কাশেম হুমায়ূন
বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া বাংলাদেশকে কল্পনা করা যায় না। আর উন্নত বাংলাদেশকে ভাবা যায় না শেখ হাসিনাকে ছাড়া। বঙ্গবন্ধু তনয়ার নিরলস পরিশ্রমের ফলেই আজকের বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অনন্য মর্যাদায় আসীন হয়েছে। বিশ্ব পরিম-লে কেবল নিজেই আলোকিত হননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আলোকিত হচ্ছে দেশও। তিনি উন্নত বাংলাদেশের কাণ্ডারী।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারিয়ে যে জাতি দিশা হারিয়েছিল তাকে আবার পথ দেখিয়েছেন তিনি। পঁচাত্তরের ঘাতক ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের চোখ রাঙ্গানি উপেক্ষা করেই দেশে ফেরেন তিনি। শেখ হাসিনা ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন, কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি হয়েছেন। তার রক্তের মধ্যেই রাজনৈতিক গুণাবলী বহমান। ১৯৮১ সালের ১৩-১৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে নৌকার হাল ধরার ঐতিহাসিক দায়িত্ব বর্তে তার ওপর। দেশান্তরি শেখ হাসিনাকে করা হয় দলের সভাপতি। শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ১৭ মে তারিখটিকে ভিন্ন চিহ্ন দিয়েছে। পঁচাত্তরের আগস্ট ট্র্যাজেডির ছয় বছর পর দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন তিনি। সেই যে এগোচ্ছেন, থামেননি কখনো। তাকে থামানো যায়নি। বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার পথে একরত্তি ছাড়ও দিচ্ছেন না তিনি।
তার পথচলা কখনো মসৃণ ছিল না। ১৯৮৩ সালের ১৬ আগস্ট তার ওপর ঢাকায় হামলা হয়। ১৯৮৬ সালের ১৬ অক্টোবর তার বাসভবনে হামলা চালানো হয়। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে একটি মিছিল নগরীর দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় তার ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে ২৪ জন নিহত হন। ১৯৮৯ সালের ১১ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে থাকাকালে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের সংগঠন ফ্রিডম পার্টির ক্যাডাররা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়ে। ১৯৯১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনের সময় ধানমন্ডিতে তার ওপর বন্দুকধারীরা রাসেল স্কোয়ারে আক্রমণ চালায়। ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ট্রেনে ভ্রমণকালে ঈশ্বরদী ও নাটোরে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা জননেত্রীর ওপর গুলিবর্ষণ করেছিল।
এভাবেই দেশ-বিদেশে কখনো গোপনে কখনোবা প্রকাশ্যে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ২০০০ সালের ২০ জুলাই পূর্বনির্ধারিত জনসভাস্থল কোটালিপাড়া থেকে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পুঁতে রাখা ৭৬ কেজি বিস্ফোরকের বোমা উদ্ধার করা হয়। ২০০৪ সালের ৫ জুলাই তুরস্কে সফরের সময় জননেত্রীকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ছিল ভয়াবহতম দিন। অজস্র গ্রেনেড নিক্ষেপের পরও নেতাকর্মীদের মানবঢালের বেষ্টনীর কারণে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধু কন্যা।
১২ জুন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেন এবং ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০১ সালের পাতানো নির্বাচনে শেখ হাসিনা সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভে ব্যর্থ হন। বিএনপি ক্ষমতা লাভ করে। ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী জরুরি অবস্থার সরকার আমলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ২০০৮ সালের জুন মাসে মুক্তি লাভ করেন। সেই বছরের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে মহাজোট এবং জাতীয় পার্টির সঙ্গে একজোট হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জিতে দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালেও। একটানা রাষ্ট্র পরিচালনার সুবাদে তিনি বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, গভীর সমুদ্রবন্দর প্রভৃতি বড় প্রকল্পের বাস্তবায়নই মনে করিয়ে দিচ্ছে শেখ হাসিনা প্রকৃতপক্ষে আলাদা, ভিন্ন, স্বতন্ত্র ও নেতৃত্বের গৌরবজনক আসনে সমাসীন।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি বন্ধ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচার, জেল হত্যাকা-ের বিচারসহ একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ২০২০ সালে করোনা সংকট মোকাবিলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছে মার্কিন ম্যাগাজিন ‘ফোর্বস’। অন্যদিকে ব্রিটেনের ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ মহামারীর মধ্যেও এ দেশের অর্থনীতির নিরাপত্তা বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিবেদন ছাপিয়েছে। আবার ২০২১ সালের প্রথম মাস থেকেই ভ্যাকসিন হিরোর দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। কারণ সব কুসংস্কার ও অপপ্রচার মুক্ত হয়ে দেশের মানুষকে টিকা নিতে উৎসাহী করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বর্তমান প্রজন্মের কাছে শেখ হাসিনা এক সাহসী রাজনীতিকের নাম; যার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় ভবিষ্যতের বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে চলেছে।
কাশেম হুমায়ূন
মঙ্গলবার, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া বাংলাদেশকে কল্পনা করা যায় না। আর উন্নত বাংলাদেশকে ভাবা যায় না শেখ হাসিনাকে ছাড়া। বঙ্গবন্ধু তনয়ার নিরলস পরিশ্রমের ফলেই আজকের বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে অনন্য মর্যাদায় আসীন হয়েছে। বিশ্ব পরিম-লে কেবল নিজেই আলোকিত হননি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আলোকিত হচ্ছে দেশও। তিনি উন্নত বাংলাদেশের কাণ্ডারী।
পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হারিয়ে যে জাতি দিশা হারিয়েছিল তাকে আবার পথ দেখিয়েছেন তিনি। পঁচাত্তরের ঘাতক ও স্বাধীনতাবিরোধী চক্রের চোখ রাঙ্গানি উপেক্ষা করেই দেশে ফেরেন তিনি। শেখ হাসিনা ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন, কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি হয়েছেন। তার রক্তের মধ্যেই রাজনৈতিক গুণাবলী বহমান। ১৯৮১ সালের ১৩-১৫ ফেব্রুয়ারি আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে নৌকার হাল ধরার ঐতিহাসিক দায়িত্ব বর্তে তার ওপর। দেশান্তরি শেখ হাসিনাকে করা হয় দলের সভাপতি। শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন ১৭ মে তারিখটিকে ভিন্ন চিহ্ন দিয়েছে। পঁচাত্তরের আগস্ট ট্র্যাজেডির ছয় বছর পর দেশে ফিরে আওয়ামী লীগের হাল ধরেন তিনি। সেই যে এগোচ্ছেন, থামেননি কখনো। তাকে থামানো যায়নি। বাংলাদেশকে উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়ার পথে একরত্তি ছাড়ও দিচ্ছেন না তিনি।
তার পথচলা কখনো মসৃণ ছিল না। ১৯৮৩ সালের ১৬ আগস্ট তার ওপর ঢাকায় হামলা হয়। ১৯৮৬ সালের ১৬ অক্টোবর তার বাসভবনে হামলা চালানো হয়। ১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চট্টগ্রাম বিমানবন্দর থেকে একটি মিছিল নগরীর দিকে এগিয়ে যাওয়ার সময় তার ওপর গুলিবর্ষণ করা হয়। এতে ২৪ জন নিহত হন। ১৯৮৯ সালের ১১ আগস্ট ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসভবনে থাকাকালে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনিদের সংগঠন ফ্রিডম পার্টির ক্যাডাররা শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি ছোড়ে। ১৯৯১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর জাতীয় সংসদের উপনির্বাচনের সময় ধানমন্ডিতে তার ওপর বন্দুকধারীরা রাসেল স্কোয়ারে আক্রমণ চালায়। ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর ট্রেনে ভ্রমণকালে ঈশ্বরদী ও নাটোরে অজ্ঞাত বন্দুকধারীরা জননেত্রীর ওপর গুলিবর্ষণ করেছিল।
এভাবেই দেশ-বিদেশে কখনো গোপনে কখনোবা প্রকাশ্যে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। ২০০০ সালের ২০ জুলাই পূর্বনির্ধারিত জনসভাস্থল কোটালিপাড়া থেকে শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে পুঁতে রাখা ৭৬ কেজি বিস্ফোরকের বোমা উদ্ধার করা হয়। ২০০৪ সালের ৫ জুলাই তুরস্কে সফরের সময় জননেত্রীকে হত্যার হুমকি দেয়া হয়েছিল। ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ছিল ভয়াবহতম দিন। অজস্র গ্রেনেড নিক্ষেপের পরও নেতাকর্মীদের মানবঢালের বেষ্টনীর কারণে প্রাণে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধু কন্যা।
১২ জুন ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে শেখ হাসিনা সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেন এবং ১৯৯৬ সালের ২৩ জুন তার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০০১ সালের পাতানো নির্বাচনে শেখ হাসিনা সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভে ব্যর্থ হন। বিএনপি ক্ষমতা লাভ করে। ওয়ান-ইলেভেন পরবর্তী জরুরি অবস্থার সরকার আমলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তিনি ২০০৮ সালের জুন মাসে মুক্তি লাভ করেন। সেই বছরের ২৯ ডিসেম্বর নির্বাচনে মহাজোট এবং জাতীয় পার্টির সঙ্গে একজোট হয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। তার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জিতে দ্বিতীয়বারের মতো সরকার গঠন করে। এরপর ২০১৪ এবং ২০১৮ সালেও। একটানা রাষ্ট্র পরিচালনার সুবাদে তিনি বাংলাদেশের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটাতে সক্ষম হয়েছেন। পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, গভীর সমুদ্রবন্দর প্রভৃতি বড় প্রকল্পের বাস্তবায়নই মনে করিয়ে দিচ্ছে শেখ হাসিনা প্রকৃতপক্ষে আলাদা, ভিন্ন, স্বতন্ত্র ও নেতৃত্বের গৌরবজনক আসনে সমাসীন।
শেখ হাসিনার শাসন আমলে বিচারহীনতার অপসংস্কৃতি বন্ধ হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচার, জেল হত্যাকা-ের বিচারসহ একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের বিচার তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। ২০২০ সালে করোনা সংকট মোকাবিলায় শেখ হাসিনার নেতৃত্বের প্রশংসা করেছে মার্কিন ম্যাগাজিন ‘ফোর্বস’। অন্যদিকে ব্রিটেনের ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ মহামারীর মধ্যেও এ দেশের অর্থনীতির নিরাপত্তা বিষয়ে ইতিবাচক প্রতিবেদন ছাপিয়েছে। আবার ২০২১ সালের প্রথম মাস থেকেই ভ্যাকসিন হিরোর দেশে পরিণত হয়েছে বাংলাদেশ। কারণ সব কুসংস্কার ও অপপ্রচার মুক্ত হয়ে দেশের মানুষকে টিকা নিতে উৎসাহী করেছেন স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বর্তমান প্রজন্মের কাছে শেখ হাসিনা এক সাহসী রাজনীতিকের নাম; যার সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনায় ভবিষ্যতের বাংলাদেশ উন্নয়নের ধারায় এগিয়ে চলেছে।