alt

সাময়িকী

বেলাল চৌধুরীর কবিতা

: বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

বেলাল চৌধুরী
প্রতিকৃতি : মাসুক হেলাল

সূর্যমুখী, তোমার জন্যে খেলনা-পুতুল

নির্জনতা থেকে মুক্তি দিয়ে তাকে উপড়ে এনেছিলুম

বুকের ভেতর রাখবো ব’লে,

সংগোপনে নিজের কাছাকাছি

সমস্তক্ষণ বুকের মধ্যে একা ভীষণ দাপাদাপি

সূর্যমুখী আমার সহ্য হয় না সহ্য হয় না।

তোমার ঐ প্রচ- তাপ বিষম প্রখর

বুকের ভেতর রক্তে ভাঙে দারুণ তোলপাড়

সমস্তদিন তোমার গন্ধে আকুল

অন্ধকারে বুকের মধ্যে কেবল প্রবল কলরোল

সূর্যমুখী মুখটি তোলো চুমু খাবো সূর্য আমার

পাপড়ি মেলো ভেতরে যাবো ভেতরে যাবে সূর্য আমার

অনেক গভীর অন্ধকারে অন্ধকারে অন্ধকারে

জ্বলবে তোমার মন-চেতনা আমার পুড়বে সারা শরীর

সূর্যমুখী তুমি শুনবে অনন্ত প্রাণ,প্রাণের গভীর কলরোল

দেখবো আমি মৃত্তিকায় প্রোথিত অদূরের

উদ্দাম উদ্ভাস ও রক্তিম চঞ্চল উন্মীলন

সূর্যমুখী সূর্য আমার সূর্য আমার।

শালদা নদী

গভীর রাতের ঘুম চিরে কালো কড়কড় শব্দে

নেচে ওঠে অর্ধস্ফুট চৈতন্যের প্রচ্ছন্ন অতলে

মেঘের থির-বিজুরি-

সমুখে দেখি খুলে যায় সটান

আঁকাবাঁকা স্মৃতিঘেরা অচেনা স্বর্গসোপান

অলীক শালদা নদী ঘুঙুর পায়ে নদী ময়ূরী

না কি পাথুরে বালির দেশে অতর্কিত

ফণীমনসার ফুল?

বাঁকাচোরা খরস্রোতা হাওয়ার ঘূর্ণী

সঞ্চারে তীব্র নিখাদ

থেকে থেকে বহে দমকা ঝড়ের প্রবল জোয়ার

চন্দ্রাতুর শালদা নদী তখন কী গভীর,কী বিপুল

সাধে মরমিয়া গান, মর্মের অধিক ব্যাপ্তি তার-

কাঁখালে জড়ানো পাছাপেড়ে রণরঙ্গিনী

বর্ণিকাভঙ্গে

মৎস্যগন্ধা অভিসারে যেন অনন্ত বাসুকি

ধীরে বহে খলখল বালুময় রজত তরঙ্গরাশি।

পেরিয়ে মধ্যরাত দূরগামী স্বপ্নের ভৈরব নিনাদ

উঁকিঝুঁকি মায়া ভরা চৈত্রের টালমাটাল শিমুল

বহে যায় ঝুপঝাপ পাড়-ভাঙ্গা দুরন্ত হিল্লোলে

সরব গতির স্পন্দন আলোড়িত সুদূর

শালদা নদীর গান।

শব্দ এবং আগুন

শরীর ছাড়া শরীর যায় না চেনা

হয় না জানা নিজের কিংবা কারুর

একই আগুন জ্বলছে ধরো কিন্তু

বুকের নিচে বুক না পেলে কেমন ক’রে

জানবো আমি তোমার শরীর তোমার আগুন

নেবো তুলে ঘামের লোনা মুখের লালা অন্য গরম

জানবে আমি তোমার শরীর আমার আগুন

মুখের মধ্যে দাঁতের ডগায় তীক্ষè ধার

শরীর দিয়েই শরীর আমি জানতে চাই

হোক না তা কাঠের কিংবা চর্বি মেদের

বুকের নিচে বুক না পেলে যায় কি ছোঁয়া

উষ্ণ মধুর দেহের ওম ঊরুর ভারে অন্য আগুন

শরীর ছেনে শরীর দিয়েই অন্ধকারের

নিবিড় শরীর গভীর ক’রে দাঁতের কাটি

বুকে পিষি ঘাসের শরীর- আঁশটে গন্ধ

শরীর দিয়েই শরীর থেকে শব্দ এবং আগুন।

কানাকড়ির হিসেব

চোখ জুড়ে

ছিলে তুমি,শুধু তুমি,

বুক জুড়ে

ছিলো ঝড় আর ঝড়;

একটাও কথা কিন্তু

বলিনি আমরা,

শুধু আগুনের

শীতল শিখায়

বাড়িয়ে দিয়েছিলুম

দুই করতল।

ছবি

রক্তে লেখা প্রেম: রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহর বিপ্লব

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

শঙ্খজীবন: যাপিত জীবনের অন্তর্গূঢ় প্রতিকথা

ছবি

ওসামা অ্যালোমার এক ঝুড়ি খুদে গল্প

ছবি

প্রযুক্তির আলোয় বিশ্বব্যাপী বইবাণিজ্য

সাময়িকী কবিতা

ছবি

ব্রেশায় উড়োজাহাজ

ছবি

কাফকার কাছে আমাদের ঋণ স্বীকার

ছবি

কাফকাকে পড়া, কাফকাকে পড়ানো

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

সূর্যের দেশ

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

লড়াই

সাময়িকী কবিতা

ছবি

প্রচলিত সাহিত্যধারার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন মধুসূদন

ছবি

মেধাসম্পদের ছন্দে মাতুন

ছবি

উত্তর-মানবতাবাদ ও শিল্প-সাহিত্যে তার প্রভাব

ছবি

আমজাদ হোসেনের ‘ভিন্ন ভাষার কবিতা’

সাময়িকী কবিতা

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

দুই ঋতপার কিসসা এবং এক ন্যাকা চৈতন্য

ছবি

অন্যজীবন অন্যআগুন ছোঁয়া

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

কবিজীবন, দর্শন ও কাব্যসন্ধান

ছবি

অসামান্য গদ্যশৈলীর রূপকার

ছবি

পিয়াস মজিদের ‘রূপকথার রাস্তাঘাট’

ছবি

নজরুলের নিবেদিত কবিতা : অর্ঘ্যরে শিল্পরূপ

ছবি

বাঘাডাঙা গাঁও

ছবি

বুদ্ধদেব বসুর ‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী’ বিষয়ভাবনা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

পথকবিতা: লোকবাংলার সাধারণ কবিতা

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

ক্ষমতার ভাষার বিপরীতে মাতৃভাষার সাধনা

ছবি

ফিলিস্তিনের বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে অণুগল্প

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

tab

সাময়িকী

বেলাল চৌধুরীর কবিতা

বেলাল চৌধুরী
প্রতিকৃতি : মাসুক হেলাল

বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

সূর্যমুখী, তোমার জন্যে খেলনা-পুতুল

নির্জনতা থেকে মুক্তি দিয়ে তাকে উপড়ে এনেছিলুম

বুকের ভেতর রাখবো ব’লে,

সংগোপনে নিজের কাছাকাছি

সমস্তক্ষণ বুকের মধ্যে একা ভীষণ দাপাদাপি

সূর্যমুখী আমার সহ্য হয় না সহ্য হয় না।

তোমার ঐ প্রচ- তাপ বিষম প্রখর

বুকের ভেতর রক্তে ভাঙে দারুণ তোলপাড়

সমস্তদিন তোমার গন্ধে আকুল

অন্ধকারে বুকের মধ্যে কেবল প্রবল কলরোল

সূর্যমুখী মুখটি তোলো চুমু খাবো সূর্য আমার

পাপড়ি মেলো ভেতরে যাবো ভেতরে যাবে সূর্য আমার

অনেক গভীর অন্ধকারে অন্ধকারে অন্ধকারে

জ্বলবে তোমার মন-চেতনা আমার পুড়বে সারা শরীর

সূর্যমুখী তুমি শুনবে অনন্ত প্রাণ,প্রাণের গভীর কলরোল

দেখবো আমি মৃত্তিকায় প্রোথিত অদূরের

উদ্দাম উদ্ভাস ও রক্তিম চঞ্চল উন্মীলন

সূর্যমুখী সূর্য আমার সূর্য আমার।

শালদা নদী

গভীর রাতের ঘুম চিরে কালো কড়কড় শব্দে

নেচে ওঠে অর্ধস্ফুট চৈতন্যের প্রচ্ছন্ন অতলে

মেঘের থির-বিজুরি-

সমুখে দেখি খুলে যায় সটান

আঁকাবাঁকা স্মৃতিঘেরা অচেনা স্বর্গসোপান

অলীক শালদা নদী ঘুঙুর পায়ে নদী ময়ূরী

না কি পাথুরে বালির দেশে অতর্কিত

ফণীমনসার ফুল?

বাঁকাচোরা খরস্রোতা হাওয়ার ঘূর্ণী

সঞ্চারে তীব্র নিখাদ

থেকে থেকে বহে দমকা ঝড়ের প্রবল জোয়ার

চন্দ্রাতুর শালদা নদী তখন কী গভীর,কী বিপুল

সাধে মরমিয়া গান, মর্মের অধিক ব্যাপ্তি তার-

কাঁখালে জড়ানো পাছাপেড়ে রণরঙ্গিনী

বর্ণিকাভঙ্গে

মৎস্যগন্ধা অভিসারে যেন অনন্ত বাসুকি

ধীরে বহে খলখল বালুময় রজত তরঙ্গরাশি।

পেরিয়ে মধ্যরাত দূরগামী স্বপ্নের ভৈরব নিনাদ

উঁকিঝুঁকি মায়া ভরা চৈত্রের টালমাটাল শিমুল

বহে যায় ঝুপঝাপ পাড়-ভাঙ্গা দুরন্ত হিল্লোলে

সরব গতির স্পন্দন আলোড়িত সুদূর

শালদা নদীর গান।

শব্দ এবং আগুন

শরীর ছাড়া শরীর যায় না চেনা

হয় না জানা নিজের কিংবা কারুর

একই আগুন জ্বলছে ধরো কিন্তু

বুকের নিচে বুক না পেলে কেমন ক’রে

জানবো আমি তোমার শরীর তোমার আগুন

নেবো তুলে ঘামের লোনা মুখের লালা অন্য গরম

জানবে আমি তোমার শরীর আমার আগুন

মুখের মধ্যে দাঁতের ডগায় তীক্ষè ধার

শরীর দিয়েই শরীর আমি জানতে চাই

হোক না তা কাঠের কিংবা চর্বি মেদের

বুকের নিচে বুক না পেলে যায় কি ছোঁয়া

উষ্ণ মধুর দেহের ওম ঊরুর ভারে অন্য আগুন

শরীর ছেনে শরীর দিয়েই অন্ধকারের

নিবিড় শরীর গভীর ক’রে দাঁতের কাটি

বুকে পিষি ঘাসের শরীর- আঁশটে গন্ধ

শরীর দিয়েই শরীর থেকে শব্দ এবং আগুন।

কানাকড়ির হিসেব

চোখ জুড়ে

ছিলে তুমি,শুধু তুমি,

বুক জুড়ে

ছিলো ঝড় আর ঝড়;

একটাও কথা কিন্তু

বলিনি আমরা,

শুধু আগুনের

শীতল শিখায়

বাড়িয়ে দিয়েছিলুম

দুই করতল।

back to top