কেশবপুর (যশোর) : জলাবদ্ধ বিলের পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদ -সংবাদ
কেশবপুর উপজেলার শতাধিক জলাবদ্ধ বিলের পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদ করা হলেও শেষ মুহূর্তে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে জলাবদ্ধতায় ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ না হওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৩ কোটি ৫৭ লাখ ৭২ হাজার টাকার ধান কম উৎপাদন হবে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। এ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ভারতীয় রড মিনিকেট ধান আবাদ হলেও একই সময়ে সব ধানের শীষ বের না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষক।
কৃষকরা জানায়, সারা দেশের মধ্যে ধান-চালসহ বিভিন্ন খাদ্যশস্য উৎপাদনের উদ্বৃত্ত উপজেলা হিসেবে কেশবপুরের খ্যাতি দীর্ঘদিনের। কিন্তু এখানকার প্রধান নদ-নদী পলিতে ভরাট হওয়ায় গত ১০ বছর ধরে ৭ ইউনিয়নের শতাধিক বিলে বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এ বছর ভয়াবহ বন্যা হলেও বছরের একমাত্র ফসল বোরো আবাদে কৃষকরা আগেভাগেই কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে শতাধিক বিলের পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদ করে। বিলের ধান খেতের মাঠগুলো এখন সোনালী রঙের আভায় এক অপরূপ শোভা ছড়াচ্ছে। বোরো ধানের সোনালী শীষ দোল খাচ্ছে বাতাসে। সেচ, আগাছা পরিষ্কারসহ সকল কাজ সম্পন্ন করে এখন ধান ঘরে তোলার স্বপ্নে বিভোর এ উপজেলার হাজারো কৃষক।
কৃষি অফিস জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। অর্জিত হয়েছে ১২ হাজার ৭৯০ হেক্টর। জলাবদ্ধার কারণে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৫০ হেক্টর কম জমিতে ধানের চাষ হয়। পুরো উপজেলায় এবার হাইব্রিড, উফশী জাতের ব্রি- ২৮, ব্রি- ৫০, ব্রি- ৬৩, ব্রি- ৭৪, ব্রি- ৮৮ ও ব্রি-ধান- ১০০ ও ভারতীয় রডমিনিকেট ধানের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে হাইব্রিড- ৪ হাজার ২০০ হেক্টর ও উফশী- ৮ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমি। ধানের উৎপাদন ধরা হয়েছিল ৮৫ হাজার ৯৯৮ মেট্রিকটন। এবছর আবহাওয়া ছিল অনুকুলে। ফলে ৩৩ কোটি ৫৭ হাজার টাকার ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হয় কৃষক। উপজেলার বাগডাঙ্গা, পাঁজিয়া, কালিচরণপুর, বিলখুকশিয়া, কাটাখালি, মনোহরনগর, নারায়নপুরসহ ৫০ বিলে জলাবদ্ধতায় এবার বোরো আবাদ হয়নি।
ব্যাসডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম, মাগুরাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, তাদের গরালিয়া বিলের জমি ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদের কাছে লিজ দেয়া হয়েছে। ঘের মালিক মাছ চাষের জন্যে প্রতি শুষ্ক মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে ঘের ভরাট করে। আবার ইরি বোরো মৌসুমে স্যালো মেশিন দিয়ে ঘেরের পানি নিষ্কাশন করলে কৃষকরা ধান আবাদ করে। জলাবদ্ধতার কারণে বিলের ১ হাজার বিঘা জমিতে এবার বোরো আবাদ হয়নি।
দেউলি গ্রামের কৃষক বিল্লাল হোসেন বলেন, তাদের বাগদা-দেউলী বিলের ১ হাজার বিঘা জমিতে এবার বোরো আবাদ হয়নি। গেলবার ভারতীয় রড মিনিকেট ধানের ভালো ফলন হয়েছিল বলে এবছর এক বিঘা জমিতে এধান আবাদ করেছি। কিন্তু সব ধানের শীষ একসাথে বের না হওয়ায় তিনি বিপাকে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কিরন্ময় সরকার বলেন, নদী ভরাটে সববিলের পানি নিষ্কাশন সম্ভব হয়নি। যে কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৫০ হেক্টর কম জমিতে ধানের আবাদ হয়। কৃষকের চাহিদামত সার, বীজের কোনো ঘাটতি ছিল না। আবহাওয়াও ছিল অনুকুলে। ইতোমধ্যে উপজেলার অনেক এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবার ধানের বাম্পার ফলন হবে।
কেশবপুর (যশোর) : জলাবদ্ধ বিলের পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদ -সংবাদ
শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫
কেশবপুর উপজেলার শতাধিক জলাবদ্ধ বিলের পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদ করা হলেও শেষ মুহূর্তে ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে জলাবদ্ধতায় ২ হাজার ৫০ হেক্টর জমিতে ধানের আবাদ না হওয়ায় এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩৩ কোটি ৫৭ লাখ ৭২ হাজার টাকার ধান কম উৎপাদন হবে বলে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে। এ উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ভারতীয় রড মিনিকেট ধান আবাদ হলেও একই সময়ে সব ধানের শীষ বের না হওয়ায় বিপাকে পড়েছেন কৃষক।
কৃষকরা জানায়, সারা দেশের মধ্যে ধান-চালসহ বিভিন্ন খাদ্যশস্য উৎপাদনের উদ্বৃত্ত উপজেলা হিসেবে কেশবপুরের খ্যাতি দীর্ঘদিনের। কিন্তু এখানকার প্রধান নদ-নদী পলিতে ভরাট হওয়ায় গত ১০ বছর ধরে ৭ ইউনিয়নের শতাধিক বিলে বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। এ বছর ভয়াবহ বন্যা হলেও বছরের একমাত্র ফসল বোরো আবাদে কৃষকরা আগেভাগেই কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে শতাধিক বিলের পানি নিষ্কাশন করে বোরো আবাদ করে। বিলের ধান খেতের মাঠগুলো এখন সোনালী রঙের আভায় এক অপরূপ শোভা ছড়াচ্ছে। বোরো ধানের সোনালী শীষ দোল খাচ্ছে বাতাসে। সেচ, আগাছা পরিষ্কারসহ সকল কাজ সম্পন্ন করে এখন ধান ঘরে তোলার স্বপ্নে বিভোর এ উপজেলার হাজারো কৃষক।
কৃষি অফিস জানায়, চলতি বোরো মৌসুমে এ উপজেলায় ১৪ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। অর্জিত হয়েছে ১২ হাজার ৭৯০ হেক্টর। জলাবদ্ধার কারণে এবার লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৫০ হেক্টর কম জমিতে ধানের চাষ হয়। পুরো উপজেলায় এবার হাইব্রিড, উফশী জাতের ব্রি- ২৮, ব্রি- ৫০, ব্রি- ৬৩, ব্রি- ৭৪, ব্রি- ৮৮ ও ব্রি-ধান- ১০০ ও ভারতীয় রডমিনিকেট ধানের আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে হাইব্রিড- ৪ হাজার ২০০ হেক্টর ও উফশী- ৮ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমি। ধানের উৎপাদন ধরা হয়েছিল ৮৫ হাজার ৯৯৮ মেট্রিকটন। এবছর আবহাওয়া ছিল অনুকুলে। ফলে ৩৩ কোটি ৫৭ হাজার টাকার ধান উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হয় কৃষক। উপজেলার বাগডাঙ্গা, পাঁজিয়া, কালিচরণপুর, বিলখুকশিয়া, কাটাখালি, মনোহরনগর, নারায়নপুরসহ ৫০ বিলে জলাবদ্ধতায় এবার বোরো আবাদ হয়নি।
ব্যাসডাঙ্গা গ্রামের কৃষক রেজাউল ইসলাম, মাগুরাডাঙ্গা গ্রামের কৃষক আব্দুল মজিদ জানান, তাদের গরালিয়া বিলের জমি ঘের মালিক সেলিমুজ্জামান আসাদের কাছে লিজ দেয়া হয়েছে। ঘের মালিক মাছ চাষের জন্যে প্রতি শুষ্ক মৌসুমে ভূ-গর্ভস্থ পানি তুলে ঘের ভরাট করে। আবার ইরি বোরো মৌসুমে স্যালো মেশিন দিয়ে ঘেরের পানি নিষ্কাশন করলে কৃষকরা ধান আবাদ করে। জলাবদ্ধতার কারণে বিলের ১ হাজার বিঘা জমিতে এবার বোরো আবাদ হয়নি।
দেউলি গ্রামের কৃষক বিল্লাল হোসেন বলেন, তাদের বাগদা-দেউলী বিলের ১ হাজার বিঘা জমিতে এবার বোরো আবাদ হয়নি। গেলবার ভারতীয় রড মিনিকেট ধানের ভালো ফলন হয়েছিল বলে এবছর এক বিঘা জমিতে এধান আবাদ করেছি। কিন্তু সব ধানের শীষ একসাথে বের না হওয়ায় তিনি বিপাকে পড়েছেন।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার কিরন্ময় সরকার বলেন, নদী ভরাটে সববিলের পানি নিষ্কাশন সম্ভব হয়নি। যে কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৫০ হেক্টর কম জমিতে ধানের আবাদ হয়। কৃষকের চাহিদামত সার, বীজের কোনো ঘাটতি ছিল না। আবহাওয়াও ছিল অনুকুলে। ইতোমধ্যে উপজেলার অনেক এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়েছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এবার ধানের বাম্পার ফলন হবে।