alt

উপ-সম্পাদকীয়

কীভাবে পাকিস্তান ভারতের রাফায়েলকে পরাস্ত করল

এম এ হোসাইন

: রোববার, ২৫ মে ২০২৫
image

পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি উন্নত রাফায়েল ফাইটার জেট রয়েছে। প্রথমে এ দাবি নিয়ে সংশয় থাকলেও, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও মার্কিন কর্মকর্তারা রাফায়েল যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন

গত ৭ মে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘটিত সাম্প্রতিক আকাশ যুদ্ধ প্রমাণ করে দিয়েছেÑআধুনিক যুদ্ধ কেবল উন্নত যুদ্ধবিমান বা অস্ত্রের ওপর নির্ভর করে না, বরং তথ্য, সমন্বয় এবং ডিজিটাল কমান্ড ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর আওতায় ভারত পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর অঞ্চলে বিমান হামলা চালায়। পাল্টা আক্রমণে পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি উন্নত রাফায়েল ফাইটার জেট রয়েছে। প্রথমে এ দাবি নিয়ে সংশয় থাকলেও, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও মার্কিন কর্মকর্তারা রাফায়েল যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

প্রশ্ন উঠছেÑভারতের মতো প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত রাষ্ট্র কীভাবে এমন ক্ষতির সম্মুখীন হলো, বিশেষ করে যখন তাদের হাতে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা যুদ্ধবিমান রাফায়েল? ব্যাখ্যাটি সহজ নয়, তবে মূল কারণ খুঁজলে দেখা যায়, এটি কেবল উন্নত প্রযুক্তির মান নয়, বরং সেই প্রযুক্তিগুলো অন্যান্য প্রযুক্তির সাথে পরস্পরের সংযোগ ও সমন্বয়ের সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে।

ভারত যুদ্ধ শুরু করে ১২টি স্বল্পপাল্লার মিসাইল দিয়ে, যেগুলো পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের পাঁচটি স্থানে আঘাত হানে। লক্ষ্যবস্তু ছিল একটি মসজিদ, দুটি মাদ্রাসা এবং কিছু বেসামরিক এলাকা। সাতটি মিসাইল লক্ষ্যভেদ করে, পাঁচটি পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা ধ্বংস হয়। এরপরই পাকিস্তানের পাল্টা আঘাত শুরু হয়Ñপাকিস্তান বিমানবাহিনী দ্রুত বিমান হামলা করে, আর পাক সেনাবাহিনী গাইডেড মিসাইল নিক্ষেপ করে, যা একটি ভারতীয় ব্রিগেড সদর দপ্তর ধ্বংস করে।

তবে আকাশেই সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়টি উন্মোচিত হয়েছে। পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, তারা একাধিক ভারতীয় জেট ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে রাফায়েলও রয়েছে। এই ঘটনায় ভারতের সামরিক কাঠামোর এক বড় দুর্বলতা প্রকাশ পায় তা হলো সামরিক প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সংযুক্তির অভাব।

ভারতের বিমানবাহিনী বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত যুদ্ধবিমান ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে, যেমনÑফ্রান্সের রাফায়েল, রাশিয়ার সু-৩০, মিগ-২৯, ও এস-৪০০, ইসরায়েলের স্পাইডার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। প্রতিটি প্ল্যাটফর্ম স্বতন্ত্রভাবে অত্যাধুনিক হলেও, সমস্যাটি হচ্ছেÑএগুলো একে অপরের সঙ্গে রিয়েল-টাইমে যোগাযোগ করতে অক্ষম, কারণ এদের ডেটা-লিংক সিস্টেম একে অপরের সঙ্গে সংযোজিত নয়। রাফায়েল ফরাসি নিজস্ব ডেটা লিংক ব্যবহার করে, যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তার কারণে তাদের নিজস্ব ডেটা লিংকে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে রেখেছে, এবং রাশিয়ার এস-৪০০ নিরাপত্তার কারণে পশ্চিমা কিংবা ন্যাটোভুক্ত সিস্টেমগুলোর সঙ্গে একীভূত হতে পারে না। যার দরুন, ভারতীয় প্ল্যাটফর্মগুলো নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করতে পারে না। আকাশে সংঘর্ষ চলাকালে একজন পাইলটের শনাক্ত করা টার্গেট অন্যের কাছে পৌঁছায় না। অনেক ক্ষেত্রেই ম্যানুয়াল টার্গেট আইডেন্টিফিকেশন করতে হয়, যার ফলে প্রতিক্রিয়ায় সময় বেশি লাগে এবং ভুলের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৯ সালে ভারতের এমআই-১৭ হেলিকপ্টার নিজস্ব আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দ্বারাই ভূপাতিত করার মতো মর্মান্তিক ‘ফ্রেন্ডলি ফায়ার’র মতো দুর্ঘটনার জন্ম হয়।

অপরদিকে পাকিস্তান একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছে। সবচেয়ে দামি যুদ্ধবিমান সংগ্রহের পরিবর্তে, তারা একটি সমন্বিত ডিজিটাল কম্ব্যাট সিস্টেম গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। দেশীয়ভাবে উন্নতকৃত ‘ডেটা-লিংক-১৭’ এর মাধ্যমে তাদের সম্পূর্ণ আকাশযুদ্ধ ব্যবস্থাকে সংযুক্ত করা হয়েছেÑজেএফ-১৭ ও জে-১০সি এর মতো যুদ্ধবিমান, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ইলেকট্রনিক ওয়ার সিস্টেম এবং এয়ারবোর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম সবই এই একক ডেটা লিংক নেটওয়ার্কে যুক্ত। এর অর্থ, একটি সিস্টেম কোনো হুমকি শনাক্ত করলেই পুরো নেটওয়ার্ক তা তাৎক্ষণিকভাবে জেনে যায়। উদাহরণস্বরূপ, কেউ যদি কেবল ফোনকল ব্যবহার করে, তবে তারা কেবল নিজেদের অবস্থান বর্ণনা করতে পারে; কিন্তু কেউ যদি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে, তবে তারা রিয়েল-টাইমে তাদের অবস্থান শেয়ারও করতে পারে। এই ডিজিটাল সমন্বয়ই সাম্প্রতিক সংঘর্ষে পাকিস্তানকে ভারতীয় যুদ্ধবিমান শনাক্ত, অনুসরণ ও প্রতিরোধে অনেক বেশি কার্যকর করে তোলে।

আরেকটি বড় কারণ, যা সংঘর্ষে পাকিস্তানের পক্ষে পাল্লা ভারী করেছে, তা হলো তাদের ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার (ঊড) কৌশলের ব্যবহার। পাকিস্তানের তিনটি ফ্যালকন ডিএ-২০ ইলেকট্রনিক যুদ্ধ বিমান মোতায়েন করা হয়েছিল ভারতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থাকে জ্যামিং করতে, যার ফলে ভারতীয় যুদ্ধবিমান ও তাদের কমান্ড সেন্টারের মধ্যে রেডিও যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাফায়েল, সু-৩০ ও মিগ-২৯ ফাইটার জেটগুলো একে অপরকে আসন্ন হুমকির সতর্কবার্তা দিতে পারেনি। আধুনিক আকাশযুদ্ধে এমন যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। ভারতীয় পাইলটরা, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অন্ধকার আকাশে উড়তে উড়তে, একদমই বুঝতে পারেননি যে তাদের লক্ষ্য করে প্রাণঘাতী পিএল-১৫ দীর্ঘপাল্লার এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।

পাকিস্তানের জে-১০সি এবং উন্নত সংস্করণের জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান থেকে ব্যবহৃত পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র কোনো সাধারণ অস্ত্র নয়। ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি পাল্লাসম্পন্ন এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোতে রয়েছে অ্যাকটিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানড অ্যারে (অঊঝঅ) রাডার, যা দীর্ঘ দূরত্ব থেকে নিক্ষেপ করে এডভান্স ওয়ার্নিং এন্ড কন্ট্রোল সিস্টেম এবং মাটির গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নির্ভুলভাবে পরিচালিত হতে পারে। এই সাম্প্রতিক সংঘাতে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় ছিলÑপাকিস্তানি যুদ্ধবিমানগুলো তাদের বিমানের নিজস্ব রাডারগুলো চালু করেনি। বরং তারা পুরোপুরি নির্ভর করেছিল তাদের ডেটা-লিংক সিস্টেমের ওপর, যার মাধ্যমে তারা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে পেরেছে রাফায়েল বিমানের স্পেক্ট্রা সিস্টেমকে ফাঁকি দিয়ে। স্পেক্ট্রা রাফায়েলের একটি উন্নত ইলেকট্রনিক রাডার যা যুদ্ধক্ষেত্রের হুমকি নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়।

এই কৌশল, যা সাধারণত ‘প্যাসিভ ট্র্যাকিং’ নামে পরিচিত, আক্রমণকারীদের হাতে চমকে দেয়ার কৌশল তুলে দেয়। যেহেতু পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানগুলো কোনো রাডার সিগন্যাল নির্গত করেনি, তাই রাফায়েল বিমানের সেন্সরগুলো শনাক্ত করার মতো কিছুই পায়নিÑযতক্ষণ না সবকিছু শেষ হয়ে যাচ্ছিল। পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কেবল আক্রমণের শেষ ধাপেÑআঘাতের কয়েক সেকেন্ড আগেÑতাদের রাডার গাইডেন্স সক্রিয় করেছে, ফলে ভারতীয় পাইলটদের প্রতিক্রিয়া জানাতে কার্যত সময়ই ছিল না। যদিও স্পেক্ট্রা একটি উন্নত প্রযুক্তি, তবে এটি এমন চুপিসারে পরিচালিত, বাহ্যিকভাবে নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিরোধে প্রস্তুত নয়Ñবিশেষ করে যখন তার চারপাশে একযোগে বহু ইলেকট্রনিক সংকেত ও জ্যামিং সৃষ্টি করা হয়।

এটি এখন একপ্রকার ওপেন সিক্রেট যে পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা চীনা প্রযুক্তির দ্বারা উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী হয়েছে। এর ফলে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার চমকপ্রদ কার্যকারিতা বৈশ্বিক শক্তিগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, এবং ইসলামাবাদ এখন কার্যত চীনা সামরিক উপস্থিতির এক প্রক্ষেপিত শাখায় পরিণত হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের দীর্ঘদিনের দাবি করা আকাশ প্রাধান্য এখন বেইজিংয়ের প্রযুক্তিগত সুবিধার মুখে পড়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এমনকি কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে পাকিস্তান একটি রুশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছেÑযা বর্তমান শক্তির ভারসাম্যের পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দেয়।

এই পরিস্থিতিতে একটি কঠোর বাস্তবতা তুলে ধরেÑচীন কীভাবে নীরবে কিন্তু অত্যন্ত কার্যকরভাবে সামরিক প্রযুক্তিতে অগ্রগতি অর্জন করেছে। এসব অগ্রগতি কেবল দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক প্রতিযোগিতার কাঠামোকেই পাল্টে দিচ্ছে না, বরং আধুনিক যুদ্ধের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটকেও পুনর্গঠনের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার প্রেক্ষাপটে, চীনা প্রতিরক্ষা শিল্প কৌশলগত ও বাণিজ্যিকÑউভয় দিক থেকেই লাভবান হতে পারে, কারণ এই সংঘাত তাদের সামরিক প্রযুক্তি প্রদর্শন ও বৈশ্বিক বাজারে বিকাশের এক উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে।

এই আকাশযুদ্ধ থেকে বৃহত্তর শিক্ষাগুলো অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত, একাধিক উচ্চপ্রযুক্তির সিস্টেম থাকলেও যদি সেগুলো একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে, তাহলে সেটি একটি গুরুতর দুর্বলতা। দ্বিতীয়ত, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার এখন আর শুধু একটি সহায়ক উপাদান নয়; বরং অনেক ক্ষেত্রেই সেটিই বিজয়ের নির্ধারক। তৃতীয়ত, দীর্ঘ-পাল্লার ‘বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ’ (ইঠজ) ক্ষেপণাস্ত্রগুলো, বিশেষত যখন সেগুলো ডেটাসমৃদ্ধ ও ইলেকট্রনিকভাবে সমন্বিত পরিবেশে ব্যবহৃত হয়, তখন সেগুলো এমনকি স্টেলথ ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমানকেও নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে।

অবশেষে, ভারত-পাকিস্তানের এই আকাশযুদ্ধ কেবল যুদ্ধবিমান বা মিসাইলের গল্প নয়, বরং এটি একটি তথ্য নিয়ন্ত্রিত যুদ্ধে কে দ্রুত দেখে, বোঝে এবং প্রতিক্রিয়া জানায়Ñতার লড়াই ছিল। এই সংঘর্ষে পাকিস্তান তাদের একীভূত প্রযুক্তিনির্ভর কৌশল দিয়ে ভারতের বিচ্ছিন্ন উচ্চ মান সম্পন্ন প্রযুক্তিকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। ভবিষ্যতের যুদ্ধগুলো সম্ভবত নির্ধারিত হবে কে আগে আক্রমণ চালাল তা দিয়ে নয়, বরং কে আগে জানলÑএবং কে আরও দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাল তার ওপর।

[লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক]

সাইবার ঝুঁকির চক্রে বাংলাদেশ

ছবি

নজরুলের দ্রোহ চেতনার স্বরূপ সন্ধানে

পিতৃতন্ত্রের মনস্তত্ত্ব ও নারীর গ-িবদ্ধতা

চিরতন ও কালীচরণ : শতবর্ষ আগে যারা আইনের মঞ্চে উঠেছিলেন

রম্যগদ্য : প্লিজ স্যার... প্লিজ, ইকটু রেহাই দ্যান...

জমি, সম্মান ও প্রতিহিংসার নির্মম রাজনীতি

জানি তিনি মোড়ল বটে, আমাদের কেন তা হতে হবে

ভূমি মালিকানা ও ব্যবস্থাপনায় যুগোপযোগী আমূল সংস্কার জরুরি

বরেন্দ্রর মাটিতে আমের বিপ্লব : সম্ভাবনা ও সতর্কবার্তা

অবশেষে ‘হাসিনা’ গ্রেফতার

স্ক্যাবিস সংক্রমণের কারণ ও প্রতিরোধে করণীয়

বাস্তবমুখী বাজেটের প্রত্যাশা : বৈষম্যহীন অর্থনীতির পথে কতটা অগ্রগতি?

কৌশল নয়, এবার প্রযুক্তিতে সৌদি-মার্কিন জোট

সিউল : স্বর্গ নেমেছে ধরায়

নাচোল বিদ্রোহ ও ইলা মিত্র সংগ্রহশালা : সাঁওতাল স্মৃতি কেন উপেক্ষিত?

ছবি

অন্ধকার সত্য, শেষ সত্য নয়!

বিয়েতে মিতব্যয়িতা

এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বঞ্চনার কথা

রোহিঙ্গা সমস্যা : বাহবা, ব্যর্থতা ও ভবিষ্যতের ভয়

ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয়

প্রযুক্তির ফাঁদে শৈশব : স্ক্রিন টাইম গিলে খাচ্ছে খেলার মাঠ

রমগদ্য : সিরাজগঞ্জে ‘ব্রিটিশ প্রেতাত্মা’

বামপন্থা : নীতির সঙ্গে নেতৃত্বের ভূমিকা

দাবি আদায়ে জনদুর্ভোগ : জনশিক্ষা ও সুশাসনের পথ

ইমাম রইস উদ্দিন হত্যাকাণ্ড : সুবিচার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব

কারাগার, সংশোধনাগার ও ভবঘুরে কেন্দ্রগুলোর সংস্কার কি হবে

জ্বালানির বদল, জীবিকার ঝুঁকি

প্রসঙ্গ : রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনী ও চট্টগ্রামে এস্কর্ট ডিউটি

দেশটা কারো বাপের নয়!

বুদ্ধের বাণীতে বিশ্বশান্তির প্রার্থনা

আর কত ধর্ষণের খবর শুনতে হবে?

সংস্কারের স্বপ্ন বনাম বাস্তবতার রাজনীতি

মধুমাসের স্মৃতি ও দেশীয় ফলের রসাল সমারোহ

মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট

লিঙ্গের রাজনীতি বা বিবাদ নয়, চাই মানবিকতার নিবিড় বন্ধন

বাজেট : বাস্তবতা, চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

tab

উপ-সম্পাদকীয়

কীভাবে পাকিস্তান ভারতের রাফায়েলকে পরাস্ত করল

এম এ হোসাইন

image

পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি উন্নত রাফায়েল ফাইটার জেট রয়েছে। প্রথমে এ দাবি নিয়ে সংশয় থাকলেও, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও মার্কিন কর্মকর্তারা রাফায়েল যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন

রোববার, ২৫ মে ২০২৫

গত ৭ মে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘটিত সাম্প্রতিক আকাশ যুদ্ধ প্রমাণ করে দিয়েছেÑআধুনিক যুদ্ধ কেবল উন্নত যুদ্ধবিমান বা অস্ত্রের ওপর নির্ভর করে না, বরং তথ্য, সমন্বয় এবং ডিজিটাল কমান্ড ব্যবস্থার ওপর নির্ভরশীল। ‘অপারেশন সিঁদুর’ এর আওতায় ভারত পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর অঞ্চলে বিমান হামলা চালায়। পাল্টা আক্রমণে পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে তিনটি উন্নত রাফায়েল ফাইটার জেট রয়েছে। প্রথমে এ দাবি নিয়ে সংশয় থাকলেও, আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক ও মার্কিন কর্মকর্তারা রাফায়েল যুদ্ধবিমানের ধ্বংসাবশেষের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

প্রশ্ন উঠছেÑভারতের মতো প্রযুক্তিগতভাবে উন্নত রাষ্ট্র কীভাবে এমন ক্ষতির সম্মুখীন হলো, বিশেষ করে যখন তাদের হাতে রয়েছে বিশ্বের অন্যতম সেরা যুদ্ধবিমান রাফায়েল? ব্যাখ্যাটি সহজ নয়, তবে মূল কারণ খুঁজলে দেখা যায়, এটি কেবল উন্নত প্রযুক্তির মান নয়, বরং সেই প্রযুক্তিগুলো অন্যান্য প্রযুক্তির সাথে পরস্পরের সংযোগ ও সমন্বয়ের সক্ষমতার ওপর নির্ভর করে।

ভারত যুদ্ধ শুরু করে ১২টি স্বল্পপাল্লার মিসাইল দিয়ে, যেগুলো পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মীর ও পাঞ্জাবের পাঁচটি স্থানে আঘাত হানে। লক্ষ্যবস্তু ছিল একটি মসজিদ, দুটি মাদ্রাসা এবং কিছু বেসামরিক এলাকা। সাতটি মিসাইল লক্ষ্যভেদ করে, পাঁচটি পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা ধ্বংস হয়। এরপরই পাকিস্তানের পাল্টা আঘাত শুরু হয়Ñপাকিস্তান বিমানবাহিনী দ্রুত বিমান হামলা করে, আর পাক সেনাবাহিনী গাইডেড মিসাইল নিক্ষেপ করে, যা একটি ভারতীয় ব্রিগেড সদর দপ্তর ধ্বংস করে।

তবে আকাশেই সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ অধ্যায়টি উন্মোচিত হয়েছে। পাকিস্তানের দাবি অনুযায়ী, তারা একাধিক ভারতীয় জেট ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে রাফায়েলও রয়েছে। এই ঘটনায় ভারতের সামরিক কাঠামোর এক বড় দুর্বলতা প্রকাশ পায় তা হলো সামরিক প্ল্যাটফর্মগুলোর মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ ও সংযুক্তির অভাব।

ভারতের বিমানবাহিনী বিভিন্ন উৎস থেকে সংগৃহীত যুদ্ধবিমান ও আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করে, যেমনÑফ্রান্সের রাফায়েল, রাশিয়ার সু-৩০, মিগ-২৯, ও এস-৪০০, ইসরায়েলের স্পাইডার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা। প্রতিটি প্ল্যাটফর্ম স্বতন্ত্রভাবে অত্যাধুনিক হলেও, সমস্যাটি হচ্ছেÑএগুলো একে অপরের সঙ্গে রিয়েল-টাইমে যোগাযোগ করতে অক্ষম, কারণ এদের ডেটা-লিংক সিস্টেম একে অপরের সঙ্গে সংযোজিত নয়। রাফায়েল ফরাসি নিজস্ব ডেটা লিংক ব্যবহার করে, যুক্তরাষ্ট্র নিরাপত্তার কারণে তাদের নিজস্ব ডেটা লিংকে সীমাবদ্ধতা আরোপ করে রেখেছে, এবং রাশিয়ার এস-৪০০ নিরাপত্তার কারণে পশ্চিমা কিংবা ন্যাটোভুক্ত সিস্টেমগুলোর সঙ্গে একীভূত হতে পারে না। যার দরুন, ভারতীয় প্ল্যাটফর্মগুলো নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করতে পারে না। আকাশে সংঘর্ষ চলাকালে একজন পাইলটের শনাক্ত করা টার্গেট অন্যের কাছে পৌঁছায় না। অনেক ক্ষেত্রেই ম্যানুয়াল টার্গেট আইডেন্টিফিকেশন করতে হয়, যার ফলে প্রতিক্রিয়ায় সময় বেশি লাগে এবং ভুলের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৯ সালে ভারতের এমআই-১৭ হেলিকপ্টার নিজস্ব আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার দ্বারাই ভূপাতিত করার মতো মর্মান্তিক ‘ফ্রেন্ডলি ফায়ার’র মতো দুর্ঘটনার জন্ম হয়।

অপরদিকে পাকিস্তান একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন কৌশল গ্রহণ করেছে। সবচেয়ে দামি যুদ্ধবিমান সংগ্রহের পরিবর্তে, তারা একটি সমন্বিত ডিজিটাল কম্ব্যাট সিস্টেম গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। দেশীয়ভাবে উন্নতকৃত ‘ডেটা-লিংক-১৭’ এর মাধ্যমে তাদের সম্পূর্ণ আকাশযুদ্ধ ব্যবস্থাকে সংযুক্ত করা হয়েছেÑজেএফ-১৭ ও জে-১০সি এর মতো যুদ্ধবিমান, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, ইলেকট্রনিক ওয়ার সিস্টেম এবং এয়ারবোর্ন ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম সবই এই একক ডেটা লিংক নেটওয়ার্কে যুক্ত। এর অর্থ, একটি সিস্টেম কোনো হুমকি শনাক্ত করলেই পুরো নেটওয়ার্ক তা তাৎক্ষণিকভাবে জেনে যায়। উদাহরণস্বরূপ, কেউ যদি কেবল ফোনকল ব্যবহার করে, তবে তারা কেবল নিজেদের অবস্থান বর্ণনা করতে পারে; কিন্তু কেউ যদি হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহার করে, তবে তারা রিয়েল-টাইমে তাদের অবস্থান শেয়ারও করতে পারে। এই ডিজিটাল সমন্বয়ই সাম্প্রতিক সংঘর্ষে পাকিস্তানকে ভারতীয় যুদ্ধবিমান শনাক্ত, অনুসরণ ও প্রতিরোধে অনেক বেশি কার্যকর করে তোলে।

আরেকটি বড় কারণ, যা সংঘর্ষে পাকিস্তানের পক্ষে পাল্লা ভারী করেছে, তা হলো তাদের ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার (ঊড) কৌশলের ব্যবহার। পাকিস্তানের তিনটি ফ্যালকন ডিএ-২০ ইলেকট্রনিক যুদ্ধ বিমান মোতায়েন করা হয়েছিল ভারতীয় যোগাযোগ ব্যবস্থাকে জ্যামিং করতে, যার ফলে ভারতীয় যুদ্ধবিমান ও তাদের কমান্ড সেন্টারের মধ্যে রেডিও যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাফায়েল, সু-৩০ ও মিগ-২৯ ফাইটার জেটগুলো একে অপরকে আসন্ন হুমকির সতর্কবার্তা দিতে পারেনি। আধুনিক আকাশযুদ্ধে এমন যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। ভারতীয় পাইলটরা, যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অন্ধকার আকাশে উড়তে উড়তে, একদমই বুঝতে পারেননি যে তাদের লক্ষ্য করে প্রাণঘাতী পিএল-১৫ দীর্ঘপাল্লার এয়ার-টু-এয়ার ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়া হয়েছে।

পাকিস্তানের জে-১০সি এবং উন্নত সংস্করণের জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমান থেকে ব্যবহৃত পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্র কোনো সাধারণ অস্ত্র নয়। ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি পাল্লাসম্পন্ন এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলোতে রয়েছে অ্যাকটিভ ইলেকট্রনিক্যালি স্ক্যানড অ্যারে (অঊঝঅ) রাডার, যা দীর্ঘ দূরত্ব থেকে নিক্ষেপ করে এডভান্স ওয়ার্নিং এন্ড কন্ট্রোল সিস্টেম এবং মাটির গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে নির্ভুলভাবে পরিচালিত হতে পারে। এই সাম্প্রতিক সংঘাতে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় ছিলÑপাকিস্তানি যুদ্ধবিমানগুলো তাদের বিমানের নিজস্ব রাডারগুলো চালু করেনি। বরং তারা পুরোপুরি নির্ভর করেছিল তাদের ডেটা-লিংক সিস্টেমের ওপর, যার মাধ্যমে তারা ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করতে পেরেছে রাফায়েল বিমানের স্পেক্ট্রা সিস্টেমকে ফাঁকি দিয়ে। স্পেক্ট্রা রাফায়েলের একটি উন্নত ইলেকট্রনিক রাডার যা যুদ্ধক্ষেত্রের হুমকি নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়।

এই কৌশল, যা সাধারণত ‘প্যাসিভ ট্র্যাকিং’ নামে পরিচিত, আক্রমণকারীদের হাতে চমকে দেয়ার কৌশল তুলে দেয়। যেহেতু পাকিস্তানি যুদ্ধবিমানগুলো কোনো রাডার সিগন্যাল নির্গত করেনি, তাই রাফায়েল বিমানের সেন্সরগুলো শনাক্ত করার মতো কিছুই পায়নিÑযতক্ষণ না সবকিছু শেষ হয়ে যাচ্ছিল। পিএল-১৫ ক্ষেপণাস্ত্রগুলো কেবল আক্রমণের শেষ ধাপেÑআঘাতের কয়েক সেকেন্ড আগেÑতাদের রাডার গাইডেন্স সক্রিয় করেছে, ফলে ভারতীয় পাইলটদের প্রতিক্রিয়া জানাতে কার্যত সময়ই ছিল না। যদিও স্পেক্ট্রা একটি উন্নত প্রযুক্তি, তবে এটি এমন চুপিসারে পরিচালিত, বাহ্যিকভাবে নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা প্রতিরোধে প্রস্তুত নয়Ñবিশেষ করে যখন তার চারপাশে একযোগে বহু ইলেকট্রনিক সংকেত ও জ্যামিং সৃষ্টি করা হয়।

এটি এখন একপ্রকার ওপেন সিক্রেট যে পাকিস্তানের সামরিক সক্ষমতা চীনা প্রযুক্তির দ্বারা উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী হয়েছে। এর ফলে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার চমকপ্রদ কার্যকারিতা বৈশ্বিক শক্তিগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে, এবং ইসলামাবাদ এখন কার্যত চীনা সামরিক উপস্থিতির এক প্রক্ষেপিত শাখায় পরিণত হয়েছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের দীর্ঘদিনের দাবি করা আকাশ প্রাধান্য এখন বেইজিংয়ের প্রযুক্তিগত সুবিধার মুখে পড়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে। এমনকি কিছু প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে পাকিস্তান একটি রুশ এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিষ্ক্রিয় করতে সক্ষম হয়েছেÑযা বর্তমান শক্তির ভারসাম্যের পরিবর্তনের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত দেয়।

এই পরিস্থিতিতে একটি কঠোর বাস্তবতা তুলে ধরেÑচীন কীভাবে নীরবে কিন্তু অত্যন্ত কার্যকরভাবে সামরিক প্রযুক্তিতে অগ্রগতি অর্জন করেছে। এসব অগ্রগতি কেবল দক্ষিণ এশিয়ার সামরিক প্রতিযোগিতার কাঠামোকেই পাল্টে দিচ্ছে না, বরং আধুনিক যুদ্ধের বৃহত্তর প্রেক্ষাপটকেও পুনর্গঠনের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা বাড়ার প্রেক্ষাপটে, চীনা প্রতিরক্ষা শিল্প কৌশলগত ও বাণিজ্যিকÑউভয় দিক থেকেই লাভবান হতে পারে, কারণ এই সংঘাত তাদের সামরিক প্রযুক্তি প্রদর্শন ও বৈশ্বিক বাজারে বিকাশের এক উপযুক্ত প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করেছে।

এই আকাশযুদ্ধ থেকে বৃহত্তর শিক্ষাগুলো অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রথমত, একাধিক উচ্চপ্রযুক্তির সিস্টেম থাকলেও যদি সেগুলো একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারে, তাহলে সেটি একটি গুরুতর দুর্বলতা। দ্বিতীয়ত, ইলেকট্রনিক ওয়ারফেয়ার এখন আর শুধু একটি সহায়ক উপাদান নয়; বরং অনেক ক্ষেত্রেই সেটিই বিজয়ের নির্ধারক। তৃতীয়ত, দীর্ঘ-পাল্লার ‘বিয়ন্ড ভিজ্যুয়াল রেঞ্জ’ (ইঠজ) ক্ষেপণাস্ত্রগুলো, বিশেষত যখন সেগুলো ডেটাসমৃদ্ধ ও ইলেকট্রনিকভাবে সমন্বিত পরিবেশে ব্যবহৃত হয়, তখন সেগুলো এমনকি স্টেলথ ও উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন যুদ্ধবিমানকেও নিষ্ক্রিয় করে দিতে পারে।

অবশেষে, ভারত-পাকিস্তানের এই আকাশযুদ্ধ কেবল যুদ্ধবিমান বা মিসাইলের গল্প নয়, বরং এটি একটি তথ্য নিয়ন্ত্রিত যুদ্ধে কে দ্রুত দেখে, বোঝে এবং প্রতিক্রিয়া জানায়Ñতার লড়াই ছিল। এই সংঘর্ষে পাকিস্তান তাদের একীভূত প্রযুক্তিনির্ভর কৌশল দিয়ে ভারতের বিচ্ছিন্ন উচ্চ মান সম্পন্ন প্রযুক্তিকে পেছনে ফেলে দিয়েছে। ভবিষ্যতের যুদ্ধগুলো সম্ভবত নির্ধারিত হবে কে আগে আক্রমণ চালাল তা দিয়ে নয়, বরং কে আগে জানলÑএবং কে আরও দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানাল তার ওপর।

[লেখক : ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক]

back to top