রুমা আক্তার
কথাশিল্পী মঈনুল হাসানের বহুল পঠিত ও পাঠক সমাদৃত গল্পগ্রন্থ শঙ্খজীবন (২০২২)। গল্পকারের বাস্তব জীবনবোধ ও শৈল্পিক চেতনার মিথস্ক্রিয়া গল্পগুলোকে ঐশ^র্যম-িত ও অনুরণিত করেছে। মানব জীবনের অন্তর্পøাবী বিষয় তাঁর গল্পগুলোতে অন্তঃসলিলারূপে প্রবাহিত হয়েছে; যা ব্যক্তির জীবনদীপককে শুভবোধের শাণিত সুরে কল্লোলিত করেছে। তাঁর এ ‘শঙ্খজীবন’গল্পগ্রন্থটি যেনো ব্যক্তির রুক্ষ জীবন-বাস্তবতায় বেঁচে থাকার গল্প এবং আত্মকে অন্বেষণ করার গল্প।
‘শঙ্খজীবন’ গল্পগ্রন্থটির নামকরণে লেখকের প্রজ্ঞা এবং রসবদ্ধতার পরিচয় মেলে এবং এ গল্পের বইটিতে মোট এগারোটি গল্প রয়েছে। যেখানে পারিপাশির্^ক হাজারো শূন্যতার ভিতরে এক ঝলক পূর্ণতার স্বাদ গ্রহণ করা যায়। ‘শঙ্খজীবন’ গল্পের শুরুতে এক ধরনের গতি লক্ষণীয়। যেখানে শস্যশূন্য খাঁ খাঁ মাঠের ভিতর দিয়ে ছন্দের মতো ছুটে চলে শুকসারি এক্সপ্রেস এবং এ শুকসারি এক্সপ্রেসের গতি যেনো মানব জীবনের উদ্দাম গতিকেই নির্দেশ করেছে। কেননা, গতিতেই জীবনের ছন্দ পরিলক্ষিত। জীবনের এ চলন্ত পথে হাজারো প্রতিকূলতা আসবে কিন্তু সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। গতির সাথে তাল মেলাতে এবং নিজের অস্তিত্বকে অন্বেষণ করতে অভিরূপ চক্রবর্তীর এ পরিভ্রমণ। “যে করেই হোক ফিরতে হবে আজ, ট্রেনটা বুঝি তাকে রেখেই চলে গেল।” মানব মনে ঘটে যাওয়া নিত্যকার বিষয়কে প্রকৃতির মাঝে খুঁজে পাওয়ার অনন্ত অভীপ্সা অভিরূপের মাঝে প্রতিভাত হয়েছে।
অভিরূপ চক্রবর্তী উদীয়মান এবং প্রতিশ্রুতিশীল কথাসাহিত্যিক। তিনি জীবিকার জন্য লেখক নন, বরং জীবনের জন্য লেখক হতে চেয়েছেন। কারণ লেখালেখি তার অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে। “জীবিকার জন্যে আপাতত মানানসই কাজের সুবন্দোবস্ত রয়েছে। তাই জীবনের তাড়নায় কলমচারী হওয়াটা খুব অস্বাভাবিক নয়।” অভিরূপ লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী। কিন্তু সাহিত্যের প্রতি তার অদম্য স্পৃহা। তাইতো লোকপ্রশাসনের জটিল সব থিওরি এবং টিউটোরিয়ালে তার মন বসে না। তার মন সর্বদাই পড়ে থাকে সংস্কৃতি কিংবা নাটকের অন্দর মহলে। মাঝে মাঝে তাই অভিরূপের আত্মদ্বন্দ্ব হয়, সে বিষয় নির্বাচনে কোনো ভুল করেছে কি না। অভিরূপ জীবনের এ জটিল সমীকরণে নিজেকে মেলাতে পারছে না। জীবনের এ সন্ধিক্ষণে অভিরূপের জীবনে যাদুর কাঠি হয়ে এসেছে শ্রাবণী। শ্রাবণীর সাথে তার পরিচয় হয়েছে ‘আবৃত্তির কণ্ঠশীলনের’ ক্লাসে। শ্রাবণী সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অভিরূপের একাকীত্ব জীবনে শ্রাবণী বর্ষার অবাধ স্বপ্ন হয়ে এসেছে। তাইতো অভিরূপ তার সকল সংশয়, দ্বিধা কাটিয়ে সাহিত্য রচনায় ব্রতী হয়েছে। শ্রাবণী তার মানস গঠনের বর্ধিত অংশ। “অথচ কী আশ্চর্য, সে মোটেও সাহিত্যের ছাত্র ছিলো না। শ্রাবণীর সাথে পরিচয় হবার পর থেকে তার জীবনে অভাবনীয় পরিবর্তন ঘটে গেল।” জীবনের এ অদ্ভুত পরিবর্তন অভিরূপের কাছে ঘোরের মতো লাগে। শ্রাবণীর প্রতি ভালোবাসার আবেগ থাকলেও তার পঞ্চ ইন্দ্রিয় কামনা-বাসনার ঊর্ধেŸ উদ্বেলিত হয়েছে। অভিরূপের এরূপ মানসিক পরিবর্তনের শ্রাবণী খুব আঘাত পেয়েছে। কারণ, একসময় অভিরূপের ভাবনা-চিন্তায় শুধু শ্রাবণী বিরাজ করেছে। এ গল্পের অভিরূপ চক্রবর্তীর মধ্যে গল্পকারের স্বীয় প্রতিচ্ছবি নিহিত।
‘হারানো শহরের কাছে’ গল্পে মঈনুল হাসানের স্মৃতিকাতারতা পরিলক্ষিত হয়েছে। গল্পকার তাঁর মানস প্রিয়াকে অন্বেষণ করেছেন হারানো শহরে। যেখানে তিনি গুম হয়ে যাওয়া শহরের বাতাসে তাঁর প্রিয়তমার নিঃশ^াসকে উপলদ্ধি করেন। শহরের অভূতপূর্ব যান্ত্রিকতার ভিতরে তার প্রেয়সী শবনম একমাত্র আলোর ফুলকি। গল্পকার এ গল্পে পাঠককে নেতিবাচক চিন্তন থেকে ইতিবাচক চিন্তনে উত্তরণ করেন।
‘ভীমচক্র’ গল্পের বকুল স্বাধীনচেতা এবং প্রচ- চঞ্চল প্রকৃতির নারী। যে লুলা ফকিরকে বিয়ে করে বছর চার এক এর মতো সংসার করেছে। বিয়ের পর বকুল জানতে পেরেছে তার স্বামী ভিক্ষবৃত্তিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছে। যে লুলা ফকির সংসারে খাবারের যোগান দিতে পারে না, আদর সোহাগের ক্ষমতা পর্যন্ত তার নেই, কিন্তু উনিশের থেকে বিশ হলে চোখ রাঙ্গিয়ে স্ত্রীকে শাসাতে পারে।
গল্পকার এ গল্পে দেখিয়েছেন, সংসার জিনিসটা এক অভ্যস্তার ব্যাপার। যেখানে স্বামী-স্ত্রী দীর্ঘদিন একসাথে বসবাস করেও একে অপরের মনের খুঁজে অপরাগ। লেখক জীবনের এমনি কিছু কঠিন সত্যের মুখোমুখি করেছেন পাঠককে।
নতুন ভাইরাসের আক্রমণে তোলপাড় গোটা বিশ^। হাসপাতালের লবিতে পিঁপড়ের মতো ভিড়। তবে বাংলাদেশে থেকে বিদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভালো এবং জনগণ ও খুব স্বাস্থ্য সচেতন। তবুও বেগম নাহারের মাতৃ-হৃদয় কিছুতেই প্রবোধ মানে না। সারাক্ষণ শুধু খবর দেখেন এবং সন্তানের চিন্তায় বিভোর থাকেন।
এ মহামারি বা অতিমারি যাইহোক না কেন? বকুল কিন্তু নিয়মিত কাজে আসে। লেখক এখানে পরম মমতায় বকুল মতো নি¤œবিত্তদের জীবন সংগ্রামকে বিধৃত করেছেন। বকুল অন্যের বাসায় কাজ করে খায় এবং এ দুর্দিনে সে যদি করোনার ভয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় তাহলে সে পেটের যামিন দেবে কীভাবে? তার সাথে ছোটো একটা মেয়ে। এমন দমবন্ধ পরিস্থিতিতেও তার চরিত্রের তেমন বদল হয়নি। কিন্তু বেগম নাহার বকুলকে এ বিষয়ে বারবার সতর্ক করেছেন। বেগম নাহারের সরল মনে একটাই প্রশ্ন প্রতিভাত হয়েছে, এ ক্ষুদ্র অণুজীবের এমন কি শক্তি? যা বড়ো বড়ো বিজ্ঞানী বা গবেষক মিলে বুঝতে পারছে না। এমনকি প্রিয়জনের মৃত্যুর শেষ যাত্রাতেও কেউ শামিল হতে পারছে না। তাহলে মানুষের সম্পর্কের বন্ধন থেকেও কী ভাইরাস শক্তিশালী!
মঈনুল হাসান সমাজ জীবনের বহু বিচিত্র রূপভেদকে তাঁর গল্পে শৈল্পিক ব্যঞ্জনায় বিধৃত করেন। তাঁর গল্পের পরতে পরতে যাপিত জীবনের অন্তর্লীন অনুষঙ্গ প্রতিভাত হয়েছে। তবে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন যে, সকল অশুভ শক্তি এবং অন্ধকার দূরীভূত হয়ে পৃথিবী একদিন আলো ও মঙ্গলের পথে চলবে।
রুমা আক্তার
বৃহস্পতিবার, ০৩ জুলাই ২০২৫
কথাশিল্পী মঈনুল হাসানের বহুল পঠিত ও পাঠক সমাদৃত গল্পগ্রন্থ শঙ্খজীবন (২০২২)। গল্পকারের বাস্তব জীবনবোধ ও শৈল্পিক চেতনার মিথস্ক্রিয়া গল্পগুলোকে ঐশ^র্যম-িত ও অনুরণিত করেছে। মানব জীবনের অন্তর্পøাবী বিষয় তাঁর গল্পগুলোতে অন্তঃসলিলারূপে প্রবাহিত হয়েছে; যা ব্যক্তির জীবনদীপককে শুভবোধের শাণিত সুরে কল্লোলিত করেছে। তাঁর এ ‘শঙ্খজীবন’গল্পগ্রন্থটি যেনো ব্যক্তির রুক্ষ জীবন-বাস্তবতায় বেঁচে থাকার গল্প এবং আত্মকে অন্বেষণ করার গল্প।
‘শঙ্খজীবন’ গল্পগ্রন্থটির নামকরণে লেখকের প্রজ্ঞা এবং রসবদ্ধতার পরিচয় মেলে এবং এ গল্পের বইটিতে মোট এগারোটি গল্প রয়েছে। যেখানে পারিপাশির্^ক হাজারো শূন্যতার ভিতরে এক ঝলক পূর্ণতার স্বাদ গ্রহণ করা যায়। ‘শঙ্খজীবন’ গল্পের শুরুতে এক ধরনের গতি লক্ষণীয়। যেখানে শস্যশূন্য খাঁ খাঁ মাঠের ভিতর দিয়ে ছন্দের মতো ছুটে চলে শুকসারি এক্সপ্রেস এবং এ শুকসারি এক্সপ্রেসের গতি যেনো মানব জীবনের উদ্দাম গতিকেই নির্দেশ করেছে। কেননা, গতিতেই জীবনের ছন্দ পরিলক্ষিত। জীবনের এ চলন্ত পথে হাজারো প্রতিকূলতা আসবে কিন্তু সকল প্রতিবন্ধকতা দূর করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। গতির সাথে তাল মেলাতে এবং নিজের অস্তিত্বকে অন্বেষণ করতে অভিরূপ চক্রবর্তীর এ পরিভ্রমণ। “যে করেই হোক ফিরতে হবে আজ, ট্রেনটা বুঝি তাকে রেখেই চলে গেল।” মানব মনে ঘটে যাওয়া নিত্যকার বিষয়কে প্রকৃতির মাঝে খুঁজে পাওয়ার অনন্ত অভীপ্সা অভিরূপের মাঝে প্রতিভাত হয়েছে।
অভিরূপ চক্রবর্তী উদীয়মান এবং প্রতিশ্রুতিশীল কথাসাহিত্যিক। তিনি জীবিকার জন্য লেখক নন, বরং জীবনের জন্য লেখক হতে চেয়েছেন। কারণ লেখালেখি তার অস্তিত্বের সাথে মিশে আছে। “জীবিকার জন্যে আপাতত মানানসই কাজের সুবন্দোবস্ত রয়েছে। তাই জীবনের তাড়নায় কলমচারী হওয়াটা খুব অস্বাভাবিক নয়।” অভিরূপ লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী। কিন্তু সাহিত্যের প্রতি তার অদম্য স্পৃহা। তাইতো লোকপ্রশাসনের জটিল সব থিওরি এবং টিউটোরিয়ালে তার মন বসে না। তার মন সর্বদাই পড়ে থাকে সংস্কৃতি কিংবা নাটকের অন্দর মহলে। মাঝে মাঝে তাই অভিরূপের আত্মদ্বন্দ্ব হয়, সে বিষয় নির্বাচনে কোনো ভুল করেছে কি না। অভিরূপ জীবনের এ জটিল সমীকরণে নিজেকে মেলাতে পারছে না। জীবনের এ সন্ধিক্ষণে অভিরূপের জীবনে যাদুর কাঠি হয়ে এসেছে শ্রাবণী। শ্রাবণীর সাথে তার পরিচয় হয়েছে ‘আবৃত্তির কণ্ঠশীলনের’ ক্লাসে। শ্রাবণী সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অভিরূপের একাকীত্ব জীবনে শ্রাবণী বর্ষার অবাধ স্বপ্ন হয়ে এসেছে। তাইতো অভিরূপ তার সকল সংশয়, দ্বিধা কাটিয়ে সাহিত্য রচনায় ব্রতী হয়েছে। শ্রাবণী তার মানস গঠনের বর্ধিত অংশ। “অথচ কী আশ্চর্য, সে মোটেও সাহিত্যের ছাত্র ছিলো না। শ্রাবণীর সাথে পরিচয় হবার পর থেকে তার জীবনে অভাবনীয় পরিবর্তন ঘটে গেল।” জীবনের এ অদ্ভুত পরিবর্তন অভিরূপের কাছে ঘোরের মতো লাগে। শ্রাবণীর প্রতি ভালোবাসার আবেগ থাকলেও তার পঞ্চ ইন্দ্রিয় কামনা-বাসনার ঊর্ধেŸ উদ্বেলিত হয়েছে। অভিরূপের এরূপ মানসিক পরিবর্তনের শ্রাবণী খুব আঘাত পেয়েছে। কারণ, একসময় অভিরূপের ভাবনা-চিন্তায় শুধু শ্রাবণী বিরাজ করেছে। এ গল্পের অভিরূপ চক্রবর্তীর মধ্যে গল্পকারের স্বীয় প্রতিচ্ছবি নিহিত।
‘হারানো শহরের কাছে’ গল্পে মঈনুল হাসানের স্মৃতিকাতারতা পরিলক্ষিত হয়েছে। গল্পকার তাঁর মানস প্রিয়াকে অন্বেষণ করেছেন হারানো শহরে। যেখানে তিনি গুম হয়ে যাওয়া শহরের বাতাসে তাঁর প্রিয়তমার নিঃশ^াসকে উপলদ্ধি করেন। শহরের অভূতপূর্ব যান্ত্রিকতার ভিতরে তার প্রেয়সী শবনম একমাত্র আলোর ফুলকি। গল্পকার এ গল্পে পাঠককে নেতিবাচক চিন্তন থেকে ইতিবাচক চিন্তনে উত্তরণ করেন।
‘ভীমচক্র’ গল্পের বকুল স্বাধীনচেতা এবং প্রচ- চঞ্চল প্রকৃতির নারী। যে লুলা ফকিরকে বিয়ে করে বছর চার এক এর মতো সংসার করেছে। বিয়ের পর বকুল জানতে পেরেছে তার স্বামী ভিক্ষবৃত্তিকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করেছে। যে লুলা ফকির সংসারে খাবারের যোগান দিতে পারে না, আদর সোহাগের ক্ষমতা পর্যন্ত তার নেই, কিন্তু উনিশের থেকে বিশ হলে চোখ রাঙ্গিয়ে স্ত্রীকে শাসাতে পারে।
গল্পকার এ গল্পে দেখিয়েছেন, সংসার জিনিসটা এক অভ্যস্তার ব্যাপার। যেখানে স্বামী-স্ত্রী দীর্ঘদিন একসাথে বসবাস করেও একে অপরের মনের খুঁজে অপরাগ। লেখক জীবনের এমনি কিছু কঠিন সত্যের মুখোমুখি করেছেন পাঠককে।
নতুন ভাইরাসের আক্রমণে তোলপাড় গোটা বিশ^। হাসপাতালের লবিতে পিঁপড়ের মতো ভিড়। তবে বাংলাদেশে থেকে বিদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভালো এবং জনগণ ও খুব স্বাস্থ্য সচেতন। তবুও বেগম নাহারের মাতৃ-হৃদয় কিছুতেই প্রবোধ মানে না। সারাক্ষণ শুধু খবর দেখেন এবং সন্তানের চিন্তায় বিভোর থাকেন।
এ মহামারি বা অতিমারি যাইহোক না কেন? বকুল কিন্তু নিয়মিত কাজে আসে। লেখক এখানে পরম মমতায় বকুল মতো নি¤œবিত্তদের জীবন সংগ্রামকে বিধৃত করেছেন। বকুল অন্যের বাসায় কাজ করে খায় এবং এ দুর্দিনে সে যদি করোনার ভয়ে কাজ বন্ধ করে দেয় তাহলে সে পেটের যামিন দেবে কীভাবে? তার সাথে ছোটো একটা মেয়ে। এমন দমবন্ধ পরিস্থিতিতেও তার চরিত্রের তেমন বদল হয়নি। কিন্তু বেগম নাহার বকুলকে এ বিষয়ে বারবার সতর্ক করেছেন। বেগম নাহারের সরল মনে একটাই প্রশ্ন প্রতিভাত হয়েছে, এ ক্ষুদ্র অণুজীবের এমন কি শক্তি? যা বড়ো বড়ো বিজ্ঞানী বা গবেষক মিলে বুঝতে পারছে না। এমনকি প্রিয়জনের মৃত্যুর শেষ যাত্রাতেও কেউ শামিল হতে পারছে না। তাহলে মানুষের সম্পর্কের বন্ধন থেকেও কী ভাইরাস শক্তিশালী!
মঈনুল হাসান সমাজ জীবনের বহু বিচিত্র রূপভেদকে তাঁর গল্পে শৈল্পিক ব্যঞ্জনায় বিধৃত করেন। তাঁর গল্পের পরতে পরতে যাপিত জীবনের অন্তর্লীন অনুষঙ্গ প্রতিভাত হয়েছে। তবে তিনি প্রত্যাশা ব্যক্ত করেছেন যে, সকল অশুভ শক্তি এবং অন্ধকার দূরীভূত হয়ে পৃথিবী একদিন আলো ও মঙ্গলের পথে চলবে।