alt

উপ-সম্পাদকীয়

বিশ্ব প্রাণী দিবস

মাহতাব হোসাইন মাজেদ

: মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩

বিশ্ব প্রাণী দিবস আজ (৪ অক্টোবর) ২০২৩। পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে প্রাণীদের কল্যাণের মাধ্যমে তাদের অবস্থার উন্নতির উদ্দেশ্যে দিবসটি বিশ্বে পালিত হয়। আর বিশ্ব প্রাণী দিবস পৃথিবীর প্রাণীকূলকে রক্ষা করার জন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দিবসটির সূচনা করা হয়। মানুষের খাদ্য শৃঙ্খলকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রাণী দের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এ পৃথিবীতে একটি সুস্থ পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রাণীর গুরুত্ব অনেক। প্রতিটি প্রাণীর খাদ্য শৃঙ্খলে এক অনন্য জায়গা রয়েছে, যা বাস্তুসংস্থান নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অবদান রাখে। কিন্তু বর্তমানে অনেক প্রাণী ও পাখি বিপন্ন হচ্ছে।

এই পৃথিবীর বাস্তুসংস্থানের যেকোনো একটি প্রাণীর অনুপস্থিতির কারণে পুরো বাস্তুসংস্থানের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এর ফলে পৃথিবীতে মানুষের উপর অতিরিক্ত প্রভাব পড়তে পারে বলে অনেকের ধারণা। তাই প্রত্যেকটি প্রাণীকে সুষ্ঠুভাবে বেড়ে ওঠার এবং অবাধ বিচরণের আমাদের সুযোগ করে দিতে হবে। এই সচেতনতাবোধ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্ব প্রাণী দিবস এর সূচনা করা হয়।

বর্তমানে বিশ্ব প্রাণী দিবস একটি বৈশ্বিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রাণী কল্যাণ চ্যারিটি নেতৃত্ব ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে। বিশ্ব প্রাণী দিবসের আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইটের মতে, এ দিবসের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে প্রাণীদের কল্যাণের মাধ্যমে তাদের অবস্থার উন্নতি করা। বিশ্ব প্রাণী দিবস উদযাপনের মাধ্যমে প্রাণী কল্যাণ আন্দোলনকে একত্রিক করা, একে আন্তর্জাতিকভাবে জোরদার করে পৃথিবীকে প্রতিটি জীবের জন্য উন্নততর বাসস্থান হিসেবে গড়ে তোলা। জাতি, ধর্ম, বিশ্বাস বা রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে দিবসটিকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে পালন করা হয়। নানা প্রজাতির পশু-পাখি ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল আমাদের এই বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ ইউনিয়নের (আইইউসিএন-২০০০) তথ্যমতে, এ দেশে প্রায় ২২ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১০৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৩৮৮ প্রজাতির পাখি এবং ১১০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে।

বন্যপ্রাণীরা আমাদের অনেক উপকারে আসে। এ দেশে কিছু বন্যপ্রাণী আছে, যেগুলো বিভিন্নভাবে পরিবেশের ও আমাদের উপকার করে থাকে। বর্তমানে প্রাকৃতিক সম্পদের অতিরিক্ত আহরণ, বন্যপ্রাণী শিকার, পর্যাপ্ত সংরক্ষণের অভাব, ঘূর্ণিঝড় ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবের ফলে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে, যার পরিণামে অনেক বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

‘ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশ’ নামক বন্যপ্রাণী বিষয়ক সংগঠনের তথ্যমতে, আবাসস্থল ধ্বংসের ফলে ১৬০০ প্রজাতির মেরুদন্ডী প্রাণীর প্রায় অর্ধেক প্রজাতি হুমকির সম্মুখীন। গন্ডার, নীলগাই, ডোরাকাটা হায়েনা, বন্য মহিষ, ময়ূর, হাড়গিলা, জলার কুমির, জলার হরিণ ইত্যাদি বর্তমানে বাংলাদেশে বিলুপ্ত প্রাণী।

এছাড়াও রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হাতি, ভোঁদড়, লামচিতা, চিতা, বনরুই, বনগরু, ডোরা কাঠবিড়ালি, সাম্বার হরিণ, কালো ভালুক ইত্যাদি বন্যপ্রাণী এখন বিলুপ্তপ্রায়। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ ইউনিয়নের (আইইউসিএন) তথ্যমতে, সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতি করতে না পারলে আগামী কয়েক দশকে মোট বন্যপ্রাণী প্রজাতির ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বিলুপ্তি হতে পারে।

বিশ্বকে সব প্রাণীর জন্য বাসযোগ্য ও জীবনধারণে সহায়ক সুপরিবেশ তৈরি করার ক্ষেত্রে দিবসের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। তাই বিশ্বের ৬০ ভাগের বেশি রোগের সৃষ্টি হয় প্রাণি থেকে। প্রাণির বিষয়ে সচেতন থেকে এ রোগবালাই থেকে বাঁচা সম্ভব। আর এ কারণেই প্রাণির বিষয়ে সচেতন হতে হবে ও তাদের রক্ষার্থে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রাণিদের সঠিক পরিবেশে রাখা ও তাদের যত্ন নিতে সবাইকে আরো বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। আর জলবায়ু ও সার্বিক পরিবেশ প্রেক্ষিত বিবেচনায় বাংলাদেশের জন্যও দিবসটি পালন করা ও দিবসের মাহাত্ম উপলব্ধি করে বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

[লেখক : পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক, সবুজ আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটি]

সর্বজনীন শিক্ষার বলয়ের বাইরে আদিবাসীরা : অন্তর্ভুক্তির লড়াইয়ে বৈষম্যের দেয়াল

শোনার গান, দেখার টান : অনুভূতির ভোঁতা সময়

ছবি

ছিন্নপত্রে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও রবীন্দ্র চেতনা

ভেতরের অদৃশ্য অপরাধ : সমাজের বিপন্ন মানসিকতা

দারিদ্র্য ও বৈষম্য নিরসনে খাসজমি ও জলার গুরুত্ব

অবহেলিত কৃষক ও বাজার ব্যবস্থার বৈষম্য

রাক্ষুসে মাছের দাপটে বিপন্ন দেশীয় মাছ : করণীয় কী?

বজ্রপাতের আতঙ্কে জনজীবন

তাহলে কি ঘৃণায় ছেয়ে যাবে দেশ, মানবজমিন রইবে পতিত

কর্পোরেট ও ব্যক্তিগত সামাজিক দায়বদ্ধতা

‘রাখাইন করিডর’ : একটি ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

ভিন্নমতের ভয়, নির্বাচনের দোলাচল ও অন্তর্বর্তী সরকারের কৌশলী অবস্থান

সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা

কৃষি শিক্ষা হোক উদ্যোক্তা গড়ার মাধ্যম

রঙ্গব্যঙ্গ : কোটের কেবল রং বদলায়

মে দিবসের চেতনা বনাম বাস্তবতা

শ্রম আইন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় চাই আন্তরিকতা

বাসযোগ্যতা সূচকে ঢাকা কেন এত পিছিয়ে

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল : নিরাপদ যাত্রার প্রত্যাশা

কর ফাঁকি : অর্থনীতির জন্য এক অশনি সংকেত

১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় : উপকূলীয় সুরক্ষার শিক্ষা

যখন নদীগুলো অস্ত্র হয়ে ওঠে

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুণগত মান উন্নয়নে গবেষণা ও উদ্ভাবন

বজ্রপাত ও তালগাছ : প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা

কুষ্ঠ ও বৈষম্য : মানবাধিকারের প্রশ্নে একটি অবহেলিত অধ্যায়

ছবি

প্রান্তজনের বাংলাদেশ

অতীতের ছায়ায় নতুন বাংলাদেশ : দুর্নীতি, উগ্রপন্থা ও সরকারের দায়

সাইবার নিরাপত্তা : অদৃশ্য যুদ্ধের সামনে আমাদের প্রস্তুতি

ছবি

বাহান্নর গর্ভে জন্ম নেয়া এক ঝড়ের পাখি

প্রবাসী শ্রমিক : অর্থের যন্ত্র নয়, রাষ্ট্রের সহযোদ্ধা

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক যুগ

ভোগবাদের বিরুদ্ধে পোপ ফ্রান্সিসের জলবায়ু বার্তা

রম্যগদ্য : হাসি নিষেধ...

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন : দাবি ও সমাধানের পথ

সিরিয়ার পতন কিভাবে আমেরিকার স্বার্থকে হুমকিতে ফেলছে

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র : বিকল্প রাষ্ট্রচিন্তার সন্ধানে

tab

উপ-সম্পাদকীয়

বিশ্ব প্রাণী দিবস

মাহতাব হোসাইন মাজেদ

মঙ্গলবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৩

বিশ্ব প্রাণী দিবস আজ (৪ অক্টোবর) ২০২৩। পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে প্রাণীদের কল্যাণের মাধ্যমে তাদের অবস্থার উন্নতির উদ্দেশ্যে দিবসটি বিশ্বে পালিত হয়। আর বিশ্ব প্রাণী দিবস পৃথিবীর প্রাণীকূলকে রক্ষা করার জন্য মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে দিবসটির সূচনা করা হয়। মানুষের খাদ্য শৃঙ্খলকে টিকিয়ে রাখার জন্য প্রাণী দের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

এ পৃথিবীতে একটি সুস্থ পরিবেশগত ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য প্রাণীর গুরুত্ব অনেক। প্রতিটি প্রাণীর খাদ্য শৃঙ্খলে এক অনন্য জায়গা রয়েছে, যা বাস্তুসংস্থান নিয়ন্ত্রণে বিশেষ অবদান রাখে। কিন্তু বর্তমানে অনেক প্রাণী ও পাখি বিপন্ন হচ্ছে।

এই পৃথিবীর বাস্তুসংস্থানের যেকোনো একটি প্রাণীর অনুপস্থিতির কারণে পুরো বাস্তুসংস্থানের ব্যাঘাত ঘটতে পারে। এর ফলে পৃথিবীতে মানুষের উপর অতিরিক্ত প্রভাব পড়তে পারে বলে অনেকের ধারণা। তাই প্রত্যেকটি প্রাণীকে সুষ্ঠুভাবে বেড়ে ওঠার এবং অবাধ বিচরণের আমাদের সুযোগ করে দিতে হবে। এই সচেতনতাবোধ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য বিশ্ব প্রাণী দিবস এর সূচনা করা হয়।

বর্তমানে বিশ্ব প্রাণী দিবস একটি বৈশ্বিক অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। ২০০৩ সাল থেকে যুক্তরাজ্যভিত্তিক প্রাণী কল্যাণ চ্যারিটি নেতৃত্ব ও পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে আসছে। বিশ্ব প্রাণী দিবসের আনুষ্ঠানিক ওয়েবসাইটের মতে, এ দিবসের মূল লক্ষ্য হচ্ছে, পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে প্রাণীদের কল্যাণের মাধ্যমে তাদের অবস্থার উন্নতি করা। বিশ্ব প্রাণী দিবস উদযাপনের মাধ্যমে প্রাণী কল্যাণ আন্দোলনকে একত্রিক করা, একে আন্তর্জাতিকভাবে জোরদার করে পৃথিবীকে প্রতিটি জীবের জন্য উন্নততর বাসস্থান হিসেবে গড়ে তোলা। জাতি, ধর্ম, বিশ্বাস বা রাজনৈতিক মতাদর্শ নির্বিশেষে দিবসটিকে বিভিন্ন দেশে বিভিন্নভাবে পালন করা হয়। নানা প্রজাতির পশু-পাখি ও বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল আমাদের এই বাংলাদেশ। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ ইউনিয়নের (আইইউসিএন-২০০০) তথ্যমতে, এ দেশে প্রায় ২২ প্রজাতির উভচর প্রাণী, ১০৯ প্রজাতির সরীসৃপ, ৩৮৮ প্রজাতির পাখি এবং ১১০ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী রয়েছে।

বন্যপ্রাণীরা আমাদের অনেক উপকারে আসে। এ দেশে কিছু বন্যপ্রাণী আছে, যেগুলো বিভিন্নভাবে পরিবেশের ও আমাদের উপকার করে থাকে। বর্তমানে প্রাকৃতিক সম্পদের অতিরিক্ত আহরণ, বন্যপ্রাণী শিকার, পর্যাপ্ত সংরক্ষণের অভাব, ঘূর্ণিঝড় ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবের ফলে বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল ধ্বংস হচ্ছে, যার পরিণামে অনেক বন্যপ্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।

‘ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব বাংলাদেশ’ নামক বন্যপ্রাণী বিষয়ক সংগঠনের তথ্যমতে, আবাসস্থল ধ্বংসের ফলে ১৬০০ প্রজাতির মেরুদন্ডী প্রাণীর প্রায় অর্ধেক প্রজাতি হুমকির সম্মুখীন। গন্ডার, নীলগাই, ডোরাকাটা হায়েনা, বন্য মহিষ, ময়ূর, হাড়গিলা, জলার কুমির, জলার হরিণ ইত্যাদি বর্তমানে বাংলাদেশে বিলুপ্ত প্রাণী।

এছাড়াও রয়েল বেঙ্গল টাইগার, হাতি, ভোঁদড়, লামচিতা, চিতা, বনরুই, বনগরু, ডোরা কাঠবিড়ালি, সাম্বার হরিণ, কালো ভালুক ইত্যাদি বন্যপ্রাণী এখন বিলুপ্তপ্রায়। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি সংরক্ষণ ইউনিয়নের (আইইউসিএন) তথ্যমতে, সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতি করতে না পারলে আগামী কয়েক দশকে মোট বন্যপ্রাণী প্রজাতির ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বিলুপ্তি হতে পারে।

বিশ্বকে সব প্রাণীর জন্য বাসযোগ্য ও জীবনধারণে সহায়ক সুপরিবেশ তৈরি করার ক্ষেত্রে দিবসের আলাদা তাৎপর্য রয়েছে। তাই বিশ্বের ৬০ ভাগের বেশি রোগের সৃষ্টি হয় প্রাণি থেকে। প্রাণির বিষয়ে সচেতন থেকে এ রোগবালাই থেকে বাঁচা সম্ভব। আর এ কারণেই প্রাণির বিষয়ে সচেতন হতে হবে ও তাদের রক্ষার্থে উদ্যোগ নিতে হবে। প্রাণিদের সঠিক পরিবেশে রাখা ও তাদের যত্ন নিতে সবাইকে আরো বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। আর জলবায়ু ও সার্বিক পরিবেশ প্রেক্ষিত বিবেচনায় বাংলাদেশের জন্যও দিবসটি পালন করা ও দিবসের মাহাত্ম উপলব্ধি করে বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

[লেখক : পরিবেশ ও স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক, সবুজ আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটি]

back to top