alt

সাময়িকী

‘লাল গহনা’ উপন্যাসে বিষয়ের গভীরতা

: বুধবার, ২৩ আগস্ট ২০২৩

‘লাল গহনা’ নামকরণের মধ্যে এক ধরনের প্রতীকী ব্যঞ্জনা ধারণা করা যায়। এটি একটি উপন্যাস। লেখক ড. মোজাম্মেল হোসেন রতন। উপন্যাসের পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে ঘটনার উল্লম্ফনতা, তীব্রতা ও পরের ঘটনাগুলো জানবার তীব্র আগ্রহ। এটিই সাধারণত একটি ভাল লেখার বৈশিষ্ট্য; যা পাঠককে ধরে রাখতে সক্ষম। যখন কোনো রচনার মধ্যে বুঁদ হয়ে পাঠক তা পাঠ করেন, সেখানেই লেখকের সার্থকতা লুক্কায়িত থাকে। এ গ্রন্থের রচয়িতা মোজাম্মেল হোসেন নিজের সার্থকতা দাবি করতে পারেন। লেখক ব্যক্তিগতভাবে একজন চিকিৎসক ও গবেষক। লেখালেখি তার নেশা। এবং লেখালেখির মাধ্যম কথাসাহিত্য। লেখকের পুরো পরিবার মুক্তিযুদ্ধের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। ১৯৮৮ সালে তিনি ঢাকা ডেন্টাল কলেজ থেকে ¯œাতক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। ১৯৯০ সালে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশে জাপানে যান এবং ১৯৯৬ সালে হোক্কাইডো ইউনিভার্সিটি থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে দশ বছর টোকিও শোওয়া ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। লেজার টেকনোলোজিতে তাঁর লেখা ৫০টির বেশি আর্টিকেল আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ২০০২ সালে বেলজিয়ামে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ড ডেন্টাল কংগ্রেসে গবেষণায় অর্জন করেন ইয়াং রিসার্চার এওয়ার্ড। বর্তমানে গ্রন্থরচয়িতা মোজাম্মেল হোসেন রতন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। ২০২১ সালে অর্জন করেছেন শ্রেষ্ঠ গবেষক পদক। অধ্যাপনার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের গবেষক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে।

লেখকের ‘লাল গহনা’ বইটি একটি রাজনৈতিক সচেতনতামূলক গ্রন্থ। বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের উন্মোচন করা হয়েছে গ্রন্থে। স্বাধীনতার পর বিশেষ করে নব্বইয়ের দশক থেকে বাংলাদেশে যে জঙ্গি হামলার ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে; তা সমগ্র বাংলার স্বাধীনতার চেতনাকে লজ্জিত ও কলঙ্কিত করেছে। বোমা মেরে নিরীহ মানুষ হত্যা করা, বিশেষ করে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এই আঘাতের তীব্রতা সমগ্র জাতিকে বিস্মিত করে দেন। দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে। এই বোমা মেরে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান তথা নিরীহ জনগণকে হত্যার বিষয়টি লেখক মোজাম্মেল হোসেন রতনকে তীব্রভাগে তাড়িত করে, বেদনাহত করে। যে কারণে তিনি তাঁর হাতে থাকা লেখনীকে ঘটনার গভীরে নিয়ে উপন্যাস রচনা করেন। যার অনন্য উদাহরণ ‘লাল গহনা’ বইটি। এ বইতে লাল গহনা বলতে বোমাকে বোঝানো হয়েছে। বোমার পোঁটলাকে ‘লাল গহনা’ প্রতীকী নামে ডাকে চরিত্রের হামলাকারীরা। লেখকের বর্ণনায়:

“পরদিন স্টেজের আশেপাশে কয়েকটি হগনার পোঁটলা দ্রুত পুতে রেখে সরে পড়ল ওরা। দলে দলে লোকজন এগিয়ে চলছে, সাথে বৈশাখের গান: এসো হে বৈশাখ, এসো এসো।

আরিফ হাসান সুমন নিজের পকেটে রাখা গহনার পোঁটলাটি হাত দিয়ে ছুঁয়ে বলল, আজ আমরা বাঙালিদের একটি রক্তাক্ত বৈশাখ উপহার দিবো।”

এখান থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়- রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের বোমা হামলাকে লেখক উপন্যাসের ভাষায় বিবৃত করেছেন। সমগ্র উপন্যাসটি এমন ঘটনাতাড়িত লেখকের সরস বর্ণনা। উপন্যাসটি পাঠককে একটি অসাম্প্রদায়িক ও জঙ্গীবাদবিরোধী বাংলাদেশের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ধারণা দিবে। পাঠক সচেতন হবেন, এবং এজাতীয় ঘটনার নির্মমতা যে কত গভীর তা বুঝতে সক্ষম হবেন।

২০২২ সালের অমর একুশে বইমেলায় গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে হাওলাদার প্রকাশনী। প্রচ্ছদ করেছেন সজীব ওয়ার্সী। মূল্য : ৪০০.০০ টাকা। -সাময়িকী প্রতিবেদক

ছবি

ওবায়েদ আকাশের বাছাই ৩২ কবিতা

ছবি

‘অঞ্জলি লহ মোর সঙ্গীতে’

ছবি

স্মৃতির অতল তলে

ছবি

দেহাবশেষ

ছবি

যাদুবাস্তবতা ও ইলিয়াসের যোগাযোগ

ছবি

বাংলার স্বাধীনতা আমার কবিতা

ছবি

মিহির মুসাকীর কবিতা

ছবি

শুশ্রƒষার আশ্রয়ঘর

ছবি

সময়োত্তরের কবি

ছবি

নাট্যকার অভিনেতা পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৭৪

ছবি

মহত্ত্বম অনুভবে রবিউল হুসাইন

ছবি

‘শৃঙ্খল মুক্তির জন্য কবিতা’

ছবি

স্মৃতির অতল তলে

ছবি

মোহিত কামাল

ছবি

আশরাফ আহমদের কবিতা

ছবি

‘আমাদের সাহিত্যের আন্তর্জাতিকীকরণে আমাদেরই আগ্রহ নেই’

ছবি

ছোটগল্পের অনন্যস্বর হাসান আজিজুল হক

‘দীপান্বিত গুরুকুল’

ছবি

নাসির আহমেদের কবিতা

ছবি

শেষ থেকে শুরু

সাময়িকী কবিতা

ছবি

স্মৃতির অতল তলে

ছবি

রবীন্দ্রবোধন

ছবি

বাঙালির ভাষা-সাহিত্য-সংস্কৃতি হয়ে ওঠার দীর্ঘ সংগ্রাম

ছবি

হাফিজ রশিদ খানের নির্বাচিত কবিতা আদিবাসীপর্ব

ছবি

আনন্দধাম

ছবি

কান্নার কুসুমে চিত্রিত ‘ধূসরযাত্রা’

সাময়িকী কবিতা

ছবি

ফারুক মাহমুদের কবিতা

ছবি

পল্লীকবি জসীম উদ্দীন ও তাঁর অমর সৃষ্টি ‘আসমানী’

ছবি

‘অঞ্জলি লহ মোর সঙ্গীতে’

ছবি

পরিবেশ-সাহিত্যের নিরলস কলমযোদ্ধা

ছবি

আব্দুলরাজাক গুনরাহর সাহিত্যচিন্তা

ছবি

অমিতাভ ঘোষের ‘গান আইল্যান্ড’

ছবি

‘অঞ্জলি লহ মোর সঙ্গীতে’

ছবি

স্মৃতির অতল তলে

tab

সাময়িকী

‘লাল গহনা’ উপন্যাসে বিষয়ের গভীরতা

বুধবার, ২৩ আগস্ট ২০২৩

‘লাল গহনা’ নামকরণের মধ্যে এক ধরনের প্রতীকী ব্যঞ্জনা ধারণা করা যায়। এটি একটি উপন্যাস। লেখক ড. মোজাম্মেল হোসেন রতন। উপন্যাসের পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে ঘটনার উল্লম্ফনতা, তীব্রতা ও পরের ঘটনাগুলো জানবার তীব্র আগ্রহ। এটিই সাধারণত একটি ভাল লেখার বৈশিষ্ট্য; যা পাঠককে ধরে রাখতে সক্ষম। যখন কোনো রচনার মধ্যে বুঁদ হয়ে পাঠক তা পাঠ করেন, সেখানেই লেখকের সার্থকতা লুক্কায়িত থাকে। এ গ্রন্থের রচয়িতা মোজাম্মেল হোসেন নিজের সার্থকতা দাবি করতে পারেন। লেখক ব্যক্তিগতভাবে একজন চিকিৎসক ও গবেষক। লেখালেখি তার নেশা। এবং লেখালেখির মাধ্যম কথাসাহিত্য। লেখকের পুরো পরিবার মুক্তিযুদ্ধের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। ১৯৮৮ সালে তিনি ঢাকা ডেন্টাল কলেজ থেকে ¯œাতক শিক্ষা সমাপ্ত করেন। ১৯৯০ সালে উচ্চশিক্ষার উদ্দেশে জাপানে যান এবং ১৯৯৬ সালে হোক্কাইডো ইউনিভার্সিটি থেকে চিকিৎসাশাস্ত্রে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। ১৯৯৮ সাল থেকে দশ বছর টোকিও শোওয়া ইউনিভার্সিটিতে ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। লেজার টেকনোলোজিতে তাঁর লেখা ৫০টির বেশি আর্টিকেল আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। ২০০২ সালে বেলজিয়ামে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ড ডেন্টাল কংগ্রেসে গবেষণায় অর্জন করেন ইয়াং রিসার্চার এওয়ার্ড। বর্তমানে গ্রন্থরচয়িতা মোজাম্মেল হোসেন রতন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয়ে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত আছেন। ২০২১ সালে অর্জন করেছেন শ্রেষ্ঠ গবেষক পদক। অধ্যাপনার পাশাপাশি মুক্তিযুদ্ধের গবেষক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে।

লেখকের ‘লাল গহনা’ বইটি একটি রাজনৈতিক সচেতনতামূলক গ্রন্থ। বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি কলঙ্কজনক অধ্যায়ের উন্মোচন করা হয়েছে গ্রন্থে। স্বাধীনতার পর বিশেষ করে নব্বইয়ের দশক থেকে বাংলাদেশে যে জঙ্গি হামলার ঘটনাগুলো ঘটে চলেছে; তা সমগ্র বাংলার স্বাধীনতার চেতনাকে লজ্জিত ও কলঙ্কিত করেছে। বোমা মেরে নিরীহ মানুষ হত্যা করা, বিশেষ করে দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে এই আঘাতের তীব্রতা সমগ্র জাতিকে বিস্মিত করে দেন। দেশের অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে। এই বোমা মেরে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান তথা নিরীহ জনগণকে হত্যার বিষয়টি লেখক মোজাম্মেল হোসেন রতনকে তীব্রভাগে তাড়িত করে, বেদনাহত করে। যে কারণে তিনি তাঁর হাতে থাকা লেখনীকে ঘটনার গভীরে নিয়ে উপন্যাস রচনা করেন। যার অনন্য উদাহরণ ‘লাল গহনা’ বইটি। এ বইতে লাল গহনা বলতে বোমাকে বোঝানো হয়েছে। বোমার পোঁটলাকে ‘লাল গহনা’ প্রতীকী নামে ডাকে চরিত্রের হামলাকারীরা। লেখকের বর্ণনায়:

“পরদিন স্টেজের আশেপাশে কয়েকটি হগনার পোঁটলা দ্রুত পুতে রেখে সরে পড়ল ওরা। দলে দলে লোকজন এগিয়ে চলছে, সাথে বৈশাখের গান: এসো হে বৈশাখ, এসো এসো।

আরিফ হাসান সুমন নিজের পকেটে রাখা গহনার পোঁটলাটি হাত দিয়ে ছুঁয়ে বলল, আজ আমরা বাঙালিদের একটি রক্তাক্ত বৈশাখ উপহার দিবো।”

এখান থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়- রমনার বটমূলে পহেলা বৈশাখের বোমা হামলাকে লেখক উপন্যাসের ভাষায় বিবৃত করেছেন। সমগ্র উপন্যাসটি এমন ঘটনাতাড়িত লেখকের সরস বর্ণনা। উপন্যাসটি পাঠককে একটি অসাম্প্রদায়িক ও জঙ্গীবাদবিরোধী বাংলাদেশের প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে ধারণা দিবে। পাঠক সচেতন হবেন, এবং এজাতীয় ঘটনার নির্মমতা যে কত গভীর তা বুঝতে সক্ষম হবেন।

২০২২ সালের অমর একুশে বইমেলায় গ্রন্থটি প্রকাশ করেছে হাওলাদার প্রকাশনী। প্রচ্ছদ করেছেন সজীব ওয়ার্সী। মূল্য : ৪০০.০০ টাকা। -সাময়িকী প্রতিবেদক

back to top