alt

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

: বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

আত্মচিৎকার
আরণ্যক শামছ
ঝনঝন শব্দে ভেঙ্গে যাচ্ছে হাতের পেয়ালা, মহোৎসবের উচ্ছ্বাস, দেয়ালের ছবি, আজানের মিনার, আলাস্কার মসজিদ, তবুও আমি কোনো শব্দশুনতে পাচ্ছি না। চারিদিকে এত এত ভাঙচুর, গ্রেনেডের শব্দ, আগুনের চিৎকার, মানুষের আর্তনাদ, পাহাড়ী ঢলের কান্না, আর সীমান্তিক হট্টগোল... তবুও আমি কোনো শব্দ শুনতে পাচ্ছি না।

সূর্য উঠলেই প্রতিটি ভোর চিৎকার করে ওঠে, প্রতিটি সকাল প্রকম্পিত হয় অজানা আতঙ্কে, প্রতিটি মধ্যাহ্ন আত্মাহুতি দেয়, প্রতিটি বিকেল হুইসেল বাজিয়ে লাফ দেয় নিঃসীম অন্ধকারে, এতসব পতনের শব্দ ও মুহুর্মুহু হৈচৈ... তবুও আমি কিছুই শুনতে পাই না।

অর্বাচীন ঋতুগুলো চিৎকার করে জানিয়ে দেয় কিনজেল মিসাইলের ভুবনকাঁপানো শব্দের ইতিকথা, বাংকারের ভেতর হাড়কাঁপানো শীতে দেশপ্রেমের বিবর্ণ আত্মচিৎকারের কথা, ঋতুগুলোর বুক চিরে ভেসে আসা ই¯্রাফিলের শিঙ্গার হুংকারের কথা, তবুও আমি কোনো কিছুই শুনতে পাই না। আমার বধির চেতনা শ্রুতিসীমার ওপারে বসে এখন আর কোনো কিছুই শুনতে পারে না।

শুধু স্মৃতির পাতাল থেকে বের হয়ে আসে কিছু শিশির বিন্দুর ইতিহাস, ঝনঝন করে আছড়ে পড়ে বুকের ভিতর, আর আমি হঠাৎ গেয়ে উঠি, “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি”।

প্রতিবেদন
সুবীর সরকার
পুরনো গল্প ফিরে আসতে থাকে, ভরা বর্ষার দিন

চশমা খুললে ভেসে ওঠে চোখের কাজল

যারা খোলা মাঠে রেডিও শোনেন তারা অংশত

নিরাপদ

পিঠের ওপর ছড়িয়ে পড়া চুল।

প্রতিটি আঙুলে নদীর গন্ধ।

বিস্তার ও বিস্তারিতর মধ্যে পড়ে থাকে

আপেলগুচ্ছ

ঢলে পাওয়া কই মাছ
টিপু সুলতান
আমাদের নদীগুলো যখন থেকে গৃহপালিত নদীতে

রূপান্তরিত হলো

তখন থেকেই বোধহয় শুরু হলো ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্র্য প্রদর্শন

শুরু হলো সামুদ্রিক সন্ত্রাস নাকাল হলো আমাদের

নদী-নালা, খাল-বিল, হাওড়-বাওড়

এমন কি পথ-ঘাট

আমাদের উন্মুক্ত মাঠ রূপান্তরিত হলো প্রহরারত মাঠে

অনাবশ্যক কথায় আর অনুর্বর চিন্তকের

মাথায় আটকে গেছি আমরা

এ যেন ঢলে পাওয়া কই মাছ

ইচ্ছে হলেই রসনার স্বাদ নেয়া যায়

হাওড়ের সুর
মাহফুজ রিপন
মাটির ওপর জলের বসত, জলের ওপর ঢেউ। ঢেউয়ের সাথে পবন পিরিত, নগরে জানে না তো কেউ। তোমার আমার অমর বাঁধন টাঙ্গুয়া ভ্রমণে। বর্ষা এলে হাওড় দেহে ভরা যৌবন আসে। শীতকালে তার শীর্ণ দেহে খাল বিল হাসে। ভোরবেলা জল রাশি ভেদ করে রঙিন সূর্য ওঠে, আবার সন্ধ্যা হলে দগদগে লাল সূর্যটা হাওড় জলে ডুবে। জল থৈ থৈ নৌকা ভাসে তাহেরপুরের বাঁকে। চোখের সামনে নীলাদ্রি লেক দৃশ্যকাব্যে ভাসে। হাওড়ের রাত্রিযাপন মনে পড়ে খুব। হিজল গাছের সাথে নৌকা বেঁধেছিল বুক। আমরা দু’জন ছইয়ের উপর বসেছিলাম সেই রাতে। উদার আকাশের তারারা সব মিটমিটিয়ে গান ধরে। ঝিঁ ঝিঁ পোকার সঙ্গতে হয়ে গেলাম একাকার। হাওড়ের একটা সুর আছে সবার সেটা জানা দরকার।

দ্বিধায় ফোটেনি পুষ্প
হানিফ রুবেল
দ্বিধায় ফোটেনি কুসুম, মগ্নতার ঘোরে

কলি হয়ে থেকে গেছে ব্যাকুল বাসনার রঙে,

পিপাসা কাতর মুহূর্তের ঢেউ আর সুরের নির্ঝরে...

সমর্পণের ছায়ায় উদাস দাঁড়িয়ে বহুকাল

বসন্তকে বলে গেছি শুধু তার কথা

প্রত্যহ মুছে যায় রোদ, উপেক্ষার আলিঙ্গনে বেঁধে মেঘমঞ্জুরি

বিনিদ্র রাতকে বলি- প্রতীক্ষা করো, মুছো অবসাদ।

আমার তো আর কোনো উদ্যান নেই যে তার

কাছে চাইবো কোমলতা।

আমার তাপস্য শুধু সেই লাজুক কলির কাছে,

নতজানু নিবেদিত প্রাণ বিলীন হবে বলে বেঁচে আছে।

ক্লান্তি ও মৃত্যু
আল মাকসুদ
অনন্ত সত্তার রেলগাড়ি একটি প্ল্যাটফর্মে থামবার কথা ছিল

অজ¯্র মেঘপাখি সকল বেদনা শেষে গান ধরেছিল

সেঁজুতির আলোয়-

সময় না-ফুরোবার ক্লান্তি জমাট ঋতুর মতো।

কারো কোনো বালাই নেই; নির্লজ্জ নীলাকাশ

তবুও সবার। কেমন ফ্যাকাশে রোদ ওঠে।

একবার একটি কাক মৃত ভাগাড়ে দাঁড়িয়ে কা-কা রবে

কার যেন মৃত্যু সংবাদ দিয়ে নিজেই উধাও হয়ে যায়।

তাকে আর দেখেনি এ-তল্লাটের কেউ কোনোদিন;

রেলগাড়িটা বিকল; যাত্রীদের কেউ কেউ এখন বানপ্রস্থে!

সমস্ত সত্তাজুড়ে ক্লান্তির অবসাদ সাপেকাটা রোগীর মতো ঝিমুচ্ছে

মৃত্যুকে বুকে নিয়ে...

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

সূর্যের দেশ

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

লড়াই

ছবি

প্রচলিত সাহিত্যধারার মুখোমুখি দাঁড়িয়েছিলেন মধুসূদন

ছবি

মেধাসম্পদের ছন্দে মাতুন

ছবি

উত্তর-মানবতাবাদ ও শিল্প-সাহিত্যে তার প্রভাব

ছবি

আমজাদ হোসেনের ‘ভিন্ন ভাষার কবিতা’

সাময়িকী কবিতা

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

দুই ঋতপার কিসসা এবং এক ন্যাকা চৈতন্য

ছবি

অন্যজীবন অন্যআগুন ছোঁয়া

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

কবিজীবন, দর্শন ও কাব্যসন্ধান

ছবি

অসামান্য গদ্যশৈলীর রূপকার

ছবি

পিয়াস মজিদের ‘রূপকথার রাস্তাঘাট’

ছবি

নজরুলের নিবেদিত কবিতা : অর্ঘ্যরে শিল্পরূপ

ছবি

বাঘাডাঙা গাঁও

ছবি

বুদ্ধদেব বসুর ‘তপস্বী ও তরঙ্গিণী’ বিষয়ভাবনা

সাময়িকী কবিতা

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

পথকবিতা: লোকবাংলার সাধারণ কবিতা

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

ক্ষমতার ভাষার বিপরীতে মাতৃভাষার সাধনা

ছবি

ফিলিস্তিনের বাস্তব ঘটনা অবলম্বনে অণুগল্প

ছবি

বাঙালির ভাষা ও সংস্কৃতি: একটি পর্যবেক্ষণ

ছবি

শিল্পী সুনীল কুমারের ‘পথের গল্প’-এর স্বরূপ

ছবি

রাত গভীর

ছবি

লোরকার দেশে

ছবি

‘এ নয় আঁখিজল’

জ্যৈষ্ঠের পদাবলি

ছবি

ওসামা অ্যালোমারের একঝুড়ি খুদে গল্প

সাময়িকী কবিতা

ছবি

‘ব্রহ্মপুত্র দাঁড়াও’ কাব্যগ্রন্থে নীলদ্রোহের রেখাপাত

ছবি

নার্গিস-নজরুলের স্মৃতিধন্য দৌলতপুরে একদিন

ছবি

যেভাবে ভেঙেছিল এক মৌনতা

tab

সাময়িকী

সাময়িকী কবিতা

বৃহস্পতিবার, ২৬ জুন ২০২৫

আত্মচিৎকার
আরণ্যক শামছ
ঝনঝন শব্দে ভেঙ্গে যাচ্ছে হাতের পেয়ালা, মহোৎসবের উচ্ছ্বাস, দেয়ালের ছবি, আজানের মিনার, আলাস্কার মসজিদ, তবুও আমি কোনো শব্দশুনতে পাচ্ছি না। চারিদিকে এত এত ভাঙচুর, গ্রেনেডের শব্দ, আগুনের চিৎকার, মানুষের আর্তনাদ, পাহাড়ী ঢলের কান্না, আর সীমান্তিক হট্টগোল... তবুও আমি কোনো শব্দ শুনতে পাচ্ছি না।

সূর্য উঠলেই প্রতিটি ভোর চিৎকার করে ওঠে, প্রতিটি সকাল প্রকম্পিত হয় অজানা আতঙ্কে, প্রতিটি মধ্যাহ্ন আত্মাহুতি দেয়, প্রতিটি বিকেল হুইসেল বাজিয়ে লাফ দেয় নিঃসীম অন্ধকারে, এতসব পতনের শব্দ ও মুহুর্মুহু হৈচৈ... তবুও আমি কিছুই শুনতে পাই না।

অর্বাচীন ঋতুগুলো চিৎকার করে জানিয়ে দেয় কিনজেল মিসাইলের ভুবনকাঁপানো শব্দের ইতিকথা, বাংকারের ভেতর হাড়কাঁপানো শীতে দেশপ্রেমের বিবর্ণ আত্মচিৎকারের কথা, ঋতুগুলোর বুক চিরে ভেসে আসা ই¯্রাফিলের শিঙ্গার হুংকারের কথা, তবুও আমি কোনো কিছুই শুনতে পাই না। আমার বধির চেতনা শ্রুতিসীমার ওপারে বসে এখন আর কোনো কিছুই শুনতে পারে না।

শুধু স্মৃতির পাতাল থেকে বের হয়ে আসে কিছু শিশির বিন্দুর ইতিহাস, ঝনঝন করে আছড়ে পড়ে বুকের ভিতর, আর আমি হঠাৎ গেয়ে উঠি, “আমার সোনার বাংলা, আমি তোমায় ভালোবাসি”।

প্রতিবেদন
সুবীর সরকার
পুরনো গল্প ফিরে আসতে থাকে, ভরা বর্ষার দিন

চশমা খুললে ভেসে ওঠে চোখের কাজল

যারা খোলা মাঠে রেডিও শোনেন তারা অংশত

নিরাপদ

পিঠের ওপর ছড়িয়ে পড়া চুল।

প্রতিটি আঙুলে নদীর গন্ধ।

বিস্তার ও বিস্তারিতর মধ্যে পড়ে থাকে

আপেলগুচ্ছ

ঢলে পাওয়া কই মাছ
টিপু সুলতান
আমাদের নদীগুলো যখন থেকে গৃহপালিত নদীতে

রূপান্তরিত হলো

তখন থেকেই বোধহয় শুরু হলো ব্যক্তিগত স্বাতন্ত্র্য প্রদর্শন

শুরু হলো সামুদ্রিক সন্ত্রাস নাকাল হলো আমাদের

নদী-নালা, খাল-বিল, হাওড়-বাওড়

এমন কি পথ-ঘাট

আমাদের উন্মুক্ত মাঠ রূপান্তরিত হলো প্রহরারত মাঠে

অনাবশ্যক কথায় আর অনুর্বর চিন্তকের

মাথায় আটকে গেছি আমরা

এ যেন ঢলে পাওয়া কই মাছ

ইচ্ছে হলেই রসনার স্বাদ নেয়া যায়

হাওড়ের সুর
মাহফুজ রিপন
মাটির ওপর জলের বসত, জলের ওপর ঢেউ। ঢেউয়ের সাথে পবন পিরিত, নগরে জানে না তো কেউ। তোমার আমার অমর বাঁধন টাঙ্গুয়া ভ্রমণে। বর্ষা এলে হাওড় দেহে ভরা যৌবন আসে। শীতকালে তার শীর্ণ দেহে খাল বিল হাসে। ভোরবেলা জল রাশি ভেদ করে রঙিন সূর্য ওঠে, আবার সন্ধ্যা হলে দগদগে লাল সূর্যটা হাওড় জলে ডুবে। জল থৈ থৈ নৌকা ভাসে তাহেরপুরের বাঁকে। চোখের সামনে নীলাদ্রি লেক দৃশ্যকাব্যে ভাসে। হাওড়ের রাত্রিযাপন মনে পড়ে খুব। হিজল গাছের সাথে নৌকা বেঁধেছিল বুক। আমরা দু’জন ছইয়ের উপর বসেছিলাম সেই রাতে। উদার আকাশের তারারা সব মিটমিটিয়ে গান ধরে। ঝিঁ ঝিঁ পোকার সঙ্গতে হয়ে গেলাম একাকার। হাওড়ের একটা সুর আছে সবার সেটা জানা দরকার।

দ্বিধায় ফোটেনি পুষ্প
হানিফ রুবেল
দ্বিধায় ফোটেনি কুসুম, মগ্নতার ঘোরে

কলি হয়ে থেকে গেছে ব্যাকুল বাসনার রঙে,

পিপাসা কাতর মুহূর্তের ঢেউ আর সুরের নির্ঝরে...

সমর্পণের ছায়ায় উদাস দাঁড়িয়ে বহুকাল

বসন্তকে বলে গেছি শুধু তার কথা

প্রত্যহ মুছে যায় রোদ, উপেক্ষার আলিঙ্গনে বেঁধে মেঘমঞ্জুরি

বিনিদ্র রাতকে বলি- প্রতীক্ষা করো, মুছো অবসাদ।

আমার তো আর কোনো উদ্যান নেই যে তার

কাছে চাইবো কোমলতা।

আমার তাপস্য শুধু সেই লাজুক কলির কাছে,

নতজানু নিবেদিত প্রাণ বিলীন হবে বলে বেঁচে আছে।

ক্লান্তি ও মৃত্যু
আল মাকসুদ
অনন্ত সত্তার রেলগাড়ি একটি প্ল্যাটফর্মে থামবার কথা ছিল

অজ¯্র মেঘপাখি সকল বেদনা শেষে গান ধরেছিল

সেঁজুতির আলোয়-

সময় না-ফুরোবার ক্লান্তি জমাট ঋতুর মতো।

কারো কোনো বালাই নেই; নির্লজ্জ নীলাকাশ

তবুও সবার। কেমন ফ্যাকাশে রোদ ওঠে।

একবার একটি কাক মৃত ভাগাড়ে দাঁড়িয়ে কা-কা রবে

কার যেন মৃত্যু সংবাদ দিয়ে নিজেই উধাও হয়ে যায়।

তাকে আর দেখেনি এ-তল্লাটের কেউ কোনোদিন;

রেলগাড়িটা বিকল; যাত্রীদের কেউ কেউ এখন বানপ্রস্থে!

সমস্ত সত্তাজুড়ে ক্লান্তির অবসাদ সাপেকাটা রোগীর মতো ঝিমুচ্ছে

মৃত্যুকে বুকে নিয়ে...

back to top