alt

কুমারখালীর হাবাসপুর সরকারি বিদ্যালয় ৩ শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৪ শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা থাকে অনুপস্থিত

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুষ্টিয়া : বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

কুষ্টিয়ার একটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের থেকে শিক্ষকই বেশি। শিক্ষার্থীরা থাকে অনুপস্থিত। বিকেল ২টা বেজে ৪৩ মিনিট। তখনও বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে ঝুলছে তালা। অপর কক্ষ দুটিতে পড়ে আছে বেঞ্চ।

তাতে জমেছে ধুলাবালি। আর একটি কক্ষে বসে ৪ জন শিক্ষক অপেক্ষা করছেন কখন যেন আসে চতুর্থ শ্রেণির একমাত্র ছাত্র আব্দুল মজিদ। এ চিত্র কুমারখালীর ১৪৬ নম্বর হাবাসপুর সরকারি বিদ্যালয়ে সরে জমিন গিয়ে দেখা যায়। বিদ্যালয়টি উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নে অবস্থিত।

এ সময় সহকারী শিক্ষক শাহিদা খাতুন জানান, বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ জন। প্রথম শ্রেণিতে একজন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে একজন। আর চতুর্থ শ্রেণিতে একজন। তাঁর ভাষ্য,প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাশ প্রথম শিফটে ( সকাল ৯টা - দুপুর ১২ টা) হয়। সকালে এদিন কেউ আসেনি। আর দ্বিতীয় শিফটের একমাত্র ছাত্র মজিদের জন্য অপেক্ষা করছেন ৪ জন শিক্ষক।

সাদিয়া আক্তার নামে অপর সহকারী শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়টি আবাসন প্রকল্পের। এখানে চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি কাঁচা। আবার ইট ভাটার যানবাহন চলায় রাস্তার অবস্থা আরো খারাপ। কোনো পরিবহন চলেনা। প্রায় আধা ঘণ্টা হেঁটে স্কুলে আসতে হয়।

মূলত যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় আবাসনের মানুষ অন্যত্রে চলে যাচ্ছে। পরিবারের সাথে বাচ্চারাও চলে যাচ্ছে। সেজন্য বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কমে গেছে। তার ভাষ্য, শিক্ষার্থী না থাকায় প্রাণহীন বিদ্যালয়ে মন বসে না তার। হয় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা হোক। নয়লে তাদের অন্য বিদ্যালয়ে সংযুক্ত করা হোক।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে ‘১৫০০ বিদ্যালয়’ প্রকল্পের নামে সারাদেশে এক হাজার ৫০০টি বিদ্যালয় স্থাপন করে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালেহাবাসপুর আবাসনে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়।

প্রায় ২০ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে এলজিইডি। ২০১৪ সালে বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৬ জন, ২০১৫ সালে ২৫ জন, ২০১৬ সালে ৩০ জন, ২০১৭ সালে ২৬ জন, ২০১৮ সালে ৩০ জন, ২০১৯ সালে ২৯ জন, ২০২০ সালে ২৮ জন, ২০২১ সালে ২৭ জন, ২০২২ সালে ১৬ জন, ২০২৩ সালের শুরুতে ১৪ জন শিক্ষার্থী থাকলেও বছর শেষে তা দাঁড়ায় ৬ জনে। আর ২০২৪ সালে শিক্ষার্থী রয়েছে মাত্র ৩ জন। আর শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন ৪ জন। অধিকাংশ দিনেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর উপস্থিতির সংখ্যা থাকে শূণ্য।

আরো জানা গেছে, কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে গড়াই নদী পাড়ে ২০০১ সালে সরকারিভাবে হাবাসপুর আবাসনে প্রথমে ১২০টি এবং পরে আরও ৮০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। সেখানে অসহায় ও ভূমিহীন ২০০টি পরিবার বসবাস শুরু করেন। কিন্তু ২০০২, ২০১৬ ও ২০২২ সালে পৃথক তিনটি অগ্নিকাণ্ডে সেখানে প্রায় ৩০টি ঘর পুড়ে যায়। উপায়ান্তনা পেয়ে তারা আবাসন ছেড়ে অন্যত্রে চলে যায়।

এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে আবাসনের ঘরগুলো মেরামতের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ ঘরে নেই চালা।

অকেজো স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও নলকূপ। চলাচলের একমাত্র সড়কটি ও কাঁচা। সড়কে শুকনা মৌসুমে ধুলাবালি ও বর্ষার সময় থাকে হাঁটু সমান কাঁদা। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল মজিদ বলে, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই। একা একা প্রতিদিন তার বিদ্যালয়ে যেতে ভাল লাগে না।

ছবি

ইজিবাইক-প্রাইভেটকার মুখোমুখি সংঘর্ষে আহত ৮

ছবি

কক্সবাজার থেকে শুরু হলো সেন্টমার্টিন যাত্রা, ছেড়ে গেছে ৩টি জাহাজ

ময়মনসিংহে নির্যাতনবিরোধী সনদ ও প্রোটোকল বিষয়ে আলোচনা সভা

ছবি

খুঁটির জায়গা বাদে সড়কের কাজ সম্পন্ন থেমে গেছে

ছবি

বরগুনার বিষখালীর ভাঙনে বিলীন হচ্ছে বিদ্যালয়, ঝুঁকিতে শতাধিক পরিবার

ছবি

ভোমরাকে কাস্টমস হাউজ ঘোষণা দিলেও অবকাঠামো সংকটে থেমে আছে বন্দরের উন্নয়ন

ছবি

সিংড়ায় বেলজিয়াম জাতের হাঁস পালনে লাখপতি

সান্তাহারে প্যানেল চেয়ারম্যানের পুকুরে বিষ প্রয়োগ করে প্রায় ৬০ মণ মাছ নিধন

ছবি

শান্তি চুক্তির পর বদলেছে পাহাড়ের দৃশ্যপট, স্থায়ী শান্তি আসেনি

শরণখোলায় ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ছে চর্ম রোগ

শাহরাস্তিতে খাদ্য শস্য সংগ্রহ অভিযান কার্যক্রম উদ্বোধন

ছবি

শাহজাদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় স্কুল শিক্ষিকা নিহত

ছবি

পটিয়া ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজি, অসহায় পরিবহন শ্রমিকরা

ছবি

রায়গঞ্জে পুকুরে অজ্ঞাত শিশুর মরদেহ উদ্ধার

ছবি

সাঘাটায় সাতদিন ধরে নিখোঁজ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী

ছবি

মীরসরাইয়ে গোলমরিচ প্রসেসিং অপারেটর প্রশিক্ষণ

ছবি

ভূমিকম্পে দামুড়হুদায় নালা ধসে সেচ কার্যক্রম বন্ধ, দুশ্চিন্তায় কৃষক

ছবি

দশমিনায় খালগুলোতে কচুরিপানায় পূর্ণ, ব্যাহত হচ্ছে পানি প্রবাহ

ছবি

নোয়াখালীতে সুদের টাকার জন্য ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যা, গ্রেপ্তার ১

ছবি

শীতের আগমনে লেপ-তোষক তৈরিতে ব্যস্ত কারিগররা

ছবি

সিলেটে তুচ্ছ ঘটনায় ফের যুবক খুন

ছবি

সাগর কুলের দ্বীপগুলো প্রকৃতির সৌন্দর্য

মহেশপুরে ছিনতাইচক্রের দুই সদস্য গ্রেপ্তার

ছবি

পালিয়ে যাওয়া দুই কিশোরীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর

ছবি

খেজুর রসের আকাশচুম্বী জনপ্রিয়তা দুমকিতে নেই পর্যাপ্ত গাছিয়া

ছবি

সভাপতি মোমেন সম্পাদক রোবেল

ছবি

গোয়ালন্দে পূর্ব বিরোধেকে কেন্দ্র করে পরিবারের ওপর হামলায় আহত ৫

ছবি

রূপগঞ্জে গৃহবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে যুবক গ্রেপ্তার

ছবি

সাঁথিয়ায় কৃষকের বসতঘর ভষ্মীভুত

ছবি

পলাশকান্দা ট্র্র্যাজেডি দিবস পালিত

ছবি

ডিমলায় অবৈধভাবে মাটি কাটায় জরিমানা

ছবি

শরণখোলায় ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে চর্ম রোগ

ছবি

হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্য নবান্ন উৎসব

ছবি

স্কুলের ছাদে সৃজিত ‘সবুজ স্বর্গ’ সফেদায় শোভা পাচ্ছে ছাদবাগান

ছবি

সিরাজগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫০ জনের পদত্যাগ

ছবি

হিলিতে সমতল ভূমিতে বসবাসরত ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির মাঝে ছাগল বিতরণ

tab

কুমারখালীর হাবাসপুর সরকারি বিদ্যালয় ৩ শিক্ষার্থীর বিপরীতে ৪ শিক্ষক, শিক্ষার্থীরা থাকে অনুপস্থিত

জেলা বার্তা পরিবেশক, কুষ্টিয়া

বৃহস্পতিবার, ২৩ মে ২০২৪

কুষ্টিয়ার একটি স্কুলে শিক্ষার্থীদের থেকে শিক্ষকই বেশি। শিক্ষার্থীরা থাকে অনুপস্থিত। বিকেল ২টা বেজে ৪৩ মিনিট। তখনও বিদ্যালয়ের একটি কক্ষে ঝুলছে তালা। অপর কক্ষ দুটিতে পড়ে আছে বেঞ্চ।

তাতে জমেছে ধুলাবালি। আর একটি কক্ষে বসে ৪ জন শিক্ষক অপেক্ষা করছেন কখন যেন আসে চতুর্থ শ্রেণির একমাত্র ছাত্র আব্দুল মজিদ। এ চিত্র কুমারখালীর ১৪৬ নম্বর হাবাসপুর সরকারি বিদ্যালয়ে সরে জমিন গিয়ে দেখা যায়। বিদ্যালয়টি উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নে অবস্থিত।

এ সময় সহকারী শিক্ষক শাহিদা খাতুন জানান, বিদ্যালয়ে মোট শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩ জন। প্রথম শ্রেণিতে একজন, দ্বিতীয় শ্রেণিতে একজন। আর চতুর্থ শ্রেণিতে একজন। তাঁর ভাষ্য,প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির ক্লাশ প্রথম শিফটে ( সকাল ৯টা - দুপুর ১২ টা) হয়। সকালে এদিন কেউ আসেনি। আর দ্বিতীয় শিফটের একমাত্র ছাত্র মজিদের জন্য অপেক্ষা করছেন ৪ জন শিক্ষক।

সাদিয়া আক্তার নামে অপর সহকারী শিক্ষক জানান, বিদ্যালয়টি আবাসন প্রকল্পের। এখানে চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি কাঁচা। আবার ইট ভাটার যানবাহন চলায় রাস্তার অবস্থা আরো খারাপ। কোনো পরিবহন চলেনা। প্রায় আধা ঘণ্টা হেঁটে স্কুলে আসতে হয়।

মূলত যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় আবাসনের মানুষ অন্যত্রে চলে যাচ্ছে। পরিবারের সাথে বাচ্চারাও চলে যাচ্ছে। সেজন্য বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী কমে গেছে। তার ভাষ্য, শিক্ষার্থী না থাকায় প্রাণহীন বিদ্যালয়ে মন বসে না তার। হয় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করা হোক। নয়লে তাদের অন্য বিদ্যালয়ে সংযুক্ত করা হোক।

বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৩-২০১৪ অর্থবছরে ‘১৫০০ বিদ্যালয়’ প্রকল্পের নামে সারাদেশে এক হাজার ৫০০টি বিদ্যালয় স্থাপন করে সরকার। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৪ সালেহাবাসপুর আবাসনে একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণ করা হয়।

প্রায় ২০ লাখ ৭১ হাজার টাকা ব্যয়ে বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করে এলজিইডি। ২০১৪ সালে বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল ২৬ জন, ২০১৫ সালে ২৫ জন, ২০১৬ সালে ৩০ জন, ২০১৭ সালে ২৬ জন, ২০১৮ সালে ৩০ জন, ২০১৯ সালে ২৯ জন, ২০২০ সালে ২৮ জন, ২০২১ সালে ২৭ জন, ২০২২ সালে ১৬ জন, ২০২৩ সালের শুরুতে ১৪ জন শিক্ষার্থী থাকলেও বছর শেষে তা দাঁড়ায় ৬ জনে। আর ২০২৪ সালে শিক্ষার্থী রয়েছে মাত্র ৩ জন। আর শিক্ষার্থীর বিপরীতে শিক্ষক রয়েছেন ৪ জন। অধিকাংশ দিনেই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর উপস্থিতির সংখ্যা থাকে শূণ্য।

আরো জানা গেছে, কুষ্টিয়া রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়ক থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে গড়াই নদী পাড়ে ২০০১ সালে সরকারিভাবে হাবাসপুর আবাসনে প্রথমে ১২০টি এবং পরে আরও ৮০টি ঘর নির্মাণ করা হয়। সেখানে অসহায় ও ভূমিহীন ২০০টি পরিবার বসবাস শুরু করেন। কিন্তু ২০০২, ২০১৬ ও ২০২২ সালে পৃথক তিনটি অগ্নিকাণ্ডে সেখানে প্রায় ৩০টি ঘর পুড়ে যায়। উপায়ান্তনা পেয়ে তারা আবাসন ছেড়ে অন্যত্রে চলে যায়।

এছাড়াও দীর্ঘদিন ধরে আবাসনের ঘরগুলো মেরামতের অভাবে জরাজীর্ণ অবস্থায় পরিণত হয়েছে। অধিকাংশ ঘরে নেই চালা।

অকেজো স্যানিটেশন ব্যবস্থা ও নলকূপ। চলাচলের একমাত্র সড়কটি ও কাঁচা। সড়কে শুকনা মৌসুমে ধুলাবালি ও বর্ষার সময় থাকে হাঁটু সমান কাঁদা। চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল মজিদ বলে, বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী নেই। একা একা প্রতিদিন তার বিদ্যালয়ে যেতে ভাল লাগে না।

back to top