টিকিট সংকট সমাধানে আধুনিক পদ্ধতির উদ্যোগ ডিএমটিসিএলের
ঢাকার মেট্রোরেলে যাত্রীদের চাপ বাড়ার কারণে একক যাত্রার টিকিটের সংকট ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। এ সমস্যার সমাধানে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে কিউআর কোডভিত্তিক টিকিটিং ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার থেকে এই পদ্ধতি চালুর লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান শুরু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ।
মঙ্গলবার ডিএমটিসিএল তাদের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেজে ‘বিশেষ ঘোষণা’ দিয়ে জানায়, যাত্রীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে সিঙ্গেল জার্নি টিকিট ইস্যু করতে দীর্ঘ সময় লাগছে। তাছাড়া নির্দিষ্ট সময়ে টিকিট ফেরত না দেওয়ার কারণে এবং কিছু টিকিট নষ্ট হয়ে যাওয়ায় টিকিটের সংকট দেখা দিয়েছে। এই সমস্যা নিরসনে দ্রুত সিঙ্গেল জার্নির টিকিট সংগ্রহ এবং কিউআর কোড পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে যাত্রীসেবা উন্নত করার কাজ করা হচ্ছে।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ কিউআর কোড পদ্ধতি চালুর ক্ষেত্রে দুটি উপায় নিয়ে কাজ করছে। প্রথমত, যাত্রীরা স্টেশনে এসে একটি কার্ড স্ক্যান করে ভ্রমণ করতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্টেশনে কিউআর কোড স্ক্যান করে টিকিটের ঝামেলা ছাড়াই যাত্রা করা যাবে। কিউআর কোডের জন্য স্টেশনে বিশেষ গেটের ব্যবস্থা করার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, “বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে এবং ফাইল অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে বুধবার থেকে। আমরা দ্রুত এ পদ্ধতি চালু করার চেষ্টা করছি।” তিনি আরও জানান, আগামী মার্চের মধ্যে চার লাখ নতুন টিকিট যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে কিউআর কোড পদ্ধতি বিকল্প হিসেবে থাকবে।
মেট্রোরেলে বর্তমানে দুই ধরনের টিকিট ব্যবস্থা রয়েছে — এমআরটি পাস বা র্যাপিড পাস এবং একক যাত্রার টিকিট। র্যাপিড পাস একবার কিনলে টাকা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা ব্যবহার করা যায়। তবে একক যাত্রার টিকিট কিনে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছার পর তা ফেরত দিতে হয়।
মেট্রোরেল চালুর সময় একক যাত্রার জন্য ২ লাখ ৪৮ হাজার টিকিট সরবরাহ করা হয়েছিল। কিন্তু যাত্রীদের অনেকেই টিকিট ফেরত না দেওয়ায় সংকটের সৃষ্টি হয়। গত ১৪ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে আবদুর রউফ জানান, প্রায় ২ লাখ টিকিট যাত্রীরা ফেরত না দিয়ে নিয়ে গেছেন এবং ১৩ হাজারেরও বেশি টিকিট নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের হাতে মাত্র ৪০ হাজার টিকিট রয়েছে।
টিকিট সংকট কাটাতে আরও ২০ হাজার টিকিট চলতি ডিসেম্বর মাসেই যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া নভেম্বর মাসে নতুন লটে ২০ হাজার কার্ড স্টেশনগুলোতে দেওয়া হয়েছিল। তবে চাহিদার তুলনায় এ সংখ্যাটি যথেষ্ট নয়।
টিকিট সংকটের কারণে যাত্রীদের স্টেশনে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যস্ত সময়ে এই সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করছে। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং সময় হাতে নিয়ে স্টেশনে আসার অনুরোধ জানিয়েছে।
ডিএমটিসিএল-এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছে, “আশা করা যাচ্ছে, ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আমরা দ্রুত কিউআর কোড পদ্ধতি চালু করে যাত্রীসেবার মান বাড়ানোর চেষ্টা করছি।”
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ টিকিট সংকটের স্থায়ী সমাধান হিসেবে কিউআর কোড পদ্ধতিকে অত্যন্ত কার্যকরী মনে করছে। এটি চালু হলে স্টেশনে টিকিট কেনার দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হবে না এবং টিকিট ফেরত দেওয়ার ঝামেলাও কমে যাবে।
ডিএমটিসিএল দ্রুততার সঙ্গে দরপত্র আহ্বান এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপনের কাজ শুরু করবে। যে প্রতিষ্ঠান সর্বোত্তম সেবা এবং কম খরচে সমাধান দিতে পারবে, তাদের সঙ্গে চুক্তি করা হবে।
আগামী বছর মার্চের মধ্যে কিউআর কোড পদ্ধতি পুরোপুরি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এটি চালু হলে মেট্রোরেলে যাত্রীদের জন্য ভ্রমণ আরও সহজ এবং আরামদায়ক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
টিকিট সংকট সমাধানে আধুনিক পদ্ধতির উদ্যোগ ডিএমটিসিএলের
বৃহস্পতিবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
ঢাকার মেট্রোরেলে যাত্রীদের চাপ বাড়ার কারণে একক যাত্রার টিকিটের সংকট ক্রমেই প্রকট হচ্ছে। এ সমস্যার সমাধানে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে কিউআর কোডভিত্তিক টিকিটিং ব্যবস্থা চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বুধবার থেকে এই পদ্ধতি চালুর লক্ষ্যে দরপত্র আহ্বান শুরু করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ।
মঙ্গলবার ডিএমটিসিএল তাদের ভেরিফায়েড ফেইসবুক পেজে ‘বিশেষ ঘোষণা’ দিয়ে জানায়, যাত্রীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার ফলে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলোতে সিঙ্গেল জার্নি টিকিট ইস্যু করতে দীর্ঘ সময় লাগছে। তাছাড়া নির্দিষ্ট সময়ে টিকিট ফেরত না দেওয়ার কারণে এবং কিছু টিকিট নষ্ট হয়ে যাওয়ায় টিকিটের সংকট দেখা দিয়েছে। এই সমস্যা নিরসনে দ্রুত সিঙ্গেল জার্নির টিকিট সংগ্রহ এবং কিউআর কোড পদ্ধতি চালুর মাধ্যমে যাত্রীসেবা উন্নত করার কাজ করা হচ্ছে।
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ কিউআর কোড পদ্ধতি চালুর ক্ষেত্রে দুটি উপায় নিয়ে কাজ করছে। প্রথমত, যাত্রীরা স্টেশনে এসে একটি কার্ড স্ক্যান করে ভ্রমণ করতে পারবেন। দ্বিতীয়ত, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্টেশনে কিউআর কোড স্ক্যান করে টিকিটের ঝামেলা ছাড়াই যাত্রা করা যাবে। কিউআর কোডের জন্য স্টেশনে বিশেষ গেটের ব্যবস্থা করার বিষয়টিও বিবেচনায় রয়েছে।
ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবদুর রউফ বলেন, “বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে একাধিক বৈঠক হয়েছে এবং ফাইল অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দরপত্র আহ্বানের প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে বুধবার থেকে। আমরা দ্রুত এ পদ্ধতি চালু করার চেষ্টা করছি।” তিনি আরও জানান, আগামী মার্চের মধ্যে চার লাখ নতুন টিকিট যোগ করার পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে কিউআর কোড পদ্ধতি বিকল্প হিসেবে থাকবে।
মেট্রোরেলে বর্তমানে দুই ধরনের টিকিট ব্যবস্থা রয়েছে — এমআরটি পাস বা র্যাপিড পাস এবং একক যাত্রার টিকিট। র্যাপিড পাস একবার কিনলে টাকা শেষ না হওয়া পর্যন্ত তা ব্যবহার করা যায়। তবে একক যাত্রার টিকিট কিনে যাত্রীদের গন্তব্যে পৌঁছার পর তা ফেরত দিতে হয়।
মেট্রোরেল চালুর সময় একক যাত্রার জন্য ২ লাখ ৪৮ হাজার টিকিট সরবরাহ করা হয়েছিল। কিন্তু যাত্রীদের অনেকেই টিকিট ফেরত না দেওয়ায় সংকটের সৃষ্টি হয়। গত ১৪ অক্টোবর এক সংবাদ সম্মেলনে আবদুর রউফ জানান, প্রায় ২ লাখ টিকিট যাত্রীরা ফেরত না দিয়ে নিয়ে গেছেন এবং ১৩ হাজারেরও বেশি টিকিট নষ্ট হয়ে গেছে। বর্তমানে মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের হাতে মাত্র ৪০ হাজার টিকিট রয়েছে।
টিকিট সংকট কাটাতে আরও ২০ হাজার টিকিট চলতি ডিসেম্বর মাসেই যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া নভেম্বর মাসে নতুন লটে ২০ হাজার কার্ড স্টেশনগুলোতে দেওয়া হয়েছিল। তবে চাহিদার তুলনায় এ সংখ্যাটি যথেষ্ট নয়।
টিকিট সংকটের কারণে যাত্রীদের স্টেশনে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হচ্ছে। বিশেষ করে ব্যস্ত সময়ে এই সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করছে। ডিএমটিসিএল কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের অসুবিধার জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেছে এবং সময় হাতে নিয়ে স্টেশনে আসার অনুরোধ জানিয়েছে।
ডিএমটিসিএল-এর ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া ঘোষণায় বলা হয়েছে, “আশা করা যাচ্ছে, ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ পরিস্থিতির উন্নতি হবে। আমরা দ্রুত কিউআর কোড পদ্ধতি চালু করে যাত্রীসেবার মান বাড়ানোর চেষ্টা করছি।”
মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ টিকিট সংকটের স্থায়ী সমাধান হিসেবে কিউআর কোড পদ্ধতিকে অত্যন্ত কার্যকরী মনে করছে। এটি চালু হলে স্টেশনে টিকিট কেনার দীর্ঘ লাইনে দাঁড়াতে হবে না এবং টিকিট ফেরত দেওয়ার ঝামেলাও কমে যাবে।
ডিএমটিসিএল দ্রুততার সঙ্গে দরপত্র আহ্বান এবং প্রয়োজনীয় অবকাঠামো স্থাপনের কাজ শুরু করবে। যে প্রতিষ্ঠান সর্বোত্তম সেবা এবং কম খরচে সমাধান দিতে পারবে, তাদের সঙ্গে চুক্তি করা হবে।
আগামী বছর মার্চের মধ্যে কিউআর কোড পদ্ধতি পুরোপুরি চালু করার পরিকল্পনা রয়েছে। এটি চালু হলে মেট্রোরেলে যাত্রীদের জন্য ভ্রমণ আরও সহজ এবং আরামদায়ক হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।