ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ঐতিহাসিকভাবে কেবল ক্যাম্পাসভিত্তিক প্রতিনিধি সংস্থা নয়; এটি ভবিষ্যতের জাতীয় নেতাদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষণক্ষেত্র হিসেবে কাজ করেছে। একইসঙ্গে ছাত্রদের কণ্ঠস্বরকে জাতীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনে প্রতিফলিত করার শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও পরিচিত। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ডাকসু প্রজন্মের পর প্রজন্মের ছাত্রনেতাদের গড়ে তুলেছে এবং দেশের বড় ঐতিহাসিক আন্দোলনে সরাসরি ভূমিকা রেখেছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট গঠনে ডাকসুই ছিল প্রথম প্রতিরোধের কণ্ঠস্বর। এমনকি ১৯৮০ ও ১৯৯০ দশকের গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও ডাকসু যুবশক্তিকে সংগঠিত করে স্বৈরাচার পতন ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় মূল চালিকাশক্তি হয়েছিল।
এই উত্তরাধিকারই ডাকসু নির্বাচনের গুরুত্ব বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিটি নির্বাচন কেবল ক্যাম্পাস রাজনীতি নয়, বরং যুবসমাজের গণতান্ত্রিক চেতনার স্পন্দন, তৃণমূল আন্দোলনের শক্তি এবং বাংলাদেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের প্রতিফলন বহন করে। এ কারণেই ২০২৫ সালের আসন্ন ডাকসু নির্বাচনকে জাতীয় রাজনীতির সম্ভাব্য দিকনির্দেশক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রতিটি হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং শিক্ষকদের প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপাচার্য নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। দীর্ঘ সহিংস অতীতের প্রেক্ষাপটে এবার একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রবল।
ডাকসু ২০২৫ এর রাজনৈতিক গুরুত্ব ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে জাতীয় আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের শক্তি পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে, তরুণ প্রজন্ম বেশি জবাবদিহিতা দাবি করছে। বিএনপির জন্য ছাত্রদলের ভালো ফলাফল হবে তাদের ছাত্রভিত্তির পুনর্জাগরণ; বামপন্থীদের জন্য প্রতিরোধ পর্ষদের সাফল্য প্রগতিশীল রাজনীতির উত্থানকে ইঙ্গিত করবে; আর স্বতন্ত্র সংস্কারপন্থীরা দলীয় রাজনীতির বাইরে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ পাবে। তবে অনিয়ম, আধিপত্য এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে অতীতের সমালোচনা কাটিয়ে উঠতে না পারলে ডাকসুর ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার কঠিন হবে। একইসঙ্গে ছাত্রনেতারা প্রতীকী রাজনীতির বাইরে গিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তব ফল দিতে পারবেন কি না, সেটিই হবে নেতৃত্বের বড় পরীক্ষা।
এবারের নির্বাচনে ২৮টি কেন্দ্রীয় পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে অন্তত ৯টি বড় প্যানেল। ছাত্রদল পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছে, যেখানে ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে আছেন মো. আবিদুল ইসলাম খান, জিএস পদে শেখ তানভীর বারী হামিম এবং এজিএস পদে তানভীর আল হাদি মায়েদ। তাদের প্যানেল একাডেমিক স্বাধীনতা ও একক আধিপত্য প্রতিরোধের দাবি তুলেছে। বিশেষভাবে, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদ শূন্য রাখা হয়েছে গত বছরের জুলাই আন্দোলনে নিহত ছাত্রীনেত্রী সাঞ্জিদা আহমেদ তন্নির স্মরণে। ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ইউনাইটেড স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্সও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র পরিষদ অন্তর্ভুক্তি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ইস্যু সামনে এনেছে।
স্বতন্ত্র ও সংস্কারপন্থী জোটগুলোর উত্থানও উল্লেখযোগ্য। স্বতন্ত্র ছাত্র ঐক্যের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা নিজেকে দলীয় রাজনীতির বাইরে বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। একইভাবে বামপন্থী প্রতিরোধ পর্ষদ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তরুণদের মধ্যে। তারা ছাত্র ক্ষমতায়ন, কর্তৃত্ববাদী রাজনীতির বিরোধিতা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংহতির অঙ্গীকার করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক অনুশীলনের ঘাটতিতে ভুগছে। ১৯৯০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নির্বাচন না হওয়ায় ছাত্র প্রতিনিধিত্বে বড় শূন্যতা তৈরি হয়। ২০১৯ সালে নির্বাচন হলেও অনিয়মের কারণে তা বিতর্কিত হয়। তাই এবার সবার নজর সুষ্ঠুতা ও স্বচ্ছতার দিকে। নারীদের অংশগ্রহণও এই নির্বাচনে বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র পরিষদ ও স্বতন্ত্র ছাত্র ঐক্য নারী প্রতিনিধিত্ব ও সংখ্যালঘু অধিকারকে কেন্দ্রীয় প্রতিশ্রুতি হিসেবে তুলেছে।
একাডেমিক সংস্কার, আবাসিক হলের দুরবস্থা, ছাত্র কল্যাণ, কর্মসংস্থান ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধÑএসব বাস্তব ইস্যু এবার শিক্ষার্থীদের কাছে জাতীয় রাজনীতির চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। একইসঙ্গে জাতীয় রাজনীতির প্রভাবও ডাকসু থেকে দূরে নয়। তাই স্বাধীনতা ও দলীয় সংযুক্তির দ্বন্দ্ব নির্বাচনের একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নির্বাচনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ২০১৯ সালের অনিয়মের অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। তাই ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং শিক্ষক ও মিডিয়ার স্বাধীন পর্যবেক্ষণ এবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সব মিলিয়ে ডাকসু ২০২৫ নির্বাচন কেবল একটি ক্যাম্পাস নির্বাচন নয়। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে ঐতিহাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্রের পরীক্ষা, শিক্ষার্থীদের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন এবং জাতীয় রাজনীতির সম্ভাব্য দিকনির্দেশক। বৈচিত্র্যময় প্রার্থী তালিকা, প্রাণবন্ত প্রচারণা এবং শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এই নির্বাচনকে বিশেষ তাৎপর্য দিয়েছে। তরুণদের সাহস ও দৃষ্টিভঙ্গির ওপর যে জাতির ইতিহাস দাঁড়িয়ে আছে, সেই জাতির ভবিষ্যতের গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও সামাজিক অগ্রযাত্রার দিকনির্দেশনা হয়তো প্রতিফলিত হবে ডাকসু ২০২৫ নির্বাচনের ফলাফলে।
[লেখক: সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি]
ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ
সোমবার, ২৫ আগস্ট ২০২৫
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) ঐতিহাসিকভাবে কেবল ক্যাম্পাসভিত্তিক প্রতিনিধি সংস্থা নয়; এটি ভবিষ্যতের জাতীয় নেতাদের রাজনৈতিক প্রশিক্ষণক্ষেত্র হিসেবে কাজ করেছে। একইসঙ্গে ছাত্রদের কণ্ঠস্বরকে জাতীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনে প্রতিফলিত করার শক্তিশালী প্ল্যাটফর্ম হিসেবেও পরিচিত। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে ডাকসু প্রজন্মের পর প্রজন্মের ছাত্রনেতাদের গড়ে তুলেছে এবং দেশের বড় ঐতিহাসিক আন্দোলনে সরাসরি ভূমিকা রেখেছে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট গঠনে ডাকসুই ছিল প্রথম প্রতিরোধের কণ্ঠস্বর। এমনকি ১৯৮০ ও ১৯৯০ দশকের গণতান্ত্রিক আন্দোলনেও ডাকসু যুবশক্তিকে সংগঠিত করে স্বৈরাচার পতন ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় মূল চালিকাশক্তি হয়েছিল।
এই উত্তরাধিকারই ডাকসু নির্বাচনের গুরুত্ব বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। প্রতিটি নির্বাচন কেবল ক্যাম্পাস রাজনীতি নয়, বরং যুবসমাজের গণতান্ত্রিক চেতনার স্পন্দন, তৃণমূল আন্দোলনের শক্তি এবং বাংলাদেশের সামগ্রিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের প্রতিফলন বহন করে। এ কারণেই ২০২৫ সালের আসন্ন ডাকসু নির্বাচনকে জাতীয় রাজনীতির সম্ভাব্য দিকনির্দেশক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। প্রতিটি হলে ভোটকেন্দ্র স্থাপন, নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং শিক্ষকদের প্রিসাইডিং ও সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে নিয়োগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। উপাচার্য নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছেন। দীর্ঘ সহিংস অতীতের প্রেক্ষাপটে এবার একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের প্রত্যাশা শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রবল।
ডাকসু ২০২৫ এর রাজনৈতিক গুরুত্ব ক্যাম্পাসের বাইরে গিয়ে জাতীয় আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের শক্তি পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে, তরুণ প্রজন্ম বেশি জবাবদিহিতা দাবি করছে। বিএনপির জন্য ছাত্রদলের ভালো ফলাফল হবে তাদের ছাত্রভিত্তির পুনর্জাগরণ; বামপন্থীদের জন্য প্রতিরোধ পর্ষদের সাফল্য প্রগতিশীল রাজনীতির উত্থানকে ইঙ্গিত করবে; আর স্বতন্ত্র সংস্কারপন্থীরা দলীয় রাজনীতির বাইরে নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার সুযোগ পাবে। তবে অনিয়ম, আধিপত্য এবং বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে অতীতের সমালোচনা কাটিয়ে উঠতে না পারলে ডাকসুর ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধার কঠিন হবে। একইসঙ্গে ছাত্রনেতারা প্রতীকী রাজনীতির বাইরে গিয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বাস্তব ফল দিতে পারবেন কি না, সেটিই হবে নেতৃত্বের বড় পরীক্ষা।
এবারের নির্বাচনে ২৮টি কেন্দ্রীয় পদের জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে অন্তত ৯টি বড় প্যানেল। ছাত্রদল পূর্ণাঙ্গ প্যানেল দিয়েছে, যেখানে ভাইস-প্রেসিডেন্ট পদে আছেন মো. আবিদুল ইসলাম খান, জিএস পদে শেখ তানভীর বারী হামিম এবং এজিএস পদে তানভীর আল হাদি মায়েদ। তাদের প্যানেল একাডেমিক স্বাধীনতা ও একক আধিপত্য প্রতিরোধের দাবি তুলেছে। বিশেষভাবে, গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদ শূন্য রাখা হয়েছে গত বছরের জুলাই আন্দোলনে নিহত ছাত্রীনেত্রী সাঞ্জিদা আহমেদ তন্নির স্মরণে। ইসলামী ছাত্রশিবির-সমর্থিত ইউনাইটেড স্টুডেন্টস অ্যালায়েন্সও শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র পরিষদ অন্তর্ভুক্তি ও সামাজিক ন্যায়বিচারের ইস্যু সামনে এনেছে।
স্বতন্ত্র ও সংস্কারপন্থী জোটগুলোর উত্থানও উল্লেখযোগ্য। স্বতন্ত্র ছাত্র ঐক্যের ভিপি প্রার্থী উমামা ফাতেমা নিজেকে দলীয় রাজনীতির বাইরে বিকল্প হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। একইভাবে বামপন্থী প্রতিরোধ পর্ষদ জনপ্রিয়তা পাচ্ছে তরুণদের মধ্যে। তারা ছাত্র ক্ষমতায়ন, কর্তৃত্ববাদী রাজনীতির বিরোধিতা এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সঙ্গে সংহতির অঙ্গীকার করেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে গণতান্ত্রিক অনুশীলনের ঘাটতিতে ভুগছে। ১৯৯০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত নির্বাচন না হওয়ায় ছাত্র প্রতিনিধিত্বে বড় শূন্যতা তৈরি হয়। ২০১৯ সালে নির্বাচন হলেও অনিয়মের কারণে তা বিতর্কিত হয়। তাই এবার সবার নজর সুষ্ঠুতা ও স্বচ্ছতার দিকে। নারীদের অংশগ্রহণও এই নির্বাচনে বড় ইস্যু হয়ে উঠেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র পরিষদ ও স্বতন্ত্র ছাত্র ঐক্য নারী প্রতিনিধিত্ব ও সংখ্যালঘু অধিকারকে কেন্দ্রীয় প্রতিশ্রুতি হিসেবে তুলেছে।
একাডেমিক সংস্কার, আবাসিক হলের দুরবস্থা, ছাত্র কল্যাণ, কর্মসংস্থান ও সাইবার বুলিং প্রতিরোধÑএসব বাস্তব ইস্যু এবার শিক্ষার্থীদের কাছে জাতীয় রাজনীতির চেয়ে বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে। একইসঙ্গে জাতীয় রাজনীতির প্রভাবও ডাকসু থেকে দূরে নয়। তাই স্বাধীনতা ও দলীয় সংযুক্তির দ্বন্দ্ব নির্বাচনের একটি বড় বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নির্বাচনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ দিক। ২০১৯ সালের অনিয়মের অভিজ্ঞতা শিক্ষার্থীদের মধ্যে শঙ্কা সৃষ্টি করেছে। তাই ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা, প্রশাসনের নিরপেক্ষতা এবং শিক্ষক ও মিডিয়ার স্বাধীন পর্যবেক্ষণ এবার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
সব মিলিয়ে ডাকসু ২০২৫ নির্বাচন কেবল একটি ক্যাম্পাস নির্বাচন নয়। এটি বাংলাদেশের সবচেয়ে ঐতিহাসিক বিশ্ববিদ্যালয়ে গণতন্ত্রের পরীক্ষা, শিক্ষার্থীদের আকাক্সক্ষার প্রতিফলন এবং জাতীয় রাজনীতির সম্ভাব্য দিকনির্দেশক। বৈচিত্র্যময় প্রার্থী তালিকা, প্রাণবন্ত প্রচারণা এবং শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এই নির্বাচনকে বিশেষ তাৎপর্য দিয়েছে। তরুণদের সাহস ও দৃষ্টিভঙ্গির ওপর যে জাতির ইতিহাস দাঁড়িয়ে আছে, সেই জাতির ভবিষ্যতের গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও সামাজিক অগ্রযাত্রার দিকনির্দেশনা হয়তো প্রতিফলিত হবে ডাকসু ২০২৫ নির্বাচনের ফলাফলে।
[লেখক: সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি]