alt

উপ-সম্পাদকীয়

মতামত

বিদ্যুৎ খাতে অপচয়-দুর্নীতি

আর কে চৌধুরী

: সোমবার, ২২ মে ২০২৩

তীব্র গরমে চলছে অসহ্য লোডশেডিং। চাহিদা মতো বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। দেশে এখন মধ্যরাতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। তীব্র গরমে লোডশেডিংয়ে নাভিশ্বাস উঠছে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষের। খোদ রাজধানীতে এখন ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে।

একদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ, অন্যদিকে বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় গ্রামাঞ্চলের মানুষের নাকাল দশা। দিনে-রাতে গ্রামাঞ্চলে এলাকাভেদে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। জ্বালানি সংকটের কারণে দেশের বড় দুই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘিরে সংকট তৈরি হয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুই সপ্তাহের বেশি উৎপাদন বন্ধ, অন্যদিকে যান্ত্রিক ত্রুটি ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পুরনো কেন্দ্রগুলোতে ২ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না।

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২২ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট; কিন্তু জ্বালানির অভাবে এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। আমরা আশা করব চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সৃষ্ট সংকটের অন্যতম কারণ অতিরিক্ত আমদানি নির্ভরতা। দেশে গ্যাসের অনুসন্ধানে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেয়া হলে জ্বালানি খাত এতা নাজুক পরিস্থিতির মুখে পড়ত না, এমনটাই মনে করেন এ খাতের অনেক বিশেষজ্ঞ।

দেশে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায়ও সমস্যা রয়েছে। দেশের অধিকাংশ স্থানে বিদ্যুৎ বিতরণ লাইনের অবস্থা বেহাল ও জরাজীর্ণ। গত বছর আগে সঞ্চালন লাইনে বড় ধরনের বিভ্রাটের কারণে দেশের প্রায় অর্ধেক অংশ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল। দেশে বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থায় সমস্যা ও ব্যবস্থাপনায় ত্রুটির বিষয়টি বহুল আলোচিত। সঞ্চালন লাইন শক্তিশালী করতে নেয়া প্রকল্পগুলোর সার্বিক অগ্রগতি সন্তোষজনক না হলে আগামী দিনে দেশবাসী বিদ্যুৎ খাতের প্রকৃত সুফল থেকে বঞ্চিত হবে।

দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও গ্যাস পাওয়া না গেলে শিল্পোদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীরা সীমাহীন ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এ অবস্থায় শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের প্রাপ্যতা নিশ্চিতের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করি আমরা। দেশে প্রয়োজনের তুলনায় এখন বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। কিন্তু লক্ষণীয় যে, উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও এখন চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে বড় ব্যবধান বিদ্যমান, রয়েছে অবকাঠামো দুর্বলতাও।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও নিরবচ্ছিন্ন হলে তা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে আরও বড় অবদান রাখবে বলে আমরা মনে করি। গ্রিড-অফগ্রিড মিলিয়ে যেখানে দেশের সব এলাকা শতভাগ বিদ্যুতের আওতায়, সেখানে দেশের বড় এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়বে, এটি কাম্য নয়। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে মন্ত্রণালয়, পিডিবি, আরইবি, পাওয়ার সেল এবং বিতরণ কোম্পানিগুলোকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। উৎপাদন, বিতরণের প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহির সংস্কৃতি চালু করা গেলে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে আনা সম্ভব।

[লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান,

রাজউক]

সর্বজনীন শিক্ষার বলয়ের বাইরে আদিবাসীরা : অন্তর্ভুক্তির লড়াইয়ে বৈষম্যের দেয়াল

শোনার গান, দেখার টান : অনুভূতির ভোঁতা সময়

ছবি

ছিন্নপত্রে বাংলাদেশের প্রকৃতি ও রবীন্দ্র চেতনা

ভেতরের অদৃশ্য অপরাধ : সমাজের বিপন্ন মানসিকতা

দারিদ্র্য ও বৈষম্য নিরসনে খাসজমি ও জলার গুরুত্ব

অবহেলিত কৃষক ও বাজার ব্যবস্থার বৈষম্য

রাক্ষুসে মাছের দাপটে বিপন্ন দেশীয় মাছ : করণীয় কী?

বজ্রপাতের আতঙ্কে জনজীবন

তাহলে কি ঘৃণায় ছেয়ে যাবে দেশ, মানবজমিন রইবে পতিত

কর্পোরেট ও ব্যক্তিগত সামাজিক দায়বদ্ধতা

‘রাখাইন করিডর’ : একটি ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষণ

ভিন্নমতের ভয়, নির্বাচনের দোলাচল ও অন্তর্বর্তী সরকারের কৌশলী অবস্থান

সমুদ্রসম্পদ সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা

কৃষি শিক্ষা হোক উদ্যোক্তা গড়ার মাধ্যম

রঙ্গব্যঙ্গ : কোটের কেবল রং বদলায়

মে দিবসের চেতনা বনাম বাস্তবতা

শ্রম আইন ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় চাই আন্তরিকতা

বাসযোগ্যতা সূচকে ঢাকা কেন এত পিছিয়ে

সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মিছিল : নিরাপদ যাত্রার প্রত্যাশা

কর ফাঁকি : অর্থনীতির জন্য এক অশনি সংকেত

১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড় : উপকূলীয় সুরক্ষার শিক্ষা

যখন নদীগুলো অস্ত্র হয়ে ওঠে

বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গুণগত মান উন্নয়নে গবেষণা ও উদ্ভাবন

বজ্রপাত ও তালগাছ : প্রাকৃতিক প্রতিরোধ ব্যবস্থা

কুষ্ঠ ও বৈষম্য : মানবাধিকারের প্রশ্নে একটি অবহেলিত অধ্যায়

ছবি

প্রান্তজনের বাংলাদেশ

অতীতের ছায়ায় নতুন বাংলাদেশ : দুর্নীতি, উগ্রপন্থা ও সরকারের দায়

সাইবার নিরাপত্তা : অদৃশ্য যুদ্ধের সামনে আমাদের প্রস্তুতি

ছবি

বাহান্নর গর্ভে জন্ম নেয়া এক ঝড়ের পাখি

প্রবাসী শ্রমিক : অর্থের যন্ত্র নয়, রাষ্ট্রের সহযোদ্ধা

রানা প্লাজা ট্র্যাজেডির এক যুগ

ভোগবাদের বিরুদ্ধে পোপ ফ্রান্সিসের জলবায়ু বার্তা

রম্যগদ্য : হাসি নিষেধ...

পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন : দাবি ও সমাধানের পথ

সিরিয়ার পতন কিভাবে আমেরিকার স্বার্থকে হুমকিতে ফেলছে

পরিবারতত্ত্ব ও পরিবারতন্ত্র : বিকল্প রাষ্ট্রচিন্তার সন্ধানে

tab

উপ-সম্পাদকীয়

মতামত

বিদ্যুৎ খাতে অপচয়-দুর্নীতি

আর কে চৌধুরী

সোমবার, ২২ মে ২০২৩

তীব্র গরমে চলছে অসহ্য লোডশেডিং। চাহিদা মতো বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না কোথাও। দেশে এখন মধ্যরাতেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা বিদ্যুতের লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। তীব্র গরমে লোডশেডিংয়ে নাভিশ্বাস উঠছে শিশু, বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষের। খোদ রাজধানীতে এখন ৫ থেকে ৬ ঘণ্টা লোডশেডিং হচ্ছে।

একদিকে তীব্র তাপপ্রবাহ, অন্যদিকে বিদ্যুতের আসা-যাওয়ায় গ্রামাঞ্চলের মানুষের নাকাল দশা। দিনে-রাতে গ্রামাঞ্চলে এলাকাভেদে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পর্যন্ত লোডশেডিং হচ্ছে। জ্বালানি সংকটের কারণে দেশের বড় দুই কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র ঘিরে সংকট তৈরি হয়েছে। রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রে দুই সপ্তাহের বেশি উৎপাদন বন্ধ, অন্যদিকে যান্ত্রিক ত্রুটি ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পুরনো কেন্দ্রগুলোতে ২ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না।

দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ২২ হাজার ৫৬৬ মেগাওয়াট; কিন্তু জ্বালানির অভাবে এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। আমরা আশা করব চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নেয়া হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে সৃষ্ট সংকটের অন্যতম কারণ অতিরিক্ত আমদানি নির্ভরতা। দেশে গ্যাসের অনুসন্ধানে আরও জোরালো পদক্ষেপ নেয়া হলে জ্বালানি খাত এতা নাজুক পরিস্থিতির মুখে পড়ত না, এমনটাই মনে করেন এ খাতের অনেক বিশেষজ্ঞ।

দেশে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থায়ও সমস্যা রয়েছে। দেশের অধিকাংশ স্থানে বিদ্যুৎ বিতরণ লাইনের অবস্থা বেহাল ও জরাজীর্ণ। গত বছর আগে সঞ্চালন লাইনে বড় ধরনের বিভ্রাটের কারণে দেশের প্রায় অর্ধেক অংশ বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়েছিল। দেশে বিদ্যুৎ বিতরণ ও সঞ্চালন ব্যবস্থায় সমস্যা ও ব্যবস্থাপনায় ত্রুটির বিষয়টি বহুল আলোচিত। সঞ্চালন লাইন শক্তিশালী করতে নেয়া প্রকল্পগুলোর সার্বিক অগ্রগতি সন্তোষজনক না হলে আগামী দিনে দেশবাসী বিদ্যুৎ খাতের প্রকৃত সুফল থেকে বঞ্চিত হবে।

দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে বাড়ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির চাহিদা। চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ ও গ্যাস পাওয়া না গেলে শিল্পোদ্যোক্তা-ব্যবসায়ীরা সীমাহীন ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এ অবস্থায় শিল্প খাতে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের প্রাপ্যতা নিশ্চিতের বিষয়ে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া উচিত বলে মনে করি আমরা। দেশে প্রয়োজনের তুলনায় এখন বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। কিন্তু লক্ষণীয় যে, উৎপাদন বাড়াতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিলেও এখন চাহিদা ও উৎপাদনের মধ্যে বড় ব্যবধান বিদ্যমান, রয়েছে অবকাঠামো দুর্বলতাও।

বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী ও নিরবচ্ছিন্ন হলে তা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে আরও বড় অবদান রাখবে বলে আমরা মনে করি। গ্রিড-অফগ্রিড মিলিয়ে যেখানে দেশের সব এলাকা শতভাগ বিদ্যুতের আওতায়, সেখানে দেশের বড় এলাকায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়বে, এটি কাম্য নয়। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহে মন্ত্রণালয়, পিডিবি, আরইবি, পাওয়ার সেল এবং বিতরণ কোম্পানিগুলোকে সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। উৎপাদন, বিতরণের প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহির সংস্কৃতি চালু করা গেলে লোডশেডিং সহনীয় পর্যায়ে আনা সম্ভব।

[লেখক : সাবেক চেয়ারম্যান,

রাজউক]

back to top