বাগেরহাটে বিএনপির অভ্যন্তরিন কোন্দলে স্থানীয় ইউনিয়ন বিএনপির সম্মেলন নিয়ে বিবাদমান দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শওকত হোসেন (৫০) নামের এক নেতা নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত অবস্থায় শওকত হোসেন ৯ দিন ধরে ঢাকায় চিকিৎসাধিন অবস্থায় বৃহস্পতিবার মারা যান। নিহত শওকত হোসেন বাগেরহাটের কচুয়া উপজেলার ধোপাখালী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ড বিএনপির নব গঠিত কমিটির সাধারন সম্পাদক।

স্থানীয়রা জানান, ধোপাখালী ইউনিয়র বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে গত ১১ ফেব্রুয়ারী প্রতিদন্ধি আফজাল হাওলাদারের নেতৃত্বে সশস্ত্র হামলায় গুরুতর আহত হন বিএনপি নেতা শওকত হোসেনসহ তার গ্রুপের ১৫ নেতাকর্মী। হামলার পর গুরুতর আহত অবস্থায় ওইদিন প্রথমে তাকে বাগেরহাট জেলা সদর হাসপাতালে পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে দ্রুত তাকে ঢাকার পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে শওকতের মৃত্যু খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বিকালে শওকত পক্ষের লোকেরা বিএনপি নেতা আফজাল গ্রুপের সদস্য হায়দার আলীর গ্রামের বাড়ী ঘেরাও করে। খবর পেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত সেখানে পৌছে হায়দারকে আটক করে । পরে বিএনপির উত্তেজিত নেতাকর্মীরা বাগেরহাট-চিতলমারী সড়ক অবরোধ করে দেপাড়া বাজার এলাকা বিক্ষোভ করতে থাকলে বাজারের সকল দোকান পাট বন্ধ হয়ে যায়। দেপাড়া বাজার থেকে সদর থানা পুলিশ বিএনপির আরো দুইজনকে আটক করে। নিহত বিএনপি নেতা শওকাত হোসেনের ভাই লিয়াকত হোসেন জানান, ধোপাখালী ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি গঠনে আমার প্রতিদন্ধি প্রার্থী আফজাল হাওলাদারের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমাদের ওপর হামলা করে।

এতে আমি ও আমার ভাই ৭ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির নব নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক শওকত হোসেনসহ ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হয়। আহতদের মধ্যে আমি ও আমার ভাই শওকাত হোসেন এবং যুবদল নেতা জুয়েল রানাকে প্রথমে বাগেরহাট ও পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শওকাতের অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাকে ঢাকার পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে ৯দিন ধরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় থেকে বৃহস্পতিবার সকালে তিনি মারা যান। এ দিকে হামলার বিষয় অস্বীকার করে বিপক্ষ গ্রুপের বিএনপি নেতা আফজাল হোসেন বলেন, ‘শওকতের হামলার সঙ্গে আমি বা আমার অনুসারীরা জড়িত নয়। এ ঘটনা বিষয়ে কচুয়া উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এস এম তৌহিদুল ইসলাম সংবাদ কর্মীদের বলেন, ধোপাখালীতে বিএনপির দুই গ্রুপের মারামারির বিষয়টি নিয়ে জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে তদন্ত করা হয়েছে। ২/১ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার কথা রয়েছে। এরমধ্যে আহত ওয়ার্ড বিএনপির নবগঠিত কমিটির সাধারন সম্পাদক শওকাত হোসেন

বৃহস্পতিবার সকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকায় মারা গেছে। বিষয়টি জেলা বিএনপির আহবায়ক ইঞ্জিনিয়ার এটিএম আকরাম হোসেন তালিমকে জানানো হয়েছে। ধোপাখালীতে বিএনপির ক্ষুব্দ নেতার্কীদের শান্ত থাকতে অনুরোধ করা হয়েছে। কচুয়া থানার ওসি মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমি অতিরিক্ত ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থল যাই। এ ছাড়াও বাগেরহাট সদর মডেল থানা পুলিশ ও সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। পরিস্থিতি এখন পুলিশের নিয়ন্ত্রনে রয়েছে। আফজাল গ্রুপের সদস্য হায়দার আলীকে তার গ্রামের বাড়ী থেকে আটক হয়েছে। এ ছাড়াও বাগেরহাট সদর মডেল থানা পুলিশও দোপাড়া বাজার এলাকা থেকে আরো দুইজনকে আটক করেছে।

শুক্রবার সকালে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত এ ঘটনায় আইনগত প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে বলে জানান কচুয়া থানার ওসি।