্তমান সরকার প্রধানের কাছে আশা করা যায়।

একে অপরের প্রতি উদার না হলে নাগরিক সমাজে নানা মতের প্রসার ঘটে না। ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং ভিন্নমত মেনে নেয়ার সংস্কৃতি গড়ে না উঠলে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়। উদারবাদী মানসিকতা সমাজে এমনিতেই জন্ম নেয় না। তার বিকাশে সর্বজনীন শিক্ষার বিকাশ, মুক্ত মনের প্রসার, জ্ঞান-বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন হয়

বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলের সরকারের আমলে কারাগারের উপচেপরা চিত্র পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। উভয় আমলেই যে পরিমাণ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা বর্ণনাতীত। প্রতিটি কারাগারে ধারণক্ষমতার পাঁচ থেকে ছয়গুণ বেশি বন্দি রাখা হয়েছে, তাদের সিংহভাগ হচ্ছে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থক। ধারণক্ষমতার মাত্রাতিরিক্ত বন্দি রাখার ফলে কারাগার ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়ে থাকে। বন্দিরা বঞ্চিত হচ্ছে ন্যূনতম মানবাধিকার থেকে। চার বা ততোধিক মামলার আসামিদের ২৪ ঘণ্টা ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখা হয়, খেতে দেয়া মানুষের পক্ষে গ্রহণের অযোগ্য খাদ্য ও পানীয়, শোবার জন্য অধিকাংশ বন্দিকে দেয়া হয় মাত্র এক হাত প্রশস্ত জায়গা যেখানে চিত হয়ে শোয়া সম্ভব নয়। ফাইলের বহু বন্দি রাতের পর রাত শুতে না পেরে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকে, যাদের স্নান দূরে থাক প্রাতঃকৃত্য সম্পন্ন করারও ন্যূনতম স্থান নেই। এর ফলে বিপুলসংখ্যক বন্দিকে নানা ধরনের শারীরিক অসুস্থতার শিকার হতে হয়, যে অসুস্থতার কোনো চিকিৎসা কারাগারে নেই। আমাদের জনগণকে শুদ্ধাচারী হতে হবে। ভেতরে এক রকম বাইরে অন্যরকম এই মানসিকতা পরিহার করে এগোতে হবে। যাই হোক, সমাজে মানুষের যে নৈতিক অধঃপতন হয়েছে- তা সুশাসনের অভাবে ঘটে থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দুঃশাসন, দুর্নীতির ব্যাপারে রাষ্ট্রকে সজাগ থাকতে হবে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো- সব প্রতিষ্ঠান ও সমাজের মানুষকে তাদের আত্মসমালোচনার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে নিজ নিজ কাজে মনোযোগী হতে হবে। নচেৎ আত্মসমালোচনা ছাড়া সমাজের এ জট সহজে খোলার নয়। এক্ষেত্রে প্রচলিত আইন-কানুনের পরিবর্তন আবশ্যক।

সভ্যতার উন্নতির বিকাশে চাই মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। জাতীয় ঐক্যই পারে যে কোন উন্নয়নের স্বর্ণ শিখরের চূড়ায় আরোহনের। মহান মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে সাম্য, মানবিক মর্যাদা আর সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন দেখেছিলাম একদিন আমরা, তার কতটা পূরণ হয়েছে- সেই হিসাব করার এখন সময় এসেছে। বাংলাদেশ আজ নিম্নমধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদায় পৌঁছবে বাংলাদেশ। দক্ষ ও কর্মক্ষম জনসম্পদ, কৃষিতে বিপ্লব, প্রবৃদ্ধি নিঃসন্দেহে দেশের জন্য আশার বার্তা বহন করে। তবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে শুধু অর্থনৈতিক আর অবকাঠামোগত উন্নয়নই যথেষ্ট নয়। টেকসই উন্নয়নের জন্য চাই একটি অংশীদারীমূলক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার সম্পন্ন, জনকল্যাণমূলক সহিষ্ণু, শক্তিকামী ও সমৃদ্ধ সমাজ। জাতীয় ঐক্যই দেশকে সুন্দর, সুদৃঢ় ও সংহতির চরম পর্যায়ে উঠাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। জাতীয় একাত্মতা ঠিক করবে আগামী দিনের বাংলাদেশ কেমন হবে। জাতীয় একাত্মতা প্রতিটি রাষ্ট্রের জন্য একান্ত আবশ্যক। জাতীয় একাত্মতার অভাবে অনেক রাষ্ট্রের পতন ঘটেছে। আবার এর প্রভাবে অনেক রাষ্ট্র শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে। জাতীয় একাত্মতার অভাবেই পাকিস্তান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে ধরে রাখতে পারেনি। সোভিয়েত ইউনিয়ন পারেনি এর অখ-তা রক্ষা করতে। এই জাতীয় একাত্মতার সমস্যা আধুনিক বিশ্বের প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রেই প্রকট আকার দেখা দিয়েছে। লুসিয়ান পাই তার ‘অ্যাসপেক্টস অভ পলিটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট’ নামক গ্রন্থে রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংকটসমূহকে ৬টি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করেছেন- তার মধ্যে অন্যতম হলো জাতীয় একাত্মতার সংকট। বিশেষ করে বৃহদায়তন রাষ্ট্রের জন্য এটি একটি মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সামাজিক জীবনের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় জীবনে সহনশীলতার বড়ই অভাব। আমাদের রাজনীতি থেকে তো সহনশীলতা একবারেই বিদায় নিয়েছে। ভিন্নমতকে দমন করার জন্য পৃথিবীব্যাপী যে অসহনশীলতার চর্চা শুরু হয়েছে, তা সত্যিই দুঃখজনক। স্বাধীন দেশে ভিন্নমত থাকবে, সমলোচনা থাকবে, এটিই স্বাভাবিক। নিজের ক্ষমতার শক্তি প্রমাণে তুলনামূলক দুর্বল দেশগুলোর ওপর যে হত্যা নির্যাতন চালাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অথচ রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা আছেন তাদের সর্বোচ্চ সহনশীল হওয়া দরকার ছিল। সমাজে রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে মানুষের অধিকার হনন করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে। পারিবারিক জীবনের পাশাপাশি সামাজিক জীবনে সহনশীলতার চর্চা ফিরিয়ে নিয়ে আসা খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় একে অপরের প্রতি সহনশীল আচরণ অত্যন্ত জরুরি ও অত্যাবশ্যক। ব্যক্তিজীবনে ও সামাজিক জীবনে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর তথা বয়স্ক, বৃদ্ধ ও দুর্বল শ্রেণীর প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান ও সহনশীল আচরণের শিক্ষা দিয়ে নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে।

[লেখক : সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি]

সর্বজনীন শিক্ষার বলয়ের বাইরে আদিবাসীরা : অন্তর্ভুক্তির লড়াইয়ে বৈষম্যের দেয়াল

শোনার গান, দেখার টান : অনুভূতির ভোঁতা সময়

ছবি

ছিন্নপত্রে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও রবীন্দ্র চেতনা

ভেতরের অদৃশ্য অপরাধ : সমাজের বিপন্ন মানসিকতা

দারিদ্র্য ও বৈষম্য নিরসনে খাসজমি ও জলার গুরুত্ব

অবহেলিত কৃষক ও বাজার ব্যবস্থার বৈষম্য

রাক্ষুসে মাছের দাপটে বিপন্ন দেশীয় মাছ : করণীয় কী?

বজ্রপাতের আতঙ্কে জনজীবন

তাহলে কি ঘৃণায় ছেয়ে যাবে দেশ, মানবজমিন রইবে পতিত

কর্পোরেট ও ব্যক্তিগত সামাজিক দায়বদ্ধতা

‘রাখাইন করিডর’ : একটি ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

ভিন্নমতের ভয়, নির্বাচনের দোলাচল ও অন্তর্বর্তী সরকারের কৌশলী অবস্থান

সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা

কৃষি শিক্ষা হোক উদ্যোক্তা গড়ার মাধ্যম

রঙ্গব্যঙ্গ : কোটের কেবল রং বদলায়

মে দিবসের চেতনা বনাম বাস্তবতা

শ্রম আইন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় চাই আন্তরিকতা

বাসযোগ্যতা সূচকে ঢাকা কেন এত পিছিয়ে

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল : নিরাপদ যাত্রার প্রত্যাশা

কর ফাঁকি : অর্থনীতির জন্য এক অশনি সংকেত

১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় : উপকূলীয় সুরক্ষার শিক্ষা

যখন নদীগুলো অস্ত্র হয়ে ওঠে

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুণগত মান উন্নয়নে গবেষণা ও উদ্ভাবন

বজ্রপাত ও তালগাছ : প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা

কুষ্ঠ ও বৈষম্য : মানবাধিকারের প্রশ্নে একটি অবহেলিত অধ্যায়

ছবি

প্রান্তজনের বাংলাদেশ

অতীতের ছায়ায় নতুন বাংলাদেশ : দুর্নীতি, উগ্রপন্থা ও সরকারের দায়

সাইবার নিরাপত্তা : অদৃশ্য যুদ্ধের সামনে আমাদের প্রস্তুতি

ছবি

বাহান্নর গর্ভে জন্ম নেয়া এক ঝড়ের পাখি

প্রবাসী শ্রমিক : অর্থের যন্ত্র নয়, রাষ্ট্রের সহযোদ্ধা

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক যুগ

ভোগবাদের বিরুদ্ধে পোপ ফ্রান্সিসের জলবায়ু বার্তা

রম্যগদ্য : হাসি নিষেধ...

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন : দাবি ও সমাধানের পথ

সিরিয়ার পতন কিভাবে আমেরিকার স্বার্থকে হুমকিতে ফেলছে

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র : বিকল্প রাষ্ট্রচিন্তার সন্ধানে

tab

উপ-সম্পাদকীয়

বৈষম্যমুক্ত নিরাপদ সমাজ গঠন কেন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি

ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ

বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বহুত্ববাদী সমাজ বিনির্মাণে সর্বাগ্রে প্রয়োজন সহননশীল সমাজ। বেঁচে থাকার প্রয়োজনে ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ারের যেমন প্রয়োজনীয়তা আছে তেমনি কৃষক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি, চামার ঝারুদার, দর্জি ও কুটির শিল্পীর ও প্রয়োজনীয়তা আছে। প্রত্যেকেই আমরা প্রত্যেকের ওপর নির্ভরশীল। এজন্য জাতিগত কুসংস্কার থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। জাত, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র ইণ্যাদি ভুলে গিয়ে মানুষকে মানুষ হিসেবে ভাবতে হবে। সব শ্রেণীর ও পেশার মানুষকে মূল্যায়ন করতে হবে, সম্মান ও শ্রদ্ধা করতে হবে, মর্যাদা দিতে হবে। পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে দুর্বল ভাবলে চলবে না। কারণ রাষ্ট্রের সংবিধান সবাই নাগরিকের জন্য সমান সুযোগ ও সমঅধিকার দিয়েছে। সমাজে নিজেদের অবস্থান তৈরি করে নিতে হবে। এজন্য শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ সংগঠন তথা রাষ্ট্রের প্রয়োজন। আধুনিক জীবনযাপনের জন্য সব ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকবে। পরিবেশের উন্নয়ন হবে। মানুষের জীবনে শান্তি থাকবে। নরডিক দেশগুলোতে অনেক উন্নয়ন হয়েছে কিন্তু আত্মহত্যার হার বেশি। তার মানে- মানুষের মধ্যে হতাশা বেশি। বাংলাদেশের উন্নয়ন ও ভারসাম্যপূর্ণ হওয়া উচিত। এখানে কুসংস্কার থাকবে না। তাই যে কোন সরকারকেই উদারপন্থি গণতান্ত্রিক হতে হবে।

স্বাধীনতা লাভের পর ৫২ বছর অতিক্রম হতে চলছে, কিন্তু গণতন্ত্র আমাদের দেশে অসুস্থতায় ভুগছে। বাংলাদেশে ব্যক্তি বা দলীয় নেতৃত্বের ভূমিকায় মিশ্র সাফল্য লক্ষণীয়। রাজনৈতিক দলের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও সেখানে বড় মাপের সংস্কারের প্রয়োজন আছে। কিন্তু তার প্রতি তেমন কোনো উৎসাহ লক্ষ্য করা যায় না। সিভিল সমাজের ভূমিকাও প্রশ্নবোধক। তারা মূলত আন্তর্জাতিক পুঁজির প্রবক্তা এবং দলীয়করণের দোষে দুষ্ট। সব মিলিয়ে গণতন্ত্রের ভাগ্য বাংলাদেশে এখনো তেমন সুপ্রসন্ন নয়। গণতন্ত্রের সাফল্যের অন্তর্নিহিত বীজ উদারনীতির বিকাশমান ধারাতে বিদ্যমান থাকে। গুরুত্বের বিচারে উদারনীতির ভূমিকাকে লঘু ভাবা যায় না। একে অপরের প্রতি উদার না হলে নাগরিক সমাজে নানা মতের প্রসার ঘটে না। ব্যক্তি-স্বাধীনতা এবং ভিন্নমত মেনে নেয়ার সংস্কৃতি গড়ে না উঠলে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়। উদারবাদী মানসিকতা সমাজে এমনিতেই জন্ম নেয় না। তার বিকাশে সর্বজনীন শিক্ষার বিকাশ, মুক্ত মনের প্রসার, জ্ঞান-বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন হয়। রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাকেও উপেক্ষা করা যায় না। রাষ্ট্রের পক্ষে নানা আইন প্রবর্তন করে উদারনীতির প্রসার ঘটানো সম্ভব হলেও সেসব উদ্যোগ আমাদের রাষ্ট্রব্যবস্থায় বর্তমানে হয় অনুপস্থিতি নতুবা পুরোমাত্রায় নেই। উদারনীতি বিকাশের ক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা প্রায় বলা হয়। মধ্যবিত্ত বলতে বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক, পেশাজীবী গোষ্ঠী, সাংস্কৃতিক কর্মীদের বোঝানো হলেও বাংলাদেশে তাদের অবদান প্রশ্নসাপেক্ষ। সিভিল সমাজ নামে যারা রাষ্ট্র বা রাজনীতির ঊর্ধ্বে দাঁড়িয়ে জনগণের পক্ষে কথা বলেন এবং গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ হিসেবে যারা পরিচিত তাদের ভূমিকাও আজ প্রশ্নসাপেক্ষ হয়ে দাঁড়িয়েছে। সংকীর্ণ রাজনৈতিক অবস্থান পরিহার করে তারা নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে পরিস্থিতি বিচার করতে অভ্যস্ত নন। সিভিল সমাজের মধ্যে অনেকে নব্য উদারনৈতিক পুঁজিবাদী কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত। স্থানীয় পর্যায়ে ওই কেন্দ্রের স্বার্থ রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে তারা গণতন্ত্রের কথা বলেন। কিন্তু তাদের বক্তব্য বা নীতিগত অবস্থাানের প্রতি মানুষের তেমন কোনো আস্থা নেই। সে কারণে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তাদের যথাযথ ভূমিকা পালন করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নিয়ন্ত্রিত বা আধিপত্যবাদী রাষ্ট্রে জঙ্গিবাদের জন্ম হবেই যা সময়ের ব্যাপার মাত্র। এমনকি নিয়ন্ত্রিত বা আধিপত্যবাদী রাষ্ট্রে যাদের জঙ্গি দমনে নিয়োজিত করা হয় একদিন সময়ের প্রবাহে তারাই রাষ্ট্র্রের জন্য হুমকি হয়ে যায়, যার বহু প্রমাণ বিশ্বে ছড়িয়ে আছে। এ পর্যন্ত বিবৃতি লেখার পরিপ্রক্ষিতে পাঠক সাধারণের মধ্যে কতিপয় জিজ্ঞাসা উদ্ভব হবে, সেগুলো যেমন- বৈষম্যমুক্ত ও নিরাপদ সমাজ প্রতিষ্ঠা কিভাবে সম্ভব? বৈষম্যমুক্ত নিরাপদ সমাজ গঠনে রাজনৈতিক সহিংসতা কি বড় চ্যালেঞ্জ? দেশ ও জনগণ কি অসাধু আমলা ও রাজনীতির দুষ্টচক্রের কাছে জিম্মি? বৈষম্যমুক্ত নিরাপদ বাংলাদেশ জনগণের কামনা হওয়া কি অযৌক্তিক? বৈষম্যমুক্ত ও নিরাপদ সমাজ গঠনে সরকারের ভূমিকা কি হওয়া উচিত? উপরিউক্ত জিজ্ঞাসার সদুত্তর জনগণ অন্ততপক্ষে বর্তমান সরকার প্রধানের কাছে আশা করা যায়।

একে অপরের প্রতি উদার না হলে নাগরিক সমাজে নানা মতের প্রসার ঘটে না। ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং ভিন্নমত মেনে নেয়ার সংস্কৃতি গড়ে না উঠলে গণতন্ত্র টিকিয়ে রাখা কঠিন হয়। উদারবাদী মানসিকতা সমাজে এমনিতেই জন্ম নেয় না। তার বিকাশে সর্বজনীন শিক্ষার বিকাশ, মুক্ত মনের প্রসার, জ্ঞান-বিজ্ঞানকে সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেয়া প্রয়োজন হয়

বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলের সরকারের আমলে কারাগারের উপচেপরা চিত্র পরিলক্ষিত হয়ে থাকে। উভয় আমলেই যে পরিমাণ ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা বর্ণনাতীত। প্রতিটি কারাগারে ধারণক্ষমতার পাঁচ থেকে ছয়গুণ বেশি বন্দি রাখা হয়েছে, তাদের সিংহভাগ হচ্ছে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী ও সমর্থক। ধারণক্ষমতার মাত্রাতিরিক্ত বন্দি রাখার ফলে কারাগার ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়ে থাকে। বন্দিরা বঞ্চিত হচ্ছে ন্যূনতম মানবাধিকার থেকে। চার বা ততোধিক মামলার আসামিদের ২৪ ঘণ্টা ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে রাখা হয়, খেতে দেয়া মানুষের পক্ষে গ্রহণের অযোগ্য খাদ্য ও পানীয়, শোবার জন্য অধিকাংশ বন্দিকে দেয়া হয় মাত্র এক হাত প্রশস্ত জায়গা যেখানে চিত হয়ে শোয়া সম্ভব নয়। ফাইলের বহু বন্দি রাতের পর রাত শুতে না পেরে দাঁড়িয়ে বা বসে থাকে, যাদের স্নান দূরে থাক প্রাতঃকৃত্য সম্পন্ন করারও ন্যূনতম স্থান নেই। এর ফলে বিপুলসংখ্যক বন্দিকে নানা ধরনের শারীরিক অসুস্থতার শিকার হতে হয়, যে অসুস্থতার কোনো চিকিৎসা কারাগারে নেই। আমাদের জনগণকে শুদ্ধাচারী হতে হবে। ভেতরে এক রকম বাইরে অন্যরকম এই মানসিকতা পরিহার করে এগোতে হবে। যাই হোক, সমাজে মানুষের যে নৈতিক অধঃপতন হয়েছে- তা সুশাসনের অভাবে ঘটে থাকে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে দুঃশাসন, দুর্নীতির ব্যাপারে রাষ্ট্রকে সজাগ থাকতে হবে। তবে সবচেয়ে বড় কথা হলো- সব প্রতিষ্ঠান ও সমাজের মানুষকে তাদের আত্মসমালোচনার বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দিয়ে নিজ নিজ কাজে মনোযোগী হতে হবে। নচেৎ আত্মসমালোচনা ছাড়া সমাজের এ জট সহজে খোলার নয়। এক্ষেত্রে প্রচলিত আইন-কানুনের পরিবর্তন আবশ্যক।

সভ্যতার উন্নতির বিকাশে চাই মানুষের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। জাতীয় ঐক্যই পারে যে কোন উন্নয়নের স্বর্ণ শিখরের চূড়ায় আরোহনের। মহান মুক্তিযুদ্ধের ভেতর দিয়ে সাম্য, মানবিক মর্যাদা আর সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার যে স্বপ্ন দেখেছিলাম একদিন আমরা, তার কতটা পূরণ হয়েছে- সেই হিসাব করার এখন সময় এসেছে। বাংলাদেশ আজ নিম্নমধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশের মর্যাদায় পৌঁছবে বাংলাদেশ। দক্ষ ও কর্মক্ষম জনসম্পদ, কৃষিতে বিপ্লব, প্রবৃদ্ধি নিঃসন্দেহে দেশের জন্য আশার বার্তা বহন করে। তবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিতে হলে শুধু অর্থনৈতিক আর অবকাঠামোগত উন্নয়নই যথেষ্ট নয়। টেকসই উন্নয়নের জন্য চাই একটি অংশীদারীমূলক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার সম্পন্ন, জনকল্যাণমূলক সহিষ্ণু, শক্তিকামী ও সমৃদ্ধ সমাজ। জাতীয় ঐক্যই দেশকে সুন্দর, সুদৃঢ় ও সংহতির চরম পর্যায়ে উঠাতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে থাকে। জাতীয় একাত্মতা ঠিক করবে আগামী দিনের বাংলাদেশ কেমন হবে। জাতীয় একাত্মতা প্রতিটি রাষ্ট্রের জন্য একান্ত আবশ্যক। জাতীয় একাত্মতার অভাবে অনেক রাষ্ট্রের পতন ঘটেছে। আবার এর প্রভাবে অনেক রাষ্ট্র শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে। জাতীয় একাত্মতার অভাবেই পাকিস্তান তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে ধরে রাখতে পারেনি। সোভিয়েত ইউনিয়ন পারেনি এর অখ-তা রক্ষা করতে। এই জাতীয় একাত্মতার সমস্যা আধুনিক বিশ্বের প্রায় প্রতিটি রাষ্ট্রেই প্রকট আকার দেখা দিয়েছে। লুসিয়ান পাই তার ‘অ্যাসপেক্টস অভ পলিটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট’ নামক গ্রন্থে রাজনৈতিক ব্যবস্থার সংকটসমূহকে ৬টি ভাগে ভাগ করে আলোচনা করেছেন- তার মধ্যে অন্যতম হলো জাতীয় একাত্মতার সংকট। বিশেষ করে বৃহদায়তন রাষ্ট্রের জন্য এটি একটি মারাত্মক সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সামাজিক জীবনের সঙ্গে রাষ্ট্রীয় জীবনে সহনশীলতার বড়ই অভাব। আমাদের রাজনীতি থেকে তো সহনশীলতা একবারেই বিদায় নিয়েছে। ভিন্নমতকে দমন করার জন্য পৃথিবীব্যাপী যে অসহনশীলতার চর্চা শুরু হয়েছে, তা সত্যিই দুঃখজনক। স্বাধীন দেশে ভিন্নমত থাকবে, সমলোচনা থাকবে, এটিই স্বাভাবিক। নিজের ক্ষমতার শক্তি প্রমাণে তুলনামূলক দুর্বল দেশগুলোর ওপর যে হত্যা নির্যাতন চালাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অথচ রাষ্ট্রক্ষমতায় যারা আছেন তাদের সর্বোচ্চ সহনশীল হওয়া দরকার ছিল। সমাজে রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে মানুষের অধিকার হনন করে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলছে। পারিবারিক জীবনের পাশাপাশি সামাজিক জীবনে সহনশীলতার চর্চা ফিরিয়ে নিয়ে আসা খুব জরুরি হয়ে পড়েছে। সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় একে অপরের প্রতি সহনশীল আচরণ অত্যন্ত জরুরি ও অত্যাবশ্যক। ব্যক্তিজীবনে ও সামাজিক জীবনে সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর তথা বয়স্ক, বৃদ্ধ ও দুর্বল শ্রেণীর প্রতি শ্রদ্ধা, সম্মান ও সহনশীল আচরণের শিক্ষা দিয়ে নতুন প্রজন্মকে গড়ে তুলতে হবে।

[লেখক : সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি]

back to top