alt

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

শিশুমৃত্যু রোধে করণীয় কী

প্রশান্ত কুমার বর্মন

: বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪

আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মের এই কর্ণধারের প্রতি আমরা কতটুকু সচেতন? কিংবা আমরা এই বিষয়ে আদৌও সজাগ কিনা? কিন্তু দেশের শিশুমৃত্যুর হার তা আমাদেরকে স্পষ্টভাবে ভয়ানক পরিস্থিতির অভিব্যক্তি দেয়। নবজাতকের মৃত্যু যেন কোনো ভাবেই থামছে না। আর এর যথাযথ কারণ হিসেবে আমরা উপলব্দি করতে পারি যে বাল্যবিবাহ শিশুমৃত্যুর জন্য অনেকাংশে দায়ী। কারণ অপরিণত বয়সে কোনো মেয়ের বিয়ে হলে আবার অপ্রাপ্ত বয়সেই সন্তান সন্তানাদি প্রসব করে যা গর্ভের শিশু ও মায়ের জন্য অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ। পিতা- মাতার অজ্ঞতা-অবহেলা, সামাজিক কুসংস্কার কিংবা ভুল চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য নবজাতকের মৃতু্যুর অনেক ঘটনা ঘটছে। তাই শিশুমৃত্যুর জন্য মূলত বাল্যবিবাহ এবং পরিবারের অসচেতনতা দায়ী।

কোনো মেয়ের গর্ভধারণের সময় থেকে সন্তান প্রসব করার পর পর্যন্ত ধাপকে মাতৃত্বকালীন সময় বলে। এই সময়টা অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গর্ভধারণের এই সময়ে মায়ের অসাবধানতা এবং প্রসূতি বিষয়ে অজ্ঞতা মারাত্মক পরিণতির দিকে ঠেলে দিতে পারে। গর্ভের সন্তানের নিরাপত্তার দায়দায়িত্ব এবং মায়ের স্বাস্থ্যসেবা, বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিতকরণসহ আরও অনেক কার্যাবলীতে প্রত্যেক প্রসূতি মায়ের খেয়াল রাখা উচিত। এই ধাপে কোনো মায়ের গুরুতর সমস্যা অর্থ হলো তার গর্ভের সন্তানের জন্যও তা ঝুঁকিপূর্ণ।

শিশুর উত্তম স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য মায়ের গর্ভকালীন সময়ে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা আবশ্যক। কিন্তু অনেক সময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে অবগত হয় না কিংবা অর্থসংকটে তা এড়িয়ে যায়। ফলে জন্ম নেয়া শিশুটি নিরাপদ খাদ্যের অভাবে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকার ফলে মায়ের নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি হয়। পুষ্টিহীনতা মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে আনে। অনেক সময় মায়ের অপুষ্টি কিংবা প্রতিবন্ধী হওয়ার ফলে শিশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকিটা বেশি হয়ে থাকে। মায়ের দুধ খাওয়ানোর সঙ্গেও শিশু মৃত্যুর সম্পর্ক রয়েছে। কাজেই তাদেরকে বিশেষ নজরে রাখতে হবে। শিশু স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলাই শিশু মৃত্যুর কারণ। এক বিশেষ জরীপে দেখা গিয়েছে বাংলাদেশে প্রতি দশজন শিশুর মধ্যে সাতজন শিশু উপযুক্ত পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত থাকে। তাই শিশুর গর্ভধারণের শুরু থেকে ভূমিষ্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্যের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় শিশুর শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি মানসিক বিকাশও বাধাগ্রস্ত হবে।

বাংলাদেশের শিশুমৃত্যুর পরিসংখ্যান মতে- প্রায় ২৪ শতাংশ শিশুর মৃত্যু ঘটে নিউমোনিয়ায়, অপরিণত বয়স ও স্বল্প ওজনের হওয়ায় মৃত্যু হয় ২২ শতাংশ শিশুর এবং জন্মের সময় শ্বাস কষ্ট হয়ে মারা যায় ১৮ শতাংশ শিশু। এছাড়াও আঘাত, পানিতে ডুবে ও ডায়রিয়ায় মারা যায় প্রায় ৩৬ শতাংশ শিশু যা দেশের জন্য অশুভ সংবাদ। দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সে শিশুমৃত্যু হার যেন ক্রনশই বাড়ছে। বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর হারের প্রায় অর্ধেক শিশু মারা যায় জন্মের ২৮ দিনের মধ্যেই। অপরিণত জন্ম, কম ওজন, জন্মগত বিভিন্ন ত্রুটি নবজাতকের মৃত্যুর প্রধান কারণ।

ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, নবজাতকের মৃত্যুর হার বাংলাদেশে হাজারে ১৭ জনের যেখানে শ্রীলঙ্কায় ৭ জন ও মালদ্বীপে ১১ জন। ভুটানে ও আলজেরিয়াতে এই হার ১৬ জন। পাঁচ বছর বয়সী শিশু মৃত্যুর হারও বাংলাদেশেই বেশি। প্রতি হাজারে ৩১ জন শিশু মারা যায় সেখানে ভুটান, শ্রীলংকা ও মরক্কোতে মারা যায় পরস্পর ২৯, ১১, এবং ১৮ জন। এটা খুবই দুঃখজনক যে বাংলাদেশে প্রতিদিন ৩৭ জন শিশুর মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশের প্রায় অনেক গ্রামগঞ্জে এখনও কুসংস্কার ও পুরোনো সামাজিক প্রথা অনুসরণ করে সন্তানাদি প্রসব হয়। কিংবা অজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মীর সহায়তায় নবজাতক এই শিশুটি মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে জন্ম নেয়। ইদানিং সিজারের প্রকোপটা বেশ বেড়েই চলছে। অনেক সময় সিজারে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। শিশুদের মধ্যে যেখানে ২০১৭ সালে মায়ের দুধ পান করানো হতো ৬৫ শতাংশ সেখানে বর্তমানে তা কমে হয়েছে ৫০ শতাংশ। প্রত্যেক শিশুকে মায়ের বুকে দুধ পান করানোর কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের সব মৃত্যুবরণ করা নবজাতকের মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ মারা যায় প্রসব শুরু হওয়ার পর এবং বাকি অর্ধেক মারা যায় ২৮ সপ্তাহ থেকে প্রসবক্রিয়া শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত।

আমরা জাতি হিসেবে কবে সচেতন হবো? এজন্য গ্রামের দরিদ্র লোকজনের সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে স্বাস্থ্য সেবা বাড়াতে জোর দেয়া অতি আবশ্যক। নবজাতকের মৃত্যুহার কমাতে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। এই লক্ষ্যে দেশের প্রায় সব জেলার হাসপাতাল এবং উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি প্রসূতি সেবা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। গণসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন এক্ষেত্রে গ্রাম কিংবা শহরে সভা ও সেমিনার আয়োজন করার মাধ্যমে আত্ম উন্নয়নমূলক পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিতে পারে। ফলে সচেতন নাগরিক হিসেবে আমরা মাতৃত্বকালীন শিশুমৃত্যু অনেকাংশেই হ্রাস করতে পারবো।

[লেখক: শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়]

ছবি

কৃষি ডেটা ব্যবস্থাপনা

যুক্তরাজ্যে ভর্তি স্থগিতের কুয়াশা: তালা লাগলেও চাবি আমাদের হাতে

শিক্ষকদের কর্মবিরতি: পেশাগত নৈতিকতা ও দায়িত্ববোধ

জাতীয় রক্তগ্রুপ নির্ণয় দিবস

জাল সনদপত্রে শিক্ষকতা

সাধারণ চুক্তিগুলোও গোপনীয় কেন

ছবি

শিশুখাদ্যের নিরাপত্তা: জাতির ভবিষ্যৎ সুরক্ষার প্রথম শর্ত

ছবি

ফিনল্যান্ড কেন সুখী দেশ

ছবি

কৃষকের সংকট ও অর্থনীতির ভবিষ্যৎ

আলু চাষের আধুনিক প্রযুক্তি

ই-বর্জ্য: নীরব বিষে দগ্ধ আমাদের ভবিষ্যৎ

ঢাকার জনপরিসর: আর্ভিং গফম্যানের সমাজতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ

আলু চাষের আধুনিক প্রযুক্তি

কলি ফুটিতে চাহে ফোটে না!

কৃষিতে স্মার্ট প্রযুক্তি

রোহিঙ্গা সংকটের টেকসই সমাধানে লোকালাইজেশন অপরিহার্য

আইসিইউ থেকে বাড়ি ফেরা ও খাদের কিনারায় থাকা দেশ

বিচারবহির্ভূত হত্যার দায় কার?

ছবি

ট্রাম্পের ভেনেজুয়েলা কৌশল

অযৌক্তিক দাবি: পেশাগত নৈতিকতার সংকট ও জনপ্রশাসন

সড়ক দুর্ঘটনা এখন জাতীয় সংকট

কেন বাড়ছে দারিদ্র্য?

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পুনর্জন্ম

লবণাক্ততায় ডুবছে উপকূল

বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন ও বাস্তবতা

সড়ক দুর্ঘটনার সমাজতত্ত্ব: আইন প্রয়োগের ব্যর্থতা ও কাঠামোর চক্রাকার পুনরুৎপাদন

ছবি

অস্থির সময় ও অস্থির সমাজের পাঁচালি

ভারতে বামপন্থার পুনর্জাগরণ: ব্যাধি ও প্রতিকার

চিপনির্ভরতা কাটিয়ে চীনের উত্থান

একতার বাতাসে উড়ুক দক্ষিণ এশিয়ার পতাকা

ছবি

স্মরণ: শহীদ ডা. মিলন ও বৈষম্যহীন ব্যবস্থার সংগ্রাম

মনে পুরানো দিনের কথা আসে, মনে আসে, ফিরে আসে...

রাসায়নিক দূষণ ও ক্যান্সারের ঝুঁকি

আছদগঞ্জের শুটকি : অতীতের গৌরব, বর্তমানের দুঃসময়

নবান্নের আনন্দ ও আমনের ফলন

‘প্রশ্ন কোরো না, প্রশ্ন সর্বনাশী’

tab

মতামত » উপ-সম্পাদকীয়

শিশুমৃত্যু রোধে করণীয় কী

প্রশান্ত কুমার বর্মন

বুধবার, ২৪ জুলাই ২০২৪

আজকের শিশুই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কিন্তু পরবর্তী প্রজন্মের এই কর্ণধারের প্রতি আমরা কতটুকু সচেতন? কিংবা আমরা এই বিষয়ে আদৌও সজাগ কিনা? কিন্তু দেশের শিশুমৃত্যুর হার তা আমাদেরকে স্পষ্টভাবে ভয়ানক পরিস্থিতির অভিব্যক্তি দেয়। নবজাতকের মৃত্যু যেন কোনো ভাবেই থামছে না। আর এর যথাযথ কারণ হিসেবে আমরা উপলব্দি করতে পারি যে বাল্যবিবাহ শিশুমৃত্যুর জন্য অনেকাংশে দায়ী। কারণ অপরিণত বয়সে কোনো মেয়ের বিয়ে হলে আবার অপ্রাপ্ত বয়সেই সন্তান সন্তানাদি প্রসব করে যা গর্ভের শিশু ও মায়ের জন্য অত্যধিক ঝুঁকিপূর্ণ। পিতা- মাতার অজ্ঞতা-অবহেলা, সামাজিক কুসংস্কার কিংবা ভুল চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য নবজাতকের মৃতু্যুর অনেক ঘটনা ঘটছে। তাই শিশুমৃত্যুর জন্য মূলত বাল্যবিবাহ এবং পরিবারের অসচেতনতা দায়ী।

কোনো মেয়ের গর্ভধারণের সময় থেকে সন্তান প্রসব করার পর পর্যন্ত ধাপকে মাতৃত্বকালীন সময় বলে। এই সময়টা অত্যধিক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ গর্ভধারণের এই সময়ে মায়ের অসাবধানতা এবং প্রসূতি বিষয়ে অজ্ঞতা মারাত্মক পরিণতির দিকে ঠেলে দিতে পারে। গর্ভের সন্তানের নিরাপত্তার দায়দায়িত্ব এবং মায়ের স্বাস্থ্যসেবা, বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিতকরণসহ আরও অনেক কার্যাবলীতে প্রত্যেক প্রসূতি মায়ের খেয়াল রাখা উচিত। এই ধাপে কোনো মায়ের গুরুতর সমস্যা অর্থ হলো তার গর্ভের সন্তানের জন্যও তা ঝুঁকিপূর্ণ।

শিশুর উত্তম স্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য মায়ের গর্ভকালীন সময়ে পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করা আবশ্যক। কিন্তু অনেক সময় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে অবগত হয় না কিংবা অর্থসংকটে তা এড়িয়ে যায়। ফলে জন্ম নেয়া শিশুটি নিরাপদ খাদ্যের অভাবে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকার ফলে মায়ের নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি হয়। পুষ্টিহীনতা মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে আনে। অনেক সময় মায়ের অপুষ্টি কিংবা প্রতিবন্ধী হওয়ার ফলে শিশুর স্বাস্থ্য ঝুঁকিটা বেশি হয়ে থাকে। মায়ের দুধ খাওয়ানোর সঙ্গেও শিশু মৃত্যুর সম্পর্ক রয়েছে। কাজেই তাদেরকে বিশেষ নজরে রাখতে হবে। শিশু স্বাস্থ্যের প্রতি অবহেলাই শিশু মৃত্যুর কারণ। এক বিশেষ জরীপে দেখা গিয়েছে বাংলাদেশে প্রতি দশজন শিশুর মধ্যে সাতজন শিশু উপযুক্ত পুষ্টিকর খাবার থেকে বঞ্চিত থাকে। তাই শিশুর গর্ভধারণের শুরু থেকে ভূমিষ্ট হওয়ার আগ পর্যন্ত নিরাপদ খাদ্যের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় শিশুর শারীরিক বিকাশের পাশাপাশি মানসিক বিকাশও বাধাগ্রস্ত হবে।

বাংলাদেশের শিশুমৃত্যুর পরিসংখ্যান মতে- প্রায় ২৪ শতাংশ শিশুর মৃত্যু ঘটে নিউমোনিয়ায়, অপরিণত বয়স ও স্বল্প ওজনের হওয়ায় মৃত্যু হয় ২২ শতাংশ শিশুর এবং জন্মের সময় শ্বাস কষ্ট হয়ে মারা যায় ১৮ শতাংশ শিশু। এছাড়াও আঘাত, পানিতে ডুবে ও ডায়রিয়ায় মারা যায় প্রায় ৩৬ শতাংশ শিশু যা দেশের জন্য অশুভ সংবাদ। দেশে পাঁচ বছরের কম বয়সে শিশুমৃত্যু হার যেন ক্রনশই বাড়ছে। বাংলাদেশে শিশুমৃত্যুর হারের প্রায় অর্ধেক শিশু মারা যায় জন্মের ২৮ দিনের মধ্যেই। অপরিণত জন্ম, কম ওজন, জন্মগত বিভিন্ন ত্রুটি নবজাতকের মৃত্যুর প্রধান কারণ।

ইউনিসেফ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক পরিসংখ্যানে দেখা গিয়েছে, নবজাতকের মৃত্যুর হার বাংলাদেশে হাজারে ১৭ জনের যেখানে শ্রীলঙ্কায় ৭ জন ও মালদ্বীপে ১১ জন। ভুটানে ও আলজেরিয়াতে এই হার ১৬ জন। পাঁচ বছর বয়সী শিশু মৃত্যুর হারও বাংলাদেশেই বেশি। প্রতি হাজারে ৩১ জন শিশু মারা যায় সেখানে ভুটান, শ্রীলংকা ও মরক্কোতে মারা যায় পরস্পর ২৯, ১১, এবং ১৮ জন। এটা খুবই দুঃখজনক যে বাংলাদেশে প্রতিদিন ৩৭ জন শিশুর মৃত্যু হয়।

বাংলাদেশের প্রায় অনেক গ্রামগঞ্জে এখনও কুসংস্কার ও পুরোনো সামাজিক প্রথা অনুসরণ করে সন্তানাদি প্রসব হয়। কিংবা অজ্ঞ স্বাস্থ্যকর্মীর সহায়তায় নবজাতক এই শিশুটি মৃত্যু ঝুঁকি নিয়ে জন্ম নেয়। ইদানিং সিজারের প্রকোপটা বেশ বেড়েই চলছে। অনেক সময় সিজারে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। শিশুদের মধ্যে যেখানে ২০১৭ সালে মায়ের দুধ পান করানো হতো ৬৫ শতাংশ সেখানে বর্তমানে তা কমে হয়েছে ৫০ শতাংশ। প্রত্যেক শিশুকে মায়ের বুকে দুধ পান করানোর কোনো বিকল্প নেই। বাংলাদেশের সব মৃত্যুবরণ করা নবজাতকের মধ্যে প্রায় এক তৃতীয়াংশ মারা যায় প্রসব শুরু হওয়ার পর এবং বাকি অর্ধেক মারা যায় ২৮ সপ্তাহ থেকে প্রসবক্রিয়া শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত।

আমরা জাতি হিসেবে কবে সচেতন হবো? এজন্য গ্রামের দরিদ্র লোকজনের সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে স্বাস্থ্য সেবা বাড়াতে জোর দেয়া অতি আবশ্যক। নবজাতকের মৃত্যুহার কমাতে সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে। এই লক্ষ্যে দেশের প্রায় সব জেলার হাসপাতাল এবং উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জরুরি প্রসূতি সেবা শতভাগ নিশ্চিত করতে হবে। গণসচেতনতা তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি সংগঠন এক্ষেত্রে গ্রাম কিংবা শহরে সভা ও সেমিনার আয়োজন করার মাধ্যমে আত্ম উন্নয়নমূলক পরামর্শ ও দিকনির্দেশনা দিতে পারে। ফলে সচেতন নাগরিক হিসেবে আমরা মাতৃত্বকালীন শিশুমৃত্যু অনেকাংশেই হ্রাস করতে পারবো।

[লেখক: শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়]

back to top