কুষ্টিয়া : ২২ দফা দাবিতে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের শ্রমিকদের কর্মসূচি -সংবাদ
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবি) শ্রমিকরা ২২ দফা দাবি আদায়ে সাতদিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। গত বুধবার সকাল থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন মঙ্গলবারও চলেছে।
এদিকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে শ্রম অধিদপ্তরে মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা বিভাগীয় শ্রম আদালতে কুষ্টিয়া কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান শ্রম পরিদর্শক মো.ফারজুন ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফারজুন ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বিএটি কুষ্টিয়া কারখানাকে বিবাদী করা হয়েছে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব না।
২২ দফা দাবির বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান সোমবার বিকেলে তার কার্যালয়ের সভাকক্ষে একটি বৈঠক করেন। বৈঠকে বিএটির ছয়জন কর্মকর্তা ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের ছয়জন অংশ নেন। রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠক অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনরত শ্রমিক আশরাফুর রহমান। তিনি বলেন, শ্রমিকেরা তাদের দাবির বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন। এমনকি ২০১১ সাল থেকে শুরু আন্দোলনের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে যেসব তদন্ত হয়েছে এবং তা শ্রমিকদের পক্ষে হয়েছে সেগুলোর বিষয়েও কথা হয়। কিন্তু বিএটির কর্মকর্তারা তা মানতে রাজি না। এতে জেলা প্রশাসক একপর্যায়ে রাগান্বিত হয়ে পড়েন। শ্রম আইন মেনে কারখানার চালুর বিষয়ে কথা বলেন। সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলে আর্গুমেন্ট।
কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। নিরুপায় হয়ে মঙ্গলবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আন্দোলন আরও জোরদার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা এগারটা থেকে সপ্তম দিনের এত ২২ দফা দাবি আদায়ে শ্রমিকরা শহরের চৌড়হাস মোড় এলাকায় কারখানাটির প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তাদের সঙ্গে অনেক পরিবারের সদস্যরাও অংশ নেন। বেলা বারটায় গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকেরা ব্যানার ফেস্টুন প্লাকার্ড হাতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক সংলগ্ন কারখানাটির সামনে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন শ্রমিকেরা। প্রচ- রোদের মধ্যে এ সময় শ্রমিকদের স্ত্রী ছোট ছোট সন্তানেরাও দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁদের হাতে দাবি আদায়ের ব্যানারসহ বিভিন্ন ধরনের ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ছিল।
তারা ‘শ্রম দিলাম, টাকা কই’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। আন্দোলনরত শ্রমিক শামীম উল আলীম বলেন, জেলা প্রশাসকের বৈঠকে আশা করেছিলাম সমাধান হয়ে কারখানা চালু হবে। কিন্তু বিএটির ব্যবস্থাপনা তা মানেনি। শ্রমিকরা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি পুরণ না হবে ততক্ষণ আন্দোলন থেকে সরবো না। কারখানা চালু হবে না, হতে দেবো না।’ আন্দোলনের অংশ নেয়া পরিবারের সদস্যের একজন বলেন, আমার সন্তান না খেয়ে আছে। আমার স্বামী ও শ্রমিক ভাইদের পাশে আছি। সব দাবি মানতে হবে। তা না হলে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তায় থাকবো। সমাধান না নিয়ে কেউ বাড়ি ফিরবো না। শ্রমিকদের ভাষ্য, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী, ২০১২ সাল থেকে কোম্পানির পাওনা মুনাফা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, নিয়োগপত্রসহ ২২ দফা দাবি পূরণ করতে হবে।
এ জন্য তারা আন্দোলন করছেন। শ্রমিকেরা সাংবাদিকদের বলেন, বিএটিবির মৌসুমি শ্রমিকেরা তাদের ২২ দফা দাবি আদায়ে অনেক আগে থেকে আন্দোলন করে আসছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ এপ্রিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।
কুষ্টিয়া : ২২ দফা দাবিতে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের শ্রমিকদের কর্মসূচি -সংবাদ
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের (বিএটিবি) শ্রমিকরা ২২ দফা দাবি আদায়ে সাতদিন ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। গত বুধবার সকাল থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন মঙ্গলবারও চলেছে।
এদিকে শ্রম আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে শ্রম অধিদপ্তরে মামলা দায়ের হয়েছে। মঙ্গলবার দুপুরে খুলনা বিভাগীয় শ্রম আদালতে কুষ্টিয়া কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান শ্রম পরিদর্শক মো.ফারজুন ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফারজুন ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬ লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা হয়েছে। বিএটি কুষ্টিয়া কারখানাকে বিবাদী করা হয়েছে। এর বেশি কিছু বলা সম্ভব না।
২২ দফা দাবির বিষয়ে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান সোমবার বিকেলে তার কার্যালয়ের সভাকক্ষে একটি বৈঠক করেন। বৈঠকে বিএটির ছয়জন কর্মকর্তা ও আন্দোলনরত শ্রমিকদের ছয়জন অংশ নেন। রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত দীর্ঘ সাড়ে তিন ঘণ্টার বৈঠক অমীমাংসিতভাবে শেষ হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আন্দোলনরত শ্রমিক আশরাফুর রহমান। তিনি বলেন, শ্রমিকেরা তাদের দাবির বিষয়ে যুক্তি তুলে ধরেন। এমনকি ২০১১ সাল থেকে শুরু আন্দোলনের পর থেকে বিভিন্ন সময়ে যেসব তদন্ত হয়েছে এবং তা শ্রমিকদের পক্ষে হয়েছে সেগুলোর বিষয়েও কথা হয়। কিন্তু বিএটির কর্মকর্তারা তা মানতে রাজি না। এতে জেলা প্রশাসক একপর্যায়ে রাগান্বিত হয়ে পড়েন। শ্রম আইন মেনে কারখানার চালুর বিষয়ে কথা বলেন। সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে চলে আর্গুমেন্ট।
কোন সিদ্ধান্ত ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। নিরুপায় হয়ে মঙ্গলবার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আন্দোলন আরও জোরদার করা হয়েছে। মঙ্গলবার বেলা এগারটা থেকে সপ্তম দিনের এত ২২ দফা দাবি আদায়ে শ্রমিকরা শহরের চৌড়হাস মোড় এলাকায় কারখানাটির প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেন। এ সময় তাদের সঙ্গে অনেক পরিবারের সদস্যরাও অংশ নেন। বেলা বারটায় গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকেরা ব্যানার ফেস্টুন প্লাকার্ড হাতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়ক সংলগ্ন কারখানাটির সামনে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেন শ্রমিকেরা। প্রচ- রোদের মধ্যে এ সময় শ্রমিকদের স্ত্রী ছোট ছোট সন্তানেরাও দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁদের হাতে দাবি আদায়ের ব্যানারসহ বিভিন্ন ধরনের ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড ছিল।
তারা ‘শ্রম দিলাম, টাকা কই’, ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেব রক্ত’সহ বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দেন। আন্দোলনরত শ্রমিক শামীম উল আলীম বলেন, জেলা প্রশাসকের বৈঠকে আশা করেছিলাম সমাধান হয়ে কারখানা চালু হবে। কিন্তু বিএটির ব্যবস্থাপনা তা মানেনি। শ্রমিকরা বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি পুরণ না হবে ততক্ষণ আন্দোলন থেকে সরবো না। কারখানা চালু হবে না, হতে দেবো না।’ আন্দোলনের অংশ নেয়া পরিবারের সদস্যের একজন বলেন, আমার সন্তান না খেয়ে আছে। আমার স্বামী ও শ্রমিক ভাইদের পাশে আছি। সব দাবি মানতে হবে। তা না হলে ছোট ছোট বাচ্চাদের নিয়ে রাস্তায় থাকবো। সমাধান না নিয়ে কেউ বাড়ি ফিরবো না। শ্রমিকদের ভাষ্য, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী, ২০১২ সাল থেকে কোম্পানির পাওনা মুনাফা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, গ্র্যাচুইটি, নিয়োগপত্রসহ ২২ দফা দাবি পূরণ করতে হবে।
এ জন্য তারা আন্দোলন করছেন। শ্রমিকেরা সাংবাদিকদের বলেন, বিএটিবির মৌসুমি শ্রমিকেরা তাদের ২২ দফা দাবি আদায়ে অনেক আগে থেকে আন্দোলন করে আসছেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ১৭ এপ্রিল শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়। কিন্তু সময় পেরিয়ে গেলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।