alt

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

: শনিবার, ১৯ আগস্ট ২০২৩

আপনাকে আর কী করতে হবে
আসমা চৌধুরী
সব গাছের নিচে আশ্রয় হয় না
বৃষ্টি পড়ে,ছাতা উড়ে যায়,ভিজে যায় চোখ
সব গাছ শেকড় ছড়ায় না,উবু হয়ে থাকে।

রংধনু মিলিয়ে গেলে মনে পড়ে সে এসেছিলো
ছুটে যেতে যেতে মিলিয়ে যায় ট্রেনের বগি
পেছনে পড়ে থাকে তার বুক ভাজা ধোঁয়া
হারিয়েযাওয়া স্টেশন তখনো সাময়িক স্মৃতি।

আপনাকে মনে করতে হবে প্লাটফর্মে কে ছিলো
ঋণ দিয়ে, যে স্বজন দাঁড়িয়ে থাকে,তাদের কাছে
তুলে দিন আপনার মেখে নেয়া চাঁদ,
আঁতুর ঘর থেকে শব্দ করে যে যাত্রা শুরু হয়
তার শুরু কোনদিন শেষ হয় না।

বিজ্ঞাপনের মতো নিজেকে দেখিয়ে বলুন
হৃৎপিণ্ড জল হয়ে গেছে,উষ্ণতা নেই
সত্যিকথা বলতে কি, মৃত্যু একবার আসে না
তার চেহারা নীল,হলুদ,লাল,খয়েরি।

পৃথিবীটা একটা গামছা পরে দাঁড়িয়ে থাকলে
মানুষের শরীর কখনো পুরোটা ঢাকে না
তার অনাবৃত অংশ শূন্যতা আর যোগফলে
মনে করিয়ে দেয়,কত তুচ্ছ তুমি।

আপনাকে আর কী করতে হবে,ভাবুন
উনুন তৈরি, সেদ্ধ হবে গোটা জীবন।

বটবৃক্ষ
মাসুদ অর্ণব
বড় হওয়া সংগ্রামী মানুষ দেখলে
আমার ভাবনায় বটবৃক্ষের হাওয়া লাগে;
আর হাওয়া পেলে বৃক্ষ হওয়ার স্বপ্নপাখি
দ্রুত ডানা মেলে আমার ছোট্ট আকাশে।

বটবৃক্ষেরও থাকে আনন্দ-বেদনার
অলিখিত পাণ্ডুলিপি, থাকে শূন্যতার
অদেখা বৃৎ বাগান- সেই শূন্য বাগানে
কোনো ফুল ফুটলে আমিও পাই
অদূরে বয়ে যাওয়া বৃষ্টির হিমেল হাওয়া।

বটবৃক্ষরা ভালো থাকলে- ভালো থাকে
পথিক; হোক না কোনো অচেনা ক্লান্ত পথিক।

শীতরাত
জয়নাল আবেদীন শিবু
ধবল দুধের নহর উপছে পড়ছে চারদিকে
আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ
উজ্জ্বলিত দীপ্তিতে তোমার দেহ ভাসে
ভুল নয় সংবাদ
পর্দা খুলে দাও, খুলে দাও দেহ-দরোজার
দেখুক অন্তর্যামী
চাদনীশয্যায় খোলো সোনালি সুড়ঙ্গ, শরীরবিতানে
শীতরাত হোক- দীর্ঘ রতিকামী!

আশ
শিপা সুলতানা
যেমন করে ছাড়ো তুমি শ্বাস
দিনে দিনে বাড়েবাঁচার আশ
একদিন আমার তুমি হবে
কুয়োর জলে স্নান করিবে
নদীর জলে করবো মানব চাষ

আমায় দেখোনি তুমি, আমিও না
দিনে দিনে বাড়েনা দেখার দেনা
তোমার বাড়ির ভাঙ্গাচোরা পথ
আমার ত্রিভুবন স্বর্গে যাবার রথ
দেখলে তোমায়মিটবে লেনাদেনা

পৃথিবীতে এতো শব্দতামায়শুনিনা
এতো মানুষ পৃথিবীতে তোমায় দেখিনা
বলবে মাত্র দেখেছি, সাত বছর, বিশ
বলবে মাত্র ছুঁয়েছি, নরোম, দোয়েলের শিষ
খুঁজে খুঁজে তোমার চোখে আমায়মিলেনা

এমন করে ছাড়ো তুমি শ্বাস
দিনে দিনে বাড়েমরার আশ
পরজনমে আমার তুমি হইও
নীল রঙের তিল হয়েরইও
গলার পাশে, কলঙ্কের বাস...

অনন্ত অঙ্গীকার
বেনজির শিকদার
আমারে বিকিয়ে দিয়ে ডাকো যদি ফের
সাজিয়ে বেহুলার ভাসান বিষক্রিয়া ঢের;
ভুলে গিয়ে অতীন্দ্রিয় অসুখ-
প্রাচীন অভিমানে পোষা অন্তর্গত দাগ;
ফিরবো নিয়তির ফলায় দারুশিল্পেরশাণিত অতীত।

যদি বাউকুড়ানির ঠোঁটে ওড়ে শিরীষের ক্লেদ;
ভোরের নদী হয় স্বাদহীন অনার্য তুহিন;
বয়োজ্যেষ্ঠর-আব্রু সন্ধ্যায়-
আমূল উচ্ছেদে ঘুচিয়ে পাণ্ডুলিপির দেনা
ফিরবো কামাগ্নি গোলাপের মতো আদি উৎসমূলে!

পাখামেলা গাঙচিল মৃগনয়নার চোখে-
পাই যদি অন্তিম যাত্রায় কেতাদুরস্ত অবহেলা;
যদি রাশভারি ব্যঙ্গাত্মকে হাসে দুঃখের মহানৃত্য
লুকিয়ে শতাব্দীপ্রাচীন উলঙ্গ দগদগে ঘা;
ফুটবে সৌন্দর্যের ভাঁজ- পাঁচীর মতো দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে।

চাইলে ঈশ্বরকে বসিয়ে রেখে-
হতে পারি স্ফটিকশুভ্র এক আজন্ম তীর্থের কাক।
পারের কড়ির মতো যদি পেয়ে যাও অন্য কোনো হাত
প্রসারিত করে আত্মার সম্পর্ক, বলবো না- চলো সাজাই
নক্ষত্রভরা এক বিচ্ছুরিত বৈদুর্যের বিশুদ্ধ বন্ধনী রাত।

আমারে ডেকে ডেকে বেচো যদি ফের
আদিগন্ত অদৃষ্ট হয়ে-
পুনরায় ভেড়াও অনিন্দ্য গরলের ভাগেই
মহাবিভীষিকায় বলবো না, দোহাই লাগে!
পান করে সনাতনী মৃত্যু, নিয়তির কসম-
দেউলিয়া হবো এখানে সন্ধে নামার আগেই।

আমাদের প্রেম হয়ে গেছে
নিজাম বিশ্বাস
আমাদের প্রেম হয়ে গেছে-
শহরের অলিতে গলিতে গড়ে উঠেছে
যাত্রীছাউনি,
নির্বিবাদে বৃষ্টিতে হলো না ভেজা

স্লোগানমুখর দেয়ালে জন্মেছে
শ্যাওলার গ্রাফিতি
আমাদের প্রেম হয়ে গেছে-
উড়াল পথের স্বপ্নে বিভোর ঢাকা,
হুডতোলা রিক্সায় হলো না যাওয়া

বুকের গহিন ছিঁড়ে চলে গেছে
মেট্রোরেলের চাকা

কংক্রিটের দোয়েল শিস্ দেয় হুইসেলে

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

সূর্যের দেশ

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

লড়াই

সাময়িকী কবিতা

ছবি

প্রচলিত সাহিত্যধারার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন মধুসূদন

ছবি

মেধাসম্পদের ছন্দে মাতুন

ছবি

উত্তর-মানবতাবাদ ও শিল্প-সাহিত্যে তার প্রভাব

ছবি

আমজাদ হোসেনের ‘ভিন্ন ভাষার কবিতা’

সাময়িকী কবিতা

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

দুই ঋতপার কিসসা এবং এক ন্যাকা চৈতন্য

ছবি

অন্যজীবন অন্যআগুন ছোঁয়া

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

কবিজীবন, দর্শন ও কাব্যসন্ধান

ছবি

অসামান্য গদ্যশৈলীর রূপকার

ছবি

পিয়াস মজিদের ‘রূপকথার রাস্তাঘাট’

ছবি

নজরুলের নিবেদিত কবিতা : অর্ঘ্যরে শিল্পরূপ

ছবি

বাঘাডাঙা গাঁও

ছবি

বুদ্ধদেব বসুর ‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী’ বিষয়ভাবনা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

পথকবিতা: লোকবাংলার সাধারণ কবিতা

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

ক্ষমতার ভাষার বিপরীতে মাতৃভাষার সাধনা

ছবি

ফিলিস্তিনের বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে অণুগল্প

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

শিল্পী সুনীল কুমারের ‘পথের গল্প’-এর স্বরূপ

ছবি

রাত গভীর

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

‘এ নয় আঁখিজল’

জ্যৈষ্ঠের পদাবলি

ছবি

ওসামা অ্যালোমারের একঝুড়ি খুদে গল্প

সাময়িকী কবিতা

ছবি

‘ব্রহ্মপুত্র দাঁড়াও’ কাব্যগ্রন্থে নীলদ্রোহের রেখাপাত

ছবি

নার্গিস-নজরুলের স্মৃতিধন্য দৌলতপুরে একদিন

tab

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

শনিবার, ১৯ আগস্ট ২০২৩

আপনাকে আর কী করতে হবে
আসমা চৌধুরী
সব গাছের নিচে আশ্রয় হয় না
বৃষ্টি পড়ে,ছাতা উড়ে যায়,ভিজে যায় চোখ
সব গাছ শেকড় ছড়ায় না,উবু হয়ে থাকে।

রংধনু মিলিয়ে গেলে মনে পড়ে সে এসেছিলো
ছুটে যেতে যেতে মিলিয়ে যায় ট্রেনের বগি
পেছনে পড়ে থাকে তার বুক ভাজা ধোঁয়া
হারিয়েযাওয়া স্টেশন তখনো সাময়িক স্মৃতি।

আপনাকে মনে করতে হবে প্লাটফর্মে কে ছিলো
ঋণ দিয়ে, যে স্বজন দাঁড়িয়ে থাকে,তাদের কাছে
তুলে দিন আপনার মেখে নেয়া চাঁদ,
আঁতুর ঘর থেকে শব্দ করে যে যাত্রা শুরু হয়
তার শুরু কোনদিন শেষ হয় না।

বিজ্ঞাপনের মতো নিজেকে দেখিয়ে বলুন
হৃৎপিণ্ড জল হয়ে গেছে,উষ্ণতা নেই
সত্যিকথা বলতে কি, মৃত্যু একবার আসে না
তার চেহারা নীল,হলুদ,লাল,খয়েরি।

পৃথিবীটা একটা গামছা পরে দাঁড়িয়ে থাকলে
মানুষের শরীর কখনো পুরোটা ঢাকে না
তার অনাবৃত অংশ শূন্যতা আর যোগফলে
মনে করিয়ে দেয়,কত তুচ্ছ তুমি।

আপনাকে আর কী করতে হবে,ভাবুন
উনুন তৈরি, সেদ্ধ হবে গোটা জীবন।

বটবৃক্ষ
মাসুদ অর্ণব
বড় হওয়া সংগ্রামী মানুষ দেখলে
আমার ভাবনায় বটবৃক্ষের হাওয়া লাগে;
আর হাওয়া পেলে বৃক্ষ হওয়ার স্বপ্নপাখি
দ্রুত ডানা মেলে আমার ছোট্ট আকাশে।

বটবৃক্ষেরও থাকে আনন্দ-বেদনার
অলিখিত পাণ্ডুলিপি, থাকে শূন্যতার
অদেখা বৃৎ বাগান- সেই শূন্য বাগানে
কোনো ফুল ফুটলে আমিও পাই
অদূরে বয়ে যাওয়া বৃষ্টির হিমেল হাওয়া।

বটবৃক্ষরা ভালো থাকলে- ভালো থাকে
পথিক; হোক না কোনো অচেনা ক্লান্ত পথিক।

শীতরাত
জয়নাল আবেদীন শিবু
ধবল দুধের নহর উপছে পড়ছে চারদিকে
আকাশে পূর্ণিমার চাঁদ
উজ্জ্বলিত দীপ্তিতে তোমার দেহ ভাসে
ভুল নয় সংবাদ
পর্দা খুলে দাও, খুলে দাও দেহ-দরোজার
দেখুক অন্তর্যামী
চাদনীশয্যায় খোলো সোনালি সুড়ঙ্গ, শরীরবিতানে
শীতরাত হোক- দীর্ঘ রতিকামী!

আশ
শিপা সুলতানা
যেমন করে ছাড়ো তুমি শ্বাস
দিনে দিনে বাড়েবাঁচার আশ
একদিন আমার তুমি হবে
কুয়োর জলে স্নান করিবে
নদীর জলে করবো মানব চাষ

আমায় দেখোনি তুমি, আমিও না
দিনে দিনে বাড়েনা দেখার দেনা
তোমার বাড়ির ভাঙ্গাচোরা পথ
আমার ত্রিভুবন স্বর্গে যাবার রথ
দেখলে তোমায়মিটবে লেনাদেনা

পৃথিবীতে এতো শব্দতামায়শুনিনা
এতো মানুষ পৃথিবীতে তোমায় দেখিনা
বলবে মাত্র দেখেছি, সাত বছর, বিশ
বলবে মাত্র ছুঁয়েছি, নরোম, দোয়েলের শিষ
খুঁজে খুঁজে তোমার চোখে আমায়মিলেনা

এমন করে ছাড়ো তুমি শ্বাস
দিনে দিনে বাড়েমরার আশ
পরজনমে আমার তুমি হইও
নীল রঙের তিল হয়েরইও
গলার পাশে, কলঙ্কের বাস...

অনন্ত অঙ্গীকার
বেনজির শিকদার
আমারে বিকিয়ে দিয়ে ডাকো যদি ফের
সাজিয়ে বেহুলার ভাসান বিষক্রিয়া ঢের;
ভুলে গিয়ে অতীন্দ্রিয় অসুখ-
প্রাচীন অভিমানে পোষা অন্তর্গত দাগ;
ফিরবো নিয়তির ফলায় দারুশিল্পেরশাণিত অতীত।

যদি বাউকুড়ানির ঠোঁটে ওড়ে শিরীষের ক্লেদ;
ভোরের নদী হয় স্বাদহীন অনার্য তুহিন;
বয়োজ্যেষ্ঠর-আব্রু সন্ধ্যায়-
আমূল উচ্ছেদে ঘুচিয়ে পাণ্ডুলিপির দেনা
ফিরবো কামাগ্নি গোলাপের মতো আদি উৎসমূলে!

পাখামেলা গাঙচিল মৃগনয়নার চোখে-
পাই যদি অন্তিম যাত্রায় কেতাদুরস্ত অবহেলা;
যদি রাশভারি ব্যঙ্গাত্মকে হাসে দুঃখের মহানৃত্য
লুকিয়ে শতাব্দীপ্রাচীন উলঙ্গ দগদগে ঘা;
ফুটবে সৌন্দর্যের ভাঁজ- পাঁচীর মতো দৃশ্য থেকে দৃশ্যান্তরে।

চাইলে ঈশ্বরকে বসিয়ে রেখে-
হতে পারি স্ফটিকশুভ্র এক আজন্ম তীর্থের কাক।
পারের কড়ির মতো যদি পেয়ে যাও অন্য কোনো হাত
প্রসারিত করে আত্মার সম্পর্ক, বলবো না- চলো সাজাই
নক্ষত্রভরা এক বিচ্ছুরিত বৈদুর্যের বিশুদ্ধ বন্ধনী রাত।

আমারে ডেকে ডেকে বেচো যদি ফের
আদিগন্ত অদৃষ্ট হয়ে-
পুনরায় ভেড়াও অনিন্দ্য গরলের ভাগেই
মহাবিভীষিকায় বলবো না, দোহাই লাগে!
পান করে সনাতনী মৃত্যু, নিয়তির কসম-
দেউলিয়া হবো এখানে সন্ধে নামার আগেই।

আমাদের প্রেম হয়ে গেছে
নিজাম বিশ্বাস
আমাদের প্রেম হয়ে গেছে-
শহরের অলিতে গলিতে গড়ে উঠেছে
যাত্রীছাউনি,
নির্বিবাদে বৃষ্টিতে হলো না ভেজা

স্লোগানমুখর দেয়ালে জন্মেছে
শ্যাওলার গ্রাফিতি
আমাদের প্রেম হয়ে গেছে-
উড়াল পথের স্বপ্নে বিভোর ঢাকা,
হুডতোলা রিক্সায় হলো না যাওয়া

বুকের গহিন ছিঁড়ে চলে গেছে
মেট্রোরেলের চাকা

কংক্রিটের দোয়েল শিস্ দেয় হুইসেলে

back to top