গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে বাম্পার ফলন হলেও কৃষকদের মুখে নেই স্বস্তির হাসি। এর পেছনে রয়েছে একটি বড় কারণ শ্রমিক সংকট। আর এই সংকটের মূল উৎস, এলাকার বিলাঞ্চলে শিল্প কারখানার ফেলা দূষিত পানি।
টঙ্গী, গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর এলাকার অসংখ্য কলকারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য সরাসরি এসে পড়ছে কালীগঞ্জ উপজেলার বিলগুলোতে, বিশেষ করে বেলাই বিলে। এতে বিলে জমে থাকা পানি হয়ে পড়েছে চরমভাবে দূষিত ও কৃষিকাজের জন্য অনুপযোগী। ফলে ধান কাটার সময় শ্রমিকরা বিলে নামতে ভয় পাচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, পানিতে নামলেই চুলকানি, ফোসকা, চর্মরোগ এমনকি ঘা পর্যন্ত দেখা দিচ্ছে শ্রমিকদের হাতে-পায়ে। ফলে যারা কাজ শুরু করছেন, তারা ১-২ দিনের মধ্যেই কাজ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। অতিরিক্ত মজুরি দিলেও তেমন ফল মিলছে না। এতে একদিকে শ্রমিক সংকট বাড়ছে, অন্যদিকে ধান কাটতে না পারায় ফসল মাঠেই নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৯,৮১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ধান ২,৮৭৫ হেক্টর ও উফশী জাতের ধান ৬,৯৩৫ হেক্টর। উৎপাদনও আশাব্যঞ্জক। নমুনা করা ধান অনুযায়ী উফশী জাতের ধান বিঘা প্রতি ২১ মণ ও হাইব্রিড ধান বিঘা প্রতি ২৬ মণ পর্যন্ত হয়েছে।
উত্তর খৈকড়া গ্রামের কৃষক হাশেম খন্দকার বলেন, তিন বিঘা জমির ধান পেকে গেছে, কিন্তু ধান কাটার লোক পাচ্ছি না। যারা আসছে, তারা একদিন কাজ করেই চলে যাচ্ছে। বলছে পানিতে নামা যায় না, শরীর জ্বালা করে।”
শ্রমিকদের অভিযোগ আরও স্পষ্ট। জামালপুর থেকে আসা শ্রমিক মনজু মিয়া বলেন, পানিতে নামলে হাতে-পায়ে ঘা ধরে। পানি একদম কালো হয়ে গেছে। কাজ করতে পারছি না।”
পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের কালীগঞ্জ শাখার সভাপতি আব্দুর রহমান আরমান বলেন, “এই দূষণ শুধু কৃষির ক্ষতি করছে না, জনস্বাস্থ্যের জন্যও ভয়াবহ হুমকি তৈরি করছে। শিল্পবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কঠোর নজরদারি ও আইন প্রয়োগ জরুরি।”
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম জানান, বিষয়টি একাধিকবার জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু কার্যকর কোনো স্থায়ী সমাধান এখনও হয়নি।
গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আরেফীন বাদল বলেন, বেলাই বিলসহ আশপাশের খালগুলোর দূষণ কমাতে আমরা কাজ শুরু করেছি। অল্প সময়ে পুরোপুরি দূষণমুক্ত করা সম্ভব না হলেও চেষ্টা চলছে।”
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ বলেন, বিষয়টি আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানিয়েছি। দূষণের জন্য দায়ী শিল্পকারখানার তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তালিকা হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
রোববার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫
গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে বাম্পার ফলন হলেও কৃষকদের মুখে নেই স্বস্তির হাসি। এর পেছনে রয়েছে একটি বড় কারণ শ্রমিক সংকট। আর এই সংকটের মূল উৎস, এলাকার বিলাঞ্চলে শিল্প কারখানার ফেলা দূষিত পানি।
টঙ্গী, গাজীপুর সদর ও শ্রীপুর এলাকার অসংখ্য কলকারখানার অপরিশোধিত বর্জ্য সরাসরি এসে পড়ছে কালীগঞ্জ উপজেলার বিলগুলোতে, বিশেষ করে বেলাই বিলে। এতে বিলে জমে থাকা পানি হয়ে পড়েছে চরমভাবে দূষিত ও কৃষিকাজের জন্য অনুপযোগী। ফলে ধান কাটার সময় শ্রমিকরা বিলে নামতে ভয় পাচ্ছেন।
স্থানীয় কৃষকদের অভিযোগ, পানিতে নামলেই চুলকানি, ফোসকা, চর্মরোগ এমনকি ঘা পর্যন্ত দেখা দিচ্ছে শ্রমিকদের হাতে-পায়ে। ফলে যারা কাজ শুরু করছেন, তারা ১-২ দিনের মধ্যেই কাজ ছেড়ে চলে যাচ্ছেন। অতিরিক্ত মজুরি দিলেও তেমন ফল মিলছে না। এতে একদিকে শ্রমিক সংকট বাড়ছে, অন্যদিকে ধান কাটতে না পারায় ফসল মাঠেই নষ্ট হওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৯,৮১০ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড জাতের ধান ২,৮৭৫ হেক্টর ও উফশী জাতের ধান ৬,৯৩৫ হেক্টর। উৎপাদনও আশাব্যঞ্জক। নমুনা করা ধান অনুযায়ী উফশী জাতের ধান বিঘা প্রতি ২১ মণ ও হাইব্রিড ধান বিঘা প্রতি ২৬ মণ পর্যন্ত হয়েছে।
উত্তর খৈকড়া গ্রামের কৃষক হাশেম খন্দকার বলেন, তিন বিঘা জমির ধান পেকে গেছে, কিন্তু ধান কাটার লোক পাচ্ছি না। যারা আসছে, তারা একদিন কাজ করেই চলে যাচ্ছে। বলছে পানিতে নামা যায় না, শরীর জ্বালা করে।”
শ্রমিকদের অভিযোগ আরও স্পষ্ট। জামালপুর থেকে আসা শ্রমিক মনজু মিয়া বলেন, পানিতে নামলে হাতে-পায়ে ঘা ধরে। পানি একদম কালো হয়ে গেছে। কাজ করতে পারছি না।”
পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠন বাংলাদেশ নদী পরিব্রাজক দলের কালীগঞ্জ শাখার সভাপতি আব্দুর রহমান আরমান বলেন, “এই দূষণ শুধু কৃষির ক্ষতি করছে না, জনস্বাস্থ্যের জন্যও ভয়াবহ হুমকি তৈরি করছে। শিল্পবর্জ্য ব্যবস্থাপনায় কঠোর নজরদারি ও আইন প্রয়োগ জরুরি।”
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ফারজানা তাসলিম জানান, বিষয়টি একাধিকবার জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু কার্যকর কোনো স্থায়ী সমাধান এখনও হয়নি।
গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আরেফীন বাদল বলেন, বেলাই বিলসহ আশপাশের খালগুলোর দূষণ কমাতে আমরা কাজ শুরু করেছি। অল্প সময়ে পুরোপুরি দূষণমুক্ত করা সম্ভব না হলেও চেষ্টা চলছে।”
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তনিমা আফ্রাদ বলেন, বিষয়টি আমরা পরিবেশ অধিদপ্তরকে জানিয়েছি। দূষণের জন্য দায়ী শিল্পকারখানার তালিকা প্রস্তুত করা হচ্ছে। তালিকা হাতে পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”