নীলফামারীর ডিমলায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে খাদ্য বান্ধবের ডিলারের জামানতের পে-অর্ডারের টাকা স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ডিলার নিয়োগের কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দ্বায়ের করা হয়েছে।
খাদ্যবান্ধবের ডিলার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ৪১ জন খাদ্য বান্ধব ডিলার নিয়োগ করে দুস্থদের মাঝে ন্যায্য মূল্যে চাল বিতরণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। সরকারি বিধি মোতাবেক প্রতিজন ডিলারের নিকট থেকে জামানত বাবদ ২০ হাজার টাকা মূল্যের পে-অর্ডার জমা নেয়া হয়। গত ২০১৬ সালে স্থানীয় রুপালী ব্যাংক ডিমলা শাখা হতে প্রতি ডিলারের বিপরীতে ২০ হাজার করে মোট ৪১টি পে-অর্ডারে ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা জমা নেয়া হয়।
সম্প্রতি ওই খাদ্য নিয়ন্ত্রক (টিসিএফ) রুহুল মোসাদ্দেকের বিরুদ্ধে দৈনিক সংবাদ সহ একাধিক পত্রিকায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর প্রকাশ হলে তাকে রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলায় বদলী করা হয় এবং তার বদলে নীলফামারী সদর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক (টিসিএফ) মো. জহিরুল ইসলামকে ডিমলার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। গত ১৩ এপ্রিল অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল ইসলাম দায়িত্ব বুঝে নেয়ার সময় ১৫টি পে-অর্ডার ঘাটতি কম পেলে তিনি বিষয়টি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে (ডিসি ফুট) অবগত করলে তিনি ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে এসে ঘটনার সত্যতা পান।
এ ছাড়া ওই খাদ্য কর্মকর্তা ডিলার নিয়োগে কথা বলে দ. সুন্দর খাতা গ্রামে ধান-চাল ব্যাবসায়ী জহির উদ্দিনের নিকট থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, খগাখড়িবাড়ি গ্রামের নুর আলমের নিকট থেকে ২০ হাজার টাকা এবং একই গ্রামের নবাব আলীর নিকট থেকে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ বাবদ গ্রহণ করে।
এ ব্যাপারে জহির উদ্দিন বাদী হয়ে উক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগকারী জহির উদ্দিন বলেন, উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেক মটোর বাইক কেনার কথা বলে আমার নিকট ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা হাওলাদ নেয়। কিছুদিন পড়ে হাওলাদি টাকা ফেরত চাইলে দিতে অপারগতা প্রকাশ করে আমাকে ওএমএস এর ডিলার নিয়োগের কথা বলে আর টাকা ফেরত দেয়নি। নিরুপায় হয়ে আমি তার নামে থানায় অভিযোগ করেছি।
ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলে এলাহী অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধবের ডিলার বাবু কনেশ্বর রায় অভিযোগ করন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জামানতের জন্য রূপালী ব্যাংক ডিমলা শাখা থেকে ২০ হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফ জমা দেয়ার পর আমাকে ডিলার নিয়োগের কাগজ পাই। ডিলারের মেয়াদ শেষে আমাকে ফেরত ফের দেয়ার কথা কিন্তু খাদ্য কর্মকর্তা আমার জমা দেয়া ড্রাফ আমারসহ আরও ১৪ জন ডিলারের স্বাক্ষর জাল করে থেকে টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছে। আমরা স্বাক্ষর জালিয়াতকারী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা রুহুল মোসাদ্দেকের শাস্তি চাই।
খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধবের ডিলার নুর আলমও একই অভিযোগ করে বলেন, ওই খাদ্য কর্মকর্তা নানা অজুহাত দিয়ে আমিসহ অন্য ডিলারদের কাছ থেকে ডিলার বাতিলের ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতো। এরকম দুর্নীতিবাজ অফিসারকে চাকরিচ্যুত করা উচিত।
অভিযুক্ত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে পরে কথা হবে জানিয়ে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন। এরপর অনেকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আতিকুল হক ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খাদ্য বান্ধবের ডিলারের ২০১৬ সালর রক্ষিত ৪১টি পে-অর্ডারের মধ্যে ১৫টি খোয়া গেলও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেক নতুন করে পনরায় ব্যাংকে টাকা জমার পে-অর্ডার জমা করেছে।
খাদ্যববান্ধব প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেল মিয়া এ বিষয়ে বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের কারণে ঐ কর্মকর্তাকে বদলী করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে দুর্নীতি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
বুধবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৫
নীলফামারীর ডিমলায় উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে খাদ্য বান্ধবের ডিলারের জামানতের পে-অর্ডারের টাকা স্বাক্ষর জাল করে ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে আত্মসাৎসহ স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ডিলার নিয়োগের কথা বলে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দ্বায়ের করা হয়েছে।
খাদ্যবান্ধবের ডিলার ও সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ১০ ইউনিয়নে ৪১ জন খাদ্য বান্ধব ডিলার নিয়োগ করে দুস্থদের মাঝে ন্যায্য মূল্যে চাল বিতরণ প্রকল্প হাতে নেয়া হয়। সরকারি বিধি মোতাবেক প্রতিজন ডিলারের নিকট থেকে জামানত বাবদ ২০ হাজার টাকা মূল্যের পে-অর্ডার জমা নেয়া হয়। গত ২০১৬ সালে স্থানীয় রুপালী ব্যাংক ডিমলা শাখা হতে প্রতি ডিলারের বিপরীতে ২০ হাজার করে মোট ৪১টি পে-অর্ডারে ৮ লাখ ২০ হাজার টাকা জমা নেয়া হয়।
সম্প্রতি ওই খাদ্য নিয়ন্ত্রক (টিসিএফ) রুহুল মোসাদ্দেকের বিরুদ্ধে দৈনিক সংবাদ সহ একাধিক পত্রিকায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির খবর প্রকাশ হলে তাকে রাজশাহী জেলার দুর্গাপুর উপজেলায় বদলী করা হয় এবং তার বদলে নীলফামারী সদর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক (টিসিএফ) মো. জহিরুল ইসলামকে ডিমলার অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়। গত ১৩ এপ্রিল অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক জহিরুল ইসলাম দায়িত্ব বুঝে নেয়ার সময় ১৫টি পে-অর্ডার ঘাটতি কম পেলে তিনি বিষয়টি জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে (ডিসি ফুট) অবগত করলে তিনি ডিমলা উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কার্যালয়ে এসে ঘটনার সত্যতা পান।
এ ছাড়া ওই খাদ্য কর্মকর্তা ডিলার নিয়োগে কথা বলে দ. সুন্দর খাতা গ্রামে ধান-চাল ব্যাবসায়ী জহির উদ্দিনের নিকট থেকে ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা, খগাখড়িবাড়ি গ্রামের নুর আলমের নিকট থেকে ২০ হাজার টাকা এবং একই গ্রামের নবাব আলীর নিকট থেকে ৮০ হাজার টাকা ঘুষ বাবদ গ্রহণ করে।
এ ব্যাপারে জহির উদ্দিন বাদী হয়ে উক্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগকারী জহির উদ্দিন বলেন, উপজেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেক মটোর বাইক কেনার কথা বলে আমার নিকট ১ লাখ ৬৫ হাজার টাকা হাওলাদ নেয়। কিছুদিন পড়ে হাওলাদি টাকা ফেরত চাইলে দিতে অপারগতা প্রকাশ করে আমাকে ওএমএস এর ডিলার নিয়োগের কথা বলে আর টাকা ফেরত দেয়নি। নিরুপায় হয়ে আমি তার নামে থানায় অভিযোগ করেছি।
ডিমলা থানার অফিসার ইনচার্জ ফজলে এলাহী অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, ব্যবসায়ীর কাছ থেকে অসৎ উদ্দেশ্যে টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সত্যতা পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের খাদ্যবান্ধবের ডিলার বাবু কনেশ্বর রায় অভিযোগ করন, সরকারি নিয়ম অনুযায়ী জামানতের জন্য রূপালী ব্যাংক ডিমলা শাখা থেকে ২০ হাজার টাকার ব্যাংক ড্রাফ জমা দেয়ার পর আমাকে ডিলার নিয়োগের কাগজ পাই। ডিলারের মেয়াদ শেষে আমাকে ফেরত ফের দেয়ার কথা কিন্তু খাদ্য কর্মকর্তা আমার জমা দেয়া ড্রাফ আমারসহ আরও ১৪ জন ডিলারের স্বাক্ষর জাল করে থেকে টাকা তুলে আত্মসাৎ করেছে। আমরা স্বাক্ষর জালিয়াতকারী উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা রুহুল মোসাদ্দেকের শাস্তি চাই।
খগাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের খাদ্য বান্ধবের ডিলার নুর আলমও একই অভিযোগ করে বলেন, ওই খাদ্য কর্মকর্তা নানা অজুহাত দিয়ে আমিসহ অন্য ডিলারদের কাছ থেকে ডিলার বাতিলের ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিতো। এরকম দুর্নীতিবাজ অফিসারকে চাকরিচ্যুত করা উচিত।
অভিযুক্ত উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেকের সঙ্গে মোবাইল ফোনে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে পরে কথা হবে জানিয়ে মোবাইল ফোনের সংযোগ কেটে দেন। এরপর অনেকবার ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
এ বিষয়ে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক আতিকুল হক ঘটনা সত্যতা স্বীকার করে বলেন, খাদ্য বান্ধবের ডিলারের ২০১৬ সালর রক্ষিত ৪১টি পে-অর্ডারের মধ্যে ১৫টি খোয়া গেলও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক রুহুল মোসাদ্দেক নতুন করে পনরায় ব্যাংকে টাকা জমার পে-অর্ডার জমা করেছে।
খাদ্যববান্ধব প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. রাসেল মিয়া এ বিষয়ে বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের কারণে ঐ কর্মকর্তাকে বদলী করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলছে দুর্নীতি পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।