ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ
সৈয়দপুর (নীলফামারী) : চিলাহাটি রেলপথের সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন -সংবাদ
নীলফামারীর সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথ ট্রেন চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই রেলপথের রেল লাইনকে আটকে রাখা ১২ হাজার ইলাস্টিক রেল ক্লিপ (ইআরসি) উধাও হয়ে গেছে। ক্লিপ প্রতিস্থাপন করলেও চোরদের দৌরাত্মে ক্লিপ রক্ষা করা যাচ্ছে না। এসব ফিটিংসের (ক্লিপ) পর্যাপ্ত মজুত না থাকায় তা শতভাগ পুনঃস্থাপনে সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয় রেলপথ দপ্তর বলছে, কিছু ক্লিপ পুরাতন হওয়ায় ভেঙে গেছে, তবে এর বড় অংশ চুরি হয়ে গেছে। ফলে ক্লিপ না থাকায় ৫৯ কিলোমিটার রেলপথে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তবে রেলওয়ে পাকশী বিভাগের বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ রেল লাইনের ফিটিংস ও রেলপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সুপার বরাবরে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
রেলপথ প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, রেলপথে রেললাইন আটকে রাখতে কংক্রিট ও কাঠের স্লিপারে দুই পাশে ক্লিপ ব্যবহৃত হয়। এই ক্লিপগুলো রেললাইনকে শক্ত করে ধরে রাখে যা ট্রেনের চলাচলে নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। প্রতি ১ কিলোমিটার রেললাইনে ১ হাজার ৪০০ স্লিপার বসানো হয়। প্রতি কিলোমিটারে স্লিপারগুলোর দুই পাশ মিলিয়ে ৫ হাজার ৬০০ ক্লিপ স্থাপন করা হয়। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পর্যবেক্ষণে সৈয়দপুর-চিলাহাটি ৫৯ কিলোমিটার রেলপথে ১২ হাজার ক্লিপ উধাও হয়ে গেছে।
বিগত ২০১২ সালে আন্তঃদেশীয় রেলপথ হিসাবে সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথ সংস্কার করে নতুনভাবে স্লিপার রেললাইন বসানো হয়। অথচ এই রেলপথের বিভিন্ন স্থান থেকে ১২ হাজার ক্লিপ খোয়া গেছে। রেলপথ বিভাগের স্থানীয় কর্মীদের ধারণা এসব ক্লিপের বড় অংশ দুর্বৃত্তদের হাতে চুরি হয়েছে। এই রেলপথে দৈনিক ৬টি আন্তঃনগর ও একটি মেইল ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করে। স্লিপারে ক্লিপ না থাকা নিরাপদ ট্রেন চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এই রেলপথে চলাচল করা ট্রেন চালকরা জানান, ক্লিপ না থাকলে রেললাইন শক্ত অবস্থান নড়বড়ে হয়ে পড়ে। এতে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
জানতে চাইলে, সৈয়দপুর রেলপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুলতানা মৃধা জানান, রেলপথ নিরাপদ রাখতে নিয়মিত ক্লিপ প্রতিস্থাপন করা হয়। কিন্তু লাগানো ক্লিপ প্রায় সময় চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পর্যাপ্ত মালামালের অভাবে বারবার ক্লিপ পুনঃস্থাপন করা সংকটে ফেলছে। আবার ট্রেন চলাচলের কারণেও পুরাতন কিছু কিছু ক্লিপ ভেঙে যায়। হিসাব করে দেখা গেছে সৈয়দপুর-চিলাহাটি পথের বিভিন্ন স্থান থেকে ১২ হাজার ইআরসি ক্লিপ উধাও হয়ে গেছে। যেসব স্থানে ক্লিপ নেই তা পুনরায় লাগানো হয়। কিন্তু ক্লিপ চুরি হওয়া নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদ-উন-নবী জানান, বিষয়টি জানার পর তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।
রেলওয়ের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ (পথ) বীরবল মন্ডল জানান, অহরহ ক্লিপ উধাওয়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রেললাইনের ফিটিংসসহ রেলপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এলাকাভুক্ত পুলিশ সুপার বরাবরে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে ক্লিপ লাগানোর পর কিছু কিছু ক্লিপ চুরি যায়। এজন্য রেললাইন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের রেল সম্পদ রক্ষায় সচেতন হওয়া প্রয়োজন। তবে রেলপথে যে ধরনের ফিটিংস রয়েছে, তাতে ট্রেন চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে দাবি করেন তিনি।
ট্রেন চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ
সৈয়দপুর (নীলফামারী) : চিলাহাটি রেলপথের সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশন -সংবাদ
সোমবার, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
নীলফামারীর সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথ ট্রেন চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই রেলপথের রেল লাইনকে আটকে রাখা ১২ হাজার ইলাস্টিক রেল ক্লিপ (ইআরসি) উধাও হয়ে গেছে। ক্লিপ প্রতিস্থাপন করলেও চোরদের দৌরাত্মে ক্লিপ রক্ষা করা যাচ্ছে না। এসব ফিটিংসের (ক্লিপ) পর্যাপ্ত মজুত না থাকায় তা শতভাগ পুনঃস্থাপনে সমস্যা হচ্ছে।
স্থানীয় রেলপথ দপ্তর বলছে, কিছু ক্লিপ পুরাতন হওয়ায় ভেঙে গেছে, তবে এর বড় অংশ চুরি হয়ে গেছে। ফলে ক্লিপ না থাকায় ৫৯ কিলোমিটার রেলপথে নিরাপত্তা ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। তবে রেলওয়ে পাকশী বিভাগের বিভাগীয় কর্তৃপক্ষ রেল লাইনের ফিটিংস ও রেলপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ সুপার বরাবরে চিঠি দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
রেলপথ প্রকৌশল দপ্তর সূত্রে জানা যায়, রেলপথে রেললাইন আটকে রাখতে কংক্রিট ও কাঠের স্লিপারে দুই পাশে ক্লিপ ব্যবহৃত হয়। এই ক্লিপগুলো রেললাইনকে শক্ত করে ধরে রাখে যা ট্রেনের চলাচলে নিরাপত্তা দিয়ে থাকে। প্রতি ১ কিলোমিটার রেললাইনে ১ হাজার ৪০০ স্লিপার বসানো হয়। প্রতি কিলোমিটারে স্লিপারগুলোর দুই পাশ মিলিয়ে ৫ হাজার ৬০০ ক্লিপ স্থাপন করা হয়। সংশ্লিষ্ট দপ্তরের পর্যবেক্ষণে সৈয়দপুর-চিলাহাটি ৫৯ কিলোমিটার রেলপথে ১২ হাজার ক্লিপ উধাও হয়ে গেছে।
বিগত ২০১২ সালে আন্তঃদেশীয় রেলপথ হিসাবে সৈয়দপুর-চিলাহাটি রেলপথ সংস্কার করে নতুনভাবে স্লিপার রেললাইন বসানো হয়। অথচ এই রেলপথের বিভিন্ন স্থান থেকে ১২ হাজার ক্লিপ খোয়া গেছে। রেলপথ বিভাগের স্থানীয় কর্মীদের ধারণা এসব ক্লিপের বড় অংশ দুর্বৃত্তদের হাতে চুরি হয়েছে। এই রেলপথে দৈনিক ৬টি আন্তঃনগর ও একটি মেইল ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যে চলাচল করে। স্লিপারে ক্লিপ না থাকা নিরাপদ ট্রেন চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। এই রেলপথে চলাচল করা ট্রেন চালকরা জানান, ক্লিপ না থাকলে রেললাইন শক্ত অবস্থান নড়বড়ে হয়ে পড়ে। এতে ট্রেন লাইনচ্যুত হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
জানতে চাইলে, সৈয়দপুর রেলপথ বিভাগের ঊর্ধ্বতন উপ-সহকারী প্রকৌশলী সুলতানা মৃধা জানান, রেলপথ নিরাপদ রাখতে নিয়মিত ক্লিপ প্রতিস্থাপন করা হয়। কিন্তু লাগানো ক্লিপ প্রায় সময় চুরি করে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পর্যাপ্ত মালামালের অভাবে বারবার ক্লিপ পুনঃস্থাপন করা সংকটে ফেলছে। আবার ট্রেন চলাচলের কারণেও পুরাতন কিছু কিছু ক্লিপ ভেঙে যায়। হিসাব করে দেখা গেছে সৈয়দপুর-চিলাহাটি পথের বিভিন্ন স্থান থেকে ১২ হাজার ইআরসি ক্লিপ উধাও হয়ে গেছে। যেসব স্থানে ক্লিপ নেই তা পুনরায় লাগানো হয়। কিন্তু ক্লিপ চুরি হওয়া নিয়মিত ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বিষয়টি সম্পর্কে ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।
সৈয়দপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহমুদ-উন-নবী জানান, বিষয়টি জানার পর তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি।
রেলওয়ের পাকশী বিভাগের বিভাগীয় প্রকৌশলী-২ (পথ) বীরবল মন্ডল জানান, অহরহ ক্লিপ উধাওয়ের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ইতোমধ্যে রেললাইনের ফিটিংসসহ রেলপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এলাকাভুক্ত পুলিশ সুপার বরাবরে চিঠি দেয়া হয়েছে। তবে ক্লিপ লাগানোর পর কিছু কিছু ক্লিপ চুরি যায়। এজন্য রেললাইন এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের রেল সম্পদ রক্ষায় সচেতন হওয়া প্রয়োজন। তবে রেলপথে যে ধরনের ফিটিংস রয়েছে, তাতে ট্রেন চলাচলের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে দাবি করেন তিনি।