alt

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

: শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ভুলে যাবে না তো
দিলারা হাফিজ

দুরন্ত এক তন্ময় তীর ছুঁড়ে দিয়ে তালপাখা বলে,

মনো-ত্বক দহনের এই গ্রীষ্মকাল ফুরালে,

আমাকে ভুলে যাবে না তো?

বর্ষণের ঋতু ছেড়ে গেলে, কে কাহার?

তবু- তবু তো নীল শাড়ি নিঙারি নিঙারি

সেও ভাবে ভুলে যাবে কি আমাকে পরাণ সহিত...

তুমিও ভুলে যাবে- একদিন সময় হারালে!

সেই যে টাঙ্গাইল থানাপাড়ার কালো মেয়েটি,

নিয়ম করে প্রতি সকালের মোড়ে দাঁড়িয়ে

একজন কবির সংগোপন অপেক্ষায় জানালা খুলে

তার কাজল কালো দৃষ্টির মায়া ছড়িয়ে দিয়ে

নিরন্তর গেয়ে যেতো ১টি গান-

“ভুল সবই ভুল”

এজীবনের পাতা পাতায় যা লেখা”

আমিও সেই কবির পথের দিশায় হাঁটু মুড়ে বসে থাকি

কণ্ঠে তুলে নিয়ে একই গান গাই!

“ভুলিয়া না যাইও বন্ধু ভুলিয়া না যাইও”

এর কোনো শেষ কিংবা শুরু ছিলো কি?

অন্তর বসন্ত
আদ্যনাথ ঘোষ

এই যে ফাগুন।

দুহাত মেলে বসে আছি তোমারই নিকট।

যতোটা সুন্দর তুমি! তারো চেয়ে আরো আরো ঢের বেশি

পলাশ দুপুর। সাজিয়ে দাও। মুখরিত সংলাপ ভুলে।

তোমার রঙের থেকে সবটুকু নগ্ন প্রাণের রামধনু বসন্ত আকাশ-

ভুল করে ছেড়ে যাও কোন দূর দেশে? করুণ বিষাদভরা

ঘোলাটে অন্ধকারে। যেয়ো নাকো ভুলে। ফিরো এসো আমারই

বুকের ভেতর। এমন উচ্ছ্বাসী মাতাল দিনের ভ্রমর-সৌরভ,

আর কি আসবে ফিরে? ওরে ও মাতাল ফাগুন।

তোমার বুকের ভেতর যত সুর আছে, সব সুর একসাথে বেঁধে,

যতোটা অপরূপ মুগ্ধময়ী প্রজাপতি দিনের রঙিন আকাশ;

নির্বিকারে চেনা আর অচেনার সবগুলো স্মৃতির পুরনো হিসেব ফেলে,

সাজিয়ে দাও, ছড়িয়ে দাও। আমারই দুহাত ভরে,

তোমারই দৃশ্যপটের উদোম আলোর সব রঙ, সব আয়োজন।

তোমার বয়সী চাঁদ
রওশন রুবী

তুমি ছুঁতে চাও বলেই চাঁদ আগুয়ান

অমৃতের পাত্র হাতে নৃত্যরত অপ্সরা

গিলে নাও বাটাময় সুঠাম সময়

দেখাও ওপারে নিংড়ানো উত্তাপ, আর্দ্র কাঁপন,

শোনাও ধ্বনির ব্যঞ্জনা,

শোনাও গজল ও সঙ্গীত, বৈঠার আব্দার।

তোমার বয়সী চাঁদ পুড়ে গেলে

তুমি কি হবে না তার সুবোধসুন্দর?

অন্ধকার
রফিকুল ইসলাম আধার

হঠাৎ সন্ধ্যার অন্ধকারে

আঁতকে ওঠে ছাতিমের ছায়া,

খাঁচায় জমা দীর্ঘশ্বাসে

কাঁপে বুকের গভীর আলো।

চারপাশে ধেয়ে আসে বিদঘুটে অন্ধকার,

অতল গহ্বরে ডুবে যায় পথের নিশানা।

মুছে যায় পরিচয়,

প্রতিহিংসার অনলে

জ্বলে ওঠে অবিন্যস্ত ছায়ারা।

তবু সাহস চুরি করতে আসে

ভয়ের শীতল দাঁত,

হাতছাড়া হয় পথকড়ি

হারিয়ে যায় সমস্ত সঞ্চয়।

নিঝুম আশ্বিনের মধ্যরাতে

রাতের প্রহরী কাঁপা গলায় হাঁকে,

‘কে যায় রে?’

দুর্বৃত্ত সময় থাকে নির্বাক।

চারদিকের চরাচর

দাঁতে দাঁত কামড়ে,

ছিঁড়ে ফেলে নীরবতার অন্ধকার।

ছদ্মবেশী
আশিক আজিজ

থমকে থাকা ও নিস্তেজ মধ্যরাত

ভাঙা ঘুমে একাকিত্বের আসর জানালা খোলা

শীতঘেরা অন্ধকার সাঁতার কাটে হাবুডুবু খায়

মৃত আত্মার পদচারণা মুখর গুমোটবাঁধা ফেরিঘাট

সাইরেন বাজে চরজাগা বালুতে

আটকে পড়া নদী জুড়ে ঘন কুয়াশার আড্ডা

সাদা পোশাকে বিচরণ প্রেতদেহের

ভাঙা ঢেউ সাপের ফণায় ফুঁসে ওঠে

ছদ্মবেশী।

বসন্তে আমি শুধু তোমার<কাছেই আসতে চাই
মিরাজুল আলম

সব সীমানা অতিক্রম করে

এই বসন্তে আমি শুধু তোমার কাছেই আসতে চাই।

তুমি তোমার হৃদয়ের সব কটি জানালা খোলা রেখো।

গত শীতে আমার কোনো খবর তুমি রাখলে না।

প্রচ- শীতে খুব কাঁপছিলাম।

আর শুধু তোমার নামের শব্দ পান করে বেঁচেছিলাম।

গত শীতে তুমি আমার জন্য একটা মিহি চাঁদর পাঠাতে পারতে।

তোমার তো বেসাতি কম নেই।

আমি তোমার নাম স্মরণে সব ভুলে গিয়ে ফতুর হয়ে গেছি।

আমার ব্যাধিমন্থনের ডানায় ভর করছিল

পৃথিবীর সব শীতকাল।

তুমি চাইলেই আমার ব্যথিত হৃদয়ে

ভালবাসার একটা চাঁদর জড়িয়ে দিতে পারতে।

প্রেম ও প্রতীক্ষার মাঝখানে

দাবাললে পৃথিবী পুড়ে গেলেও আমি শুধু

তোমার অপেক্ষায় থাকবো।

তুমি অনুমতি দিলে আগামী বসন্তে

আমি তোমার বাড়ির সীমানায় আসবো।

তোমার জন্য অপেক্ষার ফুল নিয়ে

দাড়িয়ে থাকবো।

শূন্য দীপাধার
বেনজির শিকদার

ওখানে গাঢ় অন্ধকার;

ভাতের লোকমার মতো অবিশ্বাসের দলা

কু-লী পাকিয়ে হাসে।

বেওয়ারিশ কপটতায় হলুদবর্ণ নীল হয়।

শূন্য দীপাধার;

প্রেমহীন মরশুম নামে সবুজাভ ঘাসে।

এখানে আলোদায়ী ভোর!

তুলোর মতো হালকা মেঘ

ভেসে যায় আকাশে;

গায়ে লাগা বাতাসও-

ওজনহীন আনুকূল্যে সময় দেয় পাড়ি;

অথচ কিছুই হালকা লাগে না,

জীবনকে মনে হয় অচ্ছুৎ-ভারি!

যেন মরে গেলেই বেঁচে যাওয়া।

বেহুঁশ বিবস্ত্রে বসতি ভূগোল! আড়চোখে মরচুয়ারি হাসে।

তবুও মৃত্যু নয়,

মৃতরাও বাঁচতে ভালোবাসে।

শাশ্বত শূন্য
ইসলাম মুহাম্মদ তৌহিদ

তীরবিহীন সমুদ্রে শূন্যতার উত্তাল ঢেউ

কোলাহল ভেঙে গড়ে পরমশূন্য নীরবতা।

তবুও থেমে নেই অলৌকিক স্টিমার

চরম দারিদ্র্যসীমাতেও স্বপ্নের বিকিকিনি চলছেই।

চক্রাকারে বাড়ছে জীবনের দরপতন।

জন্মের আগে আর মৃত্যুর পরে ‘শূন্য’ এক অনন্ত যৌবনা।

শূন্য মানেই বিনাশ নয়

এক আকাশ শূন্যতা কী করে শূন্য হয়?

শূন্য নির্বিকার

আঁধারের দীপ্তি ছড়ায় আমাদের চরিত্র সীমা!

মহাশূন্যে শূন্যই শাশ্বত

শাশ্বত শূন্যই চিরন্তন গন্তব্য

জীবনের ক্যানভাসে আঁকা হোক মানবতা।

রক্তকমল মুখশ্রী
সুশান্ত হালদার

আমাদের দেখা নাও হতে পারে

এমনও হতে পারে

বিমূর্ত আকাশে বিলীন হবার পর

ছায়াপথের কোন এক গর্তে আটকা পড়েছি আমি

নক্ষত্র চ্যুত কোনো এক রাতে

যদি এলিয়েন ডানায় ভর করে ফিরে আসি

পলাশ স্নিগ্ধতায় মায়াকানন ষোল কোটি মানুষের দেশে

তখন কি চিনতে পারবে

ধূলি ওড়া সন্ধ্যায় কে ছিল নীলাচল আকাশমুখী?

আমাদের দেখা নাও হতে পারে

এমনও হতে পারে

ভয়ানক যুদ্ধে মরে যাওয়া ক্রিস্টোফারই আমি

তখন যদি চিনতে পারো

দেখে নিও

কতটা শ্যামল ছিল

ডুমুর ফোটা বাংলার ওই রক্তকমল মুখশ্রী!

ছবি

প্রতিবাদী চেতনার উর্বর ময়দান

ছবি

রবীন্দ্রনাথের আদি পুরুষের শেকড়

ছবি

ভেঙে পড়ে অন্তর্গহনের প্রগাঢ় অনুভূতি

সাময়িকী কবিতা

ছবি

ফ্রিদা কাহলো : আত্মপ্রকাশের রঙিন ক্যানভাস

ছবি

জ্যাজ সংঙ্গীতের তাৎক্ষণিক সৃষ্টিশীলতা

ছবি

নক্ষত্রের ধ্রুবতারা অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী

ছবি

নজরুল ও তাঁর সুন্দর

ছবি

নতুন বইয়ের খবর

ছবি

‘আমার চোখ যখন আমাকেই দেখে’- প্রেম ও প্রকৃতির সেতুবন্ধ

ছবি

পূষন ও বৃষ্টির গল্প

ছবি

নিরামিষ চর্চার বিরল আখ্যান

ছবি

‘আমি বাংলায় দেখি স্বপ্ন’

সাময়িকী কবিতা

ছবি

ভ্রম

ছবি

পালকের চিহ্নগুলো

ছবি

নতুন বইয়ের খবর

ছবি

রফিক আজাদের কবিতা

ছবি

ধূসর পাণ্ডুলিপি পরিবহন

ছবি

চৈত্রের কোনো এক মধ্যরাতে

ছবি

দেশভাগের বিপর্যয় ও ‘জলপাইহাটি’র জীবনানন্দ দাশ

ছবি

সামান্য ভুল

সাময়িকী কবিতা

ছবি

আধুনিক বাংলা কবিতার প্রথাভাঙা মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত

ছবি

ধুলোময় জীবনের মেটাফর

ছবি

স্কুলটি ছোট্ট বটে

ছবি

নতুন বইয়ের খবর

ছবি

পালকের চিহ্নগুলো

ছবি

আদোনিসের কবিতা

ছবি

আড়াই লেনের কৃষ্ণচূড়া

ছবি

গিরিশচন্দ্র ঘোষের নাটক ইতিহাস ও দেশপ্রেম

ছবি

নিজস্বতার অনন্য প্রমাণ

ছবি

বইমেলায় আসছে নতুন বই

ছবি

সরল প্রাণের সোপান

ছবি

হাসান আজিজুল হকের দর্শনচিন্তা

ছবি

শীতের পদাবলি

tab

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

শুক্রবার, ২৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ভুলে যাবে না তো
দিলারা হাফিজ

দুরন্ত এক তন্ময় তীর ছুঁড়ে দিয়ে তালপাখা বলে,

মনো-ত্বক দহনের এই গ্রীষ্মকাল ফুরালে,

আমাকে ভুলে যাবে না তো?

বর্ষণের ঋতু ছেড়ে গেলে, কে কাহার?

তবু- তবু তো নীল শাড়ি নিঙারি নিঙারি

সেও ভাবে ভুলে যাবে কি আমাকে পরাণ সহিত...

তুমিও ভুলে যাবে- একদিন সময় হারালে!

সেই যে টাঙ্গাইল থানাপাড়ার কালো মেয়েটি,

নিয়ম করে প্রতি সকালের মোড়ে দাঁড়িয়ে

একজন কবির সংগোপন অপেক্ষায় জানালা খুলে

তার কাজল কালো দৃষ্টির মায়া ছড়িয়ে দিয়ে

নিরন্তর গেয়ে যেতো ১টি গান-

“ভুল সবই ভুল”

এজীবনের পাতা পাতায় যা লেখা”

আমিও সেই কবির পথের দিশায় হাঁটু মুড়ে বসে থাকি

কণ্ঠে তুলে নিয়ে একই গান গাই!

“ভুলিয়া না যাইও বন্ধু ভুলিয়া না যাইও”

এর কোনো শেষ কিংবা শুরু ছিলো কি?

অন্তর বসন্ত
আদ্যনাথ ঘোষ

এই যে ফাগুন।

দুহাত মেলে বসে আছি তোমারই নিকট।

যতোটা সুন্দর তুমি! তারো চেয়ে আরো আরো ঢের বেশি

পলাশ দুপুর। সাজিয়ে দাও। মুখরিত সংলাপ ভুলে।

তোমার রঙের থেকে সবটুকু নগ্ন প্রাণের রামধনু বসন্ত আকাশ-

ভুল করে ছেড়ে যাও কোন দূর দেশে? করুণ বিষাদভরা

ঘোলাটে অন্ধকারে। যেয়ো নাকো ভুলে। ফিরো এসো আমারই

বুকের ভেতর। এমন উচ্ছ্বাসী মাতাল দিনের ভ্রমর-সৌরভ,

আর কি আসবে ফিরে? ওরে ও মাতাল ফাগুন।

তোমার বুকের ভেতর যত সুর আছে, সব সুর একসাথে বেঁধে,

যতোটা অপরূপ মুগ্ধময়ী প্রজাপতি দিনের রঙিন আকাশ;

নির্বিকারে চেনা আর অচেনার সবগুলো স্মৃতির পুরনো হিসেব ফেলে,

সাজিয়ে দাও, ছড়িয়ে দাও। আমারই দুহাত ভরে,

তোমারই দৃশ্যপটের উদোম আলোর সব রঙ, সব আয়োজন।

তোমার বয়সী চাঁদ
রওশন রুবী

তুমি ছুঁতে চাও বলেই চাঁদ আগুয়ান

অমৃতের পাত্র হাতে নৃত্যরত অপ্সরা

গিলে নাও বাটাময় সুঠাম সময়

দেখাও ওপারে নিংড়ানো উত্তাপ, আর্দ্র কাঁপন,

শোনাও ধ্বনির ব্যঞ্জনা,

শোনাও গজল ও সঙ্গীত, বৈঠার আব্দার।

তোমার বয়সী চাঁদ পুড়ে গেলে

তুমি কি হবে না তার সুবোধসুন্দর?

অন্ধকার
রফিকুল ইসলাম আধার

হঠাৎ সন্ধ্যার অন্ধকারে

আঁতকে ওঠে ছাতিমের ছায়া,

খাঁচায় জমা দীর্ঘশ্বাসে

কাঁপে বুকের গভীর আলো।

চারপাশে ধেয়ে আসে বিদঘুটে অন্ধকার,

অতল গহ্বরে ডুবে যায় পথের নিশানা।

মুছে যায় পরিচয়,

প্রতিহিংসার অনলে

জ্বলে ওঠে অবিন্যস্ত ছায়ারা।

তবু সাহস চুরি করতে আসে

ভয়ের শীতল দাঁত,

হাতছাড়া হয় পথকড়ি

হারিয়ে যায় সমস্ত সঞ্চয়।

নিঝুম আশ্বিনের মধ্যরাতে

রাতের প্রহরী কাঁপা গলায় হাঁকে,

‘কে যায় রে?’

দুর্বৃত্ত সময় থাকে নির্বাক।

চারদিকের চরাচর

দাঁতে দাঁত কামড়ে,

ছিঁড়ে ফেলে নীরবতার অন্ধকার।

ছদ্মবেশী
আশিক আজিজ

থমকে থাকা ও নিস্তেজ মধ্যরাত

ভাঙা ঘুমে একাকিত্বের আসর জানালা খোলা

শীতঘেরা অন্ধকার সাঁতার কাটে হাবুডুবু খায়

মৃত আত্মার পদচারণা মুখর গুমোটবাঁধা ফেরিঘাট

সাইরেন বাজে চরজাগা বালুতে

আটকে পড়া নদী জুড়ে ঘন কুয়াশার আড্ডা

সাদা পোশাকে বিচরণ প্রেতদেহের

ভাঙা ঢেউ সাপের ফণায় ফুঁসে ওঠে

ছদ্মবেশী।

বসন্তে আমি শুধু তোমার<কাছেই আসতে চাই
মিরাজুল আলম

সব সীমানা অতিক্রম করে

এই বসন্তে আমি শুধু তোমার কাছেই আসতে চাই।

তুমি তোমার হৃদয়ের সব কটি জানালা খোলা রেখো।

গত শীতে আমার কোনো খবর তুমি রাখলে না।

প্রচ- শীতে খুব কাঁপছিলাম।

আর শুধু তোমার নামের শব্দ পান করে বেঁচেছিলাম।

গত শীতে তুমি আমার জন্য একটা মিহি চাঁদর পাঠাতে পারতে।

তোমার তো বেসাতি কম নেই।

আমি তোমার নাম স্মরণে সব ভুলে গিয়ে ফতুর হয়ে গেছি।

আমার ব্যাধিমন্থনের ডানায় ভর করছিল

পৃথিবীর সব শীতকাল।

তুমি চাইলেই আমার ব্যথিত হৃদয়ে

ভালবাসার একটা চাঁদর জড়িয়ে দিতে পারতে।

প্রেম ও প্রতীক্ষার মাঝখানে

দাবাললে পৃথিবী পুড়ে গেলেও আমি শুধু

তোমার অপেক্ষায় থাকবো।

তুমি অনুমতি দিলে আগামী বসন্তে

আমি তোমার বাড়ির সীমানায় আসবো।

তোমার জন্য অপেক্ষার ফুল নিয়ে

দাড়িয়ে থাকবো।

শূন্য দীপাধার
বেনজির শিকদার

ওখানে গাঢ় অন্ধকার;

ভাতের লোকমার মতো অবিশ্বাসের দলা

কু-লী পাকিয়ে হাসে।

বেওয়ারিশ কপটতায় হলুদবর্ণ নীল হয়।

শূন্য দীপাধার;

প্রেমহীন মরশুম নামে সবুজাভ ঘাসে।

এখানে আলোদায়ী ভোর!

তুলোর মতো হালকা মেঘ

ভেসে যায় আকাশে;

গায়ে লাগা বাতাসও-

ওজনহীন আনুকূল্যে সময় দেয় পাড়ি;

অথচ কিছুই হালকা লাগে না,

জীবনকে মনে হয় অচ্ছুৎ-ভারি!

যেন মরে গেলেই বেঁচে যাওয়া।

বেহুঁশ বিবস্ত্রে বসতি ভূগোল! আড়চোখে মরচুয়ারি হাসে।

তবুও মৃত্যু নয়,

মৃতরাও বাঁচতে ভালোবাসে।

শাশ্বত শূন্য
ইসলাম মুহাম্মদ তৌহিদ

তীরবিহীন সমুদ্রে শূন্যতার উত্তাল ঢেউ

কোলাহল ভেঙে গড়ে পরমশূন্য নীরবতা।

তবুও থেমে নেই অলৌকিক স্টিমার

চরম দারিদ্র্যসীমাতেও স্বপ্নের বিকিকিনি চলছেই।

চক্রাকারে বাড়ছে জীবনের দরপতন।

জন্মের আগে আর মৃত্যুর পরে ‘শূন্য’ এক অনন্ত যৌবনা।

শূন্য মানেই বিনাশ নয়

এক আকাশ শূন্যতা কী করে শূন্য হয়?

শূন্য নির্বিকার

আঁধারের দীপ্তি ছড়ায় আমাদের চরিত্র সীমা!

মহাশূন্যে শূন্যই শাশ্বত

শাশ্বত শূন্যই চিরন্তন গন্তব্য

জীবনের ক্যানভাসে আঁকা হোক মানবতা।

রক্তকমল মুখশ্রী
সুশান্ত হালদার

আমাদের দেখা নাও হতে পারে

এমনও হতে পারে

বিমূর্ত আকাশে বিলীন হবার পর

ছায়াপথের কোন এক গর্তে আটকা পড়েছি আমি

নক্ষত্র চ্যুত কোনো এক রাতে

যদি এলিয়েন ডানায় ভর করে ফিরে আসি

পলাশ স্নিগ্ধতায় মায়াকানন ষোল কোটি মানুষের দেশে

তখন কি চিনতে পারবে

ধূলি ওড়া সন্ধ্যায় কে ছিল নীলাচল আকাশমুখী?

আমাদের দেখা নাও হতে পারে

এমনও হতে পারে

ভয়ানক যুদ্ধে মরে যাওয়া ক্রিস্টোফারই আমি

তখন যদি চিনতে পারো

দেখে নিও

কতটা শ্যামল ছিল

ডুমুর ফোটা বাংলার ওই রক্তকমল মুখশ্রী!

back to top