alt

সাময়িকী

তুষার গায়েন-এর কবিতা

: বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

তুষার গায়েন

চুম্বক সংস্থিতা
শয্যায় নিশুতি রাতে, আমার হৃৎপি- থেকে বিচ্ছুরিত তীব্র তরঙ্গরাশি

তোমার হৃৎপিণ্ডে সংযুক্ত হতে থাকে- দূরত্ব বারো হাজার মাইল

আমরা দু’জনে মিলে সংস্থিত-চুম্বক এক চৌম্বকীয় আবেশে।

আমার ঘুম আসে, আসে না, মেরুদ-ে ভর করে চিৎ হয়ে শুয়ে

আকাশ উপুড় করে আনি সব তারকারাজি- তারা আবর্তিত হতে থাকে

মস্তিষ্কের স্নায়ুপথে, গতি ও সংঘর্ষে কখন ঘুমিয়ে পড়ি জড়িয়ে ধরে

তোমার গ্রহমুখ- তরল জলোচ্ছ্বাস ভাসিয়ে নিয়ে যায় দূর, দূর উপকূল

মহাজাগতিক উল্লম্ফনে... কখন সকাল হয়, পাখি ডাকে, সান্ত¡নার মতো

মৃদু বাতাস ফিস ফিস করে ডাকে, স্থিতি-জড়তার অবসাদ ভেঙে বাস্তবিক

রোদ্দুরে পা ফেলে নেমে আসা প্রাত্যহিক কর্মদিবসে যে কতটা কঠিন

হয়ত তোমার অনুভবে আছে!

তিল দর্শন

কালো মখমলে ঢেকেছ গৌরবর্ণ দেহ

পোশাকের চাপে আবৃত পাহাড়

যে-মৃদু উদ্ভাস নিয়ে নিঃশ্বাসে কম্পমান,

তার সামান্য উপরে একটি কালো তিল

শাসন করছে মুগ্ধ দৃষ্টি, অনন্ত নীলাকাশ!

প্রস্ফুটনের আলোকলতা

শব্দগুলো অধরে ফোটার আগে

নৈঃশব্দ্যের ভাষায় ডাকি তোমাকে

সাড়া না পেয়ে আড়ষ্টতা ভেঙে

ডাকি প্রগলভ শব্দের উচ্চারণে

শব্দে কি অনূদিত হয় অন্তর

দ্বিধা কম্পিত সব অনুভব?

ঠিক কোন শব্দ সমবায়ে লক্ষ্যভেদী

বার্তা পৌঁছে যাবে তোমার সন্নিকটে?

জানি না তাই যত অনর্থ ঘটে সচরাচর!

সব ভাষা ভুলে হিরন্ময় নীরবতা নিয়েছি মেনে

যদি আমার নৈঃশব্দ্য ছুঁতে পারে নৈঃশব্দ্য তোমার

ভাষা প্রস্ফুটনের আলোকলতায় দুলে।

যাত্রা স্বপ্নান্তরে

যখন এপ্রিল এসে গেছে, তীব্র বাতাস মৃদু উত্তাপের আঁচ নিয়ে

অতর্কিত আঘাত হানছে শীতের অবসন্নতায় আর পাতাশূন্য

গাছগুলো দুলে উঠছে বারংবার বসন্তের আগমনী বার্তায়...

মানুষ বিভ্রান্ত পোশাক নির্বাচনে- কতটুকু উষ্ণ হবে তাদের

গায়ের ওভারকোট মানিয়ে নিতে ঋতু পরিবর্তনের বয়ঃসন্ধিকালে

মাথার চুপি ও হাতের দস্তনা পরে তারা ফের খুলে খুলে রাখে-

তখন দূর স্বদেশে বেগানা বসন্ত এসে গেছে দ্বিধাহীন প্রগলভতায়

সেখানে নিত্যদিন আতঙ্ক ও ভয়- কে কাকে মারে, উঠিয়ে নিয়ে যায়

ধর্ষণ করে ফেলে রাখে শিশু ও কিশোরী গোঙায় সর্ব নারীকূল!

রপ্তানিপণ্যে শ্যামচাচা আরোপিত শুল্ক বেড়ে আড়াইগুণ আর

মিয়ানমারের ভূমিকম্প কি বিধ্বংসী রেখায় ক্রমশ আগুয়ান

বাংলাদেশি সীমানায়?

এইসব গুমখুন, দেশান্তরী ভয় বুঝি নিম্নচাপে ভারি করে তোলে এইখানে

ঝকঝকে এপ্রিলের আকাশ আর গোত্তা খেয়ে বাতাস সাঁই সাঁই করে নামে

সহসাই বরফবৃষ্টি বন্ধ কাঁচের জানালায় আছড়ে পড়ে জোরে, অবিশ্রাম

শাসায় বসন্তের ঋতুচক্রে আগমন-অবসন্ন দেহে ঢলে পড়ি বিছানায়...

তুমি স্বপ্নে আসো, দেখা দাও, উজ্জ্বল দাঁড়িয়ে আছো কোথাও মানুষের মাঝে

কোনো সুর, কথকতা বেজে উঠবে অচিরাৎ কণ্ঠে তোমার অনুমেয় অর্থাগমে

আমি বলি, ‘তুমি তো ছবিও আঁকো বেশ, সেসবও হতে পারে উৎস আয়ের!’

আমি অনেক আদরে তোমাকে কোলে তুলে নিই, হাঁটি সম্মুখে

তোমার তরুণীদেহ ছোট হয়ে আসে যেন কন্যারূপে তুলেছি বাহুতে

ভরহীন আদরের ছোট মেয়ে! ঘুমের ওপারে তুমুল বৃষ্টি, ঝড়জল

ভেঙে পড়ে জানালার কাঁচ, শার্সিতে- সেসব দেখি না আমি

স্বপ্নে হেঁটে চলি তোমাকে নিয়ে সব দুঃস্বপ্নের ছায়া বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে

অনাগত বসন্তের অভিমুখে...

ছবি

ফার্স্ট টিউসডে’স : আমার প্রথম মঙ্গলবার সন্ধ্যার গন্তব্য

ছবি

আজ লাবণ্যর বিয়ে

ছবি

সংস্কৃতির পরম্পরা, অভিঘাত-অভিজ্ঞান ইতিহাস বিচার-বিশ্লেষণ

ছবি

লোরকার দেশে

ফিলিস্তিনের তিনটি কবিতা

ছবি

এক বিস্ময় প্রতিভা

ছবি

দিওয়ান-ই-মাখফি : জেব-উন-নিশা

ছবি

বৈচিত্র্যে ভরা ‘যদিও উত্তরমেঘ’

ছবি

রোকনুজ্জামান খান দাদা ভাইয়ের কথা

ছবি

মোহ কাঠের নৌকা : জীবন-সংগ্রামের এক বাস্তব প্রতিচ্ছবি

ছবি

শাঁকচুন্নি

ছবি

মেঘনাদবধ, এক নতুন দৃশ্যভাষা

ছবি

নতুন কবিতার সন্ধানে

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

গণহত্যার বিরুদ্ধে কবিতা

ছবি

আবদুল মান্নান সৈয়দের ‘ভাঙানৌকা’

ছবি

সাময়িকী কবিতা

ছবি

বায়োস্কোপ

ছবি

জরিনা আখতারের কবিতা আত্ম-আবিষ্কার ও মুক্তি

ছবি

শহীদ সাবেরের সাহিত্য চিন্তা ও জীবনের সমন্বয়

ছবি

বাংলা ছোটগল্পের অনন্য রূপকার নরেন্দ্রনাথ মিত্র

ছবি

প্রেম, দর্শন ও অখণ্ডতা

ছবি

প্রতিবাদী চেতনার উর্বর ময়দান

ছবি

রবীন্দ্রনাথের আদি পুরুষের শেকড়

ছবি

ভেঙে পড়ে অন্তর্গহনের প্রগাঢ় অনুভূতি

সাময়িকী কবিতা

ছবি

রহস্যময় পাহাড়ী মানব

ছবি

ফ্রিদা কাহলো : আত্মপ্রকাশের রঙিন ক্যানভাস

ছবি

জ্যাজ সংঙ্গীতের তাৎক্ষণিক সৃষ্টিশীলতা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

নক্ষত্রের ধ্রুবতারা অধ্যাপক শুভাগত চৌধুরী

ছবি

নজরুল ও তাঁর সুন্দর

ছবি

নতুন বইয়ের খবর

ছবি

‘আমার চোখ যখন আমাকেই দেখে’- প্রেম ও প্রকৃতির সেতুবন্ধ

ছবি

পূষন ও বৃষ্টির গল্প

ছবি

নিরামিষ চর্চার বিরল আখ্যান

tab

সাময়িকী

তুষার গায়েন-এর কবিতা

তুষার গায়েন

বৃহস্পতিবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৫

চুম্বক সংস্থিতা
শয্যায় নিশুতি রাতে, আমার হৃৎপি- থেকে বিচ্ছুরিত তীব্র তরঙ্গরাশি

তোমার হৃৎপিণ্ডে সংযুক্ত হতে থাকে- দূরত্ব বারো হাজার মাইল

আমরা দু’জনে মিলে সংস্থিত-চুম্বক এক চৌম্বকীয় আবেশে।

আমার ঘুম আসে, আসে না, মেরুদ-ে ভর করে চিৎ হয়ে শুয়ে

আকাশ উপুড় করে আনি সব তারকারাজি- তারা আবর্তিত হতে থাকে

মস্তিষ্কের স্নায়ুপথে, গতি ও সংঘর্ষে কখন ঘুমিয়ে পড়ি জড়িয়ে ধরে

তোমার গ্রহমুখ- তরল জলোচ্ছ্বাস ভাসিয়ে নিয়ে যায় দূর, দূর উপকূল

মহাজাগতিক উল্লম্ফনে... কখন সকাল হয়, পাখি ডাকে, সান্ত¡নার মতো

মৃদু বাতাস ফিস ফিস করে ডাকে, স্থিতি-জড়তার অবসাদ ভেঙে বাস্তবিক

রোদ্দুরে পা ফেলে নেমে আসা প্রাত্যহিক কর্মদিবসে যে কতটা কঠিন

হয়ত তোমার অনুভবে আছে!

তিল দর্শন

কালো মখমলে ঢেকেছ গৌরবর্ণ দেহ

পোশাকের চাপে আবৃত পাহাড়

যে-মৃদু উদ্ভাস নিয়ে নিঃশ্বাসে কম্পমান,

তার সামান্য উপরে একটি কালো তিল

শাসন করছে মুগ্ধ দৃষ্টি, অনন্ত নীলাকাশ!

প্রস্ফুটনের আলোকলতা

শব্দগুলো অধরে ফোটার আগে

নৈঃশব্দ্যের ভাষায় ডাকি তোমাকে

সাড়া না পেয়ে আড়ষ্টতা ভেঙে

ডাকি প্রগলভ শব্দের উচ্চারণে

শব্দে কি অনূদিত হয় অন্তর

দ্বিধা কম্পিত সব অনুভব?

ঠিক কোন শব্দ সমবায়ে লক্ষ্যভেদী

বার্তা পৌঁছে যাবে তোমার সন্নিকটে?

জানি না তাই যত অনর্থ ঘটে সচরাচর!

সব ভাষা ভুলে হিরন্ময় নীরবতা নিয়েছি মেনে

যদি আমার নৈঃশব্দ্য ছুঁতে পারে নৈঃশব্দ্য তোমার

ভাষা প্রস্ফুটনের আলোকলতায় দুলে।

যাত্রা স্বপ্নান্তরে

যখন এপ্রিল এসে গেছে, তীব্র বাতাস মৃদু উত্তাপের আঁচ নিয়ে

অতর্কিত আঘাত হানছে শীতের অবসন্নতায় আর পাতাশূন্য

গাছগুলো দুলে উঠছে বারংবার বসন্তের আগমনী বার্তায়...

মানুষ বিভ্রান্ত পোশাক নির্বাচনে- কতটুকু উষ্ণ হবে তাদের

গায়ের ওভারকোট মানিয়ে নিতে ঋতু পরিবর্তনের বয়ঃসন্ধিকালে

মাথার চুপি ও হাতের দস্তনা পরে তারা ফের খুলে খুলে রাখে-

তখন দূর স্বদেশে বেগানা বসন্ত এসে গেছে দ্বিধাহীন প্রগলভতায়

সেখানে নিত্যদিন আতঙ্ক ও ভয়- কে কাকে মারে, উঠিয়ে নিয়ে যায়

ধর্ষণ করে ফেলে রাখে শিশু ও কিশোরী গোঙায় সর্ব নারীকূল!

রপ্তানিপণ্যে শ্যামচাচা আরোপিত শুল্ক বেড়ে আড়াইগুণ আর

মিয়ানমারের ভূমিকম্প কি বিধ্বংসী রেখায় ক্রমশ আগুয়ান

বাংলাদেশি সীমানায়?

এইসব গুমখুন, দেশান্তরী ভয় বুঝি নিম্নচাপে ভারি করে তোলে এইখানে

ঝকঝকে এপ্রিলের আকাশ আর গোত্তা খেয়ে বাতাস সাঁই সাঁই করে নামে

সহসাই বরফবৃষ্টি বন্ধ কাঁচের জানালায় আছড়ে পড়ে জোরে, অবিশ্রাম

শাসায় বসন্তের ঋতুচক্রে আগমন-অবসন্ন দেহে ঢলে পড়ি বিছানায়...

তুমি স্বপ্নে আসো, দেখা দাও, উজ্জ্বল দাঁড়িয়ে আছো কোথাও মানুষের মাঝে

কোনো সুর, কথকতা বেজে উঠবে অচিরাৎ কণ্ঠে তোমার অনুমেয় অর্থাগমে

আমি বলি, ‘তুমি তো ছবিও আঁকো বেশ, সেসবও হতে পারে উৎস আয়ের!’

আমি অনেক আদরে তোমাকে কোলে তুলে নিই, হাঁটি সম্মুখে

তোমার তরুণীদেহ ছোট হয়ে আসে যেন কন্যারূপে তুলেছি বাহুতে

ভরহীন আদরের ছোট মেয়ে! ঘুমের ওপারে তুমুল বৃষ্টি, ঝড়জল

ভেঙে পড়ে জানালার কাঁচ, শার্সিতে- সেসব দেখি না আমি

স্বপ্নে হেঁটে চলি তোমাকে নিয়ে সব দুঃস্বপ্নের ছায়া বাঁচিয়ে বাঁচিয়ে

অনাগত বসন্তের অভিমুখে...

back to top