alt

সাময়িকী

মিহির মুসাকীর কবিতা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট : রোববার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

কবি মিহির মুসাকী

টোপ
টোপ দেখলেই মুখ বাড়িয়ে হা-করতে নেই,

টোপের আড়ালে বসে থাকতে পারে নিপুণ শিকারী!

হতে পারে সে তোমার পছন্দ জানে,

তাই পেতেছে গোপন ফাঁদ!

এতদিন তোমাকে ক্ষুধার্ত রেখে সে হয়তো মজা দেখেছে

তারপর দীর্ঘ প্রস্তুতি শেষে

বসেছে ছিপ হাতে।

সে হয়তো জানে,

ক্ষুধা তোমাকে মাঝে-মধ্যে পাগল করে,

ভীষণ আবেগে তুমি হয়ে পড় দ্বিধাগ্রস্ত

হারিয়ে ফেলো ন্যায়-অন্যায় জ্ঞান

তোমার বৈচিত্র্যপিয়াসী মনের খবর

সে হয়তো পেয়েছে গোপন সংকেতে,

তোমাকে পেতে তাই সে বারবার

পরিবর্তন করেছে টোপ।

টোপ দেখলেই মুখ বাড়িয়ে খেতে নেই

আগে দেখা ভালো ওটা তোমার খাদ্য?

নাকি তুমি তার!

আমাদের বাড়ি করাতকলের কাছে
করাতকলের কাছে গেলে-

আপনাকে শুয়ে পড়তে হবে অনিবার্যভাবে,

বুক চেরা হয়ে গেলে তোলা হবে ট্রাকে-

কেউ আপনার কান্না শুনবে না,

করাতকলের শ্রমিকেরা জন্মবধির।

আমাদের বাড়ি ছিল করাতকলের কাছে,

অনেক বছর ধরে আমরা লাগিয়ে চলেছিলাম গাছ,

প্রত্যেকটা গাছের ছিল একেকটা নাম,

কোনোটার নাম আনন্দমুখী,কোনোটা দুঃখবিলাস,কোনোটা বা বিরহকামী

কোনোটা আবার সুখ-পরাজিতা

আমরা ভাইবোন ওইসব গাছের নিচে খেলা করতাম।

একদিন ওরা সব গাছ কেটে করাতকলের কাছে নিয়ে গেল

সঙ্গে আমাদেরকেও-

তারপর চিরে দিলো বুক

ওরা বুক চিরতে পছন্দ করে।

যথারীতি মৃত্যুর আর্তনাদ কেউ শুনতে পায়নি।

করাতকলের কাছে গেলে

সবসময় শুয়ে পড়তে হয়;

করতে হয় অপেক্ষা

কখন চেরা হবে বুক!

প্রস্তুতি
প্রস্ততি ছাড়াই গিয়েছিলাম তোমার কাছে,

ফিরিয়ে দিয়েছো!

বলেছো, আসার আগে অন্তত একটা ফোন-

মনে ছিলো না।

ভেবেছিলাম আমার জন্যে তুমি হয়তো অপেক্ষায় আছো,

যেভাবে থাকতে আগে বাদামগাছের নিচে,

দেখা হলে বলতে, মাঝে মাঝে তব দেখা পাই

চিরদিন কেনো পাই না?

যখন ফিরিয়ে দিলে

ধীরে ধীরে হেঁটে একটা উদ্যানের কাছে গিয়েছিলাম,

নুয়ে পড়া গাছেদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বললাম,

পাখিদের সাথে ঘুরে বেড়ালাম,

কিছুক্ষণ মাছদের নিয়ে দিঘিতে সাঁতার কাটলাম।

আসলে প্রস্তুতি ছাড়া কোথাও, কোত্থাও যাওয়া ঠিক নয়।

সবাই ফিরিয়ে দেয়,

ফিরিয়ে দেওয়াটা অনেক সহজ গ্রহণ করার চেয়ে।

ভাবছি মৃত্যুর কাছে যাওয়ার জন্য

এখন থেকেই প্রস্তুতি নেবো।

রবির গানে মেঘ বলেছে
রবির গানে মেঘ বলেছে যাবো যাবো

ফাগুন-মেয়ে রঙ পেয়েছে হরিদ্রাভ।

তুমি যদি ডাকো ছুটির নিমন্ত্রণে,

মন চাইলে যাবো দূরের হলুদ বনে।

ফুল বলছে, নাও জড়িয়ে আমায় চুলে,

যাচ্ছে পাতা ধুলোর বাড়ি রাস্তা ভুলে।

রোদ-ঘুড়িতে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন আঁকা,

কাটাকুটির মগ্ন খেলায় বেঁচে থাকা।

রবির গানে মেঘ বলেছে যাবো যাবো,

গহীনপুরে গেলে কী আর তোমায় পাবো?

ছবি

ব্রেশায় উড়োজাহাজ

ছবি

মননশস্যের অমৃত মন্থন

ছবি

অনুবাদ ও ভূমিকা : আলী সিদ্দিকী

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

বড়শি

ছবি

কাফকাকে পড়া, কাফকাকে পড়ানো

এ মুখর বরষায়

ছবি

রক্তে লেখা প্রেম: রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর বিপ্লব

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

শঙ্খজীবন: যাপিত জীবনের অন্তর্গূঢ় প্রতিকথা

ছবি

ওসামা অ্যালোমার এক ঝুড়ি খুদে গল্প

ছবি

প্রযুক্তির আলোয় বিশ্বব্যাপী বইবাণিজ্য

সাময়িকী কবিতা

ছবি

ব্রেশায় উড়োজাহাজ

ছবি

কাফকার কাছে আমাদের ঋণ স্বীকার

ছবি

কাফকাকে পড়া, কাফকাকে পড়ানো

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

সূর্যের দেশ

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

লড়াই

সাময়িকী কবিতা

ছবি

প্রচলিত সাহিত্যধারার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন মধুসূদন

ছবি

মেধাসম্পদের ছন্দে মাতুন

ছবি

উত্তর-মানবতাবাদ ও শিল্প-সাহিত্যে তার প্রভাব

ছবি

আমজাদ হোসেনের ‘ভিন্ন ভাষার কবিতা’

সাময়িকী কবিতা

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

দুই ঋতপার কিসসা এবং এক ন্যাকা চৈতন্য

ছবি

অন্যজীবন অন্যআগুন ছোঁয়া

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

কবিজীবন, দর্শন ও কাব্যসন্ধান

ছবি

অসামান্য গদ্যশৈলীর রূপকার

ছবি

পিয়াস মজিদের ‘রূপকথার রাস্তাঘাট’

ছবি

নজরুলের নিবেদিত কবিতা : অর্ঘ্যরে শিল্পরূপ

ছবি

বাঘাডাঙা গাঁও

ছবি

বুদ্ধদেব বসুর ‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী’ বিষয়ভাবনা

tab

সাময়িকী

মিহির মুসাকীর কবিতা

সংবাদ অনলাইন রিপোর্ট

কবি মিহির মুসাকী

রোববার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

টোপ
টোপ দেখলেই মুখ বাড়িয়ে হা-করতে নেই,

টোপের আড়ালে বসে থাকতে পারে নিপুণ শিকারী!

হতে পারে সে তোমার পছন্দ জানে,

তাই পেতেছে গোপন ফাঁদ!

এতদিন তোমাকে ক্ষুধার্ত রেখে সে হয়তো মজা দেখেছে

তারপর দীর্ঘ প্রস্তুতি শেষে

বসেছে ছিপ হাতে।

সে হয়তো জানে,

ক্ষুধা তোমাকে মাঝে-মধ্যে পাগল করে,

ভীষণ আবেগে তুমি হয়ে পড় দ্বিধাগ্রস্ত

হারিয়ে ফেলো ন্যায়-অন্যায় জ্ঞান

তোমার বৈচিত্র্যপিয়াসী মনের খবর

সে হয়তো পেয়েছে গোপন সংকেতে,

তোমাকে পেতে তাই সে বারবার

পরিবর্তন করেছে টোপ।

টোপ দেখলেই মুখ বাড়িয়ে খেতে নেই

আগে দেখা ভালো ওটা তোমার খাদ্য?

নাকি তুমি তার!

আমাদের বাড়ি করাতকলের কাছে
করাতকলের কাছে গেলে-

আপনাকে শুয়ে পড়তে হবে অনিবার্যভাবে,

বুক চেরা হয়ে গেলে তোলা হবে ট্রাকে-

কেউ আপনার কান্না শুনবে না,

করাতকলের শ্রমিকেরা জন্মবধির।

আমাদের বাড়ি ছিল করাতকলের কাছে,

অনেক বছর ধরে আমরা লাগিয়ে চলেছিলাম গাছ,

প্রত্যেকটা গাছের ছিল একেকটা নাম,

কোনোটার নাম আনন্দমুখী,কোনোটা দুঃখবিলাস,কোনোটা বা বিরহকামী

কোনোটা আবার সুখ-পরাজিতা

আমরা ভাইবোন ওইসব গাছের নিচে খেলা করতাম।

একদিন ওরা সব গাছ কেটে করাতকলের কাছে নিয়ে গেল

সঙ্গে আমাদেরকেও-

তারপর চিরে দিলো বুক

ওরা বুক চিরতে পছন্দ করে।

যথারীতি মৃত্যুর আর্তনাদ কেউ শুনতে পায়নি।

করাতকলের কাছে গেলে

সবসময় শুয়ে পড়তে হয়;

করতে হয় অপেক্ষা

কখন চেরা হবে বুক!

প্রস্তুতি
প্রস্ততি ছাড়াই গিয়েছিলাম তোমার কাছে,

ফিরিয়ে দিয়েছো!

বলেছো, আসার আগে অন্তত একটা ফোন-

মনে ছিলো না।

ভেবেছিলাম আমার জন্যে তুমি হয়তো অপেক্ষায় আছো,

যেভাবে থাকতে আগে বাদামগাছের নিচে,

দেখা হলে বলতে, মাঝে মাঝে তব দেখা পাই

চিরদিন কেনো পাই না?

যখন ফিরিয়ে দিলে

ধীরে ধীরে হেঁটে একটা উদ্যানের কাছে গিয়েছিলাম,

নুয়ে পড়া গাছেদের সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বললাম,

পাখিদের সাথে ঘুরে বেড়ালাম,

কিছুক্ষণ মাছদের নিয়ে দিঘিতে সাঁতার কাটলাম।

আসলে প্রস্তুতি ছাড়া কোথাও, কোত্থাও যাওয়া ঠিক নয়।

সবাই ফিরিয়ে দেয়,

ফিরিয়ে দেওয়াটা অনেক সহজ গ্রহণ করার চেয়ে।

ভাবছি মৃত্যুর কাছে যাওয়ার জন্য

এখন থেকেই প্রস্তুতি নেবো।

রবির গানে মেঘ বলেছে
রবির গানে মেঘ বলেছে যাবো যাবো

ফাগুন-মেয়ে রঙ পেয়েছে হরিদ্রাভ।

তুমি যদি ডাকো ছুটির নিমন্ত্রণে,

মন চাইলে যাবো দূরের হলুদ বনে।

ফুল বলছে, নাও জড়িয়ে আমায় চুলে,

যাচ্ছে পাতা ধুলোর বাড়ি রাস্তা ভুলে।

রোদ-ঘুড়িতে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন আঁকা,

কাটাকুটির মগ্ন খেলায় বেঁচে থাকা।

রবির গানে মেঘ বলেছে যাবো যাবো,

গহীনপুরে গেলে কী আর তোমায় পাবো?

back to top