alt

সারাদেশ

আক্কেলপুরে বিনা পয়সায় ইফতার ও সেহরি খাওয়ান হোটেল মালিক রফিকুল

প্রতিনিধি, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) : বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) : বিনা পয়সায় ইফতার খাওয়ার রফিকুল ইসলাম -সংবাদ

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে টানা দশ বছর ধরে বিনা পয়সায় ইফতার এবং সেহরি খাওয়ান রফিক হোটেলের মালিক রফিকুল ইসলাম। প্রতিদিন প্রায় তিনশত রোজাদার ব্যক্তি এখানে ইফতার এবং সেহরি করেন। বিত্তবান ব্যক্তি না হলেও এগারো মাসে যা আয় করেন সেখান থেকে প্রতিদিন কিছু টাকা সঞ্চয় করে রমজান মাসজুড়ে তিনি ইফতার এবং সেহরি করান। রমজানের এক মাস মেহমানদারি করান।

রোববার সেহরির ও ইফতার সময় আক্কেলপুর কলেজ বাজার কাঁচা মালপট্টিতে রফিকের হোটেলে গিয়ে দেখা যায়, সেহরি ও ইফতার খাওয়ার ভিড় চখে পড়ার মত। ভেতরে ঢুকে দেখা গেল সবাই হাতে হাতে প্লেট নিয়ে যে যার মত করে টেবিলে বসে ইফতার করছেন। তখন মালিকসহ বয়রাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। খালি নেই কারও হাত। হোটেলজুড়ে চলে জমজমাট সেহরি ও ইফতার পর্ব। টাকা না দিয়ে সেহরি খাবেন সবাই, এটাই রোজার একমাস ধরে রফিক হোটেলের নিয়ম। এই নিয়মটি তিনি প্রায় দশ বছর থেকে ধরে করে আসছেন। হোটেলটি তেমন একটা বড় নয়। মালিকও তেমন অবস্থাশালী নন। তিনি বছরের এগারো মাস হোটেলের খাবার বিক্রি করেন। এই আয় দিয়ে তিনি পুরো বছর সংসার চালান। পাশাপাশি রমজান মাসে সাধারণ মানুষকে টাকা ছাড়াই সেহরি ও ইফতার খাওয়ানোর জন্য টাকা জমা করেন। প্রতিদিন সেহরিতে ১৫০ জন এবং ইফতারে ১৫০ থেকে ১৭০ রোজাদার ব্যক্তিকে সেহরি ও ইফতারি করান তিনি।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হোটেল মালিকের নাম রফিকুল ইসলাম রফিক। তিনি ভাড়া নিয়ে হোটেল ব্যবসা করেন। আক্কেলপুর পৌরশহরের কেশবপুর গ্রামে তার বসবাস। তার হোটেলের নামও রফিক হোটেল। তিনি ২০১৬ সাল থেকে দশ বছর ধরে পৌর শহরে রফিক হোটেলে রমজান মাসে নিয়মিত টাকা ছাড়াই সেহরি ও ইফতার করাচ্ছেন রোজাদারকে। দূরদূরান্ত থেকে কলেজ হাটে আসা কৃষক, ট্রেন-বাস যাত্রী, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী, হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে আসা স্বজনরা এই হোটেলে টাকা ছাড়াই নিয়মিত সেহরি ও ইফতারি খাচ্ছেন। হোটেল মালিক রফিকুল ইসলাম নিজে এবং তার হোটেলের কর্মচারীররা মিলে ইফতারি ও সেহরির খাবার পরিবেশন করেন। সেহরির খাবারে ছিল গরুর মাংস, মুরগীর মাংস, মাছ, ভাজি, আলুর ডাল এবং এক গ্লাস দুধ দিয়ে সমাপ্ত হয় সেহরি পর্ব। আর ইফতারিতে থাকে মাংসের বিরিয়ানী, ছোলা বুট, বুন্দা, মুড়ি, পিঁয়াজু, বেগুনি, সালাত সঙ্গে এক গ্লাস শরবত। রোজাদারেরা তৃপ্তি সহকারে সেহরি ও ইফতার করেন।

হোটেলের অভ্যন্তর ছাড়িয়ে বাহিরে হাটের জায়গায় ডেকোরেটরের কাপড় বিছিয়ে ইফতার করানো হয়। গ্রাম থিয়েটারের নাট্য অভিনেতা মিজানূর রহমান কাজল বলেন, প্রতি বছর রফিক রমজান মাসে ইফতার ও সেহরি খাওয়ায় এতে গরিব মানুষেরা উপকৃত হয়। এটি একটি মহৎ কাজ। টাকা কম বেশি সবার ঘরেই আছে কিন্তু খাওয়ানোর মন মানসিকতা সবার নেই। ইফতার খেয়ে টাকা দিতে চাইলেও সে কোন টাকা নেয় না। সবকে ফ্রিতে ইফতার এবং সেহরি খাওয়ানোই তার ইচ্ছা। রফিক একটা দৃষ্টান্ত, এখান থেকে মানুষকে ও বিত্তবানদের শিক্ষা নিতে হবে, সমাজে যারা অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষ তাদের পাশে দাড়ানো। বিত্তশালী ব্যক্তিরা এমন করে এগিয়ে আসলে সমাজ পরিবর্তন হবে। পার্শ্ববর্তী উপজেলার ক্ষেতলালের দেউগ্রামের বাসিন্দা জাহানারা বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আমার ভাগ্নাকে নিয়ে এসেছি। রাতে সেহরি খাওয়ার জন্য হোটেল খুঁজতে এসে এই হোটেলে আসি। এখানে অনেক ভালো মানের খাবার পরিবেশন করা হয়।

খাবার পরে বিল দিতে এসে জানতে পারি তিনি টাকা না নিয়ে সেহরি খাওয়ান। তার এই কার্যক্রমে আমাদের মতো অনেক বিপদগ্রস্ত লোকের উপকার হয়। দিনাজপুরের হিলি থেকে আসা এক রোজাদার ব্যক্তি বলেন, আমি রফিক ভাইএর বিনা পয়সায় খাওয়ানো ফেসবুকে প্রচার দেখে এসেছি। এখানে এসে ইফতারের সময় হওয়ায় রফিক হোটেলে গিয়ে ইফতার করেছি। আমার কাছে ইফতারির টাকা নেয়নি। আমার মতো অনেকেই ইফতার করেছেন। রফিক ভাই যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা আনেক ভালো একটি কাজ। আল্লাহ পাক যেন তাকে রবকত দেন। তিনি যেন আরও বড় পরিশরে এমন সেবা দিতে পারেন। ব্যাবসায়ী বায়জিতের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, খুব সকালে কাঁচামাল কিনতে বাজারে প্রতিদিন আসতে হয়। প্রতি রমজান মাসে পুরোমাস বিনা পয়সায় সেহরি ও ইফতার করান হোটেল মালিক। বিষয়টি আমার খুব ভালো লেগেছে। তাই আমিও মাল কিনতে এসে এখানে সেহরি খাই। ইফতার খেতে আসা কমলমতি শিশু আছিব বলেন, আমি এখানে ইফতার খেতে আসছি। ইফতারি খুব ভালো ছিল। ইফতারে বিরিয়ানী, খিরা-টমোটোর সালাতসহ আরও অনেক কিছু।

হোটেল মালিক রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, রমজান মাসে খাবারের হোটেলগুলো বন্ধ থাকে। এতে ইফতারি ও সেহরির সময় রোজাদারদের অনেক কষ্ট হয়। বছরের এগারো মাস আমি হোটেল ব্যবসা করে যা আয় হয় তার থেকে প্রতিদিন কিছু টাকা জমিয়ে রেখে রমজান মাসে সব রোজাদারদের ইফতার ও সেহরি খাওয়ানোর চেষ্টা করি। ২০১৬ সাল থেকে এই কার্যক্রম শুরু করেছি। এ কাজে আমার হোটেলের কর্মচারীরা সহযোগীতা করে।

তারাও এই মাসে কোন পারিশ্রমিক নেয় না। মূলত পরকালের মুক্তি এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই আমি এই কাজ করি। আমি যতদিন বাঁচব এটা যেন চালু রাখতে পারি এজন্য আপনাদের দোয়া ও সহযোগিতা করবেন। আক্কেলপুর কলেজ বাজার বনিক সমিতির সভাপতি কাজী শফি উদ্দীন বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে দেখছি কলেজ বাজার রফিক হোটেলের মালিক রফিকুল ইসলাম তার হোটেলে বিনে পয়সায় সেহরি ও ইফতার করিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এর মাধ্যমে আক্কেলপুর হাসপাতালে, রেলস্টশনে ও কাঁচাবাজরে বাহির এলাকা থেকে আগত রোজাদাররা অনেক উপকৃত হন। আক্কেলপুরে অনেক বিত্তশালী ব্যক্তি রয়েছে তবে আমার কলেজ বাজারে থাকা ৫০ বছরে এমন চিত্র নজরে পড়েনি। এটি একটি মহৎ কাজ।

সিলেটে শিশুদের জন্য ৭৮ হাজার ভিটামিন এ ক্যাপসুল

ছবি

ধর্ষণ মামলার বাদীর লাশ উদ্ধার, পরিবারের হত্যার অভিযোগ

ছবি

সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশের কল্যাণ ও অপরাধ পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ছবি

রাজশাহীতে নগরায়নে কমেছে পুকুর , গ্রামে বাড়ছে পুকুর কমছে ফসলী জমি, কৃষি জমি রক্ষাও স্মারকলিপি প্রদান

ছবি

ময়মনসিংহে বাম জোটের মিছিলে সংঘর্ষ, আহত ২

পলাশে তুচ্ছ ঘটনায় যুবককে কুপিয়ে হত্যা

রাজবাড়ীর গোয়ালন্দে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগ নেতাকে গ্রেপ্তার

সেনাবাহিনীর প্রশিক্ষণ দল সিটিটিসির বিষ্ফোরক বোমা সংক্রান্ত তথ্যভাণ্ডার পরিদর্শন করেন

রায়গঞ্জে গুঁড়িয়ে দেয়া হলো অবৈধ ইটভাটা

শার্শায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল ওজনে কম দেয়ার অভিযোগ

ছবি

চট্টগ্রামে মাত্র এক টাকায় মিলছে হাজার টাকার রোজার বাজার

ছবি

দুমকিতে হাঁস পালনে লাভের স্বপ্ন দেখছেন মোশারফ

ছবি

মতলবে ধনাগোদা নদী ঢেকে আছে কচুরিপানায়, নৌ চলাচলে বাধা

ছবি

মাতামুহুরীর চরে স্ট্রবেরি চাষে কৃষক সফল

ডিবি পরিচয়ে শিক্ষার্থীকে অপহরণচেষ্টা, আটকের পর থানা থেকে মুক্ত

ছবি

কষ্টি পাথরের মূর্তি উদ্ধার

মসজিদে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ইমামের মৃত্যু

দুই জেলায় সড়কে ও রেলে কৃষক ও যুবদল নেতার মৃত্যু

দুর্বৃত্তদের হাতে গৃহবধূ খুন

গ্যাস সিলিন্ডারের অবৈধ মজুদ, জরিমানা

২ জেলায় নারী ও শিশুসহ ৩ মরদেহ উদ্ধার

কুমিল্লায় অস্ত্র-গুলিসহ ২ ডাকাত গ্রেপ্তার

ব্যবসায়ী হত্যায় ৪ জনের যাবজ্জীবন

চট্টগ্রামে পৃথক অগ্নিকাণ্ডে পুড়ল ৬৪ দোকান-বসতঘর

ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষ, নারীসহ আহত শতাধিক

ফেনসিডিলসহ গ্রেপ্তার ১

বগুড়া জেলা কারাগারে আ’লীগ নেতার মৃত্যু

দিনে-দুপুরে ডাকাতি নিহত ১

বেনাপোলে সড়ক দুর্ঘটনায় বিজিবি সদস্য নিহত

ঘরে ঘরে জ্বরসর্দি ও কাশি আক্রান্ত সব বয়সী মানুষ

গ্রাহকদের কোটি টাকা নিয়ে উধাও মাল্টিপারপাস মালিক শাহ আলম

ছবি

আদমজীতে সংঘর্ষের ৮ দিনেও গ্রেপ্তার হয়নি কেউ, এলাকাবাসীর ক্ষোভ

অবশেষে সালথা-ফরিদপুর সড়কে বাস চলাচল শুরু

ভৈরবের বিভিন্ন দোকানে বিক্রি হচ্ছে রুগ্ন গরুর মাংস

গোবিন্দগঞ্জে সেচ লাইসেন্স বাতিল না করার দাবি ভুক্তভোগীর

পলাশে অবৈধ ইটভাটাকে জরিমানা

tab

সারাদেশ

আক্কেলপুরে বিনা পয়সায় ইফতার ও সেহরি খাওয়ান হোটেল মালিক রফিকুল

প্রতিনিধি, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট)

আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) : বিনা পয়সায় ইফতার খাওয়ার রফিকুল ইসলাম -সংবাদ

বুধবার, ১২ মার্চ ২০২৫

জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে টানা দশ বছর ধরে বিনা পয়সায় ইফতার এবং সেহরি খাওয়ান রফিক হোটেলের মালিক রফিকুল ইসলাম। প্রতিদিন প্রায় তিনশত রোজাদার ব্যক্তি এখানে ইফতার এবং সেহরি করেন। বিত্তবান ব্যক্তি না হলেও এগারো মাসে যা আয় করেন সেখান থেকে প্রতিদিন কিছু টাকা সঞ্চয় করে রমজান মাসজুড়ে তিনি ইফতার এবং সেহরি করান। রমজানের এক মাস মেহমানদারি করান।

রোববার সেহরির ও ইফতার সময় আক্কেলপুর কলেজ বাজার কাঁচা মালপট্টিতে রফিকের হোটেলে গিয়ে দেখা যায়, সেহরি ও ইফতার খাওয়ার ভিড় চখে পড়ার মত। ভেতরে ঢুকে দেখা গেল সবাই হাতে হাতে প্লেট নিয়ে যে যার মত করে টেবিলে বসে ইফতার করছেন। তখন মালিকসহ বয়রাও ব্যস্ত সময় পার করছেন। খালি নেই কারও হাত। হোটেলজুড়ে চলে জমজমাট সেহরি ও ইফতার পর্ব। টাকা না দিয়ে সেহরি খাবেন সবাই, এটাই রোজার একমাস ধরে রফিক হোটেলের নিয়ম। এই নিয়মটি তিনি প্রায় দশ বছর থেকে ধরে করে আসছেন। হোটেলটি তেমন একটা বড় নয়। মালিকও তেমন অবস্থাশালী নন। তিনি বছরের এগারো মাস হোটেলের খাবার বিক্রি করেন। এই আয় দিয়ে তিনি পুরো বছর সংসার চালান। পাশাপাশি রমজান মাসে সাধারণ মানুষকে টাকা ছাড়াই সেহরি ও ইফতার খাওয়ানোর জন্য টাকা জমা করেন। প্রতিদিন সেহরিতে ১৫০ জন এবং ইফতারে ১৫০ থেকে ১৭০ রোজাদার ব্যক্তিকে সেহরি ও ইফতারি করান তিনি।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হোটেল মালিকের নাম রফিকুল ইসলাম রফিক। তিনি ভাড়া নিয়ে হোটেল ব্যবসা করেন। আক্কেলপুর পৌরশহরের কেশবপুর গ্রামে তার বসবাস। তার হোটেলের নামও রফিক হোটেল। তিনি ২০১৬ সাল থেকে দশ বছর ধরে পৌর শহরে রফিক হোটেলে রমজান মাসে নিয়মিত টাকা ছাড়াই সেহরি ও ইফতার করাচ্ছেন রোজাদারকে। দূরদূরান্ত থেকে কলেজ হাটে আসা কৃষক, ট্রেন-বাস যাত্রী, ব্যবসায়ী, বিভিন্ন অফিসের কর্মকর্তা, কর্মচারী, হাসপাতালে রোগীদের সঙ্গে আসা স্বজনরা এই হোটেলে টাকা ছাড়াই নিয়মিত সেহরি ও ইফতারি খাচ্ছেন। হোটেল মালিক রফিকুল ইসলাম নিজে এবং তার হোটেলের কর্মচারীররা মিলে ইফতারি ও সেহরির খাবার পরিবেশন করেন। সেহরির খাবারে ছিল গরুর মাংস, মুরগীর মাংস, মাছ, ভাজি, আলুর ডাল এবং এক গ্লাস দুধ দিয়ে সমাপ্ত হয় সেহরি পর্ব। আর ইফতারিতে থাকে মাংসের বিরিয়ানী, ছোলা বুট, বুন্দা, মুড়ি, পিঁয়াজু, বেগুনি, সালাত সঙ্গে এক গ্লাস শরবত। রোজাদারেরা তৃপ্তি সহকারে সেহরি ও ইফতার করেন।

হোটেলের অভ্যন্তর ছাড়িয়ে বাহিরে হাটের জায়গায় ডেকোরেটরের কাপড় বিছিয়ে ইফতার করানো হয়। গ্রাম থিয়েটারের নাট্য অভিনেতা মিজানূর রহমান কাজল বলেন, প্রতি বছর রফিক রমজান মাসে ইফতার ও সেহরি খাওয়ায় এতে গরিব মানুষেরা উপকৃত হয়। এটি একটি মহৎ কাজ। টাকা কম বেশি সবার ঘরেই আছে কিন্তু খাওয়ানোর মন মানসিকতা সবার নেই। ইফতার খেয়ে টাকা দিতে চাইলেও সে কোন টাকা নেয় না। সবকে ফ্রিতে ইফতার এবং সেহরি খাওয়ানোই তার ইচ্ছা। রফিক একটা দৃষ্টান্ত, এখান থেকে মানুষকে ও বিত্তবানদের শিক্ষা নিতে হবে, সমাজে যারা অসহায় ও ছিন্নমূল মানুষ তাদের পাশে দাড়ানো। বিত্তশালী ব্যক্তিরা এমন করে এগিয়ে আসলে সমাজ পরিবর্তন হবে। পার্শ্ববর্তী উপজেলার ক্ষেতলালের দেউগ্রামের বাসিন্দা জাহানারা বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আমার ভাগ্নাকে নিয়ে এসেছি। রাতে সেহরি খাওয়ার জন্য হোটেল খুঁজতে এসে এই হোটেলে আসি। এখানে অনেক ভালো মানের খাবার পরিবেশন করা হয়।

খাবার পরে বিল দিতে এসে জানতে পারি তিনি টাকা না নিয়ে সেহরি খাওয়ান। তার এই কার্যক্রমে আমাদের মতো অনেক বিপদগ্রস্ত লোকের উপকার হয়। দিনাজপুরের হিলি থেকে আসা এক রোজাদার ব্যক্তি বলেন, আমি রফিক ভাইএর বিনা পয়সায় খাওয়ানো ফেসবুকে প্রচার দেখে এসেছি। এখানে এসে ইফতারের সময় হওয়ায় রফিক হোটেলে গিয়ে ইফতার করেছি। আমার কাছে ইফতারির টাকা নেয়নি। আমার মতো অনেকেই ইফতার করেছেন। রফিক ভাই যে উদ্যোগ নিয়েছেন তা আনেক ভালো একটি কাজ। আল্লাহ পাক যেন তাকে রবকত দেন। তিনি যেন আরও বড় পরিশরে এমন সেবা দিতে পারেন। ব্যাবসায়ী বায়জিতের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, খুব সকালে কাঁচামাল কিনতে বাজারে প্রতিদিন আসতে হয়। প্রতি রমজান মাসে পুরোমাস বিনা পয়সায় সেহরি ও ইফতার করান হোটেল মালিক। বিষয়টি আমার খুব ভালো লেগেছে। তাই আমিও মাল কিনতে এসে এখানে সেহরি খাই। ইফতার খেতে আসা কমলমতি শিশু আছিব বলেন, আমি এখানে ইফতার খেতে আসছি। ইফতারি খুব ভালো ছিল। ইফতারে বিরিয়ানী, খিরা-টমোটোর সালাতসহ আরও অনেক কিছু।

হোটেল মালিক রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, রমজান মাসে খাবারের হোটেলগুলো বন্ধ থাকে। এতে ইফতারি ও সেহরির সময় রোজাদারদের অনেক কষ্ট হয়। বছরের এগারো মাস আমি হোটেল ব্যবসা করে যা আয় হয় তার থেকে প্রতিদিন কিছু টাকা জমিয়ে রেখে রমজান মাসে সব রোজাদারদের ইফতার ও সেহরি খাওয়ানোর চেষ্টা করি। ২০১৬ সাল থেকে এই কার্যক্রম শুরু করেছি। এ কাজে আমার হোটেলের কর্মচারীরা সহযোগীতা করে।

তারাও এই মাসে কোন পারিশ্রমিক নেয় না। মূলত পরকালের মুক্তি এবং মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যেই আমি এই কাজ করি। আমি যতদিন বাঁচব এটা যেন চালু রাখতে পারি এজন্য আপনাদের দোয়া ও সহযোগিতা করবেন। আক্কেলপুর কলেজ বাজার বনিক সমিতির সভাপতি কাজী শফি উদ্দীন বলেন, বিগত কয়েক বছর ধরে দেখছি কলেজ বাজার রফিক হোটেলের মালিক রফিকুল ইসলাম তার হোটেলে বিনে পয়সায় সেহরি ও ইফতার করিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। এর মাধ্যমে আক্কেলপুর হাসপাতালে, রেলস্টশনে ও কাঁচাবাজরে বাহির এলাকা থেকে আগত রোজাদাররা অনেক উপকৃত হন। আক্কেলপুরে অনেক বিত্তশালী ব্যক্তি রয়েছে তবে আমার কলেজ বাজারে থাকা ৫০ বছরে এমন চিত্র নজরে পড়েনি। এটি একটি মহৎ কাজ।

back to top