alt

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

: বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪

ভূতপূর্ণিমা

গোলাম কিবরিয়া পিনু

ভূতপূর্ণিমা!

শুধু জঙ্গল ও গুহায় লুকিয়ে থাকে না

কিংবা গুমটি ঘরে!

সে এখন খেয়াঘাট পার হয়ে

আচ্ছাদন খুলে

আমাদের গ্রামে এসে

গুন গুন করে গান গাইছে!

আমিসহ আমাদের গ্রামও-

কী মাধুর্য নিয়ে মধুময় হয়ে উঠছে

-এই হেমন্তে!

সে তার খুদকুঁড়ো ছড়িয়ে দিচ্ছে না

সে সম্পূর্ণ ধানের গোলা উজাড় করে দিচ্ছে,

এমন কি নবান্নও!

সে কেতলি থেকে

চা ঢেলে দিচ্ছে না!

সে ভূতগ্রস্ত হয়ে নিজেকে সম্পূর্ণ ঢেলে দিচ্ছে

শ্রেণি-বর্ণ নির্বিশেষে;

আমরা খুবসুরত হয়ে উঠছি!

একটা দিনের গল্প

দিলীপ কির্ত্তুনিয়া

সকালটা প্রার্থনার। সকালটা কবিতা লেখার।

দুপুরটা মধ্য আকাশে গনগনে সূর্যের

সকল কাজ হিমশিম জমে ওঠার।

বিকেলটা ক্লান্ত হওয়ার

শুকনো ফুল ঝরে পড়ার।

এ সময় পাহাড় থেকে নেমে আসার

পাখির ঘরে ফেরার।

আর সন্ধ্যেটা শুধু দুঃখ করার

আফসোসের বারিপাত কণ্ঠ গলার।

আহা রে, চলে গেল একটা ভাল দামী দিন !

এর পরে রাত। কালো রাত।

এ সময় বসে বসে

আমরা শুধু স্বপ্ন দেখবো

যাতে পর দিন মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়-

শুরু করতে পারি আর একটা ভাল দিন।

আগন্তুক

আদিত্য অন্তর

বুক পকেটে পরিণতি জমা রেখেই সামনে পা ফেলা

আমি এক আগন্তুক-

যে লালসূর্য জাগে সকালে

তাকে হাতে নিয়েই সাজাই হিরন্ময় কৃষ্ণচূড়া দুপুর

আর হাসতে হাসতে অপেক্ষা করি বিষণœ বিকেলের-

দুপুর আর বিকেলের মাঝখানে মুদ্রিত হওয়া উচ্ছ্বাসেরা

বাতাসের পৃষ্ঠায় মাতাল নৃত্যে করে কোরাস...

দেখি- সন্ধ্যা নামার আগেই কখনো রাত নেমে আসে,

বসন্ত না দেখা কোনো এক নাম না জানা পাখির ডানায়

জীবনপাঠে উন্নাসিক আগন্তুকের সময়ের হিসাব করা অনর্থক-

অদৃশ্য সুতায় নিজেকে জমা রেখে আসা প্রতিটি মানুষই মূলত

জগতযজ্ঞের সাময়িক পর্যটক।

আমি ঠিক ভুলে যাবো 

রওশন রুবী

এই জাগতিক যত ধুলি, নাশপতির খোসা

আর তুলতুলে ইচ্ছে টেবিল থেকে সরিয়ে 

তোমাদের লোভাতুর দৃষ্টির বাইরে গিয়ে 

আমি ঠিক বেমালুম ভুলে যাবো-

বিরোধের গন্ধ বারুদের চেয়ে ভয়ঙ্কর,

ভুলে যাবো কোন একদিন আমিও

কুমিরের খাঁচা থেকে বাঁচতে চেয়ে

জাতিসংঘের কাছে লিখেছি...

ভুলে যাবো মানুষ হয়েও

আমার পরিচয় ছিল কৃতদাস,

আমার দোষ থাকুক বা না থাকুক

সর্বাগ্রে আমার পিঠ পাছা বাহুতে বসেছে

চাবুকের খামখেয়ালি চুম্বন,

আমার বত্রিশ ইঞ্চির ছাতি শুধু লাত্থি আর

তিরস্কার সইবার কারখানা,

আমি ভুলে যাবো বিয়োগান্তে যে কাঁদে

সে শুধু মিশে যাচ্ছে অন্যজীবনে।

তোমরা উদোম নিত্যকরো অন্যায়ের সহোদর।

তৃষিত ঘুমের পেয়ালা

স্বপঞ্জয় চৌধুরী

তৃষিত ঘুমের পেয়ালা নিয়ে বসে আছো তুমি

আমি অন্ধ বধির বুদ্ধিহীন এক মানুষপোকা

পেয়ালার চারিধারে অন্ধকার হাতে ঘুরি

কতগুলো পেখমওয়ালা

নারী ফিরিসতা

আমাকে তাদের ডানা দিয়ে বাতাস করছে

আমার চক্ষু বন্ধ হয়ে আসে

আলগা পাতার মতো ঝরে যাচ্ছি যেন

দূর নক্ষত্রপুঞ্জে বসে আছো তুমি

তোমার হাতে পেয়ালা

তৃষিত ঘুমের পেয়ালা

কোনো এক অচেনা মুখ, চেনা মুখের মতো

আমায় আহবান জানায়

আমি চলছি শূন্যদেহ লয়ে

এক নিঃসীম সঙ্গীতসুর

পেছনে হাঁটছে আমার চোখ জুড়ে ঘুম

ঘুমের ওপাশে দাঁড়িয়ে আছো তুমি

আঁচল বিছিয়ে শুভ্রসাদা শিউলিফুলসমূহ

মেতে ওঠে মাতাল গন্ধে

আমি পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতে

তোমার কোলে ঘুমিয়ে পড়ছি মা

আর কেউ ডেকোনা আমায় কখনো

ডেকোনা কক্খোনো।

ট্রাফিক জ্যাম

তানজিদা আক্তার

সেরাতে অঝর বৃষ্টি-

কোথাও নেই ট্রাফিক জ্যাম

যা তোমার আগলে ধরতো পথ-

জানতে যদি, যাত্রালগ্ন অন্তত

ঘণ্টাতিনেক পর, ভাবতে:

না হয় ফিরে যাই-

আমাকে খুঁজতে মনে মনে

নিরত হতে বিরক্ত-যাত্রায়

আগেই জানতে যদি বৃষ্টির কথা

তোমাকে পেতাম মুখর বর্ষায়-

ছবি

কবিতা পড়া, কবিতা লেখা

ছবি

‘ধুলোয় সব মলিন’, পাঠকের কথা

ছবি

মহত্ত্বর কবি সিকদার আমিনুল হক

ছবি

রুগ্ণ আত্মার কথোয়াল

ছবি

কয়েকটি অনুগল্প

সাময়িকী কবিতা

ছবি

যেভাবে লেখা হলো ‘শিকিবু’

ছবি

জাঁ জোসেফ রাবেয়ারিভেলোর কবিতা

ছবি

সিকদার আমিনুল হকের গদ্য

ছবি

সিকদার আমিনুল হককে লেখা অগ্রজ ও খ্যাতিমান লেখক-সম্পাদকের চিঠি

ছবি

ফিওদর দস্তয়েভস্কি: রুগ্ণ আত্মার কথোয়াল

একজন গফুর মল্লিক

ছবি

অগ্রবীজের ‘অনুবাদ সাহিত্য’ সংখ্যা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

গোপন কথা

ছবি

র’নবীর টোকাই-কথন

ছবি

শিল্পচর্চায় তরুণ প্রজন্ম অনেক বেশি ইনোভেটিভ

ছবি

শামসুর রাহমানের কবিতা বৈভব ও বহুমাত্রিকতা

ছবি

উইলিয়াম রাদিচের অধ্যয়নে অনন্য রবীন্দ্রনাথ

দিলারা হাফিজের কবিতা

ছবি

অবরুদ্ধ বর্ণমালার শৃঙ্খলমুক্তি

ছবি

আহমদুল কবির স্মরণে

ছবি

আহমদুল কবিরের সদাশয়তা

ছবি

রবীন্দ্রসংগীতের অপাপভূমি

ছবি

স্বপ্ন অথবা বিপন্ন বিস্ময়

ছবি

রুগ্ণ আত্মার কথোয়াল

ছবি

ছাতিম যেন হেমন্তেরই গায়ের গন্ধ

ছবি

সমরেশ মজুমদার স্মারকগ্রন্থ

ছবি

সমকালিক ঘটনাবলির রূপকার

ছবি

হেমন্ত পদাবলি

ছবি

আমার রমণীর ফল

ছবি

রূপান্তরিত

ছবি

আমেরিকার কবিতাকাশে এক স্বতন্ত্র নক্ষত্র

ছবি

কবি বেলাল চৌধুরী কাছ থেকে দেখা

ছবি

ফিওদর দস্তয়েভস্কি রুগ্ণ আত্মার কথোয়াল

ছবি

কামুর ‘দ্য স্ট্রেইঞ্জার’-এ প্রকৃতি ও সূর্য

tab

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪

ভূতপূর্ণিমা

গোলাম কিবরিয়া পিনু

ভূতপূর্ণিমা!

শুধু জঙ্গল ও গুহায় লুকিয়ে থাকে না

কিংবা গুমটি ঘরে!

সে এখন খেয়াঘাট পার হয়ে

আচ্ছাদন খুলে

আমাদের গ্রামে এসে

গুন গুন করে গান গাইছে!

আমিসহ আমাদের গ্রামও-

কী মাধুর্য নিয়ে মধুময় হয়ে উঠছে

-এই হেমন্তে!

সে তার খুদকুঁড়ো ছড়িয়ে দিচ্ছে না

সে সম্পূর্ণ ধানের গোলা উজাড় করে দিচ্ছে,

এমন কি নবান্নও!

সে কেতলি থেকে

চা ঢেলে দিচ্ছে না!

সে ভূতগ্রস্ত হয়ে নিজেকে সম্পূর্ণ ঢেলে দিচ্ছে

শ্রেণি-বর্ণ নির্বিশেষে;

আমরা খুবসুরত হয়ে উঠছি!

একটা দিনের গল্প

দিলীপ কির্ত্তুনিয়া

সকালটা প্রার্থনার। সকালটা কবিতা লেখার।

দুপুরটা মধ্য আকাশে গনগনে সূর্যের

সকল কাজ হিমশিম জমে ওঠার।

বিকেলটা ক্লান্ত হওয়ার

শুকনো ফুল ঝরে পড়ার।

এ সময় পাহাড় থেকে নেমে আসার

পাখির ঘরে ফেরার।

আর সন্ধ্যেটা শুধু দুঃখ করার

আফসোসের বারিপাত কণ্ঠ গলার।

আহা রে, চলে গেল একটা ভাল দামী দিন !

এর পরে রাত। কালো রাত।

এ সময় বসে বসে

আমরা শুধু স্বপ্ন দেখবো

যাতে পর দিন মনোবাঞ্ছা পূর্ণ হয়-

শুরু করতে পারি আর একটা ভাল দিন।

আগন্তুক

আদিত্য অন্তর

বুক পকেটে পরিণতি জমা রেখেই সামনে পা ফেলা

আমি এক আগন্তুক-

যে লালসূর্য জাগে সকালে

তাকে হাতে নিয়েই সাজাই হিরন্ময় কৃষ্ণচূড়া দুপুর

আর হাসতে হাসতে অপেক্ষা করি বিষণœ বিকেলের-

দুপুর আর বিকেলের মাঝখানে মুদ্রিত হওয়া উচ্ছ্বাসেরা

বাতাসের পৃষ্ঠায় মাতাল নৃত্যে করে কোরাস...

দেখি- সন্ধ্যা নামার আগেই কখনো রাত নেমে আসে,

বসন্ত না দেখা কোনো এক নাম না জানা পাখির ডানায়

জীবনপাঠে উন্নাসিক আগন্তুকের সময়ের হিসাব করা অনর্থক-

অদৃশ্য সুতায় নিজেকে জমা রেখে আসা প্রতিটি মানুষই মূলত

জগতযজ্ঞের সাময়িক পর্যটক।

আমি ঠিক ভুলে যাবো 

রওশন রুবী

এই জাগতিক যত ধুলি, নাশপতির খোসা

আর তুলতুলে ইচ্ছে টেবিল থেকে সরিয়ে 

তোমাদের লোভাতুর দৃষ্টির বাইরে গিয়ে 

আমি ঠিক বেমালুম ভুলে যাবো-

বিরোধের গন্ধ বারুদের চেয়ে ভয়ঙ্কর,

ভুলে যাবো কোন একদিন আমিও

কুমিরের খাঁচা থেকে বাঁচতে চেয়ে

জাতিসংঘের কাছে লিখেছি...

ভুলে যাবো মানুষ হয়েও

আমার পরিচয় ছিল কৃতদাস,

আমার দোষ থাকুক বা না থাকুক

সর্বাগ্রে আমার পিঠ পাছা বাহুতে বসেছে

চাবুকের খামখেয়ালি চুম্বন,

আমার বত্রিশ ইঞ্চির ছাতি শুধু লাত্থি আর

তিরস্কার সইবার কারখানা,

আমি ভুলে যাবো বিয়োগান্তে যে কাঁদে

সে শুধু মিশে যাচ্ছে অন্যজীবনে।

তোমরা উদোম নিত্যকরো অন্যায়ের সহোদর।

তৃষিত ঘুমের পেয়ালা

স্বপঞ্জয় চৌধুরী

তৃষিত ঘুমের পেয়ালা নিয়ে বসে আছো তুমি

আমি অন্ধ বধির বুদ্ধিহীন এক মানুষপোকা

পেয়ালার চারিধারে অন্ধকার হাতে ঘুরি

কতগুলো পেখমওয়ালা

নারী ফিরিসতা

আমাকে তাদের ডানা দিয়ে বাতাস করছে

আমার চক্ষু বন্ধ হয়ে আসে

আলগা পাতার মতো ঝরে যাচ্ছি যেন

দূর নক্ষত্রপুঞ্জে বসে আছো তুমি

তোমার হাতে পেয়ালা

তৃষিত ঘুমের পেয়ালা

কোনো এক অচেনা মুখ, চেনা মুখের মতো

আমায় আহবান জানায়

আমি চলছি শূন্যদেহ লয়ে

এক নিঃসীম সঙ্গীতসুর

পেছনে হাঁটছে আমার চোখ জুড়ে ঘুম

ঘুমের ওপাশে দাঁড়িয়ে আছো তুমি

আঁচল বিছিয়ে শুভ্রসাদা শিউলিফুলসমূহ

মেতে ওঠে মাতাল গন্ধে

আমি পেয়ালায় চুমুক দিতে দিতে

তোমার কোলে ঘুমিয়ে পড়ছি মা

আর কেউ ডেকোনা আমায় কখনো

ডেকোনা কক্খোনো।

ট্রাফিক জ্যাম

তানজিদা আক্তার

সেরাতে অঝর বৃষ্টি-

কোথাও নেই ট্রাফিক জ্যাম

যা তোমার আগলে ধরতো পথ-

জানতে যদি, যাত্রালগ্ন অন্তত

ঘণ্টাতিনেক পর, ভাবতে:

না হয় ফিরে যাই-

আমাকে খুঁজতে মনে মনে

নিরত হতে বিরক্ত-যাত্রায়

আগেই জানতে যদি বৃষ্টির কথা

তোমাকে পেতাম মুখর বর্ষায়-

back to top