alt

সাময়িকী

লিওপল্ড সেদর সেঙ্ঘর-এর কবিতা

ভাষান্তর : চরু হক

: বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪

লিওপল্ড সেদর সেঙ্ঘর

লিওপল্ড সেদর সেঙ্ঘর (খবড়ঢ়ড়ষফ ঝবফড়ৎ ঝবহমযড়ৎ) এর জন্ম ১৯০৬ সালে সেনেগালে। তাঁর বাবা ছিলেন একজন বাদাম ব্যাবসায়ী এবং রোমান ক্যাথলিক। ডাকার লাইসে থেকে তিনি বেশ সাফল্যের সাথে অধ্যয়ন শেষে ১৯২৮ সালে প্যারিসের লাইসে লুইস ল্য গ্র্যান্ডে গমন করেন। প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এখানে তিনি আইমে সেজোয়ার ও ডামাসের সাথে পরিচিত হয়ে নেগ্রিচ্যুড (ঘবমৎরঃঁফব) নামে এক সাংস্কৃতিক আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৬০ সালে তিনি সেনেগালের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হন এবং ১৯৮১ সালে সেই পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। আফ্রিকান সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ সারা বিশ্বে প্রসারে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

২০ ডিসেম্বর ২০০১ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পরিদর্শন
অন্তরঙ্গ আধো অন্ধকার এক বিকালের স্বপ্ন দেখি আমি

আমার উপর দিয়ে সারা জীবনের ক্লান্তি ভ্রমণ করে গেছে

ভ্রমণ করে গেছে সারা বছরের ক্ষয়, একযুগের পরিচয়

গ্রামে অগভীর সমুদ্রের উপর যে দিগন্ত ঝুলে থাকে

সেই দিগন্তের মৃতদের শোভাযাত্রার মতো...

একই সূর্য এখানে যা কেবল মরীচিকায় ভরা

সেই একই আকাশ যেখানে কেবল গোপন উপস্থিতি

একই আকাশ মৃতদের আহ্বানে ভীতসন্ত্রস্ত থাকে

এবং হঠাৎ, মৃত্যু চুপিসারে এগুতে থাকে আমার দিকে।

আমি তোমার নাম ধরে ডাকবো
নায়েত, আমি তোমার নাম ধরে ডাকবো, আহ্বান করবো নায়েত,

দারুচিনির মতো অপূর্ব তোমার নাম নায়েত

এ তো সেই সুগন্ধি যার মধ্যে ঘুমিয়ে আছে লেবু বাগান

তোমার নাম যেন প্রস্ফুটিত কফি শাখার স্বচ্ছতায় স্নাত

এর সাথে মিল পড়ে সাভানার, মধ্য দিনের পৌরুষ ভরা সূর্যালোকে

প্রস্ফুটিত করে নিজেকে।

এ যেন কোন শিশিরের নাম

তেঁতুল গাছের ছায়ার চেয়েও স্নিগ্ধ

সমস্ত দিনের রৌদ্রতাপ যেখানে নীরব হয়ে গেছে

সেই ছোট্ট গোধূলির চেয়েও মনকাড়া।

নায়েত, সোনালি মুদ্রা এক, জ্বলজ্বলে কয়লা

আমার রাত্রি তুমি, আমার সূর্য!

আর আমি সেই বীরপুরুষ যে এখন তোমার নাম

উচ্চারণের জন্য এসেছে,

ইলিসার রাজকন্যা, নিষ্ঠুর নিয়তি যাকে নিশ্চিহ্ন করেছে

ফিটা নগরী হতে।

তোমার কৃষ্ণ মুখমণ্ডল
তোমার দু’হাতের মধ্যে ধরে রেখেছো যোদ্ধার কৃষ্ণ মুখম-ল

যেন ভাগ্যতাড়িত কোনো গোধূলি

পাহাড় ছায়ায় দাঁড়িয়ে তোমার চোখের উপত্যকায় আমি সূর্যাস্ত দেখি

আবার কখন যে দেখতে পাবো আমার আপনভূমি,

তোমার মুখম-লের স্বচ্ছ নীল আকাশ?

তোমার কালো বুকের টেবিলে কবে বসতে পারবো আবার?

আবছায়ায় খেলা করছে মিষ্টি ভাবনার বাসাগুলো

অনেক আকাশ আমি দেখবো হয়তো বা

মিলবো অনেক চোখের তারার সাথে

অনেক ওষ্ঠ আমি পান করে নেবো

যা নাকি লেবুর চেয়েও তাজা

ঘুমোবো অনেক কেশদামের নিচে যা আমাকে রক্ষা করবে ঝড়-ঝাপটা থেকে

কিন্তু প্রতি বছর যখন বসন্তের স্পর্শ এসে জ্বালিয়ে দেবে প্রতিটি শিরাকে

আমি তখন নতুন করে কাঁদবো আমার বাড়ির জন্য

কাঁদবো তৃষ্ণার্ত সাভানার উপর তোমার অঝোর চোখের বৃষ্টির অপেক্ষায়।

ছবি

ব্রেশায় উড়োজাহাজ

ছবি

মননশস্যের অমৃত মন্থন

ছবি

অনুবাদ ও ভূমিকা : আলী সিদ্দিকী

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

বড়শি

ছবি

কাফকাকে পড়া, কাফকাকে পড়ানো

এ মুখর বরষায়

ছবি

রক্তে লেখা প্রেম: রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর বিপ্লব

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

শঙ্খজীবন: যাপিত জীবনের অন্তর্গূঢ় প্রতিকথা

ছবি

ওসামা অ্যালোমার এক ঝুড়ি খুদে গল্প

ছবি

প্রযুক্তির আলোয় বিশ্বব্যাপী বইবাণিজ্য

সাময়িকী কবিতা

ছবি

ব্রেশায় উড়োজাহাজ

ছবি

কাফকার কাছে আমাদের ঋণ স্বীকার

ছবি

কাফকাকে পড়া, কাফকাকে পড়ানো

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

সূর্যের দেশ

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

লড়াই

সাময়িকী কবিতা

ছবি

প্রচলিত সাহিত্যধারার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন মধুসূদন

ছবি

মেধাসম্পদের ছন্দে মাতুন

ছবি

উত্তর-মানবতাবাদ ও শিল্প-সাহিত্যে তার প্রভাব

ছবি

আমজাদ হোসেনের ‘ভিন্ন ভাষার কবিতা’

সাময়িকী কবিতা

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

দুই ঋতপার কিসসা এবং এক ন্যাকা চৈতন্য

ছবি

অন্যজীবন অন্যআগুন ছোঁয়া

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

কবিজীবন, দর্শন ও কাব্যসন্ধান

ছবি

অসামান্য গদ্যশৈলীর রূপকার

ছবি

পিয়াস মজিদের ‘রূপকথার রাস্তাঘাট’

ছবি

নজরুলের নিবেদিত কবিতা : অর্ঘ্যরে শিল্পরূপ

ছবি

বাঘাডাঙা গাঁও

ছবি

বুদ্ধদেব বসুর ‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী’ বিষয়ভাবনা

tab

সাময়িকী

লিওপল্ড সেদর সেঙ্ঘর-এর কবিতা

ভাষান্তর : চরু হক

লিওপল্ড সেদর সেঙ্ঘর

বৃহস্পতিবার, ০৩ অক্টোবর ২০২৪

লিওপল্ড সেদর সেঙ্ঘর (খবড়ঢ়ড়ষফ ঝবফড়ৎ ঝবহমযড়ৎ) এর জন্ম ১৯০৬ সালে সেনেগালে। তাঁর বাবা ছিলেন একজন বাদাম ব্যাবসায়ী এবং রোমান ক্যাথলিক। ডাকার লাইসে থেকে তিনি বেশ সাফল্যের সাথে অধ্যয়ন শেষে ১৯২৮ সালে প্যারিসের লাইসে লুইস ল্য গ্র্যান্ডে গমন করেন। প্যারিস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। এখানে তিনি আইমে সেজোয়ার ও ডামাসের সাথে পরিচিত হয়ে নেগ্রিচ্যুড (ঘবমৎরঃঁফব) নামে এক সাংস্কৃতিক আন্দোলন শুরু করেন। ১৯৬০ সালে তিনি সেনেগালের প্রেসিডেন্ট পদে অধিষ্ঠিত হন এবং ১৯৮১ সালে সেই পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। আফ্রিকান সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ সারা বিশ্বে প্রসারে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।

২০ ডিসেম্বর ২০০১ সালে তিনি মৃত্যুবরণ করেন।

পরিদর্শন
অন্তরঙ্গ আধো অন্ধকার এক বিকালের স্বপ্ন দেখি আমি

আমার উপর দিয়ে সারা জীবনের ক্লান্তি ভ্রমণ করে গেছে

ভ্রমণ করে গেছে সারা বছরের ক্ষয়, একযুগের পরিচয়

গ্রামে অগভীর সমুদ্রের উপর যে দিগন্ত ঝুলে থাকে

সেই দিগন্তের মৃতদের শোভাযাত্রার মতো...

একই সূর্য এখানে যা কেবল মরীচিকায় ভরা

সেই একই আকাশ যেখানে কেবল গোপন উপস্থিতি

একই আকাশ মৃতদের আহ্বানে ভীতসন্ত্রস্ত থাকে

এবং হঠাৎ, মৃত্যু চুপিসারে এগুতে থাকে আমার দিকে।

আমি তোমার নাম ধরে ডাকবো
নায়েত, আমি তোমার নাম ধরে ডাকবো, আহ্বান করবো নায়েত,

দারুচিনির মতো অপূর্ব তোমার নাম নায়েত

এ তো সেই সুগন্ধি যার মধ্যে ঘুমিয়ে আছে লেবু বাগান

তোমার নাম যেন প্রস্ফুটিত কফি শাখার স্বচ্ছতায় স্নাত

এর সাথে মিল পড়ে সাভানার, মধ্য দিনের পৌরুষ ভরা সূর্যালোকে

প্রস্ফুটিত করে নিজেকে।

এ যেন কোন শিশিরের নাম

তেঁতুল গাছের ছায়ার চেয়েও স্নিগ্ধ

সমস্ত দিনের রৌদ্রতাপ যেখানে নীরব হয়ে গেছে

সেই ছোট্ট গোধূলির চেয়েও মনকাড়া।

নায়েত, সোনালি মুদ্রা এক, জ্বলজ্বলে কয়লা

আমার রাত্রি তুমি, আমার সূর্য!

আর আমি সেই বীরপুরুষ যে এখন তোমার নাম

উচ্চারণের জন্য এসেছে,

ইলিসার রাজকন্যা, নিষ্ঠুর নিয়তি যাকে নিশ্চিহ্ন করেছে

ফিটা নগরী হতে।

তোমার কৃষ্ণ মুখমণ্ডল
তোমার দু’হাতের মধ্যে ধরে রেখেছো যোদ্ধার কৃষ্ণ মুখম-ল

যেন ভাগ্যতাড়িত কোনো গোধূলি

পাহাড় ছায়ায় দাঁড়িয়ে তোমার চোখের উপত্যকায় আমি সূর্যাস্ত দেখি

আবার কখন যে দেখতে পাবো আমার আপনভূমি,

তোমার মুখম-লের স্বচ্ছ নীল আকাশ?

তোমার কালো বুকের টেবিলে কবে বসতে পারবো আবার?

আবছায়ায় খেলা করছে মিষ্টি ভাবনার বাসাগুলো

অনেক আকাশ আমি দেখবো হয়তো বা

মিলবো অনেক চোখের তারার সাথে

অনেক ওষ্ঠ আমি পান করে নেবো

যা নাকি লেবুর চেয়েও তাজা

ঘুমোবো অনেক কেশদামের নিচে যা আমাকে রক্ষা করবে ঝড়-ঝাপটা থেকে

কিন্তু প্রতি বছর যখন বসন্তের স্পর্শ এসে জ্বালিয়ে দেবে প্রতিটি শিরাকে

আমি তখন নতুন করে কাঁদবো আমার বাড়ির জন্য

কাঁদবো তৃষ্ণার্ত সাভানার উপর তোমার অঝোর চোখের বৃষ্টির অপেক্ষায়।

back to top