alt

উপ-সম্পাদকীয়

রপ্তানি বহুমুখীকরণে তথ্যপ্রযুক্তি খাত

হীরেন পন্ডিত

: শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

২০২৫ সাল নাগাদ আইটি খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের প্রত্যাশা রয়েছে বাংলােেদশের। দেশে আইটি ডিভাইস উৎপাদন শিল্পে অন্তত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের আশা করা হচ্ছে। ২০২৫ সাল নাগাদ আইটি খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের রোডম্যাপ নির্ধারণ করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশে তৈরি ডিজিটাল ডিভাইসের রপ্তানি আয় বর্তমানের প্রায় এক বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। একই সময়ে আইসিটি পণ্য ও আইটি-এনাবল সার্ভিসের অভ্যন্তরীণ বাজারও ৫০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী চার বছরের মধ্যে দেশে-বিদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১০ বিলিয়ন ডলারের সম্ভাব্য বাজার ধরতে ডিজিটাল ডিভাইস তথা মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ও ল্যাপটপের মতো আইটি পণ্য বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে দেশে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন শিল্প স্থাপনের সুযোগ সম্প্রসারণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে স্থানীয় পণ্যের ব্রান্ডিংয়ে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ রোডম্যাপ নিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি)। তুলনামূলক প্রতিযোগী বেতনকাঠামোয় শ্রমশক্তির সহজলভ্যতা, স্থানীয় বাজার চাহিদা এবং সরকারি নীতির সহায়ক কাঠামো বাংলাদেশকে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদনের আকর্ষণীয় বাজারে পরিণত করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করছে আইসিটি বিভাগ। বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই সফলভাবে প্রোডাকশন লাইন স্থাপনকারী- ওয়ালটন, স্যামসাং, অপ্পো, ডেটা সফটের উদাহরণ দিয়ে বিভাগটি বলছে, এসব উদ্যোগ আগামীতে স্থানীয়ভাবে ডিভাইস উৎপাদন শিল্পে আরও উন্নয়নের সম্ভাবনা তুলে ধরেছে। তবে রোডম্যাপ বাস্তবায়নের কিছু বাধাও চিহ্নিত করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, এরমধ্যে বাংলাদেশে অধিক পুঁজি খরচের দিকটিকে শীর্ষে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি দক্ষতার অভাব, শিল্পসহায়ক বাস্তুতন্ত্রের দুর্বলতা, মান নিশ্চিতকরণ এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের আন্তর্জাতিক সনদপ্রাপ্তির সমস্যা, সরকারি ক্রয়ে স্থানীয় পণ্যকে অগ্রাধিকার দানে দরকারি বিধিমালার অভাব, স্থানীয় পণ্যের ব্যাপারে জনসচেতনতার অভাব এবং ডিজিটাল ডিভাইস প্রস্তুতকারকদের জন্য আর্থিক প্রণোদনার অভাবকে প্রধান প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তৈরি পোশাক খাত বা আরএমজি খাত বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য একটি সফল মডেল কিন্তু এখন সময় এসেছে চামড়া, টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস, আইসিটি এবং হালকা প্রকৌশলের মতো অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে সামনে নিয়ে আসার। জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর কিভাবে তার রপ্তানির পরিধি বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন শুরু করেছে। এ সম্পর্কিত ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে কম খরচে এবং সহজে অর্থের প্রবেশাধিকার, পর্যাপ্ত নীতি সহায়তার পাশাপাশি পোশাকবহির্ভূত রপ্তানি খাতের জন্য আর্থিক এবং অ-আর্থিক প্রণোদনা এবং সমান আচরণ এবং দক্ষতা বিকাশ নিশ্চিত করার জন্য। আমাদের উচিত ভালো রপ্তানি সম্ভাবনা সহ পোশাক বহির্ভূত খাতগুলোতে আরও বেশি মনোযোগ দেয়া- কারণ দেশের রপ্তানিকে বৈচিত্র্যময় করা ২০২৬ সালে এলডিসির উত্তরণের পরে বিদ্যমান এবং নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সহায়তা করবে। আমাদের ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়ান এবং মধ্যপ্রাচ্যেও দেশগুলোতে আরও বেশি রপ্তানি সহজতর করতে হবে। কর্তৃপক্ষকে কেবলমাত্র সম্ভাব্য রাজস্ব লাভের কথা বিবেচনা না করে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি বা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করার সুবিধাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। বর্তমানে, বাংলাদেশ পাট খাত থেকে ১ বিলিয়ন ডলার আয় করে তবে বৈশ্বিক জলবায়ুু পরিবর্তন এবং টেকসই উনয়নের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি বাড়ানোর বিবেচনায় এই শিল্পটি ৫ বিলিয়ন থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে। বাংলাদেশের মোট আবাদি জমির প্রায় ৭০ শতাংশ ধান উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, যা দেশের গ্রামীণ শ্রমশক্তির প্রায় ৪৫ শতাংশ নিয়োজিত। আমাদের প্রযুক্তি অভিযোজন বাড়াতে হবে, বেসরকারি খাতের গবেষণা ও উদ্ভাবন বাড়াতে হবে, ভালো কৃষি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে, দেশের ফসলপরবর্তী ক্ষমতা এবং ব্র্যান্ডের উন্নয়ন করতে হবে। স্থানীয় আইসিটি খাত বছরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার আয় করে কিন্তু একটি ডিজিটাল ওয়ালেট বা পেপ্যালের মতো অর্থপ্রদানের ব্যবস্থার অভাবের কারণে সবকিছু সময়মতো রিপোর্ট করা হয় না। এই খাতের বিকাশের জন্য অর্থের অপ্রচলিত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমাদের একটি স্বল্পব্যয়ের তহবিল তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া ওষুধের প্রায় ৮০ শতাংশই পেটেন্টের বাইরে। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা রপ্তানি বহুমুখীকরণের কথা বলে আসছেন। এটিও সদ্য সমাপ্ত ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট’-এর অন্যতম একটি পদক্ষেপ, যা দেশে এবং বিদেশে অব্যবহৃত ব্যবসায়িক সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানোর জন্য নীতি এবং আইনি সংস্কারের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছে। কার্যত, বাংলাদেশ তার রপ্তানি আয়ের জন্য বছরের পর বছর ধরে প্রায় একটি খাতের ওপর নির্ভরশীল। এখন রপ্তানির ৮৪ শতাংশ তৈরি পোশাকের অংশ অন্যান্য শিল্প ও উৎপাদন উপাদানের সুস্থ প্রবৃদ্ধির সঙ্গে কবে নেমে আসবে তা কেউ জানে না। চামড়া ও পাদুকা, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিকস, আইটি ও সফটওয়্যার, পাটজাত পণ্য, হালকা প্রকৌশল পণ্য, সংযোজন শিল্প, হস্তশিল্প, হিমায়ত খাদ্য, কৃষিভিত্তিক আইটেম এবং আরও কয়েকটি খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যা এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়াতে পারে।

[লেখক: প্রাবন্ধিক]

সর্বজনীন শিক্ষার বলয়ের বাইরে আদিবাসীরা : অন্তর্ভুক্তির লড়াইয়ে বৈষম্যের দেয়াল

শোনার গান, দেখার টান : অনুভূতির ভোঁতা সময়

ছবি

ছিন্নপত্রে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও রবীন্দ্র চেতনা

ভেতরের অদৃশ্য অপরাধ : সমাজের বিপন্ন মানসিকতা

দারিদ্র্য ও বৈষম্য নিরসনে খাসজমি ও জলার গুরুত্ব

অবহেলিত কৃষক ও বাজার ব্যবস্থার বৈষম্য

রাক্ষুসে মাছের দাপটে বিপন্ন দেশীয় মাছ : করণীয় কী?

বজ্রপাতের আতঙ্কে জনজীবন

তাহলে কি ঘৃণায় ছেয়ে যাবে দেশ, মানবজমিন রইবে পতিত

কর্পোরেট ও ব্যক্তিগত সামাজিক দায়বদ্ধতা

‘রাখাইন করিডর’ : একটি ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

ভিন্নমতের ভয়, নির্বাচনের দোলাচল ও অন্তর্বর্তী সরকারের কৌশলী অবস্থান

সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা

কৃষি শিক্ষা হোক উদ্যোক্তা গড়ার মাধ্যম

রঙ্গব্যঙ্গ : কোটের কেবল রং বদলায়

মে দিবসের চেতনা বনাম বাস্তবতা

শ্রম আইন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় চাই আন্তরিকতা

বাসযোগ্যতা সূচকে ঢাকা কেন এত পিছিয়ে

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল : নিরাপদ যাত্রার প্রত্যাশা

কর ফাঁকি : অর্থনীতির জন্য এক অশনি সংকেত

১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় : উপকূলীয় সুরক্ষার শিক্ষা

যখন নদীগুলো অস্ত্র হয়ে ওঠে

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুণগত মান উন্নয়নে গবেষণা ও উদ্ভাবন

বজ্রপাত ও তালগাছ : প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা

কুষ্ঠ ও বৈষম্য : মানবাধিকারের প্রশ্নে একটি অবহেলিত অধ্যায়

ছবি

প্রান্তজনের বাংলাদেশ

অতীতের ছায়ায় নতুন বাংলাদেশ : দুর্নীতি, উগ্রপন্থা ও সরকারের দায়

সাইবার নিরাপত্তা : অদৃশ্য যুদ্ধের সামনে আমাদের প্রস্তুতি

ছবি

বাহান্নর গর্ভে জন্ম নেয়া এক ঝড়ের পাখি

প্রবাসী শ্রমিক : অর্থের যন্ত্র নয়, রাষ্ট্রের সহযোদ্ধা

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক যুগ

ভোগবাদের বিরুদ্ধে পোপ ফ্রান্সিসের জলবায়ু বার্তা

রম্যগদ্য : হাসি নিষেধ...

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন : দাবি ও সমাধানের পথ

সিরিয়ার পতন কিভাবে আমেরিকার স্বার্থকে হুমকিতে ফেলছে

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র : বিকল্প রাষ্ট্রচিন্তার সন্ধানে

tab

উপ-সম্পাদকীয়

রপ্তানি বহুমুখীকরণে তথ্যপ্রযুক্তি খাত

হীরেন পন্ডিত

শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

২০২৫ সাল নাগাদ আইটি খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের প্রত্যাশা রয়েছে বাংলােেদশের। দেশে আইটি ডিভাইস উৎপাদন শিল্পে অন্তত এক লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের আশা করা হচ্ছে। ২০২৫ সাল নাগাদ আইটি খাত থেকে ৫০০ কোটি ডলার রপ্তানি আয়ের রোডম্যাপ নির্ধারণ করা হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতে দেশে তৈরি ডিজিটাল ডিভাইসের রপ্তানি আয় বর্তমানের প্রায় এক বিলিয়ন ডলার থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে ৫ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে। একই সময়ে আইসিটি পণ্য ও আইটি-এনাবল সার্ভিসের অভ্যন্তরীণ বাজারও ৫০০ কোটি ডলারে পৌঁছাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। আগামী চার বছরের মধ্যে দেশে-বিদেশে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১০ বিলিয়ন ডলারের সম্ভাব্য বাজার ধরতে ডিজিটাল ডিভাইস তথা মোবাইল ফোন, কম্পিউটার ও ল্যাপটপের মতো আইটি পণ্য বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছে সরকার। এরই অংশ হিসেবে দেশে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদন শিল্প স্থাপনের সুযোগ সম্প্রসারণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে স্থানীয় পণ্যের ব্রান্ডিংয়ে ‘মেড ইন বাংলাদেশ’ রোডম্যাপ নিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ (আইসিটি)। তুলনামূলক প্রতিযোগী বেতনকাঠামোয় শ্রমশক্তির সহজলভ্যতা, স্থানীয় বাজার চাহিদা এবং সরকারি নীতির সহায়ক কাঠামো বাংলাদেশকে ডিজিটাল ডিভাইস উৎপাদনের আকর্ষণীয় বাজারে পরিণত করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে বলে মনে করছে আইসিটি বিভাগ। বাংলাদেশে ইতোমধ্যেই সফলভাবে প্রোডাকশন লাইন স্থাপনকারী- ওয়ালটন, স্যামসাং, অপ্পো, ডেটা সফটের উদাহরণ দিয়ে বিভাগটি বলছে, এসব উদ্যোগ আগামীতে স্থানীয়ভাবে ডিভাইস উৎপাদন শিল্পে আরও উন্নয়নের সম্ভাবনা তুলে ধরেছে। তবে রোডম্যাপ বাস্তবায়নের কিছু বাধাও চিহ্নিত করেছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, এরমধ্যে বাংলাদেশে অধিক পুঁজি খরচের দিকটিকে শীর্ষে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি দক্ষতার অভাব, শিল্পসহায়ক বাস্তুতন্ত্রের দুর্বলতা, মান নিশ্চিতকরণ এবং স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত পণ্যের আন্তর্জাতিক সনদপ্রাপ্তির সমস্যা, সরকারি ক্রয়ে স্থানীয় পণ্যকে অগ্রাধিকার দানে দরকারি বিধিমালার অভাব, স্থানীয় পণ্যের ব্যাপারে জনসচেতনতার অভাব এবং ডিজিটাল ডিভাইস প্রস্তুতকারকদের জন্য আর্থিক প্রণোদনার অভাবকে প্রধান প্রধান সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তৈরি পোশাক খাত বা আরএমজি খাত বাংলাদেশের রপ্তানির জন্য একটি সফল মডেল কিন্তু এখন সময় এসেছে চামড়া, টেক্সটাইল, ফার্মাসিউটিক্যালস, আইসিটি এবং হালকা প্রকৌশলের মতো অন্যান্য সম্ভাবনাময় খাত হিসেবে সামনে নিয়ে আসার। জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত দেশগুলো (এলডিসি) থেকে উত্তরণের পর কিভাবে তার রপ্তানির পরিধি বৃদ্ধি করা যায় সে বিষয়ে বাংলাদেশকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন শুরু করেছে। এ সম্পর্কিত ব্যবস্থাগুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে কম খরচে এবং সহজে অর্থের প্রবেশাধিকার, পর্যাপ্ত নীতি সহায়তার পাশাপাশি পোশাকবহির্ভূত রপ্তানি খাতের জন্য আর্থিক এবং অ-আর্থিক প্রণোদনা এবং সমান আচরণ এবং দক্ষতা বিকাশ নিশ্চিত করার জন্য। আমাদের উচিত ভালো রপ্তানি সম্ভাবনা সহ পোশাক বহির্ভূত খাতগুলোতে আরও বেশি মনোযোগ দেয়া- কারণ দেশের রপ্তানিকে বৈচিত্র্যময় করা ২০২৬ সালে এলডিসির উত্তরণের পরে বিদ্যমান এবং নতুন চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলায় সহায়তা করবে। আমাদের ইইউ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ছাড়া লাতিন আমেরিকা, আফ্রিকা, এশিয়ান এবং মধ্যপ্রাচ্যেও দেশগুলোতে আরও বেশি রপ্তানি সহজতর করতে হবে। কর্তৃপক্ষকে কেবলমাত্র সম্ভাব্য রাজস্ব লাভের কথা বিবেচনা না করে মুক্তবাণিজ্য চুক্তি বা অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর করার সুবিধাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। বর্তমানে, বাংলাদেশ পাট খাত থেকে ১ বিলিয়ন ডলার আয় করে তবে বৈশ্বিক জলবায়ুু পরিবর্তন এবং টেকসই উনয়নের জন্য আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি বাড়ানোর বিবেচনায় এই শিল্পটি ৫ বিলিয়ন থেকে ১০ বিলিয়ন ডলার আয় করতে পারে। বাংলাদেশের মোট আবাদি জমির প্রায় ৭০ শতাংশ ধান উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, যা দেশের গ্রামীণ শ্রমশক্তির প্রায় ৪৫ শতাংশ নিয়োজিত। আমাদের প্রযুক্তি অভিযোজন বাড়াতে হবে, বেসরকারি খাতের গবেষণা ও উদ্ভাবন বাড়াতে হবে, ভালো কৃষি পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে, দেশের ফসলপরবর্তী ক্ষমতা এবং ব্র্যান্ডের উন্নয়ন করতে হবে। স্থানীয় আইসিটি খাত বছরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার আয় করে কিন্তু একটি ডিজিটাল ওয়ালেট বা পেপ্যালের মতো অর্থপ্রদানের ব্যবস্থার অভাবের কারণে সবকিছু সময়মতো রিপোর্ট করা হয় না। এই খাতের বিকাশের জন্য অর্থের অপ্রচলিত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করার জন্য আমাদের একটি স্বল্পব্যয়ের তহবিল তৈরি করতে হবে। বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হওয়া ওষুধের প্রায় ৮০ শতাংশই পেটেন্টের বাইরে। দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বাংলাদেশের নীতিনির্ধারকরা রপ্তানি বহুমুখীকরণের কথা বলে আসছেন। এটিও সদ্য সমাপ্ত ‘বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট সামিট’-এর অন্যতম একটি পদক্ষেপ, যা দেশে এবং বিদেশে অব্যবহৃত ব্যবসায়িক সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানোর জন্য নীতি এবং আইনি সংস্কারের গুরুত্ব পুনর্ব্যক্ত করেছে। কার্যত, বাংলাদেশ তার রপ্তানি আয়ের জন্য বছরের পর বছর ধরে প্রায় একটি খাতের ওপর নির্ভরশীল। এখন রপ্তানির ৮৪ শতাংশ তৈরি পোশাকের অংশ অন্যান্য শিল্প ও উৎপাদন উপাদানের সুস্থ প্রবৃদ্ধির সঙ্গে কবে নেমে আসবে তা কেউ জানে না। চামড়া ও পাদুকা, ফার্মাসিউটিক্যালস, সিরামিকস, আইটি ও সফটওয়্যার, পাটজাত পণ্য, হালকা প্রকৌশল পণ্য, সংযোজন শিল্প, হস্তশিল্প, হিমায়ত খাদ্য, কৃষিভিত্তিক আইটেম এবং আরও কয়েকটি খাত হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে যা এর মাধ্যমে বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রা আয় বাড়াতে পারে।

[লেখক: প্রাবন্ধিক]

back to top