সন্ধি-প্রস্তাব
খালেদ হোসাইন
তোমার
সমভিব্যাহারে
যাবো সমুদ্রে পাহাড়ে।
জেনো
তোমার অন্তর্ধানে
আমার
প্রাণ থাকেনা প্রাণে।
সন্ধিবদ্ধ জীবন
পারে
নিতে সমাধানে।
কাফকানন্দ
মুশাররাত
এমন কেউ কি আছো বা এমন কিছু
যে লক্ষ যোজন দূরে থেকেও আমার মতোই ভাবছো
ঠিক এই মুহূর্তে আমার মতোই আকাশ দেখছে চোখ
আরেকটা চোখ আরেকজনের হোক না একটু হোক
অনেক ভিড়েও খুঁজছে কি কেউ
ধরার মতো হাত
কথার ঝাঁপি উথলে উঠে বুকেই কাটায় রাত
কথারাও চায় কথার পিঠে
ঢেউয়ের মতো কথা উঠুক
একলা মানুষ যেমনটা চায়
তার চাঁদটাও অন্যে দেখুক
যেমন দেখছে কাফকা আর ভাবছে জীবনানন্দ
একজন গাঁথে কথার মালা গদ্যেই কারো ছন্দ
তবুও থাকুক এমনই কেউ, কিংবা ভাবুক এমন করে
একটা পাশের আসন ফাঁকা সেই কতটা যুগ ধরে
শোভনা নাই, ডোরাও নাই, নাই মিলেনা বা লাবণ্য
আমি দেখি গহীন চর আর ওরা দেখে জনারণ্য
পুড়–ক সকল ডায়েরি দাশের
কাফকার সব চরিত্র
তবুও কত মিল ভাবনায় বিষাদ জীবন যত্রতত্র।
চন্দ্রগ্রহণ
সঞ্জয় দেওয়ান
উর্বর দেহভূমে হামলে পড়ে শকুনের পাল
জলীয়বাষ্পে ভেসে বেড়ায় লোলুপ ঘ্রাণ
সন্তর্পণে উড়ে যায় বুকের শেমিজ
মুঠোবন্দি হয় স্তনফুল
বেয়নেট-এর পরশে বিহ্বল পাপড়ির সংসার
বুলেট-এর বর্ষণে ঝরে পড়ে ফুলের গর্ভকেশর।
পদ্মনাভে পরাজিত সৈনিক
মৃত পড়ে থাকে কম্পমান করিডরে
পাশা খেলার কূটচালে রাজ্যহারা যুধিষ্ঠির
বিষাদ ভর করে ফুলের বনে
দ্রৌপদীর শাপে চন্দ্রগ্রহণ কুরুক্ষেত্রে।
ঘড়ি ও কাঁটা
আসিফ নূর
পৃথিবী মলিনমুখ বৃত্তাকার ডায়ালের ঘড়ি,
পরিধিতে এক থেকে বারোটার সব সূচকেই
অস্থির গোঙাচ্ছে যুদ্ধ-অস্ত্র-ধ্বংস-মৃত্যু-অশ্রুআঁকা
শঙ্কিত সংখ্যাসকল।
মাঝখানে শবাসনে শুয়ে-থাকা আমার বুকের
খাঁচা এফোঁড়-ওফোঁড় করে মাটিকে গেঁথেছে যেই
অন্ধ পেরেক, সেটিই কেন্দ্রবিন্দু পৃথিবীঘড়ির।
আমার সটান দেহ সেই ঘড়িটির কাঁটা হয়ে
ঘুরছে তো ঘুরছেই, আর আমার ফুটো হৃৎপি-ের
রক্তের ফিনকিতে ক্রমাগত লাল হচ্ছে সবুজরঙা
যত হাসিগান।
চাঁদ প্রহেলিকা
(কবি জাফর সাদেক)
প্রণব মজুমদার
পথে পথে উৎস উন্মোচনে ক্লান্তিহীন দিনভর
চাঁদের দেখা পাবে বলে ভ্রমণ তোমার নিরন্তর
নিমগ্ন ভাবনায় সৃষ্টিতে সৃষ্টিতে বিষ্ময় পদাবলি
প্রজাপতির মতো আনন্দে বেড়াও রাস্তা ও গলি
চাঁদ মুরারীর শহরে আছে অকৃত্রিম সবুজ প্রাণ
পেলে কি সুস্বাদু টাটকা রুপালি ইলিশের ঘ্রাণ?
চাঁদের মধুময় সান্নিধ্য একা কি মেলে?
ভূমিষ্ঠ ভিটা জীবের বরে চন্দ্রমল্লিকা
কাছে আসে চপলা প্রেমিকার মতো।
চাক্ষুষ পুরুষোত্তম রবির সৌম্য নিবিষ্ট-
পলক যেন পুলকিত বিচ্ছুরিত চন্দ্রালো!
মগ্ন চৈতন্যে তোমার কবিতাভূমি
অনুভবে হয়ত পাবে চাঁদের ঠিকানা।
কিন্তু চাঁদ ঢেকে আছে ভূমির হায়নায়
কিরণ শোভা নষ্ট অন্যায্য ক্ষমতায়।
চিরসত্য কর উদঘাটন সুরের মতন
সৃষ্টির ফোয়ারা তোমার প্রকাশ হোক
জলে ভাসমান চাঁদ-সূর্যে মূর্তমান-
মুষ্টিবদ্ধ হাতিয়াররের গর্জনের সাথে
চাঁদ কুহেলিকা কর উন্মোচন।
বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫
সন্ধি-প্রস্তাব
খালেদ হোসাইন
তোমার
সমভিব্যাহারে
যাবো সমুদ্রে পাহাড়ে।
জেনো
তোমার অন্তর্ধানে
আমার
প্রাণ থাকেনা প্রাণে।
সন্ধিবদ্ধ জীবন
পারে
নিতে সমাধানে।
কাফকানন্দ
মুশাররাত
এমন কেউ কি আছো বা এমন কিছু
যে লক্ষ যোজন দূরে থেকেও আমার মতোই ভাবছো
ঠিক এই মুহূর্তে আমার মতোই আকাশ দেখছে চোখ
আরেকটা চোখ আরেকজনের হোক না একটু হোক
অনেক ভিড়েও খুঁজছে কি কেউ
ধরার মতো হাত
কথার ঝাঁপি উথলে উঠে বুকেই কাটায় রাত
কথারাও চায় কথার পিঠে
ঢেউয়ের মতো কথা উঠুক
একলা মানুষ যেমনটা চায়
তার চাঁদটাও অন্যে দেখুক
যেমন দেখছে কাফকা আর ভাবছে জীবনানন্দ
একজন গাঁথে কথার মালা গদ্যেই কারো ছন্দ
তবুও থাকুক এমনই কেউ, কিংবা ভাবুক এমন করে
একটা পাশের আসন ফাঁকা সেই কতটা যুগ ধরে
শোভনা নাই, ডোরাও নাই, নাই মিলেনা বা লাবণ্য
আমি দেখি গহীন চর আর ওরা দেখে জনারণ্য
পুড়–ক সকল ডায়েরি দাশের
কাফকার সব চরিত্র
তবুও কত মিল ভাবনায় বিষাদ জীবন যত্রতত্র।
চন্দ্রগ্রহণ
সঞ্জয় দেওয়ান
উর্বর দেহভূমে হামলে পড়ে শকুনের পাল
জলীয়বাষ্পে ভেসে বেড়ায় লোলুপ ঘ্রাণ
সন্তর্পণে উড়ে যায় বুকের শেমিজ
মুঠোবন্দি হয় স্তনফুল
বেয়নেট-এর পরশে বিহ্বল পাপড়ির সংসার
বুলেট-এর বর্ষণে ঝরে পড়ে ফুলের গর্ভকেশর।
পদ্মনাভে পরাজিত সৈনিক
মৃত পড়ে থাকে কম্পমান করিডরে
পাশা খেলার কূটচালে রাজ্যহারা যুধিষ্ঠির
বিষাদ ভর করে ফুলের বনে
দ্রৌপদীর শাপে চন্দ্রগ্রহণ কুরুক্ষেত্রে।
ঘড়ি ও কাঁটা
আসিফ নূর
পৃথিবী মলিনমুখ বৃত্তাকার ডায়ালের ঘড়ি,
পরিধিতে এক থেকে বারোটার সব সূচকেই
অস্থির গোঙাচ্ছে যুদ্ধ-অস্ত্র-ধ্বংস-মৃত্যু-অশ্রুআঁকা
শঙ্কিত সংখ্যাসকল।
মাঝখানে শবাসনে শুয়ে-থাকা আমার বুকের
খাঁচা এফোঁড়-ওফোঁড় করে মাটিকে গেঁথেছে যেই
অন্ধ পেরেক, সেটিই কেন্দ্রবিন্দু পৃথিবীঘড়ির।
আমার সটান দেহ সেই ঘড়িটির কাঁটা হয়ে
ঘুরছে তো ঘুরছেই, আর আমার ফুটো হৃৎপি-ের
রক্তের ফিনকিতে ক্রমাগত লাল হচ্ছে সবুজরঙা
যত হাসিগান।
চাঁদ প্রহেলিকা
(কবি জাফর সাদেক)
প্রণব মজুমদার
পথে পথে উৎস উন্মোচনে ক্লান্তিহীন দিনভর
চাঁদের দেখা পাবে বলে ভ্রমণ তোমার নিরন্তর
নিমগ্ন ভাবনায় সৃষ্টিতে সৃষ্টিতে বিষ্ময় পদাবলি
প্রজাপতির মতো আনন্দে বেড়াও রাস্তা ও গলি
চাঁদ মুরারীর শহরে আছে অকৃত্রিম সবুজ প্রাণ
পেলে কি সুস্বাদু টাটকা রুপালি ইলিশের ঘ্রাণ?
চাঁদের মধুময় সান্নিধ্য একা কি মেলে?
ভূমিষ্ঠ ভিটা জীবের বরে চন্দ্রমল্লিকা
কাছে আসে চপলা প্রেমিকার মতো।
চাক্ষুষ পুরুষোত্তম রবির সৌম্য নিবিষ্ট-
পলক যেন পুলকিত বিচ্ছুরিত চন্দ্রালো!
মগ্ন চৈতন্যে তোমার কবিতাভূমি
অনুভবে হয়ত পাবে চাঁদের ঠিকানা।
কিন্তু চাঁদ ঢেকে আছে ভূমির হায়নায়
কিরণ শোভা নষ্ট অন্যায্য ক্ষমতায়।
চিরসত্য কর উদঘাটন সুরের মতন
সৃষ্টির ফোয়ারা তোমার প্রকাশ হোক
জলে ভাসমান চাঁদ-সূর্যে মূর্তমান-
মুষ্টিবদ্ধ হাতিয়াররের গর্জনের সাথে
চাঁদ কুহেলিকা কর উন্মোচন।