জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নতুন মোড় নিচ্ছে। রাতভর সড়কে বসে থেকে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর গনঅনশনে বসার কর্মসূচি পালনের ঘোষনা দিয়েছেন ছাত্র-শিক্ষকরা। বাজেট বাড়ানোসহ চার দফা দাবিতে অবস্থানের দ্বিতীয় দিন শেষে সরকারের তরফে আশানুরূপ সাড়া না আসায় গণঅনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীরা।
বৃহস্পতিবার দিনের বেলা ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ পর মাঝরাতের কিছু আগে নতুন এ কর্মসূচির ডাক দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন।
কাকরাইল মসজিদ মোড়ের অবস্থানস্থলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা জবি পরিবার ঐকম্যতে পৌঁছেছি; হয় দাবি আদায় হবে, নতুবা আমাদের মৃত্যু হবে। আজ দ্বিতীয় দিন পরেও আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। সুস্পষ্টভাবে দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে।
”শিক্ষার্থীদের সাথে আমরা শিক্ষকরাও আজ এখানেই রাত্রি যাপন করব। আগামীকাল আমাদের সাথে সাবেক শিক্ষার্থীরা যোগ দেবেন। আর জুম্মার নামাজের পরপরই আমরা গণ অনশন কর্মসূচি পালন করব।”
এর আগে বিকালে দাবি আদায়ে ক্যাম্পাসে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনে নামা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিরি সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিন।
আগের দিন পুরান ঢাকার ক্যাম্পাস থেকে শুরু হওয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পথযাত্রা কয়েক দফা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এসে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে আবার বাধার মুখে পড়ে। সেখানে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল মেরে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পরে আন্দোলনকারীরা বিকাল থেকে সেখানেই অবস্থান নিয়ে তাদের দাবি আদায়ে অনড় থাকেন।
তিন দফা দাবিতে শুরু হওয়া এ আন্দোলন পরে চার দফায় রূপ নেয়। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে পদযাত্রা করে যাওয়ার সময় আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতে দাবি তুলেছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা-
>> আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে;
>> জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে;
>> জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।
গত বুধবার দুপুরে তিনটি দাবি নিয়ে আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাস থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও দপ্তর যমুনা অভিমুখে ‘লং মার্চ’ শুরু করেন।
মিছিলটি গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজার, জিরো পয়েন্ট, সচিবালয়, শিক্ষা ভবন, হাই কোর্ট ও মৎস্য ভবন মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়লেও তা উপেক্ষা করে কাকরাইল মসজিদের সামনে আসে।
একপর্যায়ে মিছিলটি প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে এলে সেখানে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
পরে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা যমুনায় যান। সেখানে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ শিক্ষক প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে এলে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন। এক পর্যায়ে বোতল ছুড়ে মারা হলে তা উপদেষ্টার মাথায় লাগে।
মাথায় আঘাতের পরে মাহফুজ বলেন, “আপনাদের অপকর্মের মাধ্যমে আপনারা পুলিশের অবস্থানকে নায্যতা দিলেন।”
বিব্রতকর এ ঘটনার মধ্যে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নেওয়া জগন্নাথের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস দেননি। তবে সরকার তাদের দাবি বিবেচনা করছে বলে জানান।
সরকারের তরফে ‘নিশ্চিত আশ্বাস’ না পেয়ে আন্দোলনকারীরা রাতভর কাকরাইল মসজিদ মোড়ের সড়কে অবস্থান করেন ও স্লোগান দিতে থাকেন।
বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদদীন ফেইসবুক লাইভে এসে আন্দোলনে যোগ দিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান। তার ডাকে সাড়া দিয়ে দিনভর অন্তত ৪০টি একতলা ও দোতলা বাসে করে শিক্ষার্থীরা কাকড়াইল মোড়ে আসেন। আর শিক্ষকদের অন্তত আটটি মিনিবাস ঘটনাস্থলে আসে।
সকাল ১০পার পর থেকে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শরিক হতে একের পর এক বাস নিয়ে আসেন সতীর্থরা। এ আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন বিপুল সংখ্যক শিক্ষকও।
এরপর দিনভর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি মধ্যরাত পর্যন্ত গড়ালেও সরকারের পক্ষ থেকে আশানুরূপ কোন সাড়া না পাওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে রাত ১২টার কিছু আগে গণঅনশন কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন অধ্যাপক রইছ উদদীন।
তারা সেখানে আগের রাতের মত বৃহস্পতিবার রাতেও অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।
শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫
জগন্নাথের শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নতুন মোড় নিচ্ছে। রাতভর সড়কে বসে থেকে আজ শুক্রবার জুমার নামাজের পর গনঅনশনে বসার কর্মসূচি পালনের ঘোষনা দিয়েছেন ছাত্র-শিক্ষকরা। বাজেট বাড়ানোসহ চার দফা দাবিতে অবস্থানের দ্বিতীয় দিন শেষে সরকারের তরফে আশানুরূপ সাড়া না আসায় গণঅনশন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীরা।
বৃহস্পতিবার দিনের বেলা ‘কমপ্লিট শাটডাউনের’ পর মাঝরাতের কিছু আগে নতুন এ কর্মসূচির ডাক দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. রইছ উদ্দীন।
কাকরাইল মসজিদ মোড়ের অবস্থানস্থলে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “আমরা জবি পরিবার ঐকম্যতে পৌঁছেছি; হয় দাবি আদায় হবে, নতুবা আমাদের মৃত্যু হবে। আজ দ্বিতীয় দিন পরেও আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়নি। সুস্পষ্টভাবে দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে।
”শিক্ষার্থীদের সাথে আমরা শিক্ষকরাও আজ এখানেই রাত্রি যাপন করব। আগামীকাল আমাদের সাথে সাবেক শিক্ষার্থীরা যোগ দেবেন। আর জুম্মার নামাজের পরপরই আমরা গণ অনশন কর্মসূচি পালন করব।”
এর আগে বিকালে দাবি আদায়ে ক্যাম্পাসে ‘শাটডাউন’ কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনে নামা শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার পর এ কর্মসূচি ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতিরি সাধারণ সম্পাদক রইস উদ্দিন।
আগের দিন পুরান ঢাকার ক্যাম্পাস থেকে শুরু হওয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পথযাত্রা কয়েক দফা পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে এসে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে আবার বাধার মুখে পড়ে। সেখানে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল মেরে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
পরে আন্দোলনকারীরা বিকাল থেকে সেখানেই অবস্থান নিয়ে তাদের দাবি আদায়ে অনড় থাকেন।
তিন দফা দাবিতে শুরু হওয়া এ আন্দোলন পরে চার দফায় রূপ নেয়। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের দিকে পদযাত্রা করে যাওয়ার সময় আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনার তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি নিশ্চিতে দাবি তুলেছেন তারা।
শিক্ষার্থীদের তিন দফা-
>> আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছর থেকে আবাসন বৃত্তি কার্যকর করতে হবে;
>> জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত পূর্ণাঙ্গ বাজেট কাটছাঁট না করেই অনুমোদন করতে হবে;
>> জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ পরবর্তী একনেক সভায় অনুমোদন করে অগ্রাধিকার প্রকল্পের আওতায় বাস্তবায়ন করতে হবে।
গত বুধবার দুপুরে তিনটি দাবি নিয়ে আন্দোলনকারীরা ক্যাম্পাস থেকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন ও দপ্তর যমুনা অভিমুখে ‘লং মার্চ’ শুরু করেন।
মিছিলটি গুলিস্তান গোলাপ শাহ মাজার, জিরো পয়েন্ট, সচিবালয়, শিক্ষা ভবন, হাই কোর্ট ও মৎস্য ভবন মোড়ে পুলিশের বাধার মুখে পড়লেও তা উপেক্ষা করে কাকরাইল মসজিদের সামনে আসে।
একপর্যায়ে মিছিলটি প্রধান বিচারপতির বাসভবনের সামনে এলে সেখানে পুলিশ টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে।
পরে পুলিশের সঙ্গে বৈঠক করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। সেই আলোচনা ফলপ্রসূ না হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা যমুনায় যান। সেখানে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের সঙ্গে বৈঠক করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষসহ শিক্ষক প্রতিনিধিরা। বৈঠক শেষে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলতে এলে শিক্ষার্থীরা ‘ভুয়া ভুয়া’ বলে স্লোগান দেন। এক পর্যায়ে বোতল ছুড়ে মারা হলে তা উপদেষ্টার মাথায় লাগে।
মাথায় আঘাতের পরে মাহফুজ বলেন, “আপনাদের অপকর্মের মাধ্যমে আপনারা পুলিশের অবস্থানকে নায্যতা দিলেন।”
বিব্রতকর এ ঘটনার মধ্যে কাকরাইল মোড়ে অবস্থান নেওয়া জগন্নাথের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দাবির বিষয়ে উপদেষ্টা সুনির্দিষ্ট কোনো আশ্বাস দেননি। তবে সরকার তাদের দাবি বিবেচনা করছে বলে জানান।
সরকারের তরফে ‘নিশ্চিত আশ্বাস’ না পেয়ে আন্দোলনকারীরা রাতভর কাকরাইল মসজিদ মোড়ের সড়কে অবস্থান করেন ও স্লোগান দিতে থাকেন।
বৃহস্পতিবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রইছ উদদীন ফেইসবুক লাইভে এসে আন্দোলনে যোগ দিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান। তার ডাকে সাড়া দিয়ে দিনভর অন্তত ৪০টি একতলা ও দোতলা বাসে করে শিক্ষার্থীরা কাকড়াইল মোড়ে আসেন। আর শিক্ষকদের অন্তত আটটি মিনিবাস ঘটনাস্থলে আসে।
সকাল ১০পার পর থেকে কাকরাইল মসজিদ মোড়ে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শরিক হতে একের পর এক বাস নিয়ে আসেন সতীর্থরা। এ আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে অংশ নেন বিপুল সংখ্যক শিক্ষকও।
এরপর দিনভর শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি মধ্যরাত পর্যন্ত গড়ালেও সরকারের পক্ষ থেকে আশানুরূপ কোন সাড়া না পাওয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক বৈঠক করেন।
বৈঠক শেষে রাত ১২টার কিছু আগে গণঅনশন কর্মসূচি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন অধ্যাপক রইছ উদদীন।
তারা সেখানে আগের রাতের মত বৃহস্পতিবার রাতেও অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার কথা বলেন।