রাণীনগর (নওগাঁ) : পুকুর খননের মাটি সরাতে কর্তন করা রাস্তা -সংবাদ
নওগাঁর রাণীনগরে পুকুর খননের মাটি বহনের জন্য বেড়িবাঁধ কেটে রাস্তা তৈরির অভিযোগ উঠেছে একদল মাটি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের হামিদপুরের আয়াপুর মৌজার চরকানাই এলাকার শ্রীমতখালী খালের বাঁধ কেটে রাস্তা করেছে বিএনপি নামধারী কতিপয় ব্যক্তি। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বেড়িবাঁধ ও বাঁধের পার্শ্ববর্তী বসবাসকারীরা।
শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার সিংহভাগ মানুষের জীবিকা নির্ভর করে কৃষির উপর। কিন্তু এ অঞ্চলে মাটি খেকো বাহিনীর তান্ডবে দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলি জমি এবং নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক ও এলাকার পরিবেশ।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের কিসমতহরপুর মৌজাসহ আশ-পাশের মৌজার প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বিঘা আবাদি জমিতে গত বছর চারেদিক দিয়ে পাড় বেঁধে রাখা হয়েছে। ওই জমিগুলো এখন খনন করা হবে। এ জন্য জমি লিজ নিয়েছেন এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। লিজ নেওয়া ব্যক্তি সহ স্থানীয় কতিপয় বিএনপি নামধারীরা সেখানে পুকুর খননের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর সেই পুকুর খননের মাটি বহনের জন্য সরকারি বেড়িবাঁধ কেটে রাস্তা তৈরি করেছে তারা। এমনকি বাঁধের বেশ কয়েকটি গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। দেখে মনে হবে সরকারি অনুদানে চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে! প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে রাস্তা করায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বাঁধ এবং বাঁধের পার্শ্ববর্তী বসবাসকারীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, প্রথমে আমরা মনে করেছিলাম সরকারের পক্ষ থেকে বাঁধ কেটে চলাচলের জন্য রাস্তা প্রশস্ত করা হচ্ছে। পরে জানতে পারি ফসলি জমিতে পুকুর খনন ও পুকুরের মাটি বহনের জন্য ট্রাক্টর চলাচলের জন্য বিএনপি নামধারী ব্যক্তিরা বাঁধ কেটে অবৈধভাবে রাস্তা তৈরি করেছে। বাঁধ কাটতে বাঁধা দিলেও তারা সেই বাঁধা তোয়াক্কা না করে রাস্তা নির্মাণ করেছে। যদি এই রাস্তা দিয়ে ট্রাক্টর চলাচল করে তাহলে বাঁধের মুখে যে ব্রিজ রয়েছে সেটি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে তৈরি করা রাস্তা ধ্বসে যাওয়ার আশাঙ্কা রয়েছে।
জমি লিজ নেয়া ওই এলাকার চরকানাই গ্রামের বাসিন্দা শহীদ মুঠোফোনে বলেন, আমি শুধু জমি লিজ নিয়েছি। পুকুর কেটে দিচ্ছে অন্য কয়েকজন ব্যক্তি। তারা আমার কাছ থেকে জমির কাগজ নিয়ে গেছে। আর আমি বাঁধের রাস্তা কাটিনি। তিনি আরও বলেন, রাণীনগর উপজেলার দুইজন ও নওগাঁ সদর উপজেলার দুইজন বিএনপি নেতা আয়াপুর মৌজায় থাকা আমার সহ আশেপাশের কৃষকদের প্রায় ৩০-৪০বিঘা জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন করবেন বলে জমির কাগজপত্রাদি নিয়েছে। সেই পুকুর খননের মাটি বহনের জন্য তারাই বাঁধ কেটে ট্রাক্টর চলাচলের রাস্তা তৈরি করেছে। তবে শহীদ সেই বিএনপি নেতাদের নাম প্রকাশ করেননি।
রাণীনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোসারব হোসেন বলেন, বিএনপির সঙ্গে জড়িত এমন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশ ও জাতির ক্ষতি হয় এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর দলীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) শেখ নওশাদ হাসান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বাঁধ কেটে রাস্তা তৈরির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ফসলি জমিতে পুকুর খননের অনুমতি দেওয়া হবে না।
রাণীনগর (নওগাঁ) : পুকুর খননের মাটি সরাতে কর্তন করা রাস্তা -সংবাদ
শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
নওগাঁর রাণীনগরে পুকুর খননের মাটি বহনের জন্য বেড়িবাঁধ কেটে রাস্তা তৈরির অভিযোগ উঠেছে একদল মাটি ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের হামিদপুরের আয়াপুর মৌজার চরকানাই এলাকার শ্রীমতখালী খালের বাঁধ কেটে রাস্তা করেছে বিএনপি নামধারী কতিপয় ব্যক্তি। এতে হুমকির মুখে পড়েছে বেড়িবাঁধ ও বাঁধের পার্শ্ববর্তী বসবাসকারীরা।
শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত নওগাঁর রাণীনগর উপজেলার সিংহভাগ মানুষের জীবিকা নির্ভর করে কৃষির উপর। কিন্তু এ অঞ্চলে মাটি খেকো বাহিনীর তান্ডবে দিন দিন কমে যাচ্ছে ফসলি জমি এবং নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ সড়ক ও এলাকার পরিবেশ।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, উপজেলার মিরাট ইউনিয়নের কিসমতহরপুর মৌজাসহ আশ-পাশের মৌজার প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বিঘা আবাদি জমিতে গত বছর চারেদিক দিয়ে পাড় বেঁধে রাখা হয়েছে। ওই জমিগুলো এখন খনন করা হবে। এ জন্য জমি লিজ নিয়েছেন এলাকার কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যক্তি। লিজ নেওয়া ব্যক্তি সহ স্থানীয় কতিপয় বিএনপি নামধারীরা সেখানে পুকুর খননের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আর সেই পুকুর খননের মাটি বহনের জন্য সরকারি বেড়িবাঁধ কেটে রাস্তা তৈরি করেছে তারা। এমনকি বাঁধের বেশ কয়েকটি গাছও কেটে ফেলা হয়েছে। দেখে মনে হবে সরকারি অনুদানে চলাচলের জন্য রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে! প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে রাস্তা করায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে বাঁধ এবং বাঁধের পার্শ্ববর্তী বসবাসকারীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন জানান, প্রথমে আমরা মনে করেছিলাম সরকারের পক্ষ থেকে বাঁধ কেটে চলাচলের জন্য রাস্তা প্রশস্ত করা হচ্ছে। পরে জানতে পারি ফসলি জমিতে পুকুর খনন ও পুকুরের মাটি বহনের জন্য ট্রাক্টর চলাচলের জন্য বিএনপি নামধারী ব্যক্তিরা বাঁধ কেটে অবৈধভাবে রাস্তা তৈরি করেছে। বাঁধ কাটতে বাঁধা দিলেও তারা সেই বাঁধা তোয়াক্কা না করে রাস্তা নির্মাণ করেছে। যদি এই রাস্তা দিয়ে ট্রাক্টর চলাচল করে তাহলে বাঁধের মুখে যে ব্রিজ রয়েছে সেটি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হবে। এছাড়া শুষ্ক মৌসুমে চলাচল করা গেলেও বর্ষা মৌসুমে তৈরি করা রাস্তা ধ্বসে যাওয়ার আশাঙ্কা রয়েছে।
জমি লিজ নেয়া ওই এলাকার চরকানাই গ্রামের বাসিন্দা শহীদ মুঠোফোনে বলেন, আমি শুধু জমি লিজ নিয়েছি। পুকুর কেটে দিচ্ছে অন্য কয়েকজন ব্যক্তি। তারা আমার কাছ থেকে জমির কাগজ নিয়ে গেছে। আর আমি বাঁধের রাস্তা কাটিনি। তিনি আরও বলেন, রাণীনগর উপজেলার দুইজন ও নওগাঁ সদর উপজেলার দুইজন বিএনপি নেতা আয়াপুর মৌজায় থাকা আমার সহ আশেপাশের কৃষকদের প্রায় ৩০-৪০বিঘা জমি লিজ নিয়ে পুকুর খনন করবেন বলে জমির কাগজপত্রাদি নিয়েছে। সেই পুকুর খননের মাটি বহনের জন্য তারাই বাঁধ কেটে ট্রাক্টর চলাচলের রাস্তা তৈরি করেছে। তবে শহীদ সেই বিএনপি নেতাদের নাম প্রকাশ করেননি।
রাণীনগর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোসারব হোসেন বলেন, বিএনপির সঙ্গে জড়িত এমন কোন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দেশ ও জাতির ক্ষতি হয় এবং দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকার সত্যতা পেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর দলীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ ব্যাপারে রাণীনগর উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) শেখ নওশাদ হাসান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বাঁধ কেটে রাস্তা তৈরির সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ফসলি জমিতে পুকুর খননের অনুমতি দেওয়া হবে না।