alt

সারাদেশ

অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ গাইড ও নোটবই

যশোর অফিস : বুধবার, ০৭ মে ২০২৫

গাইড এবং নোটবই বাজারজাতকরণ এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ হলেও যশোরে বিক্রি হচ্ছে ধুমছে। প্রশাসনের একদম নাকের ডগায় দেদারসে গাইড এবং নোটবই খুচরা বিক্রিসহ গাড়ি ভর্তি করে জেলার বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ চলছে। বিগত দিনের চেয়েও আরও অবাধে ও নির্বিঘ্নে জমে উঠেছে বেআইনি এই ব্যবসায়। নিষিদ্ধকরণ আইন থাকলেও দায়িত্ব সংশ্লিষ্টরা প্রয়োগ না করায় যশোরের বই বিক্রির বাজার এখন নিষিদ্ধ নোট-গাইড বইয়ে সয়লাব। শহরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন মনি সড়কের পাশে মুসলিম একাডেমি স্কুলের জায়গায় গড়ে ওঠা বই মার্কেটজুড়ে চলছে নিষিদ্ধ নোট-গাইড বই বিক্রির মহোৎসব। দলে দলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা এসে নোট-গাইডবই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। হাতে করে, রিকশার পাদানিতে ফেলে এবং সাইকেলের হ্যান্ডেলে বাঁধিয়ে গাইড বয়ে বাড়ি নিয়ে ফিরছেন সবাই। বইয়ের দোকানগুলোর সামনে ভিড় জমিয়ে চলছে গাইড বইয়ের বিকিকিনি। জেলা প্রশাসনের কার্যালয় কালেক্টরেট ভবনের কাছেই প্রাচীরের পাশে ফুটপাথ ও রাস্তা পেরিয়েই অবৈধ এই কারবার চললেও বন্ধে কোনো তৎপরতা নেই। মার্কেটটিতে গাইড বই বেচাকেনায় সবচেয়ে বেশি ভিড় জমেছে জনতা লাইব্রেরি এবং রয়েল নামে আরেকটি বই বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সামনে। জনতা লাইব্রেরি খুচরা আকারে গাইড বই বিক্রির পাশাপাশি যশোরসহ আশপাশের জেলায় গাইড এবং নোটবই সরবরাহ করে। প্রতিষ্ঠানটি একাধারে বেশ কয়েকটি প্রকাশনীর পরিবেশক হওয়ায় প্রতিদিন বস্তা বস্তা গাইড বই প্রতিষ্ঠানটিতে মজুত হয়। এরপর গাড়ি বোঝাই করে সরবরাহ হয় যশোরের আট উপজেলাসহ আশপাশের জেলায়। এদিকে, আলী হোসেন মনি সড়ক ছাড়াও ক্রাইস্ট চার্চের সামনে মার্কেটটির অন্য দোকানগুলোও গাইড বইয়ে সয়লাব। সেখানেও দেদার চলছে নোট এবং গাইড বইয়ের বেচা-কেনা।

১৯৮০ সালের নোটবই নিষিদ্ধকরণ আইনের ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি নোট বই মুদ্রণ, প্রকাশনা, আমদানি, বিক্রয়, বিতরণ অথবা কোনো প্রকারে এর প্রচার করতে বা মুদ্রণ, প্রকাশনা, বিক্রি, বিতরণ কিংবা প্রচারের উদ্দেশ্যে রাখতে পারবেন না। এই আইন অমান্য করলে সর্বোচ্চ সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে। পরে একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নোটবই নিষিদ্ধকরণ আইনের আওতায় নোটবইয়ের সঙ্গে গাইডবইও বাজারজাত ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেন হাইকোর্ট। কিন্তু তারপরও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যশোরে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে নোট বা গাইড বই। অনুসন্ধানে খবর মিলেছে, গাইডবই বাজারজাত করতে বিভিন্ন প্রকাশনীর প্রতিনিধিরা স্কুল-মাদ্রাসায় বিপুল পরিমাণ টাকা ঢালছেন। শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট প্রকাশনীর গাইডবই কিনতে ক্লাসে বলে দেওয়ার জন্য লাখ লাখ টাকা ঘুষ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও স্কুল-কলেজের উন্নয়ন তহবিল ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে টাকা দিচ্ছে। জানা গেছে, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি-সদস্যসহ প্রধান শিক্ষক এবং বিষয়ভিত্তিক শ্রেণী শিক্ষকদেরকে টাকা দিচ্ছে গাইডবই কোম্পানিগুলো। এক্ষেত্রে বিপুল অঙ্কের অবৈধ আর্থিক লেনদেন চলছে গত প্রায় এক মাস ধরেই। টাকা নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির লোকেরা বিভিন্ন কোম্পানির গাইড বইয়ের প্রচারণা চালাচ্ছেন। টাকা নিয়ে ক্লাসে বলে দেয়া হচ্ছে কোন কোম্পানির কী নামের কোনো গাইডবই কিনতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের নেতারাও গাইড বই বিক্রির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সূত্রমতে, টাকা নিয়ে স্কুল এবং মাদ্রাসায় ছুটছেন বিভিন্ন প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা। এক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করছে বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষক সমিতির নেতারা। এ ছাড়া যশোরের পুস্তক প্রকাশ এবং বিক্রেতা সমিতিসহ বেশ কয়েকটি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এই অনৈতিক আর্থিক লেনদেন নিয়ন্ত্রণ করছে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরের কালেক্টরেট স্কুলে নবম শ্রেণীর জন্য ‘লেকচার’ গাইড কেনার জন্য বলেছেন শিক্ষকেরা। এরকমভাবে একেক স্কুলে একেক গাইডবই কিনতে পরামর্শ দিচ্ছেন শিক্ষকেরা। উৎকোচ হিসেবে পাওয়া টাকার অঙ্কের ওপর এই প্রচারণা নির্ভর করছে। যে প্রকাশনী বেশি টাকা দিচ্ছে তাদের পক্ষে বেশি মাত্রায় প্রচারণা চলছে। শহরের বই জগৎ, ফেমাস লাইব্রেরি, হাসান বুক ডিপো, ইউনাইটেড লাইব্রেরিসহ অন্যান্য দোকান ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রকাশনীর গাইড বই। সব থেকে চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের দি রয়েল সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন্সের গাইড বই- যার মূল্য ৪০০০ টাকা। ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে দশম শ্রেণীর গাইড বই। এ ছাড়া নবম এবং দশম শ্রেণীর মানবিক বিভাগের জন্য লেকচার, পাঞ্জেরি এবং অনুপম গাইডের মূল্য ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা, ষষ্ঠ শ্রেণীর গাইড বইয়ের মূল্য ৯৫০ থেকে ৯৯০ টাকা, সপ্তম শ্রেণীর ১২৫০ থেকে ১৩৫০ টাকা এবং অষ্টম শ্রেণীর গাইড বই বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৪৫০ টাকায়।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন জানান, অনেক অর্থ ব্যয় করে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হয়েছে- যার কারণে গাইড এবং নোটবইয়ের ব্যাপারে জিরো টলারেন্সে সরকার। গাইড এবং নোটবই বিক্রি বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার জানান, বিষয়টি তার জানা নেই।

খোঁজ-খবর নিয়ে তিনি অভিযান পরিচালনা করবেন। যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) খান মাসুম বিল্লাহ বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে এটি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

ছবি

ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে অ্যাম্বুলেন্সে বাসের ধাক্কা, নারীসহ নিহত ৫

একদিনে ১১০ জনকে বাংলাদেশে বিএসএফের ‘পুশইন’

ছবি

মৌলভীবাজারের ধলই সীমান্তে আরও ১৫ জনকে বাংলাদেশে ঠেলে দিল বিএসএফ

ফরিদপুরের সালথায় ছাত্রীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

বাগেরহাটের শরণখোলায় এক বৃদ্ধের আত্মহত্যা

চাঁদপুর সদর হাসপাতাল শিশু ওয়ার্ডে নতুন শয্যা অনুদান

ছবি

সংবাদ প্রকাশের পর টুঙ্গিপাড়ায় নদী ভাঙন রোধে কাজ শুরু

ছবি

মানিকগঞ্জের মিষ্টি কুমড়ার দামে কৃষকের মুখে হাসির ঝিলিক

হবিগঞ্জে নিখোঁজ তরুণীর মরদেহ উদ্ধার

কেরুতে এক যুগেও চালু হয়নি অটোমেশিন, গচ্চা শতকোটি

কুয়াকাটায় অজ্ঞাত নারীর মরদেহ উদ্ধার

ফরমালিনযুক্ত আম ধ্বংস, জরিমানা

ছবি

পাহাড়ি এলাকায় বিশুদ্ধ পানির তীব্র সংকট, স্বাস্থ্যঝুঁকিতে আদিবাসীরা

নিষিদ্ধ পলিথিন মজুদ, ব্যবসায়ীর জরিমানা

অবৈধভাবে উত্তোলিত ৫ লাখ ঘনফুট বালু জব্দ

আসামি ধরতে গিয়ে হামলার শিকার ওসিসহ ৭ পুলিশ

মানিকগঞ্জে ৩ দিনব্যাপী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মেলা

হকার হত্যা মামলায় ৪ জনের ফাঁসি, ২ জনের যাবজ্জীবন

জমি অধিগ্রহণে ধীরগতি, আলোর মুখ দেখেনি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট

৭ম শ্রেণীর ছাত্রীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ৩ যুবক গ্রেপ্তার

ফেন্সি মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডে ৩ দোকান পুড়ে ছাই

ছবি

হাওরে ধান কাটার শ্রমিক সংকট

হালদায় রাবার ড্যামের প্রভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে লবণাক্ততা

১৩ ছাত্রীর সঙ্গে অশালীন আচরণ, শিক্ষক বরখাস্ত

তুচ্ছ ঘটনায় শিক্ষকের লাঠিপেটা, ছাত্রী আহত

জমি বিরোধে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা

ছবি

মতলবে মেঘনার ভাঙন আতঙ্কে এলাকাবাসী

মহেশখালীতে যুবককে গুলি করে হত্যা

সাবেক রেলমন্ত্রীর শ্বশুরবাড়িতে হামলার ঘটনায় যৌথ বাহিনীর অভিযানে আটক ৪

এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় প্রক্সি দিতে এসে দুই শিক্ষার্থী আটক

ফেইসবুকে নেই দুদক চেয়ারম্যান, সতর্ক থাকার আহ্বান

আইনের তোয়াক্কা না করে উল্টো পথে যান চলাচল

ছবি

তালায় পানবরজ ভস্মীভূত হয়ে ৫ লাখ টাকার ক্ষতি

ছবি

আদমদীঘিতে পুরোদমে চলছে ইরি ধান কাটা-মাড়াই কাজ

বজ্রপাতে তিন শিক্ষার্থী নিহত

দেওয়ানগঞ্জে হরিণের কস্তুরী ও ভারতীয় প্রসাধনীসহ গ্রেপ্তার ১

tab

সারাদেশ

অবাধে বিক্রি হচ্ছে নিষিদ্ধ গাইড ও নোটবই

যশোর অফিস

বুধবার, ০৭ মে ২০২৫

গাইড এবং নোটবই বাজারজাতকরণ এবং বিক্রয় নিষিদ্ধ হলেও যশোরে বিক্রি হচ্ছে ধুমছে। প্রশাসনের একদম নাকের ডগায় দেদারসে গাইড এবং নোটবই খুচরা বিক্রিসহ গাড়ি ভর্তি করে জেলার বিভিন্ন বাজারে সরবরাহ চলছে। বিগত দিনের চেয়েও আরও অবাধে ও নির্বিঘ্নে জমে উঠেছে বেআইনি এই ব্যবসায়। নিষিদ্ধকরণ আইন থাকলেও দায়িত্ব সংশ্লিষ্টরা প্রয়োগ না করায় যশোরের বই বিক্রির বাজার এখন নিষিদ্ধ নোট-গাইড বইয়ে সয়লাব। শহরের বীর মুক্তিযোদ্ধা আলী হোসেন মনি সড়কের পাশে মুসলিম একাডেমি স্কুলের জায়গায় গড়ে ওঠা বই মার্কেটজুড়ে চলছে নিষিদ্ধ নোট-গাইড বই বিক্রির মহোৎসব। দলে দলে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও শিক্ষকেরা এসে নোট-গাইডবই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। হাতে করে, রিকশার পাদানিতে ফেলে এবং সাইকেলের হ্যান্ডেলে বাঁধিয়ে গাইড বয়ে বাড়ি নিয়ে ফিরছেন সবাই। বইয়ের দোকানগুলোর সামনে ভিড় জমিয়ে চলছে গাইড বইয়ের বিকিকিনি। জেলা প্রশাসনের কার্যালয় কালেক্টরেট ভবনের কাছেই প্রাচীরের পাশে ফুটপাথ ও রাস্তা পেরিয়েই অবৈধ এই কারবার চললেও বন্ধে কোনো তৎপরতা নেই। মার্কেটটিতে গাইড বই বেচাকেনায় সবচেয়ে বেশি ভিড় জমেছে জনতা লাইব্রেরি এবং রয়েল নামে আরেকটি বই বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানের সামনে। জনতা লাইব্রেরি খুচরা আকারে গাইড বই বিক্রির পাশাপাশি যশোরসহ আশপাশের জেলায় গাইড এবং নোটবই সরবরাহ করে। প্রতিষ্ঠানটি একাধারে বেশ কয়েকটি প্রকাশনীর পরিবেশক হওয়ায় প্রতিদিন বস্তা বস্তা গাইড বই প্রতিষ্ঠানটিতে মজুত হয়। এরপর গাড়ি বোঝাই করে সরবরাহ হয় যশোরের আট উপজেলাসহ আশপাশের জেলায়। এদিকে, আলী হোসেন মনি সড়ক ছাড়াও ক্রাইস্ট চার্চের সামনে মার্কেটটির অন্য দোকানগুলোও গাইড বইয়ে সয়লাব। সেখানেও দেদার চলছে নোট এবং গাইড বইয়ের বেচা-কেনা।

১৯৮০ সালের নোটবই নিষিদ্ধকরণ আইনের ৩ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি নোট বই মুদ্রণ, প্রকাশনা, আমদানি, বিক্রয়, বিতরণ অথবা কোনো প্রকারে এর প্রচার করতে বা মুদ্রণ, প্রকাশনা, বিক্রি, বিতরণ কিংবা প্রচারের উদ্দেশ্যে রাখতে পারবেন না। এই আইন অমান্য করলে সর্বোচ্চ সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড অথবা ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রাখা হয়েছে। পরে একটি রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নোটবই নিষিদ্ধকরণ আইনের আওতায় নোটবইয়ের সঙ্গে গাইডবইও বাজারজাত ও বিক্রি নিষিদ্ধ করেন হাইকোর্ট। কিন্তু তারপরও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে যশোরে প্রকাশ্যেই বিক্রি হচ্ছে নোট বা গাইড বই। অনুসন্ধানে খবর মিলেছে, গাইডবই বাজারজাত করতে বিভিন্ন প্রকাশনীর প্রতিনিধিরা স্কুল-মাদ্রাসায় বিপুল পরিমাণ টাকা ঢালছেন। শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট প্রকাশনীর গাইডবই কিনতে ক্লাসে বলে দেওয়ার জন্য লাখ লাখ টাকা ঘুষ দেয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও স্কুল-কলেজের উন্নয়ন তহবিল ও বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজনে টাকা দিচ্ছে। জানা গেছে, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি-সদস্যসহ প্রধান শিক্ষক এবং বিষয়ভিত্তিক শ্রেণী শিক্ষকদেরকে টাকা দিচ্ছে গাইডবই কোম্পানিগুলো। এক্ষেত্রে বিপুল অঙ্কের অবৈধ আর্থিক লেনদেন চলছে গত প্রায় এক মাস ধরেই। টাকা নিয়ে বিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটির লোকেরা বিভিন্ন কোম্পানির গাইড বইয়ের প্রচারণা চালাচ্ছেন। টাকা নিয়ে ক্লাসে বলে দেয়া হচ্ছে কোন কোম্পানির কী নামের কোনো গাইডবই কিনতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের নেতারাও গাইড বই বিক্রির ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। সূত্রমতে, টাকা নিয়ে স্কুল এবং মাদ্রাসায় ছুটছেন বিভিন্ন প্রকাশনীর বিক্রয় প্রতিনিধিরা। এক্ষেত্রে মধ্যস্থতা করছে বিভিন্ন উপজেলার শিক্ষক সমিতির নেতারা। এ ছাড়া যশোরের পুস্তক প্রকাশ এবং বিক্রেতা সমিতিসহ বেশ কয়েকটি বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান এই অনৈতিক আর্থিক লেনদেন নিয়ন্ত্রণ করছে।

শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শহরের কালেক্টরেট স্কুলে নবম শ্রেণীর জন্য ‘লেকচার’ গাইড কেনার জন্য বলেছেন শিক্ষকেরা। এরকমভাবে একেক স্কুলে একেক গাইডবই কিনতে পরামর্শ দিচ্ছেন শিক্ষকেরা। উৎকোচ হিসেবে পাওয়া টাকার অঙ্কের ওপর এই প্রচারণা নির্ভর করছে। যে প্রকাশনী বেশি টাকা দিচ্ছে তাদের পক্ষে বেশি মাত্রায় প্রচারণা চলছে। শহরের বই জগৎ, ফেমাস লাইব্রেরি, হাসান বুক ডিপো, ইউনাইটেড লাইব্রেরিসহ অন্যান্য দোকান ঘুরে দেখা যায়, বিভিন্ন প্রকাশনীর গাইড বই। সব থেকে চড়া মূল্যে বিক্রি হচ্ছে নবম শ্রেণীর বিজ্ঞান বিভাগের দি রয়েল সায়েন্টিফিক পাবলিকেশন্সের গাইড বই- যার মূল্য ৪০০০ টাকা। ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে দশম শ্রেণীর গাইড বই। এ ছাড়া নবম এবং দশম শ্রেণীর মানবিক বিভাগের জন্য লেকচার, পাঞ্জেরি এবং অনুপম গাইডের মূল্য ২৮০০ থেকে ৩০০০ টাকা, ষষ্ঠ শ্রেণীর গাইড বইয়ের মূল্য ৯৫০ থেকে ৯৯০ টাকা, সপ্তম শ্রেণীর ১২৫০ থেকে ১৩৫০ টাকা এবং অষ্টম শ্রেণীর গাইড বই বিক্রি হচ্ছে ১৩০০ থেকে ১৪৫০ টাকায়।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন জানান, অনেক অর্থ ব্যয় করে বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়া হয়েছে- যার কারণে গাইড এবং নোটবইয়ের ব্যাপারে জিরো টলারেন্সে সরকার। গাইড এবং নোটবই বিক্রি বন্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। যশোরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার জানান, বিষয়টি তার জানা নেই।

খোঁজ-খবর নিয়ে তিনি অভিযান পরিচালনা করবেন। যশোরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) খান মাসুম বিল্লাহ বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে এটি বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

back to top