alt

সারাদেশ

কেশবপুরে সুঁই সুতার বুননে ভাগ্য ফেরাচ্ছে অর্ধশত নারী

প্রতিনিধি, কেশবপুর (যশোর) : সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

কেশবপুর (যশোর) : উপজেলার হাবাসপোল গ্রামে সুঁই সুতার কাজে ব্যস্ত নারীরা -সংবাদ

জীবন-জীবিকার তাগিদে স্বামী-সন্তানের কথা চিন্তা করে ইচ্ছাশক্তি আর সুই সুতার বুননের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ভাগ্য ফেরাচ্ছেন কেশবপুরের হাবাসপোল এলাকার অর্ধশত নারী। সংসারের আর্থিক সচ্ছলতা আনতে সুচের ফোঁড়ে ফোঁড়ে শাড়ি, পাঞ্জাবী, কামিজের ওপর ফুটিয়ে তুলছেন নানা রকমের কারুকাজ। পরিবার সামলিয়ে অবসরে বিভিন্ন ধরণের পোষাকে সেলাইয়ের কাজ করে অনেকে মুক্তি পেয়েছেন দারিদ্র্যের হাত থেকে। পাশাপাশি এ শিল্পকে ঘিরে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছেন তারা।

জানা গেছে, ২০০৭ সালের দিকে উপজেলার হাবাসপোল এলাকার মিতু বেগম যশোর থেকে শাড়ি, পাঞ্জাবী, কামিজসহ বিভিন্ন পোষাকের ওপর সুই সুতার বুননের নক্সার কাজ শিখে এলাকার নারীদের শেখান। এ সময় তিনি ৪০-৫০ জন নারীকে নিয়ে একটি দল গঠন করে বিভিন্ন জায়গা থেকে নকশার কাজের অর্ডার এনে দলের সদস্যদের দিয়ে করাতে থাকেন। সংসারের আর্থিক সচ্ছলতা আনতে নারীরা একাজে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। মিতু বেগম হয়ে ওঠেন এ উপজেলার প্রথম সারির একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। তিনি ও তার দলের সদস্যদের সুই সুতার কাজের সুনাম নিজ এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে সাংসারিক ঝামেলার কারণে সুচের ফোঁড়ের কাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয় মিতু বেগম।

পরবর্তীতে এ নারী দলের নেতৃত্বে আসেন ওই গ্রামের আরেক উদ্যোক্তা লিপিয়া বেগম। এলাকায় এ কাজ ধরে রাখতে তার সাথে পরিচয় ঘটে বেসরকারি সংগঠন ব্র্যাক পরিচালিত আয়শা আবেদ ফাউন্ডেশন প্রকল্পের কর্মকর্তাদের। এরপর থেকে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এ সময় আয়শা আবেদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে হাবাসপোল এলাকায় সুই সুতার কাজে দক্ষ নারীদের নিয়ে ৫০ জনের একটি দল গঠন করা হয়। হাবাসপোলে এ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে একটি টিনসেডের ঘরে কেন্দ্র করে সেখানে চলে নক্সার কার্যক্রম।

লিপিয়া বেগম জানান, প্রতিদিন সংসারের কাজের ফাকে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কেন্দ্রে এসে তাদের সুই সুতার কাজ করতে হয়। আয়শা আবেদ ফাউন্ডেশন বিভিন্ন কোম্পানির নক্সার কাজ ধরে তাদের দিয়ে বাস্তবায়ন করায়। ঘরভাড়া প্রতিমাসে ৭৫০ টাকা দিতে হয়। শাড়ি, পাঞ্জাবী, কামিজ, জায়নামাজ, ফতুয়া, সুতা, নকশাসহ উপকরণ ফাউন্ডেশন দেয়। সুই ও ফ্রেম নিজেদের কিনতে হয়। তারা প্রতিটি শাড়ির মজুরি ১৬শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা, পাঞ্জাবী, কামিজ, ফতুয়া ২০৮ টাকা থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত পান। বর্তমান দেশের পরিস্থিতি খারাপ। তাই কাজ কম হচ্ছে। এছাড়া বন্যায় তার গ্রাম ৩ মাস তলিয়ে থাকায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপরও সরকারি বা কোনো দাতা সংস্থার সহযোগিতা পেলে এ পেশায় আরও নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।

তার কেন্দ্রের নারী উদ্যোক্তা তাসলিমা, রেশমা, আসমা, নাজমা বেগম জানায়, একটা পাঞ্জাবী একদিনে করা যায়। এভাবে তারা প্রতি মাসে অবসর সময়ে অনায়াসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করেন। তারা আরও বলেন, আয়শা আবেদ ফাউন্ডেশন তাদের আয় থেকে প্রতিমাসে ২৫ টাকা করে কেটে নেয়। এ অর্থ দলের সদস্যদের চিকিৎসা খরচ বাবদ দেয়া হয়। এরমধ্যে মহিলাদের সিজারিয়ান অপারেশন ৮ হাজার টাকা, অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশন ৬ হাজার টাকা, জরায়ু অপারেশন ৩০ হাজার টাকাসহ অবসর ভাতা বাবদ এককালীন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে হয়। এতে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

এ ব্যপারে ব্র্যাকের ডিস্ট্রিক কো-অর্ডিনেটর আলমাস বলেন, আমরা নকশাসহ অর্ডারের কাপড়, সুতা দিয়ে তাদের সহযোগিতা করি। বিনিময়ে তারা পারিশ্রমিক পায়। এছাড়া একাজে নিয়োজিত সকল নারীরা ফ্রি চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকেন।

ফরিদপুরে আ’লীগ-বিএনপি সংঘর্ষ, ১০ লাখ টাকার গরু-ছাগল লুট

ছবি

লক্ষ্মীপুরে সাংবাদিকদের ওপর মুখোশধারীদের হামলা

বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের দ্বিতীয় ধাপ শুরু

ছবি

মহাসড়কের বিভাজনেক বসবাস করা অসুস্থ বৃদ্ধের ঠাঁই হলো হাসপাতালে

তাড়াশে সাংবাদিকের ওপর হামলা, থানায় জিডি

আদালত প্রাঙ্গণ থেকে মোটরসাইকেল চুরি

কুষ্টিয়ার নিষিদ্ধ ৪ ইটভাটা ফের গুঁড়িয়ে দিল প্রশাসন, জরিমানা

হবিগঞ্জে ডাকাতের হামলায় ব্যবসায়ী নিহত

ছবি

মেঘনায় প্রান্তিক কৃষকদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ

দুই জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় মোটরসাইকেল আরোহী ও বাইসাইকেল আরোহী নিহত

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজে শিবির ও ছাত্রদলের সংঘর্ষ

দুই জেলায় এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডারের গোডাউন ও বসতঘরে অগ্নিকাণ্ডে

রামপাল তাপ-বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ করে সুন্দরবন রক্ষার দাবি

সৌদি আরবে ৫ মাস আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায়, সর্বস্ব হারিয়ে দিশাহারা পরিবার

ছবি

ভবন নির্মাণ হলেও কাজে আসছে না ভৈরব মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র

স্ত্রীর জানাজার ১০ মিনিট আগে মারা গেলেন স্বামী

গোমস্তাপুরে গৃহবধূ ও প্রেমিকের একসঙ্গে আত্মহত্যা

তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে বৃদ্ধ আটক

জন্মনিবন্ধন জালিয়াতি উদ্যোক্তা চাকরিচ্যুত

বাচ্চদের খেলাধুলা নিয়ে দুই পরিবারের সংঘর্ষ, নিহত ১

আবাসিক হোটেল থেকে যুবকের মরদেহ উদ্ধার

ছবি

পিরোজপুরে দীর্ঘদিনেও পুনঃনির্মাণ হয়নি খালের ভেঙে পড়া সেতু

মহাদেবপুরে ফলন্ত সরিষা গাছ বিনষ্ট

তালায় আ’লীগের ৫ নেতা আটক

রৌমারীতে রাস্তা দখলের প্রতিবাদে মানববন্ধন

মুন্সীগঞ্জে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মাদ্রাসাছাত্রের মৃত্যু

শেরপুরে স্বামীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

কর্মচঞ্চল হয়ে উঠেছে শালমারা ইউপি কার্যালয়

উপকারভোগীর টাকা নিয়ে লাপাত্তা ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তা দম্পতি

ছবি

গঙ্গাচড়ায় পুকুরে বিষ দিয়ে মাছ নিধন করেছে দুর্বৃত্তরা

ছবি

হিমাগারের ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে চাষিদের বিক্ষোভ

ছবি

ভেনামি চিংড়ির বাণিজ্যিক চাষ, দুই বছরেও রপ্তানি নেই

ছবি

বগুড়ায় বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিদল, ভুয়া ভুয়া স্লোগান

ছবি

ট্রেনের ধাক্কায় দুমড়ে-মুচড়ে গেল ট্রাক, চালকের সহকারী নিহত

ছবি

পুলিশি হেফাজত থেকে আওয়ামী লীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিলেন কর্মীরা

নদীতে গোসলে নেমে ৩ শিক্ষার্থী নিখোঁজ

tab

সারাদেশ

কেশবপুরে সুঁই সুতার বুননে ভাগ্য ফেরাচ্ছে অর্ধশত নারী

প্রতিনিধি, কেশবপুর (যশোর)

কেশবপুর (যশোর) : উপজেলার হাবাসপোল গ্রামে সুঁই সুতার কাজে ব্যস্ত নারীরা -সংবাদ

সোমবার, ০৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

জীবন-জীবিকার তাগিদে স্বামী-সন্তানের কথা চিন্তা করে ইচ্ছাশক্তি আর সুই সুতার বুননের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে ভাগ্য ফেরাচ্ছেন কেশবপুরের হাবাসপোল এলাকার অর্ধশত নারী। সংসারের আর্থিক সচ্ছলতা আনতে সুচের ফোঁড়ে ফোঁড়ে শাড়ি, পাঞ্জাবী, কামিজের ওপর ফুটিয়ে তুলছেন নানা রকমের কারুকাজ। পরিবার সামলিয়ে অবসরে বিভিন্ন ধরণের পোষাকে সেলাইয়ের কাজ করে অনেকে মুক্তি পেয়েছেন দারিদ্র্যের হাত থেকে। পাশাপাশি এ শিল্পকে ঘিরে কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন করেছেন তারা।

জানা গেছে, ২০০৭ সালের দিকে উপজেলার হাবাসপোল এলাকার মিতু বেগম যশোর থেকে শাড়ি, পাঞ্জাবী, কামিজসহ বিভিন্ন পোষাকের ওপর সুই সুতার বুননের নক্সার কাজ শিখে এলাকার নারীদের শেখান। এ সময় তিনি ৪০-৫০ জন নারীকে নিয়ে একটি দল গঠন করে বিভিন্ন জায়গা থেকে নকশার কাজের অর্ডার এনে দলের সদস্যদের দিয়ে করাতে থাকেন। সংসারের আর্থিক সচ্ছলতা আনতে নারীরা একাজে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। মিতু বেগম হয়ে ওঠেন এ উপজেলার প্রথম সারির একজন সফল নারী উদ্যোক্তা। তিনি ও তার দলের সদস্যদের সুই সুতার কাজের সুনাম নিজ এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পরিচিতি লাভ করে। পরবর্তীতে সাংসারিক ঝামেলার কারণে সুচের ফোঁড়ের কাজ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেয় মিতু বেগম।

পরবর্তীতে এ নারী দলের নেতৃত্বে আসেন ওই গ্রামের আরেক উদ্যোক্তা লিপিয়া বেগম। এলাকায় এ কাজ ধরে রাখতে তার সাথে পরিচয় ঘটে বেসরকারি সংগঠন ব্র্যাক পরিচালিত আয়শা আবেদ ফাউন্ডেশন প্রকল্পের কর্মকর্তাদের। এরপর থেকে তাকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। এ সময় আয়শা আবেদ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে হাবাসপোল এলাকায় সুই সুতার কাজে দক্ষ নারীদের নিয়ে ৫০ জনের একটি দল গঠন করা হয়। হাবাসপোলে এ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে একটি টিনসেডের ঘরে কেন্দ্র করে সেখানে চলে নক্সার কার্যক্রম।

লিপিয়া বেগম জানান, প্রতিদিন সংসারের কাজের ফাকে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত কেন্দ্রে এসে তাদের সুই সুতার কাজ করতে হয়। আয়শা আবেদ ফাউন্ডেশন বিভিন্ন কোম্পানির নক্সার কাজ ধরে তাদের দিয়ে বাস্তবায়ন করায়। ঘরভাড়া প্রতিমাসে ৭৫০ টাকা দিতে হয়। শাড়ি, পাঞ্জাবী, কামিজ, জায়নামাজ, ফতুয়া, সুতা, নকশাসহ উপকরণ ফাউন্ডেশন দেয়। সুই ও ফ্রেম নিজেদের কিনতে হয়। তারা প্রতিটি শাড়ির মজুরি ১৬শ’ থেকে ১৮শ’ টাকা, পাঞ্জাবী, কামিজ, ফতুয়া ২০৮ টাকা থেকে ৮০০ টাকা পর্যন্ত পান। বর্তমান দেশের পরিস্থিতি খারাপ। তাই কাজ কম হচ্ছে। এছাড়া বন্যায় তার গ্রাম ৩ মাস তলিয়ে থাকায় কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপরও সরকারি বা কোনো দাতা সংস্থার সহযোগিতা পেলে এ পেশায় আরও নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।

তার কেন্দ্রের নারী উদ্যোক্তা তাসলিমা, রেশমা, আসমা, নাজমা বেগম জানায়, একটা পাঞ্জাবী একদিনে করা যায়। এভাবে তারা প্রতি মাসে অবসর সময়ে অনায়াসে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করেন। তারা আরও বলেন, আয়শা আবেদ ফাউন্ডেশন তাদের আয় থেকে প্রতিমাসে ২৫ টাকা করে কেটে নেয়। এ অর্থ দলের সদস্যদের চিকিৎসা খরচ বাবদ দেয়া হয়। এরমধ্যে মহিলাদের সিজারিয়ান অপারেশন ৮ হাজার টাকা, অ্যাপেন্ডিক্স অপারেশন ৬ হাজার টাকা, জরায়ু অপারেশন ৩০ হাজার টাকাসহ অবসর ভাতা বাবদ এককালীন ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে হয়। এতে তারা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

এ ব্যপারে ব্র্যাকের ডিস্ট্রিক কো-অর্ডিনেটর আলমাস বলেন, আমরা নকশাসহ অর্ডারের কাপড়, সুতা দিয়ে তাদের সহযোগিতা করি। বিনিময়ে তারা পারিশ্রমিক পায়। এছাড়া একাজে নিয়োজিত সকল নারীরা ফ্রি চিকিৎসা সেবা পেয়ে থাকেন।

back to top