বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী) : ডেল্টা জুট মিলসের কর্মরত শ্রমিকরা -সংবাদ
কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ধ্বংসের পথে নোয়াখালীর ডেল্টা জুট মিলসটি। দীর্ঘদিন বেতন ভাতা না পেয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। মিলসটিতে বিরাজ করছে শ্রমিক অসন্তোষ। যে কোন সময় ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা। শ্রমিকরা সরকারের শ্রম উপদেষ্টাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। তবে সহসায় শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধসহ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে মিলস কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, আদমজী জুট মিলস এর পর দেশের বৃহত্তম পাট কল নোয়াখালীর চৌমুহনীতে অবস্থিত ডেল্টা জুট মিলস। এক সময় এখানে হাজার হাজার শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কাজ করত। এখানকার উৎপাদিত পন্য দেশে-বিদেশে ছিল সমাদ্রিত। কিন্তু কালক্রমে সেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। বর্তমান মিলস কর্তৃপক্ষের চমর উদাসিনতা, অব্যবস্থাপনা, স্বেচ্ছাসারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ধ্বংসের ধারপান্তে মিলসটি। মিলসটি ঠিকমতো না চালিয়ে বিভিন্ন সময় দামি মেশিনারিজ বাইরে বিক্রি করা ও গোডাউনগুলো বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দেয়ার অভিযোগ রয়েছে মিলস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এদিকে শ্রমিকদের ২২ মাসের বেতন ও কর্মচ্যুত কর্মকর্তা, কর্মচারীদের কোটি টাকার ঊর্ধ্বে বাকি পড়েছে। বেতন না পেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবণ যাপন করছে তারা। কাজে না গেলে ও বেতন চাইলে মিলস কর্তৃপক্ষের লোকজনের হাতে নির্যাতনের শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকরা। বেতন পরিশোধ ও পুরোদমে মিলসটা চালু করতে বর্তমান শ্রম উপদেষ্টাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোনো ফল পাচ্ছে না তারা।
একাধিক শ্রমিক জানান, আমাদের বেতন বন্ধ থাকায় এবং বকেয়া না পাওয়ায় না পারছি এখান থেকে যেতে, না পারছি কাজ করতে। ঠিক মতো মাল সরবরাহ হয় না। এক সপ্তাহ কাজ করলে পরের সপ্তাহ বসে থাকতে হয়। কাজ না করলে আমাদের হাজিরা বন্ধ, বেতন বন্ধ। ছেলেমেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করছি। আমাদের দেখার কেউ নেই। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা মতে বেতন ভাতা না পেলে আসামিতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শ্রমিক নেতারা। তবে সহসায় শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধসহ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ডেল্টা জুট মিলসের জেনারেল ম্যানেজার মো. আবদুল ওয়াদুদ। মিলের গোডাউন বাইরের ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ঊর্ধ্বন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে এটি ভাড়া দেয়া হয়েছে। এখানে আইনগত কোনো সমস্যা নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুর রহমান জানান, শ্রমিকরা আন্দোলনের ডাক দেয়ার পর তাদের দেনা-পাওনা বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে বলে শুনেছি। তাই তারা আন্দোলন স্থগিত করেছে। এর বাইরে মিলসটির বিষয়ে আমার আর কিছু জানা নেই।
দ্রুত শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ ও পুরোদমে মিলসটা চালু করার মাধ্যমে আবারও কর্মচাঞ্চল্য ফিরবে ঐতিহ্যবাহী ডেল্টা জুট মিলসে, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
বেগমগঞ্জ (নোয়াখালী) : ডেল্টা জুট মিলসের কর্মরত শ্রমিকরা -সংবাদ
বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫
কর্তৃপক্ষের স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ধ্বংসের পথে নোয়াখালীর ডেল্টা জুট মিলসটি। দীর্ঘদিন বেতন ভাতা না পেয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীরা। মিলসটিতে বিরাজ করছে শ্রমিক অসন্তোষ। যে কোন সময় ঘটতে পারে অপ্রীতিকর ঘটনা। শ্রমিকরা সরকারের শ্রম উপদেষ্টাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছে। তবে সহসায় শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধসহ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে মিলস কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, আদমজী জুট মিলস এর পর দেশের বৃহত্তম পাট কল নোয়াখালীর চৌমুহনীতে অবস্থিত ডেল্টা জুট মিলস। এক সময় এখানে হাজার হাজার শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারী কাজ করত। এখানকার উৎপাদিত পন্য দেশে-বিদেশে ছিল সমাদ্রিত। কিন্তু কালক্রমে সেই ঐতিহ্য হারাতে বসেছে। বর্তমান মিলস কর্তৃপক্ষের চমর উদাসিনতা, অব্যবস্থাপনা, স্বেচ্ছাসারিতা, অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে ধ্বংসের ধারপান্তে মিলসটি। মিলসটি ঠিকমতো না চালিয়ে বিভিন্ন সময় দামি মেশিনারিজ বাইরে বিক্রি করা ও গোডাউনগুলো বিভিন্ন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দেয়ার অভিযোগ রয়েছে মিলস কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। এদিকে শ্রমিকদের ২২ মাসের বেতন ও কর্মচ্যুত কর্মকর্তা, কর্মচারীদের কোটি টাকার ঊর্ধ্বে বাকি পড়েছে। বেতন না পেয়ে অর্ধাহারে অনাহারে মানবেতর জীবণ যাপন করছে তারা। কাজে না গেলে ও বেতন চাইলে মিলস কর্তৃপক্ষের লোকজনের হাতে নির্যাতনের শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন শ্রমিকরা। বেতন পরিশোধ ও পুরোদমে মিলসটা চালু করতে বর্তমান শ্রম উপদেষ্টাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেও কোনো ফল পাচ্ছে না তারা।
একাধিক শ্রমিক জানান, আমাদের বেতন বন্ধ থাকায় এবং বকেয়া না পাওয়ায় না পারছি এখান থেকে যেতে, না পারছি কাজ করতে। ঠিক মতো মাল সরবরাহ হয় না। এক সপ্তাহ কাজ করলে পরের সপ্তাহ বসে থাকতে হয়। কাজ না করলে আমাদের হাজিরা বন্ধ, বেতন বন্ধ। ছেলেমেয়ে নিয়ে অনেক কষ্টে দিন পার করছি। আমাদের দেখার কেউ নেই। কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা মতে বেতন ভাতা না পেলে আসামিতে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন শ্রমিক নেতারা। তবে সহসায় শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পাওনা পরিশোধসহ সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন ডেল্টা জুট মিলসের জেনারেল ম্যানেজার মো. আবদুল ওয়াদুদ। মিলের গোডাউন বাইরের ব্যক্তি এবং প্রতিষ্ঠানের কাছে ভাড়া দেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ঊর্ধ্বন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে এটি ভাড়া দেয়া হয়েছে। এখানে আইনগত কোনো সমস্যা নেই বলে তিনি উল্লেখ করেন।
এ ব্যাপারে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আরিফুর রহমান জানান, শ্রমিকরা আন্দোলনের ডাক দেয়ার পর তাদের দেনা-পাওনা বিষয়ে সমঝোতা হয়েছে বলে শুনেছি। তাই তারা আন্দোলন স্থগিত করেছে। এর বাইরে মিলসটির বিষয়ে আমার আর কিছু জানা নেই।
দ্রুত শ্রমিক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ ও পুরোদমে মিলসটা চালু করার মাধ্যমে আবারও কর্মচাঞ্চল্য ফিরবে ঐতিহ্যবাহী ডেল্টা জুট মিলসে, এমনটাই প্রত্যাশা সবার।