alt

সাপাহারে প্রচণ্ড তাপদাহে ঝরছে গাছের আম, লোকসানের আশঙ্কা

প্রতিনিধি, সাপাহার (নওগাঁ) : সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

সাপাহার (নওগাঁ) : প্রচণ্ড রোদে আমগাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত বাগানি -সংবাদ

বাণিজ্যিকভাবে দেশের শীর্ষ আম উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে খ্যাত নওগাঁর সীমান্তবর্তী সাপাহার উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমের ফলন কম দেখা গেছে, এ ছাড়া প্রচণ্ড তাপদাহ ও খরার কারণে পানি শূন্যতায় মাটিতে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। তুলনামূলকভাবে এবার প্রতিটি গাছে আমের মুকুল দেখা গেলেও পরবর্তী সময়ে আবহাওয়া জনিত কারণে গাছে আমের গুটি দানা বেঁধেছে কম। এ ছাড়া তীব্র খরা আর বৃষ্টিহীনতায় শুকিয়ে গেছে পুকুর খাল ও ডোবাগুলো। সেচ ব্যবস্থা না থাকায় অধিকাংশ বাগানে খরায় মাটিতে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। রোদের তিব্রতা ও ভ্যাপসা গরমে উপজেলায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। তাপদাহে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে পুরনো পুকুর খাল ও ডোবাগুলো দীর্ঘদিন খনন ও সংস্কারের অভাবে পানির ধারণক্ষমতা কম হওয়ায় প্রচণ্ড রোদ ও গরমের কারণে এবং আগে থেকেই সেচের কারণে পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে কাক্সিক্ষত বৃষ্টি না হওয়ায় অধিকাংশ বাগানে গাছ থেকে শুকিয়ে ও ঝরে পড়েছে গাছের আম। তুলনামূলকভাবে অধিকাংশ বাগানে ৫০ শতাংশের অধিক আম ঝরে গেছে। চলতি মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিটি গাছেই মুকুলে ছেয়ে ছিল। হঠাৎ করেই পরাগায়ন সময়ে ঘন কুয়াশা ও বৃষ্টির কারণে গুটি দানা বাঁধতে ব্যঘাত ঘটে যার ফলে অনেকের বাগানে আম কম দেখা গেছে। যে সব বাগানে আম রয়েছে সে সব আম রক্ষায় এবং প্রতিকূলতা থেকে বাঁচতে আম চাষিরা উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে পানি সেচ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তবে সূর্যের তাপের আধিক্য বেশি হওয়ায় আম ঝরে পড়া রোধ করতে না পারায় হতাশা ও শঙ্কায় দিন পার করছেন আম বাগান মালিকরা।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যানুযায়ী, এবার সাপাহার উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ হচ্ছে। গত কিছুদিন ধরে প্রচণ্ড রোদ ও খরার কারণে গাছের আম ঝরে পড়া থেকে রক্ষার জন্য বাগানীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে বিভিন্ন জায়গায় পানির সুব্যবস্থা না থাকায় আমের ফলনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বৃষ্টি হলে অনেকাংশে ক্ষতি কম হবে বলে মনে করছেন আমি চাষে সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের মদন শিং গ্রামের চাষি মাসুদ রানা বলেন, গতবছরের থেকে এবার আমের মুকুল অনেক বেশি ছিল তারপরও আমের গুটি অনেক কম আর যে সব বাগানে আমের গুটি রয়েছে সেগুলো এখন তাপদাহে ঝরে পড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাগানে এবার অনেক টাকা লোকসানের সম্ভাবনা রয়েছে।

সাপাহার তিলনা ইউনিয়নের ওড়নপুর গ্রামের আমচাষি আল মামুন জানান, মুকুল আসার পূর্বে বাগান পরিচর্যা করাই মোটামুটি ভালো মুকুল এসেছিল। তবে পরবর্তী সময়ে আমের গুটি আশানুরূপ ছিল না আবার যেটুকু গুটি আছে তা সেচ ব্যবস্থা না থাকায় এবং প্রচ- তাপমাত্রার কারণে ঝরে পড়ছে।

আম চাষে সম্পৃক্ত অনেক বাগানীরা জানান, এবার শুরুর দিকে মুকুল অনেক আশার সৃষ্টি করেছিল কিন্তু আমের গুটি অধিকাংশ বাগানে না থাকায় হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়াও যেসব বাগানে কিছু কিছু বাগানে গুটি থাকলে ও প্রচণ্ড রোদের কারণে গাছের গোড়ায় পানি ও ওষুধ স্প্রে করে গাছের আম রক্ষার চেষ্টা করেও গাছে আম আটকাতে পারা সম্ভব হচ্ছে বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান টকি জানান, প্রতি বছর একই সময়ে তীব্র তাপদাহের কবলে পড়েন এলাকার আমচাষিরা, চলতি সময়ে গাছের গোড়ায় পানি সেচের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে গুটি ঝরা কমে যাবে এ ছাড়াও অনেক জায়গায় সেচ ব্যবস্থা নেই, কাক্সিক্ষত বৃষ্টিপাত হলে এবং শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমেও আমের কাংখিত উৎপাদন হবে বলে আশা করছি।

ছবি

সেন্টমার্টিনে জেলের জালে ধরা পড়লো ৩২ কেজি ওজনের পোপা মাছ

ছবি

বঙ্গবন্ধু, হাসিনা ও তার পরিবারের নামে থাকা ৮৮০ স্থাপনার নাম পরিবর্তন, সংকলন প্রকাশ

ছবি

সড়ক দুর্ঘটনা: একই পরিবারের ৪ জনসহ দুই জেলায় নিহত ৫

গজারিয়ায় মেঘনা নদীতে ভাসমান অজ্ঞাত যুবকের মরদেহ উদ্ধার

মব ভায়োলেন্সে মুচি সম্প্রদায়ের দুইজনকে হত্যার প্রধান আসামি টাঙ্গাইলে গ্রেপ্তার

ছবি

৪৭তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবিতে রেলপথ অবরোধ

ছবি

রুমায় জোত পারমিটের আড়ালে কাঠ পাচার

ছবি

ভূমিকম্প: উৎপত্তিস্থল এলাকার ফাটল থেকে নমুনা সংগ্রহ, কমিটি গঠন

ছবি

নারায়ণগঞ্জে ফাটল ধরা ভবনে আবার কম্পন, আতঙ্কিত শ্রমিকদের বিক্ষোভ

ছবি

সিরাজগঞ্জের যমুনার সুস্বাদু মাছের চাহিদা দেশব্যাপি

ছবি

ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ গ্রেপ্তার

ছবি

কেশবপুরে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে ধানের বীজ বিতরণ

ছবি

পানি নিষ্কাশন না করে আপারভদ্রার ক্রসবাঁধ বন্ধের দাবি

ছবি

দেড় মাসে নাগেশ্বরীতে নদী ভেঙনে তিন শতাধিক ঘর-বাড়ি বিলীন

ছবি

ঝালকাঠির পলাতক আসামি টাঙ্গাইল থেকে গ্রেপ্তার

ছবি

গোপালগঞ্জে আমন মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ফলন দিয়েছে ব্রিধান ১০৩

ছবি

কটিয়াদীতে লেবু চাষে কৃষকদের ভাগ্য বদল

ছবি

নবীগঞ্জে সুপারি পাড়তে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্টে যুবকের মৃত্যু

ছবি

ডিভাইডার নেই, পার্শ্ব রাস্তা বন্ধ রায়গঞ্জে ৭ মাসে ১০ জনের মৃত্যু

ছবি

ভূমিকম্পের উৎপত্তি স্থলের নিকটে পলাশে যত অঘটন

ছবি

ভূমিকম্পে সিদ্ধিরগঞ্জের শতাধিক ভবনে ফাটল, হেলে পড়েছে বহু ভবন

ছবি

দুর্গাপুরে ভুয়া এমবিবিএস ডাক্তার গ্রেপ্তার

ছবি

রূপাইছড়া রাবার বাগানে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ

ছবি

যশোরে ট্রেন থেকে ঝাঁপ দিয়ে যুবকের আত্মহত্যা

ছবি

মোহনগঞ্জে বিএনপির জনসভা অনুষ্ঠিত

ছবি

ডুমুরিয়ায় বিদ্যালয় ভবন পরিত্যাক্ত, পাঠদান চলছে দোচালা ঘরে

ছবি

বরগুনায় ৪ ভুয়া চিকিৎসকের জেল-জরিমানা

ছবি

গাজীপুরে বিআরটি প্রকল্পের দুর্ভোগ নিরসনের দাবিতে মানববন্ধন

ছবি

এবারও ভোটার হয়নি সিলেট বিভাগের হিজড়া জনগোষ্ঠী

ছবি

পবিপ্রবিতে স্থাপিত দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ভূ-কম্পন পরিমাপ যন্ত্রটি অচল

ছবি

ফটিকছড়িতে রবি মৌসুমে প্রণোদনা পেল ৭৩০ কৃষক

ছবি

গৌরীপুরে নারী সমাবেশে হামলার বিচার ও শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ

ছবি

লৌহজংয়ে জলাবদ্ধতায় আলু আবাদে অনিশ্চয়তায় কৃষক

ছবি

সশস্ত্র বাহিনী দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা

ছবি

মোংলায় সশস্ত্র বাহিনী দিবসে সর্বসাধারণের জন্য নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজ উন্মুক্ত .

ছবি

সিরাজগঞ্জে ট্রান্সফরমার চোর চক্রের ৪ সদস্য আটক

tab

সাপাহারে প্রচণ্ড তাপদাহে ঝরছে গাছের আম, লোকসানের আশঙ্কা

প্রতিনিধি, সাপাহার (নওগাঁ)

সাপাহার (নওগাঁ) : প্রচণ্ড রোদে আমগাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত বাগানি -সংবাদ

সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

বাণিজ্যিকভাবে দেশের শীর্ষ আম উৎপাদনকারী এলাকা হিসেবে খ্যাত নওগাঁর সীমান্তবর্তী সাপাহার উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমের ফলন কম দেখা গেছে, এ ছাড়া প্রচণ্ড তাপদাহ ও খরার কারণে পানি শূন্যতায় মাটিতে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। তুলনামূলকভাবে এবার প্রতিটি গাছে আমের মুকুল দেখা গেলেও পরবর্তী সময়ে আবহাওয়া জনিত কারণে গাছে আমের গুটি দানা বেঁধেছে কম। এ ছাড়া তীব্র খরা আর বৃষ্টিহীনতায় শুকিয়ে গেছে পুকুর খাল ও ডোবাগুলো। সেচ ব্যবস্থা না থাকায় অধিকাংশ বাগানে খরায় মাটিতে ঝরে পড়ছে আমের গুটি। রোদের তিব্রতা ও ভ্যাপসা গরমে উপজেলায় স্থবির হয়ে পড়েছে জনজীবন। তাপদাহে সাধারণ খেটে খাওয়া নিম্নআয়ের মানুষদের দৈনন্দিন জীবনে প্রয়োজনীয় চাহিদা মেটানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে।

উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে পুরনো পুকুর খাল ও ডোবাগুলো দীর্ঘদিন খনন ও সংস্কারের অভাবে পানির ধারণক্ষমতা কম হওয়ায় প্রচণ্ড রোদ ও গরমের কারণে এবং আগে থেকেই সেচের কারণে পানি শূন্য হয়ে পড়েছে। সেই সঙ্গে কাক্সিক্ষত বৃষ্টি না হওয়ায় অধিকাংশ বাগানে গাছ থেকে শুকিয়ে ও ঝরে পড়েছে গাছের আম। তুলনামূলকভাবে অধিকাংশ বাগানে ৫০ শতাংশের অধিক আম ঝরে গেছে। চলতি মৌসুমের শুরুতে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিটি গাছেই মুকুলে ছেয়ে ছিল। হঠাৎ করেই পরাগায়ন সময়ে ঘন কুয়াশা ও বৃষ্টির কারণে গুটি দানা বাঁধতে ব্যঘাত ঘটে যার ফলে অনেকের বাগানে আম কম দেখা গেছে। যে সব বাগানে আম রয়েছে সে সব আম রক্ষায় এবং প্রতিকূলতা থেকে বাঁচতে আম চাষিরা উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শে পানি সেচ ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে। তবে সূর্যের তাপের আধিক্য বেশি হওয়ায় আম ঝরে পড়া রোধ করতে না পারায় হতাশা ও শঙ্কায় দিন পার করছেন আম বাগান মালিকরা।

উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যানুযায়ী, এবার সাপাহার উপজেলার ৬টি ইউনিয়নে ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আমের চাষ হচ্ছে। গত কিছুদিন ধরে প্রচণ্ড রোদ ও খরার কারণে গাছের আম ঝরে পড়া থেকে রক্ষার জন্য বাগানীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। তবে বিভিন্ন জায়গায় পানির সুব্যবস্থা না থাকায় আমের ফলনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যাচ্ছে, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই বৃষ্টি হলে অনেকাংশে ক্ষতি কম হবে বলে মনে করছেন আমি চাষে সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলার সদর ইউনিয়নের মদন শিং গ্রামের চাষি মাসুদ রানা বলেন, গতবছরের থেকে এবার আমের মুকুল অনেক বেশি ছিল তারপরও আমের গুটি অনেক কম আর যে সব বাগানে আমের গুটি রয়েছে সেগুলো এখন তাপদাহে ঝরে পড়ে যাচ্ছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে বাগানে এবার অনেক টাকা লোকসানের সম্ভাবনা রয়েছে।

সাপাহার তিলনা ইউনিয়নের ওড়নপুর গ্রামের আমচাষি আল মামুন জানান, মুকুল আসার পূর্বে বাগান পরিচর্যা করাই মোটামুটি ভালো মুকুল এসেছিল। তবে পরবর্তী সময়ে আমের গুটি আশানুরূপ ছিল না আবার যেটুকু গুটি আছে তা সেচ ব্যবস্থা না থাকায় এবং প্রচ- তাপমাত্রার কারণে ঝরে পড়ছে।

আম চাষে সম্পৃক্ত অনেক বাগানীরা জানান, এবার শুরুর দিকে মুকুল অনেক আশার সৃষ্টি করেছিল কিন্তু আমের গুটি অধিকাংশ বাগানে না থাকায় হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাছাড়াও যেসব বাগানে কিছু কিছু বাগানে গুটি থাকলে ও প্রচণ্ড রোদের কারণে গাছের গোড়ায় পানি ও ওষুধ স্প্রে করে গাছের আম রক্ষার চেষ্টা করেও গাছে আম আটকাতে পারা সম্ভব হচ্ছে বলে জানান তারা।

এ বিষয়ে উপজেলা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মনিরুজ্জামান টকি জানান, প্রতি বছর একই সময়ে তীব্র তাপদাহের কবলে পড়েন এলাকার আমচাষিরা, চলতি সময়ে গাছের গোড়ায় পানি সেচের ব্যবস্থা গ্রহণ করলে গুটি ঝরা কমে যাবে এ ছাড়াও অনেক জায়গায় সেচ ব্যবস্থা নেই, কাক্সিক্ষত বৃষ্টিপাত হলে এবং শেষ পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমেও আমের কাংখিত উৎপাদন হবে বলে আশা করছি।

back to top