বদলগাছী (নওগাঁ) : পুকুর সংস্কারের নামে অবৈধভাবে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে -সংবাদ
নওগাঁর বদলগাছীতে প্রশাসনের সঙ্গে সেটেলমেন্ট করে বুক ফুলিয়ে দিনে ও রাতে সমান তালে ফসলি জমি ও পুকুরের মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে মাটিখেকোরা। কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন, পুরাতন পুকুর সংস্কারের নামে অবৈধভাবে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করার অভিযোগ প্রশাসনকে জানালেও কোন ফল পাচ্ছে না উপজেলার সাধারণ জনগণ। মাটি পরিবহনে অবৈধ ট্রাক্টর চলাচলে মাটি পড়ে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা, রাতে গাড়ির শব্দে নির্ঘুম রাত কাটছে অনেক পরিবারের এবং রাস্তায় পড়া মাটিতে তৈরি ধুলা, ও কাদায় জনসাধারণের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।বালুমহাল, মাটি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি আইন থাকলেও মাটিখেকুদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে।অভিযোগ রয়েছে কিছু কিছু জায়গায় উপজেলা প্রশাসন মোবাইলকোর্টের মাধ্যমে অর্থ দ- করে খননকাজ বন্ধ করে দিলেও রহস্যজনক ভাবে ২-১ দিন পর থেকেই সেই জায়গাগুলোতে আবারো খনন কাজ শুরু হয়ে যায়। এবং কাজ শেষ হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিনের চেয়ে রাতেই মাটিখেকোরা ফসলি জমি, পুকুরের কাদামাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে আর এই মাটি নিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামীণ কাঁচা ও পাকা রাস্তা নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে ট্রাক্টরের শব্দে সড়কের পাশের লোকজনের ঘুম হচ্ছে না।অন্যদিকে রাস্তায় মাটি পড়ে মাটির স্তরের ধুলোবালিতে সৃষ্ট বায়ুদূষণ। অপরদিকে একটু পানিতেই রাস্তায় সৃষ্ট কাদায় পিছলে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারী। মাটি কাটা বন্ধের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী ভূমি কমিশনার (এসিল্যান্ড)’কে ফোন করেও বন্ধ হয় না। আবার অনেক সময়তো তারা ফোনই ধরেন না। আর ধরলেও ঠিক আছে দেখছি বলে কেটে দেন। আবার কেউ কেউ অবৈধভাবে মাটি কাটা ও জনদুর্ভোগের বিষয়ে অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না উপজেলা প্রশাসন।
জানাগেছে, আমন ধান কাটামাড়াইয়ের পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৌশলে শুরু হয়েছে পুকুর সংস্কার, ফসলি জমি উচু-নিচু সমান করা ও তিন ফসলি জমিতে পুকুর খননের নামে মাটির বিক্রির চলছে মহোৎসব। এসব মাটি স্থানীয়দের কাছে বিক্রির পাশাপাশি বেশিরভাগই মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়। মাটিখেকোদের দৌরাত্ম্য শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা কোনো মৌসুমেই থেমে নেই মাটিকাটা। মাটিখেকোরা বিভিন্ন কৌশলে উপজেলার বিভিন্ন খাল, পুকুর ও ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে ইট ভাটায় বিক্রি করে।
এতেই ক্ষান্ত নন তারা কোথাও কোথাও থেকে পুকুর গভীর করে মাটি ওঠানোর পর তারা নীচ থেকে বালুও উত্তোলন করছেন। এসব মাটি পরিবহনের কারণে ট্রাক্টর থেকে মাটি পাকা সড়কে পড়ে গিয়ে রাতের কুয়াশায় বা সামান্য পানিতে পিচ্ছিল হচ্ছে সড়ক। একারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন মোটরসাইকেল আরোহীসহ পথচারীরা। আবার গ্রামীণ সড়কগুলোও নষ্ট হচ্ছে।
কয়েকদিন সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ কালে দেখা যায়, উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের গোয়ালভিটা গ্রামে ঐতিহাসিক পাহাড়পুর যাওয়ার রাস্তার পাশেই দিনের বেলায় এবং বদলগাছী সদর ইউনিয়নের আখিট্রি,আধাইপুর ইউনিয়নের আাধাইপুর প্রেমতলি ও ইন্দ্রশকনা, কোলা ইউনিয়নের সুতাহাটি,খামারআক্কেলপুর,মথরাপুর ইউনিয়নের থুপশহর,ভয়ালপুর ও জালালপুরে রাতের বেলায় অবৈধ এক্সেভেটর মিশন দিয়ে মাটি কেটে আশেপাশের ইটভাটায় বিক্রি করছে।
উপজেলার কোমারপুর গ্রামের মানিক ক্ষোভের সাথে বলেন,আমার গ্রামে ইদের ছুটির মধ্যে রাতের বেলায় পকুর থেকে ট্রাক্টর দিয়ে মাটি ইটভাটায় বিক্রি হচ্ছিল। রাতের বেলা ট্রাক্টর চলাচলের শব্দে ঘুম হচ্ছিল না এবং রাস্তায় মাটি কাদা হওয়ায় জনসাধারণ চলাচল করতে পারছিলো না বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল পড়ে গিয়েছিলো আমি নিজে ইউএনওকে মাটি কাটার ব্যাপারে ফোন করেছি কোন ব্যবস্থা হয় নি।
দুলাল নামের একজন ব্যক্তি জানান,গত মাসে কোলা-পুখুরিয়া রাস্তার পাশে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন করে ইট ভাটায় মাটি বিক্রি করে। মাটি নিয়ে যাবার সময় রাস্তার উপর মাটি পড়ে ধুলা ও কাদায় এলাকার লোকের সমস্যা সৃষ্টি হলে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে জানালেও কোন ব্যবস্থা নেন নি।
ইন্দ্রশকনা গ্রামের তারিকুল ও বাবলু বলেন, ইন্দ্রশুকনা গ্রামে পকুর সংস্কারের কাদামাটি রাস্তায় ফেলে জনদূর্ভোগ তৈরি করে বিষয়টি প্রশাসনকে জানালেও বন্ধ হয়নি। ইন্দ্রশুকনা ছাড়াও এখনও খামারআক্কেলপুর,সুতাহাটিতে রাতের বেলায় মাটি কাটছে।
এ দিকে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের প্রধান সড়কে মাটি ফেলে দুর্ভোগের কথা জানান কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী। তারা বলেন, পাশেই পুরাতুন পুকুর থেকে মাটি ইটভাটায় নিয়ে বিক্রি করে। ইটভাটায় মাটি নিয়ে যাবার সময় রাস্তয় কাদামাটি পড়ে রাস্তার বেহাল অবস্থা। বেশ কয়েকজন রাস্তায় সৃষ্ট কাদায় পড়েও গেছে আর ধুলোতে চুল সাদা হয়ে নাজেহাল অবস্থায় পড়তে হচ্ছে পাহাড়পুরে আসা জনসাধারনকে।
উপজেলার থুপশহর এলাকার রহমানসহ বেশ কিছু ব্যক্তি বলেন, আমাদের এখানে ৩৩ বিঘা ফসলি জমিতে অবৈধ্যভাবে পুকুর খনন করছিল। আমরা অভিযোগ দিলে উপজেলা প্রশাসন এখানে এসে মোবাইলকোর্টের মাধ্যমে ঐ ব্যাক্তির জরিমানা করেন এবং সেখানে পুকুর খনন করতে নিষেধ করে যান। কিন্তু রহস্যজনকভাবে পরের দিন থেকে আবারো তারা রাতের আধারে পুকুর খনন শুরু করেন।
সেখানকার মাটিগুলো থুপশহর ও খাদাইল ইটভাটায় বিক্রি করেন। এখন সেখানে পুকুর খননের কাজ শেষ। তাহলে এখন আপনারাই বলেন এটাই কি প্রশসন। তাদের বিরুদ্ধে আর কোন ব্যবস্থা করল না কেন?
বদলগাছী সদরের দোকানি জামান বলেন, রাত হলেই মাটির গাড়ি চলাচলের হিরিক পড়ে। রাতে প্রশাসনের বাধা না থাকার সুযোগে মাটি ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে মাটি ইট ভাটায় বিক্রি করে। রাস্তাঘাট নষ্ট হলেও কেউ ব্যবস্থা নেই না।
রাতে মাটি কাটার বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মাটি ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা যে কোন জমির মাটি ও পকুরের মাটি জমির মালিকের থেকে টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে ব্যবসা করি। আর সব মাটিই ইটভাটায় ১হাজার থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি করি। আর ব্যবসা করতে গেলে ভূমি অফিস, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেই চলতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো একজন আধাইপুর ইউপির এক মাটি ব্যবসায়ী বলেন, বেশিরভাগ মাটি ইটভাটায় বিক্রি করি। যেখানে মাটি ক্রয় করি সেখানের মসজিদ, মন্দিরে কিছু টাকা বা ইট দেয়ার চুক্তি করি। গ্রামবাসী ঝামেলা করে কিছুই করতে পারে না। বেশির ভাগ সময় গ্রামবাসী মিডিয়াকে জানাই দু-চারজন ছাড়া সবাই ম্যানেজ হয়।
আর কেউ উপজেলা ভূমি অফিসে অভিযোগ দিলে যদি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের লোকজন দিনের বেলায় এসে বন্ধ করে।পরে তাদের ম্যানেজ করেই দিনে বা রাতে আবার চালু করি। এখন রাতেই বেশি নিরাপদ। বর্তমানে দিনের বেলায় মাটি কেঁটে বিক্রি করলে একটু ঝামেলা হচ্ছে তাই পরামর্শ করেই আমি রাতে মাটি কাটছি। কারণ রাতে ঝামেলা নেই।
অনুমতি ছাড়া পুকুর খনন ও মাটি ইটভাটায় বিক্রি এবং জনদূর্ভোগের ব্যপারে উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার আতিয়া খাতুন বলেন, আজকে যদি হয় আমাকে জানান ব্যবস্থা নিচ্ছি।পুকুরের মাটি ইটভাটায় বিক্রি ও জনদূর্ভোগের ব্যপারে জানালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান ছনি বলেন, কোথায় হচ্ছে জানান আমি দেখছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, মাটি কাটা বন্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী ভূমি কমিশনার (এসিল্যান্ডকে) ফোন দিবেন। সব জায়গাতে মাটি কাটা হচ্ছে। রাতে এসিল্যান্ড, ইউএনওকে ফোন না দিয়ে রাতে কাটলে থানার ওসিকে ফোন দিবেন এবং সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা বলেন।
বদলগাছী (নওগাঁ) : পুকুর সংস্কারের নামে অবৈধভাবে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে -সংবাদ
শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫
নওগাঁর বদলগাছীতে প্রশাসনের সঙ্গে সেটেলমেন্ট করে বুক ফুলিয়ে দিনে ও রাতে সমান তালে ফসলি জমি ও পুকুরের মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে মাটিখেকোরা। কোন প্রকার অনুমতি ছাড়াই তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন, পুরাতন পুকুর সংস্কারের নামে অবৈধভাবে মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করার অভিযোগ প্রশাসনকে জানালেও কোন ফল পাচ্ছে না উপজেলার সাধারণ জনগণ। মাটি পরিবহনে অবৈধ ট্রাক্টর চলাচলে মাটি পড়ে নষ্ট হচ্ছে রাস্তা, রাতে গাড়ির শব্দে নির্ঘুম রাত কাটছে অনেক পরিবারের এবং রাস্তায় পড়া মাটিতে তৈরি ধুলা, ও কাদায় জনসাধারণের সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে।বালুমহাল, মাটি ব্যবস্থাপনা ও ভূমি আইন থাকলেও মাটিখেকুদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে।অভিযোগ রয়েছে কিছু কিছু জায়গায় উপজেলা প্রশাসন মোবাইলকোর্টের মাধ্যমে অর্থ দ- করে খননকাজ বন্ধ করে দিলেও রহস্যজনক ভাবে ২-১ দিন পর থেকেই সেই জায়গাগুলোতে আবারো খনন কাজ শুরু হয়ে যায়। এবং কাজ শেষ হয়।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দিনের চেয়ে রাতেই মাটিখেকোরা ফসলি জমি, পুকুরের কাদামাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করছে আর এই মাটি নিয়ে যাওয়ার সময় গ্রামীণ কাঁচা ও পাকা রাস্তা নষ্ট হচ্ছে অন্যদিকে ট্রাক্টরের শব্দে সড়কের পাশের লোকজনের ঘুম হচ্ছে না।অন্যদিকে রাস্তায় মাটি পড়ে মাটির স্তরের ধুলোবালিতে সৃষ্ট বায়ুদূষণ। অপরদিকে একটু পানিতেই রাস্তায় সৃষ্ট কাদায় পিছলে পড়ে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে পথচারী। মাটি কাটা বন্ধের বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী ভূমি কমিশনার (এসিল্যান্ড)’কে ফোন করেও বন্ধ হয় না। আবার অনেক সময়তো তারা ফোনই ধরেন না। আর ধরলেও ঠিক আছে দেখছি বলে কেটে দেন। আবার কেউ কেউ অবৈধভাবে মাটি কাটা ও জনদুর্ভোগের বিষয়ে অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না উপজেলা প্রশাসন।
জানাগেছে, আমন ধান কাটামাড়াইয়ের পর থেকে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৌশলে শুরু হয়েছে পুকুর সংস্কার, ফসলি জমি উচু-নিচু সমান করা ও তিন ফসলি জমিতে পুকুর খননের নামে মাটির বিক্রির চলছে মহোৎসব। এসব মাটি স্থানীয়দের কাছে বিক্রির পাশাপাশি বেশিরভাগই মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়। মাটিখেকোদের দৌরাত্ম্য শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা কোনো মৌসুমেই থেমে নেই মাটিকাটা। মাটিখেকোরা বিভিন্ন কৌশলে উপজেলার বিভিন্ন খাল, পুকুর ও ফসলি জমির উর্বর মাটি কেটে ইট ভাটায় বিক্রি করে।
এতেই ক্ষান্ত নন তারা কোথাও কোথাও থেকে পুকুর গভীর করে মাটি ওঠানোর পর তারা নীচ থেকে বালুও উত্তোলন করছেন। এসব মাটি পরিবহনের কারণে ট্রাক্টর থেকে মাটি পাকা সড়কে পড়ে গিয়ে রাতের কুয়াশায় বা সামান্য পানিতে পিচ্ছিল হচ্ছে সড়ক। একারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়ছেন মোটরসাইকেল আরোহীসহ পথচারীরা। আবার গ্রামীণ সড়কগুলোও নষ্ট হচ্ছে।
কয়েকদিন সরেজমিনে তথ্য সংগ্রহ কালে দেখা যায়, উপজেলার পাহাড়পুর ইউনিয়নের গোয়ালভিটা গ্রামে ঐতিহাসিক পাহাড়পুর যাওয়ার রাস্তার পাশেই দিনের বেলায় এবং বদলগাছী সদর ইউনিয়নের আখিট্রি,আধাইপুর ইউনিয়নের আাধাইপুর প্রেমতলি ও ইন্দ্রশকনা, কোলা ইউনিয়নের সুতাহাটি,খামারআক্কেলপুর,মথরাপুর ইউনিয়নের থুপশহর,ভয়ালপুর ও জালালপুরে রাতের বেলায় অবৈধ এক্সেভেটর মিশন দিয়ে মাটি কেটে আশেপাশের ইটভাটায় বিক্রি করছে।
উপজেলার কোমারপুর গ্রামের মানিক ক্ষোভের সাথে বলেন,আমার গ্রামে ইদের ছুটির মধ্যে রাতের বেলায় পকুর থেকে ট্রাক্টর দিয়ে মাটি ইটভাটায় বিক্রি হচ্ছিল। রাতের বেলা ট্রাক্টর চলাচলের শব্দে ঘুম হচ্ছিল না এবং রাস্তায় মাটি কাদা হওয়ায় জনসাধারণ চলাচল করতে পারছিলো না বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল পড়ে গিয়েছিলো আমি নিজে ইউএনওকে মাটি কাটার ব্যাপারে ফোন করেছি কোন ব্যবস্থা হয় নি।
দুলাল নামের একজন ব্যক্তি জানান,গত মাসে কোলা-পুখুরিয়া রাস্তার পাশে তিন ফসলি জমিতে পুকুর খনন করে ইট ভাটায় মাটি বিক্রি করে। মাটি নিয়ে যাবার সময় রাস্তার উপর মাটি পড়ে ধুলা ও কাদায় এলাকার লোকের সমস্যা সৃষ্টি হলে বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী অফিসার কে জানালেও কোন ব্যবস্থা নেন নি।
ইন্দ্রশকনা গ্রামের তারিকুল ও বাবলু বলেন, ইন্দ্রশুকনা গ্রামে পকুর সংস্কারের কাদামাটি রাস্তায় ফেলে জনদূর্ভোগ তৈরি করে বিষয়টি প্রশাসনকে জানালেও বন্ধ হয়নি। ইন্দ্রশুকনা ছাড়াও এখনও খামারআক্কেলপুর,সুতাহাটিতে রাতের বেলায় মাটি কাটছে।
এ দিকে পাহাড়পুর বৌদ্ধবিহারের প্রধান সড়কে মাটি ফেলে দুর্ভোগের কথা জানান কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মী। তারা বলেন, পাশেই পুরাতুন পুকুর থেকে মাটি ইটভাটায় নিয়ে বিক্রি করে। ইটভাটায় মাটি নিয়ে যাবার সময় রাস্তয় কাদামাটি পড়ে রাস্তার বেহাল অবস্থা। বেশ কয়েকজন রাস্তায় সৃষ্ট কাদায় পড়েও গেছে আর ধুলোতে চুল সাদা হয়ে নাজেহাল অবস্থায় পড়তে হচ্ছে পাহাড়পুরে আসা জনসাধারনকে।
উপজেলার থুপশহর এলাকার রহমানসহ বেশ কিছু ব্যক্তি বলেন, আমাদের এখানে ৩৩ বিঘা ফসলি জমিতে অবৈধ্যভাবে পুকুর খনন করছিল। আমরা অভিযোগ দিলে উপজেলা প্রশাসন এখানে এসে মোবাইলকোর্টের মাধ্যমে ঐ ব্যাক্তির জরিমানা করেন এবং সেখানে পুকুর খনন করতে নিষেধ করে যান। কিন্তু রহস্যজনকভাবে পরের দিন থেকে আবারো তারা রাতের আধারে পুকুর খনন শুরু করেন।
সেখানকার মাটিগুলো থুপশহর ও খাদাইল ইটভাটায় বিক্রি করেন। এখন সেখানে পুকুর খননের কাজ শেষ। তাহলে এখন আপনারাই বলেন এটাই কি প্রশসন। তাদের বিরুদ্ধে আর কোন ব্যবস্থা করল না কেন?
বদলগাছী সদরের দোকানি জামান বলেন, রাত হলেই মাটির গাড়ি চলাচলের হিরিক পড়ে। রাতে প্রশাসনের বাধা না থাকার সুযোগে মাটি ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে মাটি ইট ভাটায় বিক্রি করে। রাস্তাঘাট নষ্ট হলেও কেউ ব্যবস্থা নেই না।
রাতে মাটি কাটার বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন মাটি ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা যে কোন জমির মাটি ও পকুরের মাটি জমির মালিকের থেকে টাকা দিয়ে কিনে নিয়ে ব্যবসা করি। আর সব মাটিই ইটভাটায় ১হাজার থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি করি। আর ব্যবসা করতে গেলে ভূমি অফিস, রাজনৈতিক ব্যক্তিসহ সাংবাদিকদের ম্যানেজ করেই চলতে হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো একজন আধাইপুর ইউপির এক মাটি ব্যবসায়ী বলেন, বেশিরভাগ মাটি ইটভাটায় বিক্রি করি। যেখানে মাটি ক্রয় করি সেখানের মসজিদ, মন্দিরে কিছু টাকা বা ইট দেয়ার চুক্তি করি। গ্রামবাসী ঝামেলা করে কিছুই করতে পারে না। বেশির ভাগ সময় গ্রামবাসী মিডিয়াকে জানাই দু-চারজন ছাড়া সবাই ম্যানেজ হয়।
আর কেউ উপজেলা ভূমি অফিসে অভিযোগ দিলে যদি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের লোকজন দিনের বেলায় এসে বন্ধ করে।পরে তাদের ম্যানেজ করেই দিনে বা রাতে আবার চালু করি। এখন রাতেই বেশি নিরাপদ। বর্তমানে দিনের বেলায় মাটি কেঁটে বিক্রি করলে একটু ঝামেলা হচ্ছে তাই পরামর্শ করেই আমি রাতে মাটি কাটছি। কারণ রাতে ঝামেলা নেই।
অনুমতি ছাড়া পুকুর খনন ও মাটি ইটভাটায় বিক্রি এবং জনদূর্ভোগের ব্যপারে উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার আতিয়া খাতুন বলেন, আজকে যদি হয় আমাকে জানান ব্যবস্থা নিচ্ছি।পুকুরের মাটি ইটভাটায় বিক্রি ও জনদূর্ভোগের ব্যপারে জানালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইশরাত জাহান ছনি বলেন, কোথায় হচ্ছে জানান আমি দেখছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, মাটি কাটা বন্ধে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী ভূমি কমিশনার (এসিল্যান্ডকে) ফোন দিবেন। সব জায়গাতে মাটি কাটা হচ্ছে। রাতে এসিল্যান্ড, ইউএনওকে ফোন না দিয়ে রাতে কাটলে থানার ওসিকে ফোন দিবেন এবং সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার কথা বলেন।