alt

উপ-সম্পাদকীয়

জলবায়ু সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি আমরা রক্ষা করতে পারছি কি?

জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস

: শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিল্প ও কৃষি বিপ্লবের প্রয়োজনে তৈরি হওয়া বৈশ্বিক উষ্ণতার বোঝা কে নেবে? সুযোগের সদ্ব্যবহাকারী এই প্রজন্মকে নিশ্চয়ই। আর সে জন্যই বোধ হয় ২০১৫ সালে COP21 প্যারিস এগ্রিমেন্ট গৃহীত হয়। যারা মূল উদ্দেশ্য ছিল বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ। তা যেন কোনোক্রমেই শিল্পবিপ্লবের আগের অবস্থা থেকে ১.৫ থেকে ২.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম না করে। উক্ত এগ্রিমেন্টের আরেকটি আলোচিত বিষয় ছিল চুক্তির অধীনে সব দেশকে তাদের নিজ নিজ দেশের বিভিন্ন উৎস থেকে নির্গত কার্বনের হিসাব দেওয়া এবং সে অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কতখানি কী উপায়ে কমিয়ে আনা যায় তার একটা রোডম্যাপ ও কাজের পরিকল্পনা উপস্থাপন করা। প্যারিস এগ্রিমেন্টের ভাষায় এটাকে বলা হচ্ছে Nationally Determined Contributions ev NDC।

প্যারিস এগ্রিমেন্ট চুক্তি অনুমোদনের আগে এই প্রতিবেদন Intended Nationally Determined Contributions (INDC) নামে পরিচিত ছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে বাংলাদেশ যথেষ্ট তৎপর। তাই ২০১৫ সালে বাংলাদেশ UNFCC বরাবরে তার ওঘউঈ প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে অবশ্য কার্বন নির্গমনের উৎস হিসেবে শক্তি (চড়বিৎ), শিল্প (ওহফঁংঃৎু) এবং পরিবহন (ঞৎধহংঢ়ড়ৎঃ) খাতগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়। কৃষি, বন বা আনুষঙ্গিক খাতগুলো তখন বিবেচনায় আসেনি। (সে অনুযায়ী একটি রোডম্যাপ ও কর্ম-পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয় ২০১৮ সালে)। তবে ঘউঈ-এর প্রতিবেদনে উপর্যুক্ত খাতগুলোর সাথে ওহফঁংঃৎরধষ চড়বিৎ ধহফ চৎড়পবংং টংব (ওচচট), অমৎরপঁষঃঁৎব, ঋড়ৎবংঃৎু ধহফ ড়ঃযবৎ খধহফ ঁংব (অঋঙখট), ডধংঃব এবং ঋড়ৎবংঃ (বনাঞ্চল) খাতগুলো যুক্ত করে ওচঈঈ গাইডলাইন অনুসরণপূর্বক আপডেটেড উপাত্ত সংযুক্ত করা হয়। সেখানে ২০১২ সালকে ভিত্তি বছর (ইধংব ুবধৎ) হিসেবে ধরা হয়। ভিত্তি বছরের গ্রিনহাউস গ্যাস (এঐএ) নির্গমনের মোট পরিমাণ ধরা ছিল ১৬৯.৫ মিলিয়ন টন কার্বন ইকুইভ্যালেন্ট (গঃঈঙ ২ ব)। এর মধ্যে এনার্জি খাত থেকে নির্গত গ্যাসের পরিমাণ ৯৩.০৯ গঃঈঙ ২ ব বা মোট নির্গমনের ৫৫.০৭ শতাংশ। এরপরই অঋঙখট খাতের স্থান; ৪৫.৮৭ গঃঈঙ ২ ব মোতাবেক ২৭.১৩ শতাংশ। তারপরে ডধংঃব বা বর্জ্য এবং ওচচট খাতগুলোর স্থান। ডধংঃব বা বর্জ্য এবং ওচচট খাতগুলো থেকে নির্গত এঐএ এর পরিমাণ যথাক্রমে ২৪.১১ এবং ৫.৬১ গঃঈঙ ২ ব । শতকরা হারে তাদের অনুরূপ পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪.২৬ এবং ৩.৩২ শতাংশ।

বনাঞ্চলের বেলায় হিসাবটা একটু ভিন্নভাবে দেখানো হয়েছে। কারণ এখানে একই সাথে নির্গমন ও শোষণের ব্যাপার আছে। ভিত্তি বছরে বনাঞ্চল নির্গমন করে ১.১৯ গঃঈঙ ২ ব এবং পরিবেশ থেকে শোষণ করে নেয় ০.৮১ গঃঈঙ ২ ব । এখানে ঘাটতি থাকছে ০.৩৭ গঃঈঙ ২ ব, শতকরা হিসেবে মাত্র ০.২২। এটাকে ওচঈঈ গাইডলাইন অনুসারে ঋড়ৎবংঃ জবভবৎবহপব খবাবষ হিসেবে ধরা হচ্ছে। ইঁংরহবংং ধং টংঁধষ (ইঅট) পরিস্থিতিতে (নির্গমনের বিরুদ্ধে যদি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়) তাহলে ২০৩০ নাগাদ এঐএ পরিস্থিতি যেমন দাঁড়াতে পারে। এখানে আমাদের শিল্প-কৃষি নির্ভর

অর্থনীতির অগ্রগতি যেভাবে চলছে সেভাবে ধরেই হিসেব করা হয়েছে। এই অবস্থায় ২০৩০ সালে নির্গত এঐএ-এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৪০৯.৪ গঃঈঙ ২ ব। ভিত্তি বছরের তুলনায় ২.৪২ গুণ বেশি।

এনার্জি খাতে এই পরিমাণ ৩১২.৫৪ গঃঈঙ ২ ব (৭৬.৩৪ শতাংশ)। ওচচট এবং অঋঙখট থেকে নির্গত এঐএ-এর পরিমাণ যথাক্রমে ১০.৯৭ এবং ৫৫. ০১ গঃঈঙ ২ ব । শতকরা হারে এই পরিমাণ যথাক্রমে ২.৬৮ এবং ১৩.৪৪। বর্জ্য থেকে নির্গত এঐএ-এর পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩০.৮৯ গঃঈঙ ২ ব । ভিত্তি বছরের তুলনায় অঋঙখট, ওচচট এবং ডধংঃব খাতের বেলায় বাড়তির পরিমাণ যথাক্রমে ১.২৯, ১.৯৫ এবং ১.২৮ গুণ। তুলনামূলক বিচারে দেখা যায় যে এনার্জি খাত থেকেই সবচেয়ে বেশি নির্গত হচ্ছে। কৃষিকে উপখাতকে অঋঙখট এবং এনার্জি, এই দুই জায়গায় দেখানো হয়েছে। এনার্জি খাতে সরাসরি শক্তি (যান্ত্রিক চাষাবাদ) খরচ হচ্ছে। ভিত্তি বছরে যান্ত্রিক কৃষি থেকে নির্গত এঐএ-এর পরিমাণ ধরা হয়েছিল ২.৭৩ গঃঈঙ ২ ব এবং ২০৩০ সালে ১০.১৬ গঃঈঙ ২ ব। শতকরা হিসেবে যথাক্রমে ১.৬১ এবং ২.৪৮।

এই হিসাবের সাথে সাথে সরকারকে তো ওয়াদা করতে হয় যে সরকার এঐএ গ্যাস নির্গমন কমিয়ে আনবে। সেটা দুইভাবে চিন্তা করা হয়Ñ টহপড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড় এবং ঈড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড়।

টহপড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড়-এর ক্ষেত্রে কোনো সরকারকে নিজের ক্ষমতায় করতে হবে। আর ঈড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড়-এর বেলায় প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক দুই-ই বাইরের সাহায্য নিয়ে করতে হবে এবং এটা হবে টহপড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড় এর সাথে অতিরিক্ত কাজ। এখন দেখা যাক আমাদের সরকার কি ওয়াদা করেছে। টহপড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড় এর বেলায় ২০৩০ নাগাদ ইঅট মাত্রা থেকে ২৭.৫৬ গঃঈঙ ২ ব অর্থাৎ ৬.৭৩ শতাংশ কমিয়ে আনবে। এর মধ্যে এনার্জি খাতেই কমানোর কথা ৯৫.৪ শতাংশ (২৬.৩ গঃঈঙ ২ ব)।

পক্ষান্তরে (অঋঙখট (কৃষি) এবং বর্জ্যতে যথাক্রমে ০.৬৪ গঃঈঙ ২ ব (২.৩ শতাংশ) এবং ০.৬ গঃঈঙ ২ ব (২.২ শতাংশ)। ওচচট খাতের জন্য কমিয়ে আনার কোনো ওয়াদা ছিল না। ঈড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড়-মোতাবেক ২০৩০ নাগাদ ইঅট থেকে ৬১.৯ গঃঈঙ ২ ব বা ১৫ শতাংশ কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। এনার্জির ভাগে ৯৬.৪৬ শতাংশ (৫৯.৭ গঃঈঙ ২ ব)। কৃষি এবং বর্জ্যরে বেলায় ০.৪ (০.৬৫ শতাংশ) এবং ১.৮৪ (২.৯৭ শতাংশ) মাত্র। এখানেও ওচচট-এর ব্যাপারে কোনো ওয়াদা করা হয়নি।

অতএব এ কথা বলাই যায় যে এঐএ-এর জন্য প্রধানত দায়ী এনার্জি খাত এবং তারপরে সমগ্র কৃষি খাত। ভিত্তি বছরে কৃষি খাতে এনার্জি খাতের চেয়ে ১.১৯ গুণ বেশি থাকলেও ২০৩০ সালে গিয়ে ৩.৩৪ গুণ বেশি হওয়ার কথা। অত্রএব এঐএ নিয়ন্ত্রণের জন্য এনার্জি খাতের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। তবে কৃষি খাতকেও ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। যাই হোক সে ব্যাপারে এনার্জি খাতের জন্য শিল্পখাতের বিশেষজ্ঞরা নিশ্চয়ই কিছু ভাবছেন এবং চেষ্টা করছেন।

আমি কৃষি খাত নিয়ে দুটো কথা বলি। এখানে ফসল-উপখাতে ধানের জমিকে প্রধানত টার্গেট করা হয়েছে। তবে ব্রি বিজ্ঞানীদের দেওয়া ধানের জমির কার্বন ব্যালেন্স নিয়ে আরেকদিন কিছু বলবো। শুধু এটুকু বলে রাখি যে বিজ্ঞানীদের মতে, ধানখেত থেকে কার্বন নিঃসরণের চেয়ে কার্বন সিকুয়েস্ট্রেশনের পরিমাণ বেশি। তারপরও ধান জলজ পরিবেশে উৎপাদিত হয় তাই ধান নিয়ে বেশি কথা বলা হয়। তারপরও প্রশমনের প্রয়োজনে অডউ সেচ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও জাত উন্নয়নের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। সেখানে ২০৩০ সালের মধ্যে টহপড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড় এর বেলায় অডউ সেচ পদ্ধতি ৫০,০০০ হেক্টর জমিতে সম্প্রসারণ এবং ১,১১১, ০০০ হেক্টরের জন্য ধানের জাত উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। ঈড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড়-এর বেলায় ১০০,০০০ হেক্টর জমিতে অডউ সেচ পদ্ধতি সম্প্রসারণ এবং ২,১২৯,০০০ হেক্টরের জন্য ধানের জাত উন্নয়ন করতে বলা হয়েছে। অডউ প্রযুক্তি তৈরি আছে। চেষ্টা করলে মাঠে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু ২০৩০ সালের মধ্যে ধানের জাত উন্নয়ন করে মাঠে সম্প্রসারণ করা বিষয়টি পরিষ্কার নয়।

আমরা জানি এঐএ গ্যাসের উপাদান মিথেন নির্গমনের ব্যাপারে এক জাত থেকে আরেক জাতে পার্থক্য আছে; কিন্তু সে ব্যাপারে স্বীকৃত কোনো সেচনির্ভর উফশী জাত আমাদের হাতে নেই। তবে অ্যারোবিক রাইস (অবৎড়নরপ ৎরপব) ও বোনা আউশ (জধরহভবফ উৎু ঝববফবফ ৎরপব) ধানের জাত উন্নয়ন নিয়ে বেশ গবেষণা আছে। অ্যারোবিক রাইস যেহেতু ডাঙ্গা ও পানি উভয় পরিবেশে অভিযোজনের উপযোগী এবং বোনা আউশ বৃষ্টিনির্ভর পরিবেশে ভালো হয়, তাই এই গবেষণাকগুলোকে জোরদার করা যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে ফলন কিছুটা কমে যেতে পারে। সে ব্যাপারে আমাদের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। এছাড়াও আমাদের গতানুগতিক উফশী জাতগুলোর কিছু কিছু ধুইল্যা বাইন (উৎু ংববফরহম) করে ধান উৎপাদন করা সম্ভব। এ ব্যাপারে গবেষণা জোরদার করা যেতে পারে। তাছাড়া নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন কমানোর ব্যাপারে লিফ-কালার-চার্ট ব্যবহার, মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে গুটি ইউরিয়া মাটির গভীরে প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে। এই প্রযুক্তিগুলো হাতে আছে। এগুলোর সম্প্রসারণ এখনই সম্ভব। এখন শুধু গুটি ইউরিয়া নয় দানাদার ইউরিয়া মাটির গভীরে প্রয়োগের যন্ত্র ধান গবেষণা ইনস্টটিউটের হাতে আছে। তবে এসব নিয়ে আরও চিন্তা ভাবনা করার দরকার আছে।

শস্যক্রমের বিষয়ে শুধু ডাল ফসলের কথা বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে তেল ও অন্যান্য উচ্চমূল্যের ফসল নিয়েও ভাবনাচিন্তা করা যেতে পারে। কৃষি বনায়ন কর্মসূচি এখানে অন্তর্ভুক্ত করার সুয়োগ আছে। গবাদিপশুর বেলায় আমাদের নিজস্ব গবেষণানির্ভর উপাত্তের ঘাটতি আছে। তবে কাজ চলছে। বেশি দুধ উৎপাদনে সক্ষম দো-আঁশলা গরুর বেশি খোরাকি লাগে। সেখানে থেকে সাশ্রয়ী মিথেন উৎপাদনকারী জাত খুঁজে পেয়ে কৃষকের মধ্যে বিলি-বণ্টন করা সময়সাপেক্ষ। তবে আমাদের দেশি কিছু জাতের দুধ কম হলেও খোরাকি কম লাগে বিধায় মিথেন উৎপাদনও কম হবে বলে বিশ্বাস। সেটা করতে গেলে দুধের প্রয়োজন মেটানো সমস্যা হবে। তবে মিথেন সাশ্রয়ী ফুড-কম্পোজিশন নিয়ে কিছু গবেষণা আছে। সেগুলো নিয়ে আরও গবেষণার দরকার আছে। তাই ২০৩০ সালের মধ্যে কতখানি কী করা যাবে তা উদ্বেগের বিষয়।

এখন ২০২৪ চলছে। ওয়াদা পূরণের জন্য সময় বেশি নেই। সরকার সচেতন। এজন্য মুজিব অ্যাকশন প্ল্যান, আশ্রয়ণ প্রকল্প, ন্যাশনাল সোলার এনার্জি রোড ম্যাপ, ফরেস্ট কার্বন ইনভেনটরিস অ্যন্ট ট্রি প্ল্যানটেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান ফর রিডুইসিং শর্ট-লিভড ক্লাইমেট পলুট্যান্টস, এনার্জি ইফিসিয়েন্সি অ্যান্ড কনজারভেশন মাস্টার প্ল্যান, গ্রিন টেকনোলাজি, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড, বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান, ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান ইত্যাদি পরিকল্পনা নিয়ে সরকার এগোচ্ছে; কিন্তু আমার জানার বিষয় সবাইকে নিয়ে এঐএ নির্গমন নিয়ন্ত্রণে আমরা এখন কোন পর্যায়ে আছি।

[লেখক : সাবেক মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট; সাবেক নির্বাহী পরিচালক, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন]

সড়ক দুর্ঘটনার লাগাম টানবে কে

মকর সংক্রান্তি : বাঙালির উৎসব ও ঐতিহ্যের ধারক

শৃঙ্খলে আবদ্ধ সামাজিক মানুষ

দাবি আদায়ে জনদুর্ভোগ : অপসংস্কৃতি ও নৈতিক প্রশ্ন

মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে কূটতর্ক

শৃঙ্খলে আবদ্ধ সামাজিক মানুষ

রজিনাদের বেঁচে থাকার লড়াই

মানব পাচার প্রতিরোধে প্রয়োজন সচেতনতা

সংবিধান সংশোধন : আমাদের বলার আছে

চিন্তা ও ভাব প্রকাশের স্বাধীনতা

গ্রাম উন্নয়নে যুব সমাজের ভূমিকা

‘দেশজ নাট্যশৈলী’র কেন্দ্রীয় নাট্যআঙ্গিক ও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি

ভ্যাট বাড়ানোর সিদ্ধান্ত ও কিছু প্রশ্ন

রাখাইন পরিস্থিতি : বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতির বড় পরীক্ষা

রাজনীতিতে নারীর অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব

রম্যগদ্য : নিশুতিরাতের আগন্তুক

গুরু রবিদাস জির কথা

গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতালদের জন্য অশনিসংকেত

নতুন বছরের প্রত্যাশা

নৈতিকতা, শিক্ষা ও উন্নয়ন: আমাদের মুক্তির পথ

কোথায় নাই কোটা?

ছবি

ও আমার স্বপ্ন ঝরা আকুল করা জন্মভূমি

ব্রেন রট: বর্তমান সময়ের এক মারাত্মক ব্যাধি

যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলুক দেশের গবেষণা

নির্মোহ ইতিহাস চর্চা ও রাষ্ট্র সংস্কার প্রয়াসে শিক্ষা

জলবায়ুর পরিবর্তন ও দেশের ভবিষ্যৎ

প্রসঙ্গ : থিয়েটার ফর থেরাপির তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক পাঠ

শ্বেতপত্রে নতুন কী আছে?

ছবি

ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও জুনো ভাইয়ের স্মৃতি

পরিবেশ সুরক্ষায় সার্কুলার ইকোনমি

বাজার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না কেন

ভাড়া ‘নির্ধারণ’ কিংবা ‘নিয়ন্ত্রণ’ করবে কে?

ব্যাংক ও আর্থিক খাতের জন্য কেমন ছিল ২০২৪ সাল?

স্বৈরাচারের শেষ নেই...

ছবি

স্মরণ : বাংলা সাহিত্যের অমর কথাশিল্পী

দোষারোপের রাজনীতি আর কত

tab

উপ-সম্পাদকীয়

জলবায়ু সংক্রান্ত প্রতিশ্রুতি আমরা রক্ষা করতে পারছি কি?

জীবন কৃষ্ণ বিশ্বাস

শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪

শিল্প ও কৃষি বিপ্লবের প্রয়োজনে তৈরি হওয়া বৈশ্বিক উষ্ণতার বোঝা কে নেবে? সুযোগের সদ্ব্যবহাকারী এই প্রজন্মকে নিশ্চয়ই। আর সে জন্যই বোধ হয় ২০১৫ সালে COP21 প্যারিস এগ্রিমেন্ট গৃহীত হয়। যারা মূল উদ্দেশ্য ছিল বৈশ্বিক উষ্ণতা নিয়ন্ত্রণ। তা যেন কোনোক্রমেই শিল্পবিপ্লবের আগের অবস্থা থেকে ১.৫ থেকে ২.০ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম না করে। উক্ত এগ্রিমেন্টের আরেকটি আলোচিত বিষয় ছিল চুক্তির অধীনে সব দেশকে তাদের নিজ নিজ দেশের বিভিন্ন উৎস থেকে নির্গত কার্বনের হিসাব দেওয়া এবং সে অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কতখানি কী উপায়ে কমিয়ে আনা যায় তার একটা রোডম্যাপ ও কাজের পরিকল্পনা উপস্থাপন করা। প্যারিস এগ্রিমেন্টের ভাষায় এটাকে বলা হচ্ছে Nationally Determined Contributions ev NDC।

প্যারিস এগ্রিমেন্ট চুক্তি অনুমোদনের আগে এই প্রতিবেদন Intended Nationally Determined Contributions (INDC) নামে পরিচিত ছিল। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে বাংলাদেশ যথেষ্ট তৎপর। তাই ২০১৫ সালে বাংলাদেশ UNFCC বরাবরে তার ওঘউঈ প্রতিবেদন জমা দেয়। সেখানে অবশ্য কার্বন নির্গমনের উৎস হিসেবে শক্তি (চড়বিৎ), শিল্প (ওহফঁংঃৎু) এবং পরিবহন (ঞৎধহংঢ়ড়ৎঃ) খাতগুলো বিবেচনায় নেওয়া হয়। কৃষি, বন বা আনুষঙ্গিক খাতগুলো তখন বিবেচনায় আসেনি। (সে অনুযায়ী একটি রোডম্যাপ ও কর্ম-পরিকল্পনা জমা দেওয়া হয় ২০১৮ সালে)। তবে ঘউঈ-এর প্রতিবেদনে উপর্যুক্ত খাতগুলোর সাথে ওহফঁংঃৎরধষ চড়বিৎ ধহফ চৎড়পবংং টংব (ওচচট), অমৎরপঁষঃঁৎব, ঋড়ৎবংঃৎু ধহফ ড়ঃযবৎ খধহফ ঁংব (অঋঙখট), ডধংঃব এবং ঋড়ৎবংঃ (বনাঞ্চল) খাতগুলো যুক্ত করে ওচঈঈ গাইডলাইন অনুসরণপূর্বক আপডেটেড উপাত্ত সংযুক্ত করা হয়। সেখানে ২০১২ সালকে ভিত্তি বছর (ইধংব ুবধৎ) হিসেবে ধরা হয়। ভিত্তি বছরের গ্রিনহাউস গ্যাস (এঐএ) নির্গমনের মোট পরিমাণ ধরা ছিল ১৬৯.৫ মিলিয়ন টন কার্বন ইকুইভ্যালেন্ট (গঃঈঙ ২ ব)। এর মধ্যে এনার্জি খাত থেকে নির্গত গ্যাসের পরিমাণ ৯৩.০৯ গঃঈঙ ২ ব বা মোট নির্গমনের ৫৫.০৭ শতাংশ। এরপরই অঋঙখট খাতের স্থান; ৪৫.৮৭ গঃঈঙ ২ ব মোতাবেক ২৭.১৩ শতাংশ। তারপরে ডধংঃব বা বর্জ্য এবং ওচচট খাতগুলোর স্থান। ডধংঃব বা বর্জ্য এবং ওচচট খাতগুলো থেকে নির্গত এঐএ এর পরিমাণ যথাক্রমে ২৪.১১ এবং ৫.৬১ গঃঈঙ ২ ব । শতকরা হারে তাদের অনুরূপ পরিমাণ দাঁড়ায় ১৪.২৬ এবং ৩.৩২ শতাংশ।

বনাঞ্চলের বেলায় হিসাবটা একটু ভিন্নভাবে দেখানো হয়েছে। কারণ এখানে একই সাথে নির্গমন ও শোষণের ব্যাপার আছে। ভিত্তি বছরে বনাঞ্চল নির্গমন করে ১.১৯ গঃঈঙ ২ ব এবং পরিবেশ থেকে শোষণ করে নেয় ০.৮১ গঃঈঙ ২ ব । এখানে ঘাটতি থাকছে ০.৩৭ গঃঈঙ ২ ব, শতকরা হিসেবে মাত্র ০.২২। এটাকে ওচঈঈ গাইডলাইন অনুসারে ঋড়ৎবংঃ জবভবৎবহপব খবাবষ হিসেবে ধরা হচ্ছে। ইঁংরহবংং ধং টংঁধষ (ইঅট) পরিস্থিতিতে (নির্গমনের বিরুদ্ধে যদি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয়) তাহলে ২০৩০ নাগাদ এঐএ পরিস্থিতি যেমন দাঁড়াতে পারে। এখানে আমাদের শিল্প-কৃষি নির্ভর

অর্থনীতির অগ্রগতি যেভাবে চলছে সেভাবে ধরেই হিসেব করা হয়েছে। এই অবস্থায় ২০৩০ সালে নির্গত এঐএ-এর পরিমাণ দাঁড়াবে ৪০৯.৪ গঃঈঙ ২ ব। ভিত্তি বছরের তুলনায় ২.৪২ গুণ বেশি।

এনার্জি খাতে এই পরিমাণ ৩১২.৫৪ গঃঈঙ ২ ব (৭৬.৩৪ শতাংশ)। ওচচট এবং অঋঙখট থেকে নির্গত এঐএ-এর পরিমাণ যথাক্রমে ১০.৯৭ এবং ৫৫. ০১ গঃঈঙ ২ ব । শতকরা হারে এই পরিমাণ যথাক্রমে ২.৬৮ এবং ১৩.৪৪। বর্জ্য থেকে নির্গত এঐএ-এর পরিমাণ ধরা হয়েছে ৩০.৮৯ গঃঈঙ ২ ব । ভিত্তি বছরের তুলনায় অঋঙখট, ওচচট এবং ডধংঃব খাতের বেলায় বাড়তির পরিমাণ যথাক্রমে ১.২৯, ১.৯৫ এবং ১.২৮ গুণ। তুলনামূলক বিচারে দেখা যায় যে এনার্জি খাত থেকেই সবচেয়ে বেশি নির্গত হচ্ছে। কৃষিকে উপখাতকে অঋঙখট এবং এনার্জি, এই দুই জায়গায় দেখানো হয়েছে। এনার্জি খাতে সরাসরি শক্তি (যান্ত্রিক চাষাবাদ) খরচ হচ্ছে। ভিত্তি বছরে যান্ত্রিক কৃষি থেকে নির্গত এঐএ-এর পরিমাণ ধরা হয়েছিল ২.৭৩ গঃঈঙ ২ ব এবং ২০৩০ সালে ১০.১৬ গঃঈঙ ২ ব। শতকরা হিসেবে যথাক্রমে ১.৬১ এবং ২.৪৮।

এই হিসাবের সাথে সাথে সরকারকে তো ওয়াদা করতে হয় যে সরকার এঐএ গ্যাস নির্গমন কমিয়ে আনবে। সেটা দুইভাবে চিন্তা করা হয়Ñ টহপড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড় এবং ঈড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড়।

টহপড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড়-এর ক্ষেত্রে কোনো সরকারকে নিজের ক্ষমতায় করতে হবে। আর ঈড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড়-এর বেলায় প্রযুক্তিগত এবং অর্থনৈতিক দুই-ই বাইরের সাহায্য নিয়ে করতে হবে এবং এটা হবে টহপড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড় এর সাথে অতিরিক্ত কাজ। এখন দেখা যাক আমাদের সরকার কি ওয়াদা করেছে। টহপড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড় এর বেলায় ২০৩০ নাগাদ ইঅট মাত্রা থেকে ২৭.৫৬ গঃঈঙ ২ ব অর্থাৎ ৬.৭৩ শতাংশ কমিয়ে আনবে। এর মধ্যে এনার্জি খাতেই কমানোর কথা ৯৫.৪ শতাংশ (২৬.৩ গঃঈঙ ২ ব)।

পক্ষান্তরে (অঋঙখট (কৃষি) এবং বর্জ্যতে যথাক্রমে ০.৬৪ গঃঈঙ ২ ব (২.৩ শতাংশ) এবং ০.৬ গঃঈঙ ২ ব (২.২ শতাংশ)। ওচচট খাতের জন্য কমিয়ে আনার কোনো ওয়াদা ছিল না। ঈড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড়-মোতাবেক ২০৩০ নাগাদ ইঅট থেকে ৬১.৯ গঃঈঙ ২ ব বা ১৫ শতাংশ কমিয়ে আনার কথা বলা হয়েছে। এনার্জির ভাগে ৯৬.৪৬ শতাংশ (৫৯.৭ গঃঈঙ ২ ব)। কৃষি এবং বর্জ্যরে বেলায় ০.৪ (০.৬৫ শতাংশ) এবং ১.৮৪ (২.৯৭ শতাংশ) মাত্র। এখানেও ওচচট-এর ব্যাপারে কোনো ওয়াদা করা হয়নি।

অতএব এ কথা বলাই যায় যে এঐএ-এর জন্য প্রধানত দায়ী এনার্জি খাত এবং তারপরে সমগ্র কৃষি খাত। ভিত্তি বছরে কৃষি খাতে এনার্জি খাতের চেয়ে ১.১৯ গুণ বেশি থাকলেও ২০৩০ সালে গিয়ে ৩.৩৪ গুণ বেশি হওয়ার কথা। অত্রএব এঐএ নিয়ন্ত্রণের জন্য এনার্জি খাতের দিকে বেশি নজর দিতে হবে। তবে কৃষি খাতকেও ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। যাই হোক সে ব্যাপারে এনার্জি খাতের জন্য শিল্পখাতের বিশেষজ্ঞরা নিশ্চয়ই কিছু ভাবছেন এবং চেষ্টা করছেন।

আমি কৃষি খাত নিয়ে দুটো কথা বলি। এখানে ফসল-উপখাতে ধানের জমিকে প্রধানত টার্গেট করা হয়েছে। তবে ব্রি বিজ্ঞানীদের দেওয়া ধানের জমির কার্বন ব্যালেন্স নিয়ে আরেকদিন কিছু বলবো। শুধু এটুকু বলে রাখি যে বিজ্ঞানীদের মতে, ধানখেত থেকে কার্বন নিঃসরণের চেয়ে কার্বন সিকুয়েস্ট্রেশনের পরিমাণ বেশি। তারপরও ধান জলজ পরিবেশে উৎপাদিত হয় তাই ধান নিয়ে বেশি কথা বলা হয়। তারপরও প্রশমনের প্রয়োজনে অডউ সেচ ব্যবস্থা সম্প্রসারণ ও জাত উন্নয়নের বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। সেখানে ২০৩০ সালের মধ্যে টহপড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড় এর বেলায় অডউ সেচ পদ্ধতি ৫০,০০০ হেক্টর জমিতে সম্প্রসারণ এবং ১,১১১, ০০০ হেক্টরের জন্য ধানের জাত উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। ঈড়হফরঃরড়হধষ ংপবহধৎরড়-এর বেলায় ১০০,০০০ হেক্টর জমিতে অডউ সেচ পদ্ধতি সম্প্রসারণ এবং ২,১২৯,০০০ হেক্টরের জন্য ধানের জাত উন্নয়ন করতে বলা হয়েছে। অডউ প্রযুক্তি তৈরি আছে। চেষ্টা করলে মাঠে নিয়ে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু ২০৩০ সালের মধ্যে ধানের জাত উন্নয়ন করে মাঠে সম্প্রসারণ করা বিষয়টি পরিষ্কার নয়।

আমরা জানি এঐএ গ্যাসের উপাদান মিথেন নির্গমনের ব্যাপারে এক জাত থেকে আরেক জাতে পার্থক্য আছে; কিন্তু সে ব্যাপারে স্বীকৃত কোনো সেচনির্ভর উফশী জাত আমাদের হাতে নেই। তবে অ্যারোবিক রাইস (অবৎড়নরপ ৎরপব) ও বোনা আউশ (জধরহভবফ উৎু ঝববফবফ ৎরপব) ধানের জাত উন্নয়ন নিয়ে বেশ গবেষণা আছে। অ্যারোবিক রাইস যেহেতু ডাঙ্গা ও পানি উভয় পরিবেশে অভিযোজনের উপযোগী এবং বোনা আউশ বৃষ্টিনির্ভর পরিবেশে ভালো হয়, তাই এই গবেষণাকগুলোকে জোরদার করা যেতে পারে। এসব ক্ষেত্রে ফলন কিছুটা কমে যেতে পারে। সে ব্যাপারে আমাদের ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই। এছাড়াও আমাদের গতানুগতিক উফশী জাতগুলোর কিছু কিছু ধুইল্যা বাইন (উৎু ংববফরহম) করে ধান উৎপাদন করা সম্ভব। এ ব্যাপারে গবেষণা জোরদার করা যেতে পারে। তাছাড়া নাইট্রাস অক্সাইড নির্গমন কমানোর ব্যাপারে লিফ-কালার-চার্ট ব্যবহার, মাটি পরীক্ষার মাধ্যমে গুটি ইউরিয়া মাটির গভীরে প্রয়োগের কথা বলা হয়েছে। এই প্রযুক্তিগুলো হাতে আছে। এগুলোর সম্প্রসারণ এখনই সম্ভব। এখন শুধু গুটি ইউরিয়া নয় দানাদার ইউরিয়া মাটির গভীরে প্রয়োগের যন্ত্র ধান গবেষণা ইনস্টটিউটের হাতে আছে। তবে এসব নিয়ে আরও চিন্তা ভাবনা করার দরকার আছে।

শস্যক্রমের বিষয়ে শুধু ডাল ফসলের কথা বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে তেল ও অন্যান্য উচ্চমূল্যের ফসল নিয়েও ভাবনাচিন্তা করা যেতে পারে। কৃষি বনায়ন কর্মসূচি এখানে অন্তর্ভুক্ত করার সুয়োগ আছে। গবাদিপশুর বেলায় আমাদের নিজস্ব গবেষণানির্ভর উপাত্তের ঘাটতি আছে। তবে কাজ চলছে। বেশি দুধ উৎপাদনে সক্ষম দো-আঁশলা গরুর বেশি খোরাকি লাগে। সেখানে থেকে সাশ্রয়ী মিথেন উৎপাদনকারী জাত খুঁজে পেয়ে কৃষকের মধ্যে বিলি-বণ্টন করা সময়সাপেক্ষ। তবে আমাদের দেশি কিছু জাতের দুধ কম হলেও খোরাকি কম লাগে বিধায় মিথেন উৎপাদনও কম হবে বলে বিশ্বাস। সেটা করতে গেলে দুধের প্রয়োজন মেটানো সমস্যা হবে। তবে মিথেন সাশ্রয়ী ফুড-কম্পোজিশন নিয়ে কিছু গবেষণা আছে। সেগুলো নিয়ে আরও গবেষণার দরকার আছে। তাই ২০৩০ সালের মধ্যে কতখানি কী করা যাবে তা উদ্বেগের বিষয়।

এখন ২০২৪ চলছে। ওয়াদা পূরণের জন্য সময় বেশি নেই। সরকার সচেতন। এজন্য মুজিব অ্যাকশন প্ল্যান, আশ্রয়ণ প্রকল্প, ন্যাশনাল সোলার এনার্জি রোড ম্যাপ, ফরেস্ট কার্বন ইনভেনটরিস অ্যন্ট ট্রি প্ল্যানটেশন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান ফর রিডুইসিং শর্ট-লিভড ক্লাইমেট পলুট্যান্টস, এনার্জি ইফিসিয়েন্সি অ্যান্ড কনজারভেশন মাস্টার প্ল্যান, গ্রিন টেকনোলাজি, বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্ট ফান্ড, বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান, ন্যাশনাল অ্যাকশন প্ল্যান ইত্যাদি পরিকল্পনা নিয়ে সরকার এগোচ্ছে; কিন্তু আমার জানার বিষয় সবাইকে নিয়ে এঐএ নির্গমন নিয়ন্ত্রণে আমরা এখন কোন পর্যায়ে আছি।

[লেখক : সাবেক মহাপরিচালক, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট; সাবেক নির্বাহী পরিচালক, কৃষি গবেষণা ফাউন্ডেশন]

back to top