সেলিম রানা
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদী, খাল, বিল, হাওর-বাঁওড় এবং বিভিন্ন জলাশয়ে একসময় প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। মলা, পুঁটি, কৈ, শিং, মাগুর, বোয়াল, টেংরা, পাবদা, বাইমসহ বিভিন্ন মাছ ছিল আমাদের খাদ্য ও অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই মাছগুলো শুধু স্বাদের জন্যই জনপ্রিয় ছিল না, বরং এগুলো আমাদের আমিষের চাহিদা পূরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত; কিন্তু বর্তমানে মুক্ত জলাশয়ে দেশীয় মাছের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
এটির প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- জলাশয় দখল, নদীর নাব্যতা সংকট, জলদূষণ, অপরিকল্পিত মৎস্য আহরণ, বিদেশি রাক্ষুসে মাছের আধিক্য এবং প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস। এসব কারণে দেশীয় মাছের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।
এই সংকট মোকাবিলায় স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে সমবায় আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত জলাশয় সংরক্ষণ ও মাছের উৎপাদন বাড়ানো যেতে পারে। সমবায় আন্দোলন শুধু মাছ সংরক্ষণের জন্য নয়, এটি আমাদের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং গ্রামীণ অর্থনীতির সুরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
দেশীয় মাছের সংকট ও এর কারণসমূহ
এক সময় যেসব দেশীয় মাছ সহজলভ্য ছিল, বর্তমানে সেগুলো পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। মুক্ত জলাশয়ে মাছের প্রাচুর্য কমে যাওয়ার মূল কারণগুলো নিম্নরূপÑ
১. জলাশয় দূষণ
বিভিন্ন শিল্পকারখানার রাসায়নিক বর্জ্য, হাসপাতালের মেডিকেল বর্জ্য, কৃষিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক, এবং নগরীর ময়লা-আবর্জনা নদী ও খাল-বিলের পানিতে মিশে জলাশয়গুলো দূষিত করে তুলছে। এর ফলে মাছের জীবনচক্র ব্যাহত হচ্ছে, প্রজনন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং অনেক মাছ মারাও যাচ্ছে।
২. নদী ও খাল-বিল দখল
দিন দিন জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবাসন, কৃষি ও শিল্পের জন্য জলাশয়গুলো ভরাট করা হচ্ছে। অনেক নদী ও খাল শুকিয়ে গেছে বা দখল হয়ে গেছে, যার ফলে দেশীয় মাছের স্বাভাবিক আবাসস্থল নষ্ট হয়ে গেছে। মাছের বিচরণক্ষেত্র কমে যাওয়ায় তাদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
৩. জলাশয়ের নাব্যতা সংকট
অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন, নদীর প্রবাহ পরিবর্তন এবং পলি জমে জলাশয়গুলো নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে। গভীরতা কমে যাওয়ায় দেশীয় মাছের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক মাছ ডিম পাড়ার জন্য গভীর পানির প্রয়োজন হয়, যা সংকুচিত হয়ে আসছে।
৪. অপরিকল্পিত ও অতিরিক্ত মৎস্য আহরণ
বছরের যেকোনো সময় মাছ ধরা, পোনা ও ছোট মাছ আহরণ, অবৈধ জালের ব্যবহার (যেমন কারেন্ট জাল), বিষ ও বিদ্যুৎ ব্যবহার করে মাছ ধরাÑ এসব কারণে মাছের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে। ছোট মাছ ধরা পড়ে যাওয়ায় তারা বয়স্ক হতে পারছে না এবং বংশবৃদ্ধির সুযোগ হারাচ্ছে।
৫. রাক্ষুসে মাছের আধিক্য
দেশীয় মাছের অস্তিত্বের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদেশি রাক্ষুসে মাছ, যেমনÑ সাকার ফিশ, আফ্রিকান মাগুর, থাই পাংগাস, নিলা তেলাপিয়া এসব মাছ জলাশয়ে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে এবং দেশীয় মাছের খাদ্য ও বাসস্থান দখল করে। ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
৬. জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত অবক্ষয়
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অনেক জলাশয় শুকিয়ে যাচ্ছে, নদীর প্রবাহ পরিবর্তিত হচ্ছে এবং পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এতে মাছের জীবনচক্র ব্যাহত হচ্ছে।
সমবায় আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত জলাশয় ও দেশীয় মাছ সংরক্ষণ
দেশীয় মাছ রক্ষা ও মুক্ত জলাশয় সংরক্ষণে সমবায় আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সমবায়ের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ একত্রিত হয়ে নিজেদের জলাশয় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বাড়াতে পারবে।
সমবায় আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ :
১. স্থানীয় সমবায় কমিটি গঠন
প্রতিটি গ্রাম বা অঞ্চলে জলাশয় সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় সমবায় কমিটি গঠন করা যেতে পারে। কমিটির কাজ হবেÑ
নদী, খাল ও বিল দখলমুক্ত রাখা, মৎস্য আহরণের নিয়ম-কানুন তৈরি করা, দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়া, পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা।
২. জলাশয় সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার
দখল হওয়া খাল, বিল ও নদী পুনরুদ্ধার করা, খাল ও নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ড্রেজিং করা, জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবে মাছের প্রজনন নিশ্চিত করা।
৩. পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ
শিল্পকারখানার বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য কঠোর আইন প্রয়োগ করা, নদীতে পলিথিন ও প্লাস্টিক ফেলা বন্ধ করা, কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা।
৪. মাছের প্রজননক্ষেত্র সংরক্ষণ
বর্ষাকালে ও মাছের প্রজনন মৌসুমে (এপ্রিল-জুলাই) মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা, নির্দিষ্ট এলাকায় অভয়াশ্রম তৈরি করা, মাছের ডিম ছাড়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা।
৫. বিদেশি রাক্ষুসে মাছ নিয়ন্ত্রণ
সাকার ফিশ, আফ্রিকান মাগুর ইত্যাদির বাণিজ্যিক উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করা, জলাশয় থেকে রাক্ষুসে মাছ নিয়মিত অপসারণ করা, দেশীয় মাছ সংরক্ষণের জন্য সরকারি ও স্থানীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৬. সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা
সমবায় সমিতির মাধ্যমে সরকারি সহায়তা নিশ্চিত করা, মৎস্য বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে জলাশয় সংরক্ষণে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।
দেশীয় মাছ রক্ষা ও মুক্ত জলাশয় সংরক্ষণের জন্য সমবায় আন্দোলন সময়ের দাবি। এটি শুধু মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিই করবে না, বরং পরিবেশ রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং গ্রামীণ জনগণের জীবিকা নিশ্চিত করতেও সাহায্য করবে।
স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সহায়তা নিয়ে, এবং পরিকল্পিত উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা মুক্ত জলাশয় ও দেশীয় মাছের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পারি। এজন্য এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় একদিন ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।
[লেখক : গণমাধ্যমকর্মী]
সেলিম রানা
সোমবার, ০৫ মে ২০২৫
বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদী, খাল, বিল, হাওর-বাঁওড় এবং বিভিন্ন জলাশয়ে একসময় প্রচুর দেশীয় প্রজাতির মাছ পাওয়া যেত। মলা, পুঁটি, কৈ, শিং, মাগুর, বোয়াল, টেংরা, পাবদা, বাইমসহ বিভিন্ন মাছ ছিল আমাদের খাদ্য ও অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই মাছগুলো শুধু স্বাদের জন্যই জনপ্রিয় ছিল না, বরং এগুলো আমাদের আমিষের চাহিদা পূরণেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করত; কিন্তু বর্তমানে মুক্ত জলাশয়ে দেশীয় মাছের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেছে।
এটির প্রধান কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে- জলাশয় দখল, নদীর নাব্যতা সংকট, জলদূষণ, অপরিকল্পিত মৎস্য আহরণ, বিদেশি রাক্ষুসে মাছের আধিক্য এবং প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস। এসব কারণে দেশীয় মাছের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে।
এই সংকট মোকাবিলায় স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে সমবায় আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত জলাশয় সংরক্ষণ ও মাছের উৎপাদন বাড়ানো যেতে পারে। সমবায় আন্দোলন শুধু মাছ সংরক্ষণের জন্য নয়, এটি আমাদের পরিবেশ, জীববৈচিত্র্য এবং গ্রামীণ অর্থনীতির সুরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
দেশীয় মাছের সংকট ও এর কারণসমূহ
এক সময় যেসব দেশীয় মাছ সহজলভ্য ছিল, বর্তমানে সেগুলো পাওয়া কঠিন হয়ে গেছে। মুক্ত জলাশয়ে মাছের প্রাচুর্য কমে যাওয়ার মূল কারণগুলো নিম্নরূপÑ
১. জলাশয় দূষণ
বিভিন্ন শিল্পকারখানার রাসায়নিক বর্জ্য, হাসপাতালের মেডিকেল বর্জ্য, কৃষিতে ব্যবহৃত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক, এবং নগরীর ময়লা-আবর্জনা নদী ও খাল-বিলের পানিতে মিশে জলাশয়গুলো দূষিত করে তুলছে। এর ফলে মাছের জীবনচক্র ব্যাহত হচ্ছে, প্রজনন ক্ষমতা কমে যাচ্ছে এবং অনেক মাছ মারাও যাচ্ছে।
২. নদী ও খাল-বিল দখল
দিন দিন জনসংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আবাসন, কৃষি ও শিল্পের জন্য জলাশয়গুলো ভরাট করা হচ্ছে। অনেক নদী ও খাল শুকিয়ে গেছে বা দখল হয়ে গেছে, যার ফলে দেশীয় মাছের স্বাভাবিক আবাসস্থল নষ্ট হয়ে গেছে। মাছের বিচরণক্ষেত্র কমে যাওয়ায় তাদের টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে।
৩. জলাশয়ের নাব্যতা সংকট
অনিয়ন্ত্রিত বালু উত্তোলন, নদীর প্রবাহ পরিবর্তন এবং পলি জমে জলাশয়গুলো নাব্যতা হারিয়ে ফেলছে। গভীরতা কমে যাওয়ায় দেশীয় মাছের প্রজনন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক মাছ ডিম পাড়ার জন্য গভীর পানির প্রয়োজন হয়, যা সংকুচিত হয়ে আসছে।
৪. অপরিকল্পিত ও অতিরিক্ত মৎস্য আহরণ
বছরের যেকোনো সময় মাছ ধরা, পোনা ও ছোট মাছ আহরণ, অবৈধ জালের ব্যবহার (যেমন কারেন্ট জাল), বিষ ও বিদ্যুৎ ব্যবহার করে মাছ ধরাÑ এসব কারণে মাছের সংখ্যা দ্রুত কমে যাচ্ছে। ছোট মাছ ধরা পড়ে যাওয়ায় তারা বয়স্ক হতে পারছে না এবং বংশবৃদ্ধির সুযোগ হারাচ্ছে।
৫. রাক্ষুসে মাছের আধিক্য
দেশীয় মাছের অস্তিত্বের জন্য একটি বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে বিদেশি রাক্ষুসে মাছ, যেমনÑ সাকার ফিশ, আফ্রিকান মাগুর, থাই পাংগাস, নিলা তেলাপিয়া এসব মাছ জলাশয়ে দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে এবং দেশীয় মাছের খাদ্য ও বাসস্থান দখল করে। ফলে দেশীয় প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে।
৬. জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগত অবক্ষয়
জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে অনেক জলাশয় শুকিয়ে যাচ্ছে, নদীর প্রবাহ পরিবর্তিত হচ্ছে এবং পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাচ্ছে। এতে মাছের জীবনচক্র ব্যাহত হচ্ছে।
সমবায় আন্দোলনের মাধ্যমে মুক্ত জলাশয় ও দেশীয় মাছ সংরক্ষণ
দেশীয় মাছ রক্ষা ও মুক্ত জলাশয় সংরক্ষণে সমবায় আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। সমবায়ের মাধ্যমে স্থানীয় জনগণ একত্রিত হয়ে নিজেদের জলাশয় নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবে এবং সঠিক ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মাছের উৎপাদন বাড়াতে পারবে।
সমবায় আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ দিকসমূহ :
১. স্থানীয় সমবায় কমিটি গঠন
প্রতিটি গ্রাম বা অঞ্চলে জলাশয় সংরক্ষণের জন্য স্থানীয় সমবায় কমিটি গঠন করা যেতে পারে। কমিটির কাজ হবেÑ
নদী, খাল ও বিল দখলমুক্ত রাখা, মৎস্য আহরণের নিয়ম-কানুন তৈরি করা, দূষণ রোধে ব্যবস্থা নেওয়া, পরিবেশ সংরক্ষণে সচেতনতামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করা।
২. জলাশয় সংরক্ষণ ও পুনরুদ্ধার
দখল হওয়া খাল, বিল ও নদী পুনরুদ্ধার করা, খাল ও নদীগুলোর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে ড্রেজিং করা, জলাশয়ে প্রাকৃতিকভাবে মাছের প্রজনন নিশ্চিত করা।
৩. পরিবেশ দূষণ প্রতিরোধ
শিল্পকারখানার বর্জ্য নিষ্কাশনের জন্য কঠোর আইন প্রয়োগ করা, নদীতে পলিথিন ও প্লাস্টিক ফেলা বন্ধ করা, কীটনাশক ও রাসায়নিক সার ব্যবহারে নিয়ন্ত্রণ আনা।
৪. মাছের প্রজননক্ষেত্র সংরক্ষণ
বর্ষাকালে ও মাছের প্রজনন মৌসুমে (এপ্রিল-জুলাই) মাছ ধরা নিষিদ্ধ করা, নির্দিষ্ট এলাকায় অভয়াশ্রম তৈরি করা, মাছের ডিম ছাড়ার জন্য উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করা।
৫. বিদেশি রাক্ষুসে মাছ নিয়ন্ত্রণ
সাকার ফিশ, আফ্রিকান মাগুর ইত্যাদির বাণিজ্যিক উৎপাদন নিয়ন্ত্রণ করা, জলাশয় থেকে রাক্ষুসে মাছ নিয়মিত অপসারণ করা, দেশীয় মাছ সংরক্ষণের জন্য সরকারি ও স্থানীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা।
৬. সরকারি ও বেসরকারি সহযোগিতা
সমবায় সমিতির মাধ্যমে সরকারি সহায়তা নিশ্চিত করা, মৎস্য বিভাগ ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করা, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে জলাশয় সংরক্ষণে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া।
দেশীয় মাছ রক্ষা ও মুক্ত জলাশয় সংরক্ষণের জন্য সমবায় আন্দোলন সময়ের দাবি। এটি শুধু মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিই করবে না, বরং পরিবেশ রক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা এবং গ্রামীণ জনগণের জীবিকা নিশ্চিত করতেও সাহায্য করবে।
স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করে, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সহায়তা নিয়ে, এবং পরিকল্পিত উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা মুক্ত জলাশয় ও দেশীয় মাছের ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে পারি। এজন্য এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। আমাদের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় একদিন ‘মাছে-ভাতে বাঙালি’ ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।
[লেখক : গণমাধ্যমকর্মী]